চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার হল রুমে আজ ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল শিক্ষার্থীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে ১৩ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেন এবং তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাবি গুলো সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। দাবি গুলো কয়েকটি হলো-
(১) নবীনগর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেশ করে আগামি ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে প্রত্যাহারের দাবি তুলেন একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
(২) এখন থেকে নবীনগর থানার ওসির অফিস রুম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস রুম ও ভূমি অফিসে বিনা প্রয়োজনে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় কোন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী ও কোন সাংবাদিক অবস্থান করতে পারবে না।
(৩) ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করে তাদের সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
(৪) নবীনগরের সকল সরকারি অফিস কে দালাল মুক্ত করতে হবে এবং সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
(৫) জিপির নামে পরিবহণ সেক্টরের সকল চাঁদা বন্ধ করা সহ আরো অন্যান্য ১৩টি দাবি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মো: ফারুক আহমেদ, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সালেহ আহমেদ তানভীর, নবীনগর থানার নবাগত ওসি আফজাল হোসেন, সমাজকর্মী ও সাংবাদিক বৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর প্রেসক্লাবের সম্প্রসারিত কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ১৩ অক্টোব রবিবার দুপুরে ক্লাব কার্যালয়ে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম।
নবীনগর প্রেসক্লাব সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সোরাফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন।
বিশেষ অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আরজু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইলেকট্রনিকস মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি পীযুষ কান্তি আচার্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহির রায়হান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন নবীনগর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু কামাল খন্দকার।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নবীনগর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন মাইনু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট রাজিব আহসান চৌধুরী পাপ্পু, নবীনগর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি গোলাম হোসেন টিটু, নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম লিটন ও জালাল উদ্দিন মনির, সাপ্তাহিক মলয়ার প্রকাশক মোহাম্মদ হোসেন শান্তি, জহিরুল হক বুলবুল, সাইফুল আলম, মাজেদুল ইসলাম মাজেদ, মাহবুব মোর্শেদ, মেঠোপথ সংগঠনের সভাপতি ডিউক কাউছার আহম্মেদ প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দোয়া পাঠ করেন উপজেলা পরিষদ মসজিদের ঈমাম মোঃ রফিকুল ইসলাম আশরাফি।
এ সময় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা প্রেসক্লাব কার্যালয় সম্প্রসারণে অনন্য পদক্ষেপ ও ভূমিকা রাখায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। সভায় ভুয়া ও অপসাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।
চলারপথে রিপোর্ট:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর বাজারে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল তালের শাঁস বিক্রির ধুম। এদিকে বারছে বজ্রপাত, কমছে তাল গাছ। নবীনগর পৌরশহরের নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ রোড, উপজেলা গেইট, সরকারি কলেজ গেইট, সরকারি হাইস্কুল গেইট, বাজারের বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিন কাঁচা তাল নিয়ে বসছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি পিস তালের শাঁস (কাঁচা তাল) বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০ টাকা, এক কুড়ি তালের শাঁস ৪০০-৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যেখানে এক কুড়ি পাকা তাল ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ২১ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৭ হাজার ৫০০ টি তাল গাছ রয়েছে। এর মধ্যে শ্যামগ্রাম, রছুল্লাবাদ, রতনপুর, সাতমোড়া, লাউর-ফতেহপুর, বিটঘর, শিবপুর, বড়িকান্দি, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নে বেশী তাল গাছ রয়েছে। নবীনগর বাসিন্দা আব্দুল রহিম জানান- এখন আর আগের মত তাল পাওয়া যায় না। আগে রাস্তার পাশে তালের রস নিয়ে বসত, সেটি এখন আর দেখা যায় না। এখন কাঁচা তালের শাঁস খাচ্ছি। কিছু দিন পর এটিও আর খেতে পারব কিনা জানি না। কেননা যে ভাবে তালের গাছ কাটা