অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাকে প্লাস্টিকের বোতলমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিতায় প্লাস্টিকের বোতলের পরিবর্তে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে কাচের জগ আর গ্লাস। এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। উপদেষ্টা পরিষদের সহকর্মী সদস্যদের প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে যমুনাকে প্লাস্টিকের বোতলমুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে প্লাস্টিকের বোতলজাত পানি ব্যবহার বন্ধ বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি আরো বলেন, প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি সম্ভব হবে না। তবে এই পরিবর্তনের পরে প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেছে।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ৪ ডিসেম্বর সোমবার ঝিনাইগাতী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহযোগীতায় মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করে।
দিনটি উপলক্ষে আজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমিটি ও ঝিনাইগাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড শ্রদ্ধাভারে শস্মরণ করবে বলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানায়।
পাক-হানাদার বাহিনী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালো রাতে যখন ঢাকার বুকে হত্যাযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই রাতেই ৩-৪৫ মিনিটে প্রেরীত স্বাধীনতার ঘোষনার টেলিগ্রাম ম্যাসেজ ঝিনাইগাতী ভি এইচ এফ ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌঁছে।
ম্যাসেজ পেয়েই ওয়্যারলেস মাস্টার জামান সাহেব তার অফিসের পিয়ন পাঠিয়ে শেষ রাতের দিকে আওয়ামী লীগ নেতা ফকির আ: মান্নানের বাসায় সংবাদ দেন।স্বাধীনতার ঘোষনার সংবাদ পেয়ে পরদিন ভোরেই অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ সকালে ছাত্র নেতা ফকির আ: মান্নান, হারুনুর রশিদ মাষ্টার, বাবু অনন্ত কুমার রায়, সেকান্দর আলী ফকির সহ অনেকেই ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌছান।
ইংরেজীতে লেখা টেলিগ্রাম ম্যাসেজটি পেয়েই নেতৃবৃন্দ তৎক্ষনাৎ তা শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দের কাছে প্রেরন করেন। ২৬ মার্চ সকাল থেকেই বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো ঢাকার সর্বশেষ সংবাদ কি তা জানার জন্যে শেরপুর শহরে মানুষ সমবেত হতে থাকে।
ঝিনাইগাতী ওয়্যারলেসে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ হাতে পেয়েই তা বাংলায় অনুবাদ করে শেরপুর নিউ মার্কেট মোড়ে জনতার স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশে পাঠ করে শুনানো হয়।
বঙ্গবন্ধুর পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষনার শ্রবণ করে সমবেত জনতা মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে শেরপুরের আকাশ বাতাস। ২৭ মার্চ সকালে শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ সর্বজনাব এডভোকেট আব্দুল হালিম সাবেক এমপি, মুহসিন আলী মাস্টার ও ছাত্র নেতা আমজাদ আলী ঝিনাইগাতী এসে পৌছেন।
ঝিনাইগাতীর নেতৃবৃন্দ তাদের অভ্যর্থনা জানান। ছাত্রনেতা ফকির আব্দুল মান্নানকে সঙ্গে নিয়ে তারা নকশি ইপিআর ক্যাম্পে যান। নকশি ক্যাম্পের সুবেদার হাকিম নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
দেশকে শত্রু মুক্ত করা সহ পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে শুরু হলো প্রতিরোধ সংগ্রাম। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে রাংটিয়া পাতার ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হয়। ট্রেনিং শেষে এসব স্বেচ্ছাসেবক সহ মুজিব বাহিনী ও ইপিআর সৈনিকদের নিয়ে সুবেদার হাকিম মধুপুরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
পরে তা পিছু হটে পুরাতন ব্র্হ্মপুত্র নদের চরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ২৬ এপ্রিল সুবেদার হাকিম এর খোলা জীপ এসে দাঁড়ায় ঝিনাইগাতী আমতলায়। সুবেদার হাকিম জনতাকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ জানিয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত ছিল। ২৭ এপ্রিল পাক বাহিনীরা বহর নিয়ে গোলা বর্ষন করতে করতে পৌছায় ঝিনাইগাতী বাজারে।
