চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলা করেছে জুয়াড়িরা। হামলায় তিন যুবক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌর শহরের খড়মপুর এলাকায় জুয়া খেলায় বাধা দেওয়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন খড়মপুর গ্রামের আশিক খাদেম (৩০), নারায়ণপুর গ্রামের রিফাত (২৫) ও উমেদপুর গ্রামের আমজাদ (২৮)। তারা সবাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ছাত্র আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে খড়মপুর এলাকার রেললাইনের পশ্চিম পাশে জুয়ার আসর বসিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা পয়সা লুটে নিচ্ছে একটি চক্র। বিষয়টি জানতে পেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিছু সচেতন ছাত্র ও স্থানীয় যুবকরা ওই এলাকায় যায়। জুয়াড়িদেরকে জুয়া বসানোর কারণ জানতে চাওয়ার সাথে সাথে তাদের ওপর হামলা করা হয়।
দুষ্কৃতিকারীরা ছাত্র-যুবকদেরকে এলোপাথারি মারধর করে ও ধারালো বস্তু দিয়ে আঘাত করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলায় আশীষ, রিফাত ও আমজাদসহ কয়েকজন আহত হয়। আহতদেরকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়া হয়। তবে আশঙ্কাজনক হওয়ায় আশীষ খাদেমকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আখাউড়া উপজেলার সমন্বয়ক মোঃ শাহরীয়ার হাসান বলেন, জুয়া বসানোর বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বাছির মিয়ার নেতৃত্বে তার সাঙ্গপাঙ্গারা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ব্যপারে আখাউড়া থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
আহত আশীষ খাদেমের বাবা কাজল মোল্লা খাদেম বলেন, আশীষের শরীরে ধারালো বস্তুর ৫/৬টি আঘাত রয়েছে। পিঠের আঘাতটি খুব গভীর। তার একটি অপারেশন হয়েছে। এখনও আশঙ্কামুক্ত নয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া সীমান্তে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) মিষ্টি উপহার দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আখাউড়া-আগরতলা চেকপোস্টের (নোম্যান্সল্যান্ড) শূন্য রেখায় সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চেকপোস্ট ক্যাম্প কমান্ডারদ্বয়।
এ সময় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা আইসিপি বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার মো. জাবেদ সশীলের হাতে মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেন আখাউড়া চেকপোস্ট ৬০ ব্যাটালিয়নের বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মো. শাহ আলম। এ ছাড়া দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কমান্ডাররা কুশল বিনিময় করেন। এ সময় উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মো. শাহ আলম বলেন, সৌহাদ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখতে প্রতিবছর শারদীয় দুর্গোৎসবে একে অপরকে মিষ্টি বিতরণ করে আসছে বিজিবি ও বিএসএফ। এতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্ববোধ আরো সুদৃঢ় হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় জিরাভর্তি একটি ভারতীয় ট্রাক আখাউড়া স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি পণ্যের এটিই প্রথম চালান। এর মধ্য দিয়ে বন্দরের আমদানি বাণিজ্য স্বাভাবিক হলো। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৫ টন জিরা আমদানি করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনো পণ্য আমদানি হয়নি। সোমবার মেসার্স পড়শী ইমপেক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ৫ টন জিরা আমদানি করেছে।
ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এম. টি. ই. এক্সিম প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি কেজি ৩ দশমিক ৪৯ ডলার মূল্যে এসব জিরা রফতানি করেছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান জানান, দীর্ঘদিন ধরে বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি অনিয়মিত ছিল। তবে চলতি অর্থবছরে প্রথমবারের মতো জিরা আমদানি হয়েছে। এর মাধ্যমে আমদানি বাণিজ্য আবারও সচল হলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি আখাউড়া শাখা কর্তৃক ১৫০ জন দারিদ্র্য পীড়িত অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ৩ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি আখাউড়া শাখা মিলনায়তনে আয়োজিত কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উক্ত শাখার ব্যবস্বাপক মো: ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস ম্যানাজার মো: আবুল কালাম আজাদ।
এসময় আখাউড়া স্থলবন্দের বিশিষ্ট ব্যবসায়ি মো: নাজিরুল হক নাজির, রাজীব ভূঁইয়া, ফয়সাল আহমেদ, শাহ আলম শান্তি মিয়া, সোহেল মিয়া, ব্যাংক কর্মকর্তা, মো: ইমরান ভূঁইয়া, মো:খালেদ মাহমুদ মুন্না, মো: তানভীর আহমেদ শ্যামল এবং ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
