ইসলামী ব্যাংকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে কয়েকজন আহত

জাতীয়, 11 August 2024, 135 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয়ের বাইরে গুলির ঘটনা ঘটেছে। আজ ১১ আগস্ট রবিবার সকালে এ ঘটনার সময় ২০১৭ সালের আগে ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং এর পরে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন গুলিতে। গুরুতর একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০১৭ সালের পর নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে আজ রবিবার সকালে পুরোনো কর্মীরা ঘোষণা দেন। ওই বছরের পরে নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ কর্মীই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার, সে কারণে তাঁরা পটিয়ার কর্মকর্তা–কর্মচারী হিসেবে পরিচিত। পুরোনো কর্মীদের ঘোষণার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পটিয়ার কর্মীরা আশপাশে জড়ো হয়ে ব্যাংকের দিকে রওনা দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এরপর পুরোনো কর্মীরা পটিয়ার কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলি ছোড়া হলে কয়েকজন আহত হন। এদের মধ্যে একজন গুরুতর আহত হলে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ইসলামী ব্যাংকের পুরোনো কর্মীরা গুলি ছোড়ার জন্য পটিয়ার কর্মকর্তা–কর্মচারীদের দায়ী করেন।

গুলিবিদ্ধরা হলেন শফিউল্লাহ, আবদুল্লাহ আল মামুন, আবদুর রহমান ও বাকিবিল্লাহ। দুই জনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তাঁরা বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই ইসলামী ব্যাংকে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সরকারের পতনের পরের দিনই ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে, যেখানে ঘোষণা করা হয়েছিল যে ২০১৭ সালের পর নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ব্যাংকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সে সময় প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত মুজিব কর্নারও ভাঙচুর করা হয়।

ওই ঘটনার পর ব্যাংকের সিবিএ নেতা আনিসুর রহমান জানান, ২০১৭ সালের পরে যত নির্বাহী এসেছেন, তাঁরা আর ব্যাংকে ঢুকতে পারবেন না। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের পর থেকে পরীক্ষা ছাড়া অনিয়মের মাধ্যমে যেসব নিয়োগ হয়েছে, সেসব নিয়োগ বাতিল করা হবে। একই সাথে ওই সময়ের পরে যাঁদের চাকরি অবৈধভাবে বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের চাকরি পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া গত সাত বছরে যাঁরা পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের যথাযথভাবে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। এরপর ব্যাংকে প্রায় ১৪ হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়, যাঁদের বেশির ভাগই পটিয়া উপজেলার বলে জানা গেছে। এস আলম গ্রুপের মালিকদের আদি বাস ওই একই অঞ্চলে। ২০১৭ সালের আগে ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা–কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় আট হাজার।

ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপ ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বের করে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এই অর্থ ব্যাংকে ফেরত না আসার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা ইসলামী ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ ব্যবস্থায় টাকা ধার দিয়ে ব্যাংকটির দৈনন্দিন কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের এসইভিপি শওকত আলী বলেন, ‘গতকাল জানতে পারি এস আলমের বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা–কর্মচারী, যারা ব্যাংকটিকে লুটপাট করেছে, তারা তাদের লোকদের ব্যাংকে বসাবে। এ তথ্য পেয়ে আমরা ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিই, যাতে তারা ব্যাংকে ঢুকতে না পারে। একপর্যায়ে এস আলমের লোকজন সিটি সেন্টারে অবস্থান নেয়।’

‘বৈষম্যবিরোধী ব্যাংকাররা’ সে সময় প্রতিরোধ করলে এস আলমের পক্ষের লোকজন পালিয়ে যান বলে জানান ইসলামী ব্যাংকের এই কর্মকর্তা।

এদিকে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনিরুল মওলা ব্যাংকে যাননি। পুরোনো কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, মুনিরুল মওলা ব্যাংকে ঢুকতে চাইলে তাঁকেও বাধা দেওয়া হবে।

কর্মকর্তারা ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ‘লুটেরাদের’ বের করে দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি তাঁরা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনিরুল মওলা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আলী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিনসহ এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের বহিষ্কারের দাবি জানান।

দুপুর পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। প্রধান কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় ব্যাংকের কর্মচারীরা মিছিল করছিলেন।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

জাতীয়, 25 May 2023, 1009 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন ও বিপণন করার অপরাধে চারটি প্রতিষ্ঠানকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ২৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফ আফজাল রাজনের নেতৃত্বে দুই ঘন্টার এ অভিযান চালানো হয়।

জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম জানান, পাঁচবিবি বিভিন্ন এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি,পাউরুটি ও বিস্কুট উৎপাদন এবং বিপনন হচ্ছে এমন খবর আসে র‌্যাবের কাছে। এমন খবরে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালায়। এসময়

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে স্মৃতি বেকারীর মালিক মোজাফরকে ৫ হাজার টাকা, আনছারী বেকারীর মালিক খলিল আনছারীকে ৮ হাজার টাকা,রাখি বেকারীর মালিক জীবন কৃঞ্চ সরকারকে ৫ হাজার, হিমালয় আইসক্রিমের মালিক মনিরুজ্জামান শান্তকে ৩ হাজার টাকা করে সর্বমোট ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় ভেজাল মিষ্টি,পাউরুটি ও বিস্কুট তৈরীর উপাদান ধ্বংস করা হয়।

শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪৩০

জাতীয়, 14 April 2023, 1107 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নতুন বছর মানেই এক নতুন সম্ভাবনা, নতুন আশায় পথ চলা। আজ শুক্রবার পহেলা বৈশাখ। চৈত্রসংক্রান্তির মাধ্যমে ১৪২৯ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ যুক্ত হবে নতুন বছর ১৪৩০। আজ সকালে সোনালি সূর্য রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে, বাঙালি জাতি আজ এক কাতারে। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে বাঙালির একমাত্র অসাম্প্রদায়িক উৎসবের দিন এটি। আবহমানকাল বাংলার গ্রামীণ জনপদে উদযাপিত হওয়া নববর্ষের আয়োজন এখন ছুঁয়েছে নগর জীবনে এবং নতুন মাত্রায়। সর্বত্র উদযাপিত হচ্ছে বাংলার উৎসব, উচ্চারিত হচ্ছে বাঙালিয়ানার জয়গান। পহেলা বৈশাখ বাঙালির জাতীয় জীবনে পরম আনন্দের দিন। বাঙালির অসাম্প্রদায়িক উৎসবের দিন আজ। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।

‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো/তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা নববর্ষকে আবাহন জানিয়েছিলেন এভাবেই। নববর্ষ বিদায়ী বছরের গস্নানি মুছে দিয়ে বাঙালি জীবনে ওড়ায় নতুনের কেতন, চেতনায় বাজায়

মহামিলনের সুর। সব ভেদাভেদ ভুলে সব বাঙালিকে দাঁড় করায় এক সম্প্রীতির মোহনায়। নববর্ষের আগমনী ধ্বনি শুনলেই সমগ্রজাতি নতুনের আহ্বানে জেগে ওঠে। গ্রামের জীর্ণ-কুটির হতে বিলাসবহুল ভবন কিংবা দূর প্রবাসের মেগাসিটি-সর্বত্রই প্রবাহিত হয় আনন্দের ফলগুধারা। পহেলা বৈশাখ উদযাপন এখন বাংলাদেশের গন্ডি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। প্রতিটি বাঙালি দিনটিকে উদযাপন করে উৎসবের আমেজে। বাংলা নববর্ষে মহামিলনের আনন্দ উৎসব থেকেই বাঙালি ধর্মান্ধ অপশক্তির কূট ষড়যন্ত্র করার আর কুসংস্কার ও কূপমন্ডূকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার অনুপ্রেরণা পায়।

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এম আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ আমাদেরকে উদার হতে শিক্ষা দেয় এবং জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বমানবের সঙ্গে মিশে যাওয়ার শক্তি জোগায়। এই উদারনৈতিক চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আদর্শ এবং রাষ্ট্রভাষা চেতনার বহ্নিশিখা অন্তরে ধারণ করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক আজকের দিনে সকলের অঙ্গীকার।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘এই শুভ নববর্ষের প্রাক্কালে আমাদের প্রার্থনা এই যে, আমরা যেন সমস্ত অন্ধকার ও বাধা-বিপত্তি দূর করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারি।’

কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বাংলা সন গণনার শুরু মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে। ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে। দেশ স্বাধীনের পর বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীকে পরিণত হয় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।

বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বজনীন উৎসবে। নতুন পোশাক পরে সবাই মিলিত হন সাংস্কৃতিক আয়োজনে। ছায়ানট রমনার বটমূলে বর্ষবরণের যে প্রভাতী অনুষ্ঠান শুরু করেছিল তা আজ বিশ্ব জুড়ে বর্ষবরণের প্রতীক হয়ে উঠেছে। শহরে বৈশাখ যে ব্যাপক উৎসবের উপলক্ষ নিয়ে আসে গ্রামীণ জীবনে তার আমেজ ভিন্ন। নগরজীবনে এই দিন যেমন পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ধুম পড়ে যায়, তেমনি যুক্ত হয় নতুন কাপড় পরার আয়োজনও। গ্রামবাংলায় সকালবেলা দই-চিড়া দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করার রেওয়াজ আছে। ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে হালখাতার আনুষ্ঠানিকতায় মিষ্টি দিয়ে তাদের ক্রেতাদের স্বাগত জানান।

কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে চৈত্র সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয় বিজু উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সব মানুষ, সব বাঙালি সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে সমগ্র জাতি একই হৃদয়াবেগে একটি মোহনায় মিলিত হয়ে পালন করে এই সর্বজনীন উৎসব। চিরায়ত বাঙালিত্বের অহংকার আর সংস্কৃতির উদার আহ্বানে জাগরুক হয়ে নাচে-গানে, গল্পে-আড্ডায়, আহারে-বিহারে চলে নতুন বছরকে বরণ করার পালা। বাংলা নববর্ষ তাই বাঙালিদের জীবনে সবচেয়ে বড় সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এর মাধ্যমে জাতি তার স্বকীয়তা ও জাতীয়তাবাদী চেতনার শক্তি সঞ্চয় করে, সচেষ্ট হয় আত্মপরিচয় ও শিকড়ের সন্ধানে। নববর্ষই বাঙালি জাতিকে ইস্পাত-কঠিন ঐক্যে আবদ্ধ করেছিল, শক্তি ও সাহসের সঞ্চার করে স্বাধিকার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরণা জুগিয়েছিল।

১৪২৯-এর আনন্দ বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব চুকিয়ে শুরু হবে নতুন এক পথচলা। ১৪৩০ সনকে বরণ করতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে ঘরোয়া পরিবেশে মেতে ওঠা বাঙালি গাইবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। আবহমান বাংলার চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনার মূলে রয়েছে এক অসাধারণ অনুষঙ্গ; সেটি হলো বাংলা নববর্ষ তথা পহেলা বৈশাখ। ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় বাংলা বর্ষবিদায় ও বরণের অনুষ্ঠানমালা আমাদের সেই ঐতিহাসিক চেতনাকে প্রোজ্জ্বল করে। স্বদেশ মানস রচনায় বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য সর্বোপরি ইতিহাসের আলোকে রক্ষণশীল ও পশ্চাৎপদ চিন্তা-চেতনাকে পরিহার করে আধুনিক ও প্রাগ্রসর অভিধায় জাতিসত্তাকে যথাযথ প্রতিবাদ করার সম্মিলিত প্রতিশ্রম্নতি বাংলা নববর্ষকে দান করেছে অনবদ্য মাঙ্গলিক যাত্রাপথ।

বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য হলো বাংলা বর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। আর বাঙালিদের কাছে বাংলা নববর্ষ বরণ হলো একটি প্রাণের উৎসব। বাংলা নববর্ষের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো মঙ্গলশোভাযাত্রা। ইউনেস্কো বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বাস সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি প্রদান করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করে নববর্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা ও সাংস্কৃতিক সৌধের ভিত আরও সুদৃঢ় করুক, নববর্ষের উদার আলোয় ও মঙ্গলবার্তায় জাতির ভাগ্যাকাশের সব অন্ধকার দূরীভূত হোক, সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটুক, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক, এটাই হোক নতুন বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ এর প্রত্যাশা।

নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার ও সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। বাংলা বর্ষবরণ বাংলাদেশের একটি সার্বজনীন উৎসব। নতুন বছরের প্রথম দিন সবাই যার যার সাধ্যমতো উৎযাপনের মাধ্যমে দিনটি পালন করেন। বর্ষবরণ যে কয়টি জিনিস এখন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পান্তা ইলিশ বা ইলিশ মাছ খাওয়া। বাঙালির বর্ষবরণ ইলিশ ছাড়া হয় না। এ ছাড়া কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোনো খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুঠির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানা রকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওযার ব্যবস্থা থাকে। ইলিশ মাছের সঙ্গে পান্তা ভাত ও শুঁটকি মাছ, আচার, ডাল, কাঁচা লঙ্কা, এবং পিঁয়াজ কুঁচির সংমিশ্রণের এই খাদ্যটি পয়লা বৈশাখের জনপ্রিয় খাদ্য। এই দিনের একটি পুরানো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। এর মধ্যে থাকে নৌকা বাইচ, লাঠিখেলা ও কুস্তি। হাল আমলে ক্রিকেট ও ফুটবল যুক্ত হচ্ছে।

দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সঙ্গে পালিত হয় সর্বজনীন উৎসব। বিশ্বের সব প্রান্তের সব বাঙালি এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেন, ভুলে যাবার চেষ্টা করে অতীত বছরের সব দুঃখ-গস্নানি। সবার কামনা থাকে যেন নতুন বছরটি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা একে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেন। এদিনে তারা হালখাতা করে থাকেন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। বাংলা একাডেমি কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

বাংলা দিনপঞ্জির সঙ্গে হিজরি ও খ্রিস্টীয় সনের মৌলিক পার্থক্য হলো হিজরি সন চাঁদের হিসাবে এবং খ্রিস্টীয় সন ঘড়ির হিসাবে চলে। এ কারণে হিজরি সনে নতুন তারিখ শুরু হয় সন্ধ্যায় নতুন চাঁদের আগমনে। ইংরেজি দিন শুরু হয় মধ্যরাতে। পহেলা বৈশাখ ভোর থেকে শুরু হয়। ভারতবর্ষে মোঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সঙ্গে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হতো।

হালখাতা বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সব স্থানেই পুরানো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন লাল রংঙের হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকেন। এই প্রথাটি এখনো অনেকাংশে প্রচলিত আছে, বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানে। ১৯৬০-১৯৭০ দশকে পুরান ঢাকায় হিন্দু ব্যবসায়ী বিশেষ করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে হালখাতা প্রথা অনুসরণের প্রবণতা ছিল। এমনকি বেশ ভাবগাম্ভীযের্র সঙ্গেই পালিত হতো অসাম্প্রদায়িক এই আচার-অনুষ্ঠানটি। হালনাগাদের খাতাটি ছিল লাল রঙের লাল সালু কাপড়ের মলাটে মোড়ানো। দুই-তিন ভাঁজ করে তার উপর ফিতা দিয়ে বেঁধে রেখে হাত বিনিময় হতো। এই খাতাটিই ছিল বিগত বছরের যাবতীয় হিসাবের বিবরণী নথি।

আবহমান বাংলার মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৯৮৬ সালে চারুপীঠ নামের একটি বেসরকারি সংগঠন যশোরে সর্বপ্রথম নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। পাপেট, বাঘের প্রতিকৃতি, পুরানো বাদ্যযন্ত্রসহ নানা শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো শোভাযাত্রাটি দেশ জুড়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। অতঃপর এর আদলেই ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত হয় আরও একটি শোভাযাত্রা। তখন প্রেক্ষাপট ছিল ১৯৮০’র দশকের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের এক হওয়া এবং শান্তির বিজয় ও অপশক্তির অবসান কামনা। সেই আনন্দ শোভাযাত্রাটি সকল স্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। সেদিন থেকে প্রতি বছর বৈশাখের প্রথম সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই আনন্দ শোভাযাত্রা অব্যাহত রাখে। বিশালাকার পুতুল, বিভিন্ন পশুপাখির বিচিত্র মুখোশ ও সাজসজ্জার পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্যের মাধ্যমে জাকজমক করে তোলা হয় এই আনন্দ শোভাযাত্রা। প্রথম দিকে চারুকলার এই শোভাযাত্রাটির নাম ছিল বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সাল থেকে এটি মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। অশুভ মানুষের কথা ভেবে মুখোশ করা হয় শোভাযাত্রায়।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকার পহেলা বৈশাখকে জাতীয় পার্বণ হিসেবে ঘোষণা করেন। স্বাধিকার আন্দোলনের সময় ছায়ানটের গানে গানে যে প্রতিবাদের ধারা সৃষ্টি করেছিল তা মুক্তি সংগ্রামের প্রেরণার পথে বড় শক্তি যুগিয়েছে। ২০০১ সালে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে বোমা বিস্ফোরণের পরে যেমন মৌলবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছায়ানট যেন মানবতার পক্ষে লড়াইয়ে তাদের প্রত্যয়ের কথাই ব্যক্ত করছে বারবার। আজ সেই আলোড়ন পরিণত হয়েছে প্রতিটি বাঙালির প্রাণের উৎসবে।

