চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে ১৭৫ বোতল বিদেশী মদ এবং ৩০ কেজি গাঁজাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ১ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ৮টা এবং ভোর রাতে পৃথক অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় মাদক বহনকারী একটি পাজেরো জীপ ও প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চাষাড়া এলাকার মো. বিল্লাল হোসেন (৫০), মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার মালির পাথর (পঞ্চসার) গ্রামের মো. আলমগীর হোসেন (৪৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের মো. রফিক (৩১) ও একই এলাকার মো. তানভীর (২০)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিউল কবির বলেন, সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি পাজেরো জীপ আটক করা হয়। গাড়িটি তল্লাশি করে ১৭৫ বোতল বিভিন্ন ব্যান্ডের বিদেশি মদের বোতল উদ্ধারসহ মাদক ব্যবসায়ী মো. বিল্লাল হোসেন এবং আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
অপরদিকে ভোরে একই এলাকায় অপর অভিযানে একটি প্রাইভেটকার আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকারে অভিযান চালিয়ে ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধারসহ মাদক ব্যবসায়ী মো. রফিক ও তানভীরকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ভোটের মাঠে নেমেছেন ধানের শীষ প্রতীকের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান। তাঁরা হলেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান।
মাইনুল হাসান গত বৃহস্পতিবার সরাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় সহস্রাধিক অনুসারী-সমর্থক মোটর শোভাযাত্রাসহ উপজেলা সদরে প্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সরাইল সদর ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া। আবুল হাসানাতের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা সদরের দুই বাসিন্দা; যারা আবুল হাসানাতে প্রার্থিতার প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী হয়েছেন। ধানের শীষের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই পুত্র বর্তমানে নিজ দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করতে চান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান আলম। এখানে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মোট ১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আবুল হাসানাত আমিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের আমিনপুরের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার লালবাগে। তিনি আগে ভোটার ছিলেন আমিনপুরের। তবে ২০১৫ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করে সরাইল উপজেলা সদরের হালুয়াপাড়ার বাসিন্দা হয়েছেন। তবে এখানে তাঁকে দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
সদ্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরবেষ্টিত পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দলত্যাগের আগপর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। ছয়বারের মধ্যে চারবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। পরে সাত্তার টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী হন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুফতি ফজলুল হক আমিনী ৪৩ হাজার ২৬১ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমকে পরাজিত করে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি একাধিকবার এ আসন থেকে বটগাছ এবং ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জাপার জিয়াউল হক মৃধার লাঙ্গল প্রতীকের কাছে ৪৯ হাজার ৩৯৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুর পর ৫ নভেম্বর আবারও উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধাকে ২৪ হাজার ৪৬৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপজেলায় ইসলামী ঐক্যজোটের অবস্থান এখন খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এলাকার কওমি মাদ্রাসাপন্থী লোকজন একসময় মুফতি ফজলুল হক আমিনীর অনুসারী ছিলেন। তাঁরাও এখন দুটি ধারায় বিভক্ত। বড় অংশটি বর্তমান নির্বাচন বিরোধী। এ কারণে এখানে ভোটার টানতে হাসানাত আমিনীকে বেগ পেতে হবে।
ইসলামী ঐক্যজোটের সরাইল উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড় না দিলে এখানে আমাদের পক্ষে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা আমাদের তুলে নেবেন (জয়ী করবে) বলেছেন।’ তিনি বলেন, সরাইল উপজেলায় ছোট-বড় সাড়ে তিন শতাধিক কওমি মাদ্রাসা আছে। তিনি দাবি করেন, অধিকাংশ মাদ্রাসার লোকজন তাঁদের পক্ষে আছেন।
তবে ইসলামী ঐক্যজোটের পুরোনো কমিটির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের ৯০ শতাংশ এ নির্বাচনের বিরোধী। তাই এ নির্বাচনে ইসলামী কোনো দলই ভোট টানতে পারবে না।
বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন একসময় ধানের শীষের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। যার কারণে ছয়বার সংসদ সদস্য হন বিএনপি নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাঁর দল ত্যাগের পর ধানের শীষের সমর্থকেরা সাত্তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে উপজেলার প্রত্যন্ত পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নে এখনো সাত্তার ভক্তের সংখ্যা কম নয়। তাঁরা এখন মাইনুলের অনুসারী। এ কারণে এ দুটি ইউনিয়নে শক্ত ঘাঁটি হতে পারে মাইনুল হাসানের। আবার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের সাবেক দু-একজন নেতা-কর্মীকে মাইনুলের পক্ষে দেখা যায়।
মাইনুল হাসান বলেন, ‘আমি তৃণমূল বিএনপির প্রাথমিক সদস্য। আমাদের দলের জেলা বা উপজেলা কমিটি নেই। তবে আমার আব্বু এখানে ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর অনুসারীরা আমার পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া আমার এলাকার দু-তিনটি ইউনিয়ন আছে, যেখানে আমি একচেটিয়া ভোট পাব।’ তিনি দাবি করেন, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। বিএনপির প্রকৃত কর্মীরা বলছেন, তাঁরা উকিল সাত্তারের পরিবারে পাশে থাকবেন। তিনি আশা করছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতা-কর্মী এ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। এমনকি আমাদের কোনো ভোটারও ভোট দিতে যাবে না। যাঁরা এখন তৃণমূলে যাচ্ছেন, তাঁরা বহিষ্কৃত।’
আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলাইমান সেকান্দরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে আশুগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আটকের সময় সোলাইমান পুলিশের সাথে অসজৌন্যমূলক আচরণ করেছে বলে পুলিশের অভিযোগ।
সোলাইমান সেকান্দর আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের মোদি বিরোধী আন্দোলনের সময় মাদরাসা শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা রয়েছে। এছাড়া গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে আশুগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন জানান, আটক ইউপি চেয়ারম্যান সোলাইনের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় হত্যা ও নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান মোঃ বিল্লাল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মোঃ শাহজাদা বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের সেক্রেটারি নির্বাচিত হওয়ায় সংবর্ধনা প্রদান করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ আশুগঞ্জ কল্যাণ সমিতি। ২ জুলাই জেলা পরিষদ মিলনায়তনে তাদেরকে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ আশুগঞ্জ কল্যাণ সমিতির সভাপতি ইঞ্জিঃ আব্দুর রহিম, সহ-সভাপতি মোঃ ইস্কান্দার মিয়া, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছেল সিদ্দিকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী ভূইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, প্রচার সম্পাদক আব্দুল করিম মাস্টার, সদস্য মোঃ মোর্শেদুল আলম, মোঃ রফিকুল ইসলাম, সেলিম রেজা, কাজী শাহ আলম, মোঃ ইদ্রিস মিয়া, আরএমপি জাকির হোসেন, হাসান সাব্বির প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ বিল্লাল মিয়া ও রেড ক্রিসেন্ট সেক্রেটারী মোঃ শাহজাদা। পরিশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ আশুগঞ্জ কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ বিল্লাল মিয়া ও রেড ক্রিসেন্ট সেক্রেটারী মোঃ শাহজাদাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে কলার ছড়া প্রতীক পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। এ কলার ছড়ার অপর নাম ‘নৌকা’ বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবো। ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর খবর হবে কলার ছড়া জিতেছে, নৌকা জিতেছে। কলার ছড়ার অপর নাম নৌকা। বেনামে দিলাম আরকি। এটা মনে করেই চলবেন। দেখলেন না, লোকজন সব আওয়ামী লীগের, নাম দিলাম সমর্থকগোষ্ঠী। আসলে ভাসুরের নাম বলা যায় না, এখানে সবই আমরা।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া সমর্থকগোষ্ঠীর ব্যানারে এক কর্মীসভায় তিনি এ কথা বলেন। ২৩ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন মিলনায়তনে এ কর্মীসভায় আয়োজন করা হয়।
সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘ওনারা (বিএনপি) এনেছেন ফারহানাকে। ফারহানা তোমার বাবা আওয়ামী লীগ করতো, পরে গিয়েছে মোশতাকের দলে। তুমি সংরক্ষিত আসনের এমপি হয়ে হাজার পাওয়ারের বাল্ব হয়ে গেলা। সে নাকি নেতৃকে চ্যালেঞ্জ করেছে। একটা চুটকি আমার নেতৃকে চ্যালেঞ্জ করে। আপনারা ১ তারিখ জবাব দেবেন কলার ছড়াতে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কলার ছড়ার প্রার্থীকে চিনি না, আমরা কলার ছড়াকে চিনি আর শেখ হাসিনাকে চিনি। আপনারা কী বোঝেন না! কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার রাজনীতি বোঝেন আপনি! বিএনপির পদত্যাগ করা প্রার্থীকে আমরা কেন দিলাম? এর রাজনৈতিক একটা তাৎপর্য আছে কিন্তু। যার আক্কেল আছে তাকে ইশারা দিলেই বোঝে, আর যে বেক্কল তাকে ধাক্কাইতে হয়। আগামী দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এটা সেমিফাইনাল, সেই সেমিফাইনালে জিততে হবে।’
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘আগামী এক তারিখের নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী তার নামও আমি ভুলে যাই, চিনি না আমি। প্রার্থীর জনমত নয়, আমাদের নৌকার জনমত, আওয়ামী লীগের জনমত, আওয়ামী লীগের শক্তি। এটা কী কেউ জানতে বাকি আছে, বাংলাদেশের সবাই জানে, মিডিয়ায় নিউজও করতেছে আওয়ামী লীগ এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে নামছে। তার মানে আওয়ামী লীগের শক্তি যেকোনো জিরোকে হিরো করতে পারে। আওয়ামী লীগের শক্তি হিরোকে জিরো করতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হেরেছে শুধু চক্রান্তের কাছে, আন্দোলনেও হারে নাই, নির্বাচনেও হারে নাই। কারণ আমাদের নেতা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এই নির্বাচনে জয়লাভ করা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার। সে (আব্দুস সাত্তার) আমাদের ট্রাম্পকার্ড।’
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২৫ জানুয়ারি বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে মুছা মিয়া (৮০) নামে আসিফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
আসিফ আহমেদ অভিযোগ করেন, বুধবার রাত থেকে তাঁর শ্যালক ও নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী শাফায়েত হোসেন সুমন নিখোঁজ রয়েছেন। ওই দিন রাত আড়াইটার দিকে তাঁর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আবু মুছা মিয়াকে ডিবি পুলিশ বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে সম্প্রতি উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে দু’গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, তাঁর বেশ কয়েকজন সমর্থকের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তাঁর প্রচার বাধাগ্রস্ত করতেই কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। ঘটনাটি তিনি উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।
গ্রেফতার মুসা মিয়া দলীয় রাজনীতিতে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁর বড় মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলেন, আমার বাবা কোনো দল করেন না। পূর্ব থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেই আমার বাবা তাঁর (আসিফ) নির্বাচনে কাজ করছিলেন। আমার বাবা বৃদ্ধ ও অসুস্থ। তাঁকে নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নির্বাচনী প্রচার টিম আশুগঞ্জ বাজারসহ সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় উকিল সