অনলাইন ডেস্ক :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের বিভিন্ন জেলার চলমান আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সম্মিলিতভাবে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে। সবার সহায়তায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দুর্গম এলাকাগুলো হতে মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে।
আজ ২৩ আগস্ট শুক্রবার হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতের উজান থেকে সতর্কতা ছাড়া পানি ছাড়া নিয়ে কথা বলা হবে।
উজান থেকে আসা পলির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। অবৈধভাবে ড্রেজিংকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সব বেড়িবাঁধ যথাসময়ে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ সব কাজে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ত করার জন্য তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বন্যা পরিস্থিতি, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের অবস্থা এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত হন। এ সময় স্থানীয় প্রশাসন, জেলার কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিক, সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিল।
এর আগে হবিগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে হবিগঞ্জ সার্কিট হাউসে স্থানীয় প্রশাসন, গণমাধ্যম ও সুধীসমাজের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপদেষ্টা। এ সময় তিনি আশ্রয়কেন্দ্রে আগত মানুষের সেবায় সরকারের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর পানিসম্পদ উপদেষ্টা চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পরিবেশ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আরও ১৮ দিন সময় বাড়ানো হয়েছে আগামী হজের নিবন্ধনের। ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে আজ ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
আগের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী হজের নিবন্ধন আগামী রোববার (৩১ ডিসেম্বর) শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৪৭৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২২ হাজার ৫৪৯ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৯২৯ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটা এক লাখ ১৭ হাজার জন।
সময় বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি, হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় হতে হজ চুক্তির আগেই হজযাত্রীর চূড়ান্ত সংখ্যা জানানোর তাগিদ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ বিবেচনায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। এসময়ের মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন বা প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করা যাবে।
প্রাথমিক নিবন্ধন করা হলে প্যাকেজের অবশিষ্ট মূল্য আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবশ্যিকভাবে একই ব্যাংকে জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় হজে যাওয়া যাবে না এবং প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করায় ভাইদের ওপর প্রচণ্ড অভিমান জমে মুজিবুর রহমানের। সেই অভিমান থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এই বাসিন্দা। এরপর একে একে ১৬টি বছর জঙ্গলেই কাটিয়ে দিয়েছেন। সেখানে জরাজীর্ণ এক ডেরা তৈরি করে শিয়াল-সাপ-বিচ্ছুর সঙ্গে অর্ধাহার-অনাহারে কাটিয়েছেন বন্য জীবন।
মুজিবুর রহমানের স্বেচ্ছা নির্বাসনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এরপর মুজিবুর রহমান শুনিয়েছেন তার মানবেতর জীবনযাপনের গল্প।
উপজেলার ১০নং গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের মাশিকাড়া গ্রামের উত্তরপাড়ার পাশের একটি জঙ্গলে মুজিবুর রহমানে দেখা মিলেছে। বিশাল জঙ্গলের ঝোপঝাড় পেরিয়ে মধ্যভাগে গিয়ে দেখা যায় পলিথিনের ছাউনির একটি ছোট ডেরায় বসে আছেন ৬০ বছর বয়সী মুজিবুর রহমান।
প্রশাসনের লোকজন আসার খবরে ডেরা থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। এরপর জানিয়েছেন, সাজানো সংসার ধ্বংস হবার গল্প। তিনি জানান, সৎ ভাইরা পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করায় অভিমানে জঙ্গলেই ঠাঁই নিয়েছেন তিনি। জঙ্গলে থাকায় পাততে পারেননি সংসারও।
মুজিবুর রহমান আরও জানান, তার বাবা লাল মিয়ার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় সংসারের একমাত্র সন্তান তিনি। বাবার প্রথম সংসারে ফরিদুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম নামে তার দুই ভাই রয়েছে। বাবা লাল মিয়া রেলওয়েতে চাকরি করতেন। বড় ভাই ফরিদুল আলম পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি করতেন।
ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি আরও জানান, তিনি কাঁচপুর মালেক জুট মিলে চাকরি করে সৎ ভাই জহিরুল ইসলামকে বিএ পাশ করান। সেই জহিরুল ইসলামই তার পৈত্রিক সম্পত্তির ১০৫ শতাংশ জমির ৮৫ শতাংশ লিখে নেয়। এরপর তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ভাইয়ের ওপর রাগে অভিমানে ২০০৭ সাল থেকে জঙ্গলে ডেরা বানিয়ে সেখানে ঠাঁই নেন তিনি।
মুজিবুর রহমান জানান, বিয়ে করে বউ রাখার ঘর নেই, তাই বিয়েটাও করতে পারেনি। অর্ধাহারে, অনাহারে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে, আর শেয়ালের হাঁকডাকের মধ্যেই খুপড়ির মধ্যে পড়ে থাকতেন তিনি।
তিনি বলেন, কখনও ভাত আর আলু সিদ্ধ করে লবণ-মরিচ দিয়ে, কখনও শুকনো খাবার খেয়ে থেকেছি। শিয়াল-সাপ-বিচ্ছু কখনও আমার ক্ষতি করেনি। ক্ষতি যা করার মানুষ করেছে।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য মুজিবুর রহমানের ভাইদের পাওয়া যায়নি। তবে মুজিবুরের ভাই ফরিদুল আলমের ছেলে আল-আমিন বলেন, আমার কাকা খুব অভিমানী। আমার দাদার জায়গা জমি এখনও ভাগ হয়নি। তবে জহিরুল ইসলাম চাচা কিছু জমি তার নিজের নামে লিখে নিয়েছে। মুজিবুর চাচার পাওনা বুঝিয়ে দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, মজিবুর রহমানকে তার পৈত্রিক জমির কাগজপত্র নিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলা হয়েছে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে তার পাওনা জমি তাকে উদ্ধার করে দেওয়া হবে। অন্যথায় তার আবাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ তার চোখের চিকিৎসা করাতে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। একই সঙ্গে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করলো জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে কয়েকটি শহীদ পরিবারের সদস্যরা। আজ ৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে কয়েকটি শহিদ পরিবারের সদস্যরা দেখা করেন।
বৈঠকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন, আহত ও শহীদ পরিবারের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও স্বীকৃতি, আর্থিক সহযোগিতা ও পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা আজকের বৈঠকে শহিদ পরিবারের প্রত্যাশার কথা শুনেছেন এবং সরকারের চলমান কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন।
এসময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, জুলাই অভ্যুত্থানে অন্যতম সংগঠক সারজিস আলম উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার ধানমন্ডির সুলতানা কামাল উইমেন্স ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী।
উদ্বোধনী বক্তব্য তিনি বলেন, ‘কর্মজীবনে আমি একজন সরকারি কর্মচারী ছিলাম।
আজ আমি অবসরপ্রাপ্ত এবং সরকারের একজন মন্ত্রী। এখানে যারা উপস্থিত আছেন তারা অনেকেই আমার প্রত্যক্ষ সহকর্মী। অনেকে অনেকে আবার কর্মক্ষেত্রে আমার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন।’
অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে রাজধানীর সুলতানা কামাল উইমেন্স ক্রীড়া কমপ্লেক্সে আয়োজিত এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেশের প্রতিথযশা প্রবীণ কর্মকর্তাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়।
প্রবীণ এই কর্মকর্তাদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নির্মল আনন্দ উপভোগ করেন। প্রতিযোগিতার শুরুতেই শিশুদের মোরগ লড়াই এবং পঁয়ষট্টি বছরের অধিক বয়স্কদের বেলুন ফাটানো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া স্কিপিং, বালিশ বদল, মেধা পরীক্ষা, ভারসাম্য দৌড়, রশি টানাটানি ও টেনিস বল নিক্ষেপসহ মোট ১৮টি ইভেন্টে পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক পৃথক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সমিতির পতাকা উত্তোলন করেন সাবেক সচিব ও সমিতির মহাসচিব আবু আলম মো. শহিদ খান এবং ক্রীড়া পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া।
অনলাইন ডেস্ক :
নিজ কার্যালয়ে সালিশে বসে এক আইনজীবীকে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগে ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. এনামুল কবিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ ১৯ জুন সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ শাখা-১ থেকে এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. এনামুল কবিরকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী ১৮ জুন থেকে তাকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার আদেশ দেওয়া হলো। সাময়িক বরখাস্তকালে তিনি সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা আবশ্যক ও সমীচীন বিবেচিত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
গত ১৫ জুন ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবীকে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ আনা হয় অতিরিক্ত ডিআইজি এনামুল কবিরের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী আইনজীবী আশিকুর রহমান নিজেই এ অভিযোগ তোলেন। এ ঘটনায় আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা করে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দেয়। দেশের বিভিন্ন স্থানেও একই দাবিতে আইনজীবীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদলিপি দেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইনজীবী সমিতির সদস্য আশিকুর রহমান তার ভাই নেত্রকোনা থানায় কর্মরত পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে অভিযোগ করেন। বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) এনামুল কবিরের কার্যালয়ে অভিযোগের শুনানি নেওয়া হয়।
এ সময় অতিরিক্ত ডিআইজি আশিকুর রহমানের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তুই বাঁকা হয়ে ঘাড় ত্যাড়া করে দাঁড়িয়েছিস কেন? তুই কার সামনে দাঁড়িয়েছিস জানস?’ এ কথা বলেই কাছে গিয়ে তিনি চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন। একপর্যায়ে আশিকুর রহমান নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন অতিরিক্ত ডিআইজি এনামুল কবির। তিনি কনস্টেবলের মাধ্যমে রড এনে আশিকুরের হাতে ও পায়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। পরে আশিকুর রহমান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনামুল কবির জানিয়েছিলেন, ‘অভিযোগ শুনানির জন্য আশিকের পরিবারকে ডাকা হলে এক পর্যায়ে দুই ভাই একদিকে আর পাঁচ ভাই ও তাদের মা অন্যদিকে অবস্থান নেন। সেখানেই ঝগড়া করায় প্রথমে থাপ্পড় ও পরে পুলিশের বেত দিয়ে বাড়ি দিয়েছিলাম। রড দিয়ে মারধর করা হয়নি।’
এ ঘটনায় আশিকুর রহমানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনজীবী সমিতি ১৮ জুন রবিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজির স্থায়ী বরখাস্ত চেয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছিল। রবিবার পুনরায় বৈঠক করে আল্টিমেটামের সময় আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ায় জেলা আইনজীবী সমিতি।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ নিয়ে গত শুক্রবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আইনজীবী আশিকের ভাই গোলাম মোহাম্মদ সোহেল পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।
ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, ‘সরকার নিজস্ব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাময়িক বরখাস্ত করছে। আমরা এতে খুশি।’
তবে ভুক্তভোগী আইনজীবী আশিকুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তার স্থায়ী বরখাস্ত চাই এবং আইনজীবীবান্ধব আইন চাই। এটি কেবল আমার দাবি নয়, সারা দেশের আইনজীবীদের দাবি।’