চলারপথে রিপোর্ট :
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, বাজার মনিটরিংসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আখাউড়ার শিক্ষার্থীরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে প্রশাসন নিরব হয়ে যায়। থানা ভবনের বাইরে আসছে না পুলিশ।
এ অবস্থায় দেশের প্রয়োজনে মাঠে নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আখাউড়ায় স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শহরের ব্যস্ত সড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, বাজার মনিটরিংসহ নানা কাজে করছে শিক্ষার্থীরা। পরিদর্শন করছে সরকারি-বেসরকারি অফিস ও হাসপাতাল।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ডসহ পৌরসভার কাউন্সিলদের সাথে কথা বলেছে শিক্ষার্থী। নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখতে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করছে যানবাহন। নেই যানজট। চালক ও গাড়ির মালিককে ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালাতে আহবান জানাচ্ছেন ছাত্ররা। হেলমেট না থাকলে মোটরসাইকেল আরোহীকে ৫ মিনিট দাঁড় করিয়ে ৫ মিনিটের প্রতীকি শাস্তি নিতে হয় মোটর সাইকেল আরোহীকে।
ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও রয়েছে ট্রাফিকের ভূমিকায়। শুধু তাই নয় আন্দোলনে ভাংচুর হওয়া মালামাল পরিস্কার করেছে ছাত্ররা। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ, রেলওয়ে স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করেন অগ্নিবীণা রেলওয়ে ম্ক্তু স্কাউট ও সূর্য সৈনিক মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সদস্যরা। কলেজ ছাত্র তাহসিন বলেন, আবু সাঈদ, মুগ্ধরা জীবন দিয়ে আমাদেরকে নতুন দেশ দিয়ে গেছে। এবার সেই দেশকে নতুনভাবে আমরা গড়ে তুলব।
স্টাফ রিপোর্টার:
গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে শুনানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আগামী ৮-৯ জানুয়ারি রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনের শহীদ একে এম শামসুল হক খান অডিটরিয়ামে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি বিইআরসি সচিব ব্যারিস্টার খলিলুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিদ্যুৎ বিতরণ (খুচরা) ট্যারিফ প্রবিধানমালা, ২০১৬ অনুযায়ী বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) এবং নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) বিদ্যুতের খুচরা ট্যারিফ পুনর্র্নিধারণের জন্য কমিশনে প্রস্তাব/আবেদন দাখিল করেছে। ওই প্রস্তাব/আবেদনসমূহ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কমিশনের মাধ্যমে গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ইতোমধ্যে কমিশন গ্রহণ করেছে। শুনানিতে আগ্রহী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে আগামী ১ জানুয়ারির মধ্যে শুনানি-পূর্ব লিখিত বক্তব্য/মতামত কমিশনে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য কমিশনে নাম তালিকাভুক্তির জন্যও অনুরোধ করেছে বিইআরসি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা উল্লিখিত তারিখে অনুষ্ঠেয় শুনানিতে অংশগ্রহণপূর্বক বাবিউবো, বাপবিবো, ডিপিডিসি, ডেসকো, ওজোপাডিকো এবং নেসকোর বিদ্যুতের খুচরা ট্যারিফ পুনর্র্নিধারণের প্রস্তাব/আবেদন বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী তথ্য-উপাত্ত ও সংশ্লিষ্ট দলিলাদি উপস্থাপন করতে পারবেন।
গত ২১ নভেম্বর পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ানো হয়। ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৩ পয়সা বাড়ানোর ঘোষণার ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর খরচ বেড়ে গেছে। এর পরই বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর জন্য আবেদন করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২২জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। আজ ২১ মে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত দুই উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে এসব কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের শিমরাইল সাতপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট প্রদানের প্রচেষ্টায় ১ জনকে তিনদিন ও অপর ১জনকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এছাড়া নাবালক প্রমাণিত হওয়ায় অপর ১ জনকে মুচলেকার মাধ্যমে বাবার জিম্মায় প্রদান করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় কসবা উপজেলার আকছিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোঃ সজিব (২২) নামে এক জাল ভোটারকে ৭দিনের কারাদণ্ড ও এক প্রার্থীর এজেন্ট মোঃ আমজাদকে (৪০) পাঁচদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
উপজেলার কুটি ইউনিয়নের কুটি অটল বিহারী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ায় পারভেজ মিয়া (২২) নামের একজনকে ৫দিনের, বিনাউটি ইউনিয়নের জামিয়া ছানি ইউনুছিয়া মাদরাসা ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ভোট দিয়ে সিল দেয়া ব্যালটের ছবি তোলায় সাইফুল ইসলাম, মোঃ শাকিল, মোঃ রহমতুল্লাহ ও মোঃ রাসেল নামের চারজনকে তিনদিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড, বাদৈর ইউনিয়নের মান্দারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুইজনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের হাতুরাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র জাল ভোট দেয়ায় মোঃ আমানুল্লাহ, মোঃ আলম, মোঃ নূরে আলম, মোঃ বাতেন মিয়া, আবু নাইম, জাবেদ মিয়া, ওবায়দুল হক, নূর আলম ও মোঃ পারভেজকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে আখাউড়ায় শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ (পুরাতন ভবন) পুরুষ ভোট কেন্দ্রের দুই নম্বর ভোটকক্ষের গোপন কক্ষে ঢুকে অন্য ভোটারের ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগে মাইক প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাবুদ্দিন বেগের পোলিং এজেন্ট মাহবুব মিয়াকে সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ওই কেন্দ্রে থাকা থাকা সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল আলীকে দায়িত্ব থেকে থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এদিকে বিকেলে আখাউড়া ছতুরার চান্দপুর স্কুল এন্ড কলেজ ভোট কেন্দ্রে অবৈধভাবে গোপনকক্ষে গিয়ে অন্যের ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগে সিয়াম চৌধুরী (২০) নামের এক তরুনকে দন্ডবিধির ১৭১ (চ) ধারায় ৭দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত আখউড়া ও কসবা উপজেলায় ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহন চলাকালে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভিন্ন কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় পানিতে ডুবে তানভীর আহমেদ নামে ১৮ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৮ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত তানভীর আহমেদ নূরপুর গ্রামের জুয়েল মিয়ার ছেলে। মৃত শিশুর চাচা মো. দুলাল মিয়া বলেন, তানভীর দুপুরে বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। খেলার ফাঁকে বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে যায়। তাকে না পেয়ে আমরা আশপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। এরইমধ্যে ওই পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখা যায় তানভীরকে। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ভাতিজাকে মৃত ঘোষণা করে।
আখাউড়া উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুৎফুর রহমান বলেন, শুক্রবার দুপুরে তানভীর আহমেদ নামে ১৮ মাসের এক শিশুকে স্বজনেরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে আনার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মানবিক কারণে ময়নাতদন্ত ছাড়াই শিশুর লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের সব কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। ২০ মে শনিবার যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
একই বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ও জেলা যুবলীগকে না জানিয়ে ঘোষণা করা পাঁচ ইউনিয়ন কমিটি বাতিল করে পূর্বের কমিটি পুনর্বহাল করা হয়েছে৷
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রের অনুমতি ব্যতীত গঠনতন্ত্র বিরোধী, ভিত্তিহীন, অনৈতিক ও আখাউড়া পৌরসভা, উত্তর ইউনিয়ন, দক্ষিণ ইউনিয়ন, মনিয়ন্দ, মোগড়া ও ধরখার ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়ন কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জেলা যুবলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অবগত নন।
গঠনতন্ত্রের ২৩ ধারা মোতাবেক যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশে আখাউড়া উপজেলায় নিয়মবহির্ভতভাবে আখাউড়া পৌরসভা ও পাঁচ ইউনিয়ন কমিটি বাতিল করে পূর্বের কমিটি পুনর্বহাল করা হলো।
এরআগে, ২ মে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক তাকজিল খলিফা কাজল, যুগ্ম-আহ্বায়ক এ কে এম আতাউর রহমান নাজিম ও আব্দুল মমিন বাবুলকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মৌসুমে আখাউড়ায় বাণিজ্যিকভাবে বাদাম চাষ হয়েছে। এখন জমি থেকে বাদাম তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে আর সঠিকভাবে পরিচর্যার কারণে এবার বাদামের ফলন ভালো হয়েছে।
জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউপির বেশ কয়েকটি গ্রামে নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে কৃষকরা বছরের পর বছর বাদম চাষ করে আসছেন। স্থানীয় বাজারে বাদামের চাহিদাও রয়েছে বেশ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ ফসল চাষের প্রতি উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। উৎপাদিত বাদাম স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে বাদাম কিনে নিয়ে যান।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে বাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। সবচেয়ে বেশি বাদামের চাষ হয়েছে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউপির কর্মমঠ, হারকোট, মিনারকোট, ধর্মসগর, ঘাঘুটিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এখানকার বেশিরভাগ এলাকা উঁচু হওয়ায় জমিতে সবজি চাষ করা হতো। স্বল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এখন চাষিরা বাদাম চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাদাম আবাদ করতে প্রতি এক বিঘা জমিতে প্রায় ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৪ থেকে ৫ মণ বাদাম। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার টাকায়।
মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্মমঠ গ্রামের কৃষক মো. সোহাগ সরকার বলেন, এ গ্রামে প্রায় ৩০ বছর ধরে উচ্চ ফলনশীল দেশীয় জাতের বাদাম চাষ করছেন কৃষকরা। এ মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বাদাম আবাদ করি। হালচাষ, বীজ রোপণসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রতি বিঘা প্রায় ৭ হাজার টাকা। তবে বাদাম চাষে কোনো কীটনাশক দেওয়া হয় না। এরই মধ্যে বাদাম তোলার কাজ শেষ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে প্রায় ৫ মণ। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার টাকা দরে। বাদাম বিক্রি নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না। কুমিল্লা, ভৈরবসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার পাইকাররা এসে বাদাম ক্রয় করে নিয়ে যায়। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এ মৌসুমে প্রায় ৬০ লাখ টাকা আয় হবে।
কৃষক মো. মামুন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আবাদ করছি। চলতি মৌসুমে প্রায় দুই বিঘা জমিতে আবাদ করা হয়। এরই মধ্যে বাদাম তোলার কাজ শুরু হয়েছে। গত বছর থেকে এবার তুলনামূলক ফলন ভালো হয়েছে। গ্রামের জমি বাদাম চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাদাম তোলার পর কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পরবর্তীতে চাষাবাদ করা হবে। বাদাম বপন থেকে উৎপাদন পর্যন্ত তিন মাস সময় লাগে। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে সময় অনেক কম লাগছে। কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
ইউপি সদস্য মো. হামদু মিয়া বলেন, এ বছর প্রায় ২বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করা হয়েছে। বাদাম মাঠ থেকে তুলে বাড়ি আনা হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বাদামের ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি বলেন, জায়গা উঁচু হওয়ায় ধানের ফলন তেমন ভালো হয় না। আমাদের গ্রামটি বাদামের গ্রাম হিসেবে বেশ পরিচিত লাভ করেছে। আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, বাদাম চাষে স্থানীয় কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বাদাম চাষে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।