হচ্ছে, তাতে বেশি দিন আর এ গুলো খাওয়া যাবে না। আগে এক হালি (৪টি) তাল কিনতে পারতাম ৫০-৮০ টাকায়, এখন ২০০ টাকায়ও মিলছে না। ক্রেতা মাজেদুল ইসলাম বলেন, তাল একটি মৌসুমী ফল, এটি অনেক সুস্বাদু ও উপকারী। তাল গাছ কমে যাওয়ায় আগের থেকে এখন দাম বেশী। নবীনগর পৌরসভার মাঝিকাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী আবুল মিয়া – এখন সরকারি হাইস্কুল গেটের পাশে প্রতিদিন তাল বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, আমি পাঁচ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। গত দুই বছর করোনার কারণে ভাল ভাবে ব্যবসা করতে পারিনি আশা করি এ বছর আমি স্বাবলম্বী হব। এ বছর তালের দাম বেশী । ১২ বছর ধরে নবীনগর সরকারি কলেজ গেইটে তালের ব্যবসা করেন আব্দুর মোতালিব, তিনি বলেন- তখন তালের কুড়ি ছিল ১৭০ টাকা। এরপর বাড়তে বাড়তে বর্তমানে এক কুড়ি তাল বিক্রি হচ্ছে ৪০০/৫০০ টাকায়। আমি প্রতিটা গাছ কিনেছি ২৫০০ টাকায়। সেই গাছের তাল বিক্রি করছি ৬৫০০-৭৫০০ টাকায়। প্রতিটা গাছে ৩০০-৩৫০০ টাকা লাভ হয়। নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকতা জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, তালের শাঁস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর, তালের রসও অনেক উপকারী। তালের রস দিয়ে গুড়, মিছরি তৈরি হয়। বৈশ্বিক আবহাওয়ার কারণে তাল গাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাল গাছ বাড়ানোর জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। নবীনগর কৃষি অফিস জানায় “দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা” মন্ত্রাণালয় একটি লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে বজ্রপাত সহনশলী এই তাল গাছের বীজ ও চারা রোপণ করার উদ্দোগ নিয়েছে। দিন দিন তালগাছ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ তালগাছের গুরুত্ব না বুঝে কেটে ফেলছে। যেহেতু তাল গাছে বছরে একবার ফলন হয়, লাভ কম, সে কারণে তালগাছ কেটে ফল বা কাঠের গাছ রোপন করছে, সে কারণে তালগাছ কমে যাচ্ছে। তালগাছে ফলন কম হলেও দুর্যোগ (বজ্রপাত) থেকে মানুষকে রক্ষা করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ঘুস না দেওয়ায় আদালতে মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছির আলমের প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৩ আগস্ট বুধবার নবীনগর উপজেলার রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের কালঘরা বাজারে লহরি-কালঘরা সড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, জেলে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে এসআই বাছির আলম ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। এনিয়ে আসামিপক্ষের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যানের সামনে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। পরে আরও টাকা দাবি করলে সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় আদালতে তদন্ত বিহীন প্রতিবেদন দাখিল করে।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা হবি মিয়া, রুবেল মিয়া, খলিল মিয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম খান, ফয়সাল চৌধুরী,শাহীন আহমেদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার মনির জানান, আমার সামনে কোনো ধরনের ঘুষ লেনদেন হয়নি।
বিষয়টি অস্বীকার করে নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছির আলম বলেন, অভিযোগ নেওয়ার দায়িত্ব ওসি সাহেবের। আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমি শুধু তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
গত ৩০ জুলাই কালঘড়া হাফিজ উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক সুমন আহমেদের অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে স্থানীয় ফয়সাল চৌধুরীসহ তিন শতাধিক অভিভাবক-শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল শেষে ফয়সাল চৌধুরীসহ কয়েকজন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষক সুমনের প্রত্যাহারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ করতে যান। সেখানে শিক্ষক সুমন আহমেদ অভিযোগ দিতে যাওয়া ফয়সাল চৌধুরীসহ সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এর জের ধরে ফয়সাল চৌধুরী ও শিক্ষক সুমন আহমেদ নবীনগর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন। অভিযোগগুলোর তদন্তের দায়িত্ব পান নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছির আলম। অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে থাকা নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) বাছির আলম কোনো ধরনের তদন্ত না করে ২০ আগস্ট সুমন আহমেদের অভিযোগটির প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করেন। কিন্তু তিনি ফয়সাল চৌধুরীর অভিযোগটির কোনো তদন্তই করেননি। তাই পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ফয়সাল চৌধুরী। এতে সুষ্ঠু তদন্ত করে এস আই বাছির আলমকে প্রত্যাহারের দাবি করা হয়।