ঝিনাইগাতী প্রবেশ করেই আওয়ামী লীগ অফিস আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ী বহর নিয়ে রাংটিয়া পাহাড় পর্যন্ত গিয়ে আবার পিছনে ফিরে এসে ঐদিন বিকালেই কোয়ারীরোডে পাক বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। পরে ঝিনাইগাতীর এক মাইল দক্ষিণে আহম্মদ নগর হাই স্কুলে তাদের সেক্টর হেড কোর্য়াটার স্থাপন করে। যা মুক্তিযোদ্ধাদের ১১নং সেক্টরের বিপরীতে পাক বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তরে একমাত্র সেক্টর হেড কোর্য়াটার যার দায়িত্বে ছিলেন মেজর রিয়াজ।
এছাড়া পাক বাহিনী শালচূড়া, নকশি, হলদীগ্রাম, তাওয়াকোচা, মোল্লাপাড়ায় ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৬ বৈশাখ জগৎপুর গ্রামে হানা দিয়ে গ্রামটি পুড়িয়ে দেয় এবং পাক বাহিনী ৪১ জন গ্রাম বাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৫ জুলাই কাটাখালি ব্রীজ ধ্বংস করে মুক্তিযোদ্ধারা রাংঙ্গামাটি গ্রামে আশ্রয় নেয়। দালালদের খবরে পাক বাহিনী রাংঙ্গামাটি গ্রামে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। শুধু রাংঙ্গামাটি বিলের দিক খোলা ছিল।
সম্মুখ যুদ্ধে কমান্ডার নাজমুল আহসান শহীদ হন। তাঁর লাশ আনতে গিয়ে আলী হুসেন ও মোফাজ্জল শহীদ হন। পরদিন রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দিয়ে পাক বাহিনী ৯জন গ্রাম বাসীকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ২৩ আগষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাওয়াকুচা ক্যাম্প দখল করে এবং মুক্ত তাওয়াকুচায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলণ করে। তাওয়াকুচা যুদ্ধে ৪ জন পাক সৈন্য ও ৭ জন রাজাকার নিহত হলে পাক বাহিনী ক্যাম্প ছেড়ে দিয়ে পিছু হটে আসে। ৩ আগষ্ট নকশি ক্যাম্প আক্রমন করে মুক্তিযোদ্ধারা।
আগের দিন ২ আগষ্ট বিকেলে মেজর জিয়া নকশি ক্যাম্প আক্রমনের জন্যে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতিয়ারের অবস্থান গুলো পরিদর্শন করেন। ওই দিনের যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও নিখোজ হন। যুদ্ধে পাক বাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
২৭ নভেম্বর কমান্ডার জাফর ইকবালের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী বাজারের রাজাকার ক্যাম্প দখল করে ৮টি রাইফেল সহ ৮ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে যায়।
২৮ নভেম্বর পাক বাহিনী ঝিনাইগাতী হানা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দিকের ছোট ভাই ওমর (১১) ও মুক্তিযোদ্ধা মকবুলের পুত্র খালেক (১০), পাক বাহিনীর দালালদের খবরে ৮ জনকে আহম্মদ নগর ক্যাম্পের বধ্যভূমিতে ধরে নিয়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। পরে তাদের এক গর্তে মাটি চাপা দিয়ে পুতে রাখে।
৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক দেড়টায় শালচূড়া ক্যাম্পের পাক বাহিনী কামালপুর দুর্গের পতনের আগাম সংবাদ পেয়ে পিছু হটে এবং আহম্মদ নগর হেড কোর্য়ারটারের সৈনিকদের সাথে নিয়ে রাতেই মোল্লাপাড়া ক্যাম্প গুটিয়ে শেরপুরে আশ্রয় নেয়।
এভাবে রাতের আঁধারে বিনা যুদ্ধে ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত হয়। ৪ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতীতে স্বাধীন বাংলার অহংকারের পতাকা উড়ায় এবং মুক্তদিবস ঘোষণা করা হয়।
চলারপথে ডেস্ক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে জানানো হয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি এবং তপশিলের সম্ভাব্য দিনক্ষণ জানাতে বঙ্গভবনে যান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী নির্বাচন নিয়ে তাঁরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করেন।
বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে সিইসি বলেন, শীঘ্রই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। আমরা রাষ্ট্রপতিকে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছি। উনি শুনেছেন, সন্তুষ্ট হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেছেন, আসন্ন নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। এ ব্যাপারে উনার সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সে ব্যাপারে উনি আশ্বাস দিয়েছেন। আমরাও বলেছি, প্রয়োজনে আপনার সহযোগিতা আমরা কামনা করি। রাষ্ট্রপতি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে যেকোনো রকমের সহযোগিতা দিতে তিনি প্রস্তুত থাকবেন। গণতান্ত্রিক যে ধারাবাহিকতা, সাংবিধানিক যে ধারাবাহিকতা সেটা যেকোনো মূল্যে অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন।