ট্রেনের টিকিটে সহযাত্রীর নাম বাধ্যতামূলক

জাতীয়, 1 April 2023, 1100 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ নীতি বাস্তবায়নে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবার সহযাত্রীর নাম উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করেছে। যার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সহযাত্রীদের টিকিট কেনা হবে, সেখানে সহযাত্রীদের নামও উল্লেখ করতে হবে।

আজ ১ এপ্রিল শনিবার থেকে এটি সংযোজন করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়েছেন রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন-জেভির সিইও সন্দ্বীপ দেবনাথ।

তিনি বলেন, আজ থেকে টিকিট কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহযাত্রীদের নাম (জাতীয় পরিচয়পত্র/ ফটো আইডিতে দেওয়া নাম) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভ্রমণের সময় সব যাত্রীকে অবশ্যই তাদের এনআইডি/ফটো আইডি সঙ্গে রাখতে হবে।

রেলওয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেছে, ২/৩/৪টি টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সিট সিলেক্ট করার পরের স্টেজে গিয়ে প্যাসেঞ্জার এক- এর ক্ষেত্রে যে অ্যাকাউন্ট দিয়ে সিলেক্ট করা হয়েছে, তার নাম বসানো আছে। প্যাসেঞ্জার ২/৩/৪ এর জায়গায় স্টার মার্ক করা একটি করে নামের জায়গা খালি রাখা হয়েছে। সেখানে নাম না লেখা পর্যন্ত ‘প্রসিড’ অপশন আসবে না। অর্থ্যাৎ টিকিটগুলো কেনার কাজ সম্পন্ন করতে নাম লিখতে হবে।

এর আগে গত ২২ মার্চ রেল ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, একজন যাত্রী ঈদের অগ্রিম টিকিট ও ফেরত যাত্রার টিকিট উভয় ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একবার এবং প্রতিক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট ক্রয় করতে পারবেন। একজন নিবন্ধিত যাত্রী সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহযাত্রীদের এনআইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন নম্বর ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

দ্বাদশ সংসদের যাত্রা শুরু মঙ্গলবার

জাতীয়, 29 January 2024, 455 Views,
বঙ্গভবন

অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নতুন সরকার গঠন করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নতুন সরকারসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী সব এমপিদের নিয়ে প্রথম সংসদ অধিবেশন বসতে যাচ্ছে ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার। দ্বাদশ সংসদে নতুন এমপিদের প্রথম অধিবেশনের আগে রেওয়াজ অনুযায়ী ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

এই সংসদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগ সরকারি দল ও মাত্র ১১টি আসন নিয়ে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চায় জাতীয় পার্টি। তবে আসন সংখ্যা কম হলেও জাতীয় পার্টির সদস্যরা সংসদে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অবশ্য পাশে থাকছে তাদের থেকে প্রায় ৬গুণ বেশি ৬২টি আসনে বিজয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা।

সংসদ সচিবালয় জানায়, ২৯ জানুয়ারি সোমবার একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে অধিবেশনের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। অন্যদিকে, মাত্র ১১টি আসন নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৬২ জন আওয়ামী লীগের পাশেই থাকবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে এই সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে। অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। পরে সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি সরকারের সফলতা ও আগামীতে করণীয় বিষয়ে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। পরে ওই ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে পুরো অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করবেন। এই অধিবেশনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হতে পারে।

সংসদ সচিবালয় আরও জানায়, অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রথম দিনে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সংসদ ভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অধিবেশনকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবনজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। অধিবেশনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী জানান, ৩০ জানুয়ারি থেকে দ্বাদশ সংসদের মেয়াদ শুরু হচ্ছে। এই সংসদের সরকার ও বিরোধী দলের সব সদস্যকে অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত সংসদের থেকে এবার বেশি সময় অধিবেশন চলবে। প্রথমদিন ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। সংসদে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাতে ইতোমধ্যে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আসন বিন্যাসের কাজ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

একাদশ সংসদের মতো দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করবেন মাত্র ১১টি আসনে বিজয়ী জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। ইতোমধ্যে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিরোধী দলীয় নেতা, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণ ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তার বক্তব্যে প্রাধান্য পাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের নেতা শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সংসদ নেতার দায়িত্ব পালন করবেন। গত ১০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। এই সংসদে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, কল্যাণ পার্টি একটি এবং স্বতন্ত্র সদস্যরা ৬২টি আসন পেয়েছে। এবারই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিরোধী দলের থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সংখ্যা প্রায় ছয়গুণ বেশি। গত রোববার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে কার্যকর করতে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্ররা সংরক্ষিত নারী আসনের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দেন।