আখাউড়া উপজেলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত গ্রেফতার হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার তন্তুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আজ ২৭ এপ্রিল রোববার দুপুরে গণমাধ্যমকে পুলিশের দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাত পোনে ২টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের তন্তর ব্রিজ এলাকায় ডাকাত বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় দুইটি ছুরি, একটি চাইনিজ কুড়াল ও একটি হাতুরীসহ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে হাতেনাতে মো: ফাহাদ (৩২) ও রাফিকুল (২৮) নামে দুই ডাকাতকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ডাকাত মো: ফাহাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার আহরন্দ গ্রামের হাসান আলীর পুত্র ও রাফিকুল আখাউড়া উপজেলার ভাটামাতা গ্রামের সাইদ মিয়ার পুত্র।
পুলিশ আরো জানায়, ১২/১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্রসহ সড়ক পথে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। অস্ত্রসহ দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আজ দুপুরে গ্রেফতারকৃত দুই ডাকাত সদস্যকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা হয়েছে থানায়।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন জানান, ডাকাতসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। যারা পালিয়েছে তাদের গ্রেফতার করতে বিশেষ অভিযান অব্যাহত বলেও তিনি জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
৩ টা কেমু দিয়েছি। টাকার জন্য আর দিতে পারছি না। ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা দিয়েছে। তাও করাতে পারছি না। সারা শরীর ব্যাথায় অস্থির হয়ে যায়। বালিশ চাপা দিয়ে শুয়ে থাকি। টাকার অভাবে ওষুধ খেতে পারছি না। স্বামী নাই। ছেলেও নাই। আয় রোজগার করার মত কেউ নাই।
এভাবে নিজের অসহায়ত্বের কথাগুলো বলছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত পঞ্চাশোর্ধ জোসনা বেগম। তিনি আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত আরু মিয়ার মেয়ে। বিগত ২ বছর ধরে জটিল ক্যান্সার রোগে ভুগছেন। প্রতিবেশি ও দুই ভাইয়ের সহযোগিতায় কোন রকমে দিনাতিপাত করছেন।
বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না। সমাজের হৃদয়বান মানুষের সাহায্যের দিকে তাকিয়ে আছেন এই অসহায় নারী।
সরজমিনে সোমবার সকালে দরুইন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় দু’চালা ছোট্ট একটি টিনের ঘরে শুয়ে আছেন জোসনা বেগম। শরীর অনেকটা শুকিয়ে গেছে। মাথার চুল কমে গেছে। চুলের রং লালচে হয়ে গেছে। বুকের হাড় গুলো যেন শরীর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
জোসনা বেগম বলেন, নোয়াখালির দুলাল মিয়ার সাথে বিবাহ হয়। স্বামী সাগরে মাছ ধরার কাজ করতো। স্বামীর সাথে চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ছোট্ট দুটি মেয়ে নিয়ে সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। ৩০ বছর আগের কথা। হঠাৎ একদিন জাহাজ ডুবে স্বামী মারা যায়। স্বামীর লাশটি খোঁেজ পাইনি। স্বামী মারা যাওয়ার পর শশুর-শাশুড়ী ঘর থেকে বের করে দেয়। ছোট দুটি মেয়ে ও গর্ভের একটি সন্তান নিয়ে অথৈ সাগরে পরে যাই। বাসা বাড়িতে কাজ করেছি। গার্মেন্টস্-এ চাকরি করে ৩টা মেয়েকে লালন পালন করেছি। গত ৩ বছর আগে করোনার সময় কাজ কাম চলে যাওয়ায় বাড়িতে চলে আসি। এর কিছু দিন পর আমার ক্যান্সার ধরা পরে। এরপর থেকে অসুস্থতায় ভুগছি।
কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, বহু কষ্ট করে বাবা হারা মেয়েগুলোকে বড় করে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার কপালে সুখ সয় না। ছোট মেয়ের জামাই একটি সন্তানসহ তাকে রেখে আরেকটি বিয়ে করেছে। এখন মেয়ে ও নাতি আমার সাথেই থাকে। নিজেই খেতে পারি না। তারমধ্যে দুটি মানুষ আমার উপর। আমি অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না।
তিনি বলেন, আল্লাহ ছাড়া দুনিয়ায় আমার আর কেউ নাই।দরুইন গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ অহিদ মিয়া বলেন, জোসনা বেগম ক্যান্সার আক্রান্ত। তার চিকিৎসা করার মত সামর্থ্য নাই। সে খুব অসহায় অবস্থায় আছে। হৃদয়বান মানুষ যদি তাকে আর্থিক সহযোগিতা করে পাশে দাঁড়ান। তাহলে হয়তো তিনি চিকিৎসাটুকু করতে পারবে।
জোসনা বেগমের মেয়ে ঝর্ণা বেগম বলেন, বাবা নাই। নানা-নানিও নাই। একটি শিশু সন্তান নিয়ে মায়ের কাছে আশ্রয় নিয়েছি। মায়ের কিছু হয়ে গেলে কোথায় যাবো। তিনি সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে তার মায়ের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতার আবেদন করেন। তার বিকাশ নম্বর ০১৮৭৮৮৬২৭১১