সিইসি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি, সাংবিধানিকভাবে দায়িত্ব অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে বদ্ধপরিকর। আমরা সকল রাজনৈতিক দল, সরকার ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করে যাচ্ছি। আমরা আশ্বস্ত করেছি, সকলের সহযোগিতায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবিধানিক যে বাধ্যবাধকতা আছে তার আলোকে যথাসময়ে নিষ্কণ্টকভাবে সম্পন্ন করব।
তিনি বলেন, তফসিল ও নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি। যেকোনো মূল্যে ২৯ জানুয়ারির আগেই নির্বাচন করতে হবে। আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আজকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গেলাম। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সম্ভাব্য সময়সূচি নির্ধারণ করব। আমরা যেটা বলেছি, প্রথম সপ্তাহে বা দ্বিতীয় সপ্তাহে; এখনও সেই অবস্থানে আছি।
অনলাইন ডেস্ক :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। একইসঙ্গে আইনটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয়, বরং সাইবার অপরাধ দমনের জন্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ ৩ মে বুধবার দুপুরে রাজধারীর ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) হলরুমে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজিত হয়।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় সম্পাদক পরিষদের দাবির প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না। এখন এই আইনে কেউ অভিযোগ করলেই মামলা নেওয়া হয় না। এটি প্রথমে পর্যবেক্ষণের জন্য আমাদের নির্ধারিত সেলে পাঠানো হয়। সেখানে বিষয়টি যুক্তিযুক্ত মনে হলে পরে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয় বা আদালতে পাঠানো হয়। মামলা হতে পারে এমন কিছু প্রতিষ্ঠিত না হলে গ্রেপ্তার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ ভবিষ্যতে প্রণয়ন করা প্রত্যেক আইনে সাংবাদিকদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায়িত্বশীলতার ঘাটতি রয়েছে। যার মাধ্যমে সাইবার অপরাধ সংগঠিত হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাইবার অপরাধ দমনে আইন রয়েছে। বাংলদেশেও এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয় তখন গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের কার্যকর পদক্ষেপের কারণে এখন আইনটির অপব্যবহার কমেছে। এটিকে আরও পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, যাতে আইনটির সমস্যাগুলো সমাধান করে সকলের গ্রহণযোগ্য একটা আইন করা যায়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয় দাবি করে আনিসুল হক বলেন, এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে সাইবার অপরাধ দমনের জন্য। প্রধানমন্ত্রী কখনো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করবেন না, তিনিও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চান। এখন ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। স্বাধীনতা না থাকলে এগুলো নিয়ে আলোচনায় যেতাম না। আইন হচ্ছে ডাটা প্রোটেক্ট করার জন্য, নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়। মুক্তগণমাধ্যম নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গিকারবদ্ধ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার সময় মতামত নেওয়া হয়নি, সম্পাদক পরিষদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, আইনটি যখন করা হয় তখন তারা আমার সঙ্গে আলোচনা করতে আসে। যে পর্যায়ে আলোচনা করতে আসে তখন আইনটি সংসদে চলে যায়। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটিতে তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন, তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সবাই আইনটির ব্যপারে ঐক্যমত ছিলেন। তাদের মতামত অনুযায়ী ২১ ধারায় শাস্তি কমানোর বিষয়টি গ্রহণ করা হয়, জামিনযোগ্য এবং অজামিনযোগ্যের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, আমি নিজ উদ্যোগে ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যাব। প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট নিয়েও আলোচনা হবে। আমরা সবসময় আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে চাই, আলোচনা না করে কিছু হবে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। এ আইনে কারো অভিযোগ পর্যবেক্ষণের জন্য যে সেল করা হয়েছে সেটি আইসিটি মন্ত্রণালয় বা আইন মন্ত্রণালয়ে পাবেন না, সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাবেন।
স্বাধীন সাংবাদিকতা করার অধিকার সবার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব আপনাদের। প্রত্যেকটা জিনিসেরই দুইটা দিক থাকে, আপনারা দুটোই তুলে ধরবেন যাতে জনগণ বুঝে নিতে পারে।
মুক্তগণমাধ্যমের সূচকে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে অবস্থান করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে নীর্ণায়কে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে থাকে, আমার বিষয়ে সেই নির্ণায়কের বিষয়েই সকলের প্রশ্ন থাকা উচিৎ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় এ সময় আরো বক্তব্য দেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ইউনাইটেড ন্যাশনস ইন বাংলাদেশের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর জিউন লিউইস, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের অফিসার ইন চার্জ সুজান ভিজ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সদর ইউনিয়নে এক বাড়িতে ধুমধাম করে চলছিলো পনেরো বছর বয়সী এক কিশোরীর বিয়ের অনুষ্ঠান। হঠাৎ হাজির হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী মোর্শেদ। ওই কিশোরীর বয়স প্রমানের কাগজপত্র চাইলে পরিবারের লোকজন তা দেখাতে ব্যর্থ হয়। পরে তিনি এ বিয়ে বন্ধ করে দেন।
ওই কিশোরীর পারিবারীক সূত্রে জানা যায়, সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতো। তার বিয়ে হচ্ছিলো চর বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের কাজীডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব মোল্যার ছেলে সৌদী প্রবাসী রায়হান মোল্যা (২৮) এর সাথে। ইউএনও এর উপস্থিতি ও বিয়ে বন্ধের খবর পেয়ে তারা আর মেয়ের বাড়িতে আসেননি।
ইউএনও বলেন, বাল্য বিয়ের বিষয়ে খবর পেয়ে তিনি তথ্য যাচাই করে এর সত্যতা জানতে পেরে ওই বাড়িতে আসেন এবং বিয়ে বন্ধ করে দেন। পরে ওই কিশোরীর মায়ের কাছ হতে মূচলেকা গ্রহণ করেন।
এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খান, ইউপি সদস্য সরোয়ার মৃধা, এখলাস হোসেন প্রমুখ।
কুমিল্লা প্রতিনিধি :
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে টানা ৭০ দিন মসজিদে নামাজ পড়ে পুরুস্কৃত হয়েছেন ৫ জন শিশু। ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ফেলনা পশ্চিমপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে আয়োজিত তাফসির মাহফিল শেষে পুরস্কার বিজয়ী শিশুদের হাতে ক্রেষ্ট, পাঞ্জাবীর কাপড় এবং পবিত্র কোরআন শরিফ তুলে দেন প্রধান বক্তা মাওলানা ফখরুদ্দিন আহমেদ। পুরস্কার প্রাপ্তরা হলো; মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ মাহফুজ, মোঃ শিহাব আল ফারেছ, মারুফ হোসেন শ্রাবন, মোহাম্মদ সামির। তারা সবাই ফেলনা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার অধিবাসী।
মসজিদ এবং আয়োজক কমিটির সদস্য ইতালী প্রবাসী আলী আক্কাছ জানান, এলাকার শিশুদের নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। ভবিষ্যতে টানা ৪৫দিন জামায়াতে নামাজ আদায়ের কর্মসূচীও নেয়া হবে। জামায়াতে নামাজ আদায়কারী শিশুদের আরও ভালোভাবে পুরস্কৃত করা হবে।
তাফসির মাহফিলে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কুরআন গবেষনা পরিষদের সহ-সভাপতি ক্বারী শাহজাহান সাঈদী, বয়োজৈষ্ঠ্য আলেম মৌলভী আবদুল ওয়াদুদ, লাকসাম ধানবাজার জামে মসজিদের খতিব মাওঃ মীর মোঃ আবদুল ওয়াদুদ, ফেলনা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মহিউদ্দিন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন হাফেজ বদিউল আলম, মৌলভী আহসান উল্লাহ, আলী আক্কাছ, ইমাম হোসাইন, মোঃ আজিম, হাফেজ মর্তুজা মজুমদার প্রমুখ।