সংসদ সচিবালয় জানায়, অধিবেশনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য সংসদের টানেল ও ড্রাইভওয়েতে যেকোনো ধরনের গাড়ি রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে দর্শনার্থীদের মোবাইল বাইরে রেখে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি মোবাইল বিশেষভাবে পরীক্ষার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসার চেয়ার ঠিক আছে কি না তাও পরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন কক্ষের সব মাইক্রোফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন চলাকালে সব লিফট ত্রুটিমুক্ত রাখতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদ ভবন ফুলসহ বিভিন্ন গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। অধিবেশন চলাকালে অক্সিজেন সুবিধাসহ সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখতে বলা হয়েছে। সংসদ লবিতে একজন ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকবে। এছাড়া সংসদ অধিবেশন ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করতে সংসদ সদস্যদের জন্য ‘শর্ট ম্যাসেজ সার্ভিস’ নামে একটি সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

সচিবালয় কর্মকর্তারা জানান, নতুন সংসদের প্রথম দিনের অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, দেশ-বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং ভিআইপিদের আত্মীয় স্বজনসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি উপস্থিত থাকবেন। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সংগৃহীত তালিকা চূড়ান্ত করে আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমন্ত্রণপত্র ছাড়া কোনো অতিথি ওই দিন সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না।

সংসদ নেতার নির্দেশ ও স্পিকারের পরামর্শ অনুযায়ী চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী আসনবিন্যাস চূড়ান্ত করেছেন। আসন বিন্যাসে একাধিকবার নির্বাচিত, রাজনৈতিক দলে অবস্থান, ভোটের ব্যবধান, জনপ্রিয়তাসহ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বারবার নির্বাচিতদের তুলনামূলক সামনের দিকে আসন দেওয়া হলেও প্রথমবার নির্বাচিত হয়েও সামনের সারিতে আসন পেয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

সর্বোচ্চ নয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড

সবচেয়ে বেশি নবমবার সংসদ সদস্য হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আর ৮ বার সংসদ সদস্য হয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া বর্তমান কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, মো. দবিরুল ইসলাম, মির্জা আজম ও বীর বাহাদুর উশৈসিং সাতবার নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সকলেই সামনের সারিতে আসন পেয়েছেন।

মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে আসছে নতুন আইন : আইনমন্ত্রী

জাতীয়, 25 February 2024, 398 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে সংসদে নতুন আইন আসছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, কিছু আইন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সংসদে আসবে। তার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ নয়, মিথ্যা তথ্য ও মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যাতে বন্ধ করা যায়, সে ব্যবস্থা নেবে সরকার।

আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে সম্পূরক প্রশ্নের সুযোগ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার তার প্রশ্নে বলেন, অনেক অনলাইন সংবাদমাধ্যম মিথ্যা সংবাদ করে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। নানা অপপ্রচার করে। এগুলো বন্ধে আইন করা হবে কি না?

জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে বলা আছে, মৌলিক অধিকারের মধ্যে বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। সেই নিরিখে এবং সেটাকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে আইন প্রণয়ন করতে হয়।

আইন অলরেডি একটা আছে, যেটা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। তবে আমি সংসদ সদস্যকে জানাতে চাই, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং আরো কিছু আইন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সংসদে আসবে। তার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ নয়, মিথ্যা তথ্য এবং মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যাতে বন্ধ করা যায়, সে ব্যবস্থা সরকার নেবে। তবে ওই আইন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কোনোভাবে সরকার খর্ব করবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সারা দেশের অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো নিবন্ধনের জন্য সরকার রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু করেছে। তথ্য অধিদপ্তর থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ২০৮টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ১৬৮টি দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টালকে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের বিষয়টি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে আরো অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

একই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে অন্য অনলাইন পোর্টালগুলো নিবন্ধনের আওতায় এনে সরকারিভাবে নজরদারি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এ ছাড়া দেশের অনিবন্ধিত কোনো অনলাইন সংবাদপত্রে বা অনলাইনভিত্তিক পোর্টালে দেশবিরোধী সংবাদ প্রচার বা মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেলে তা বন্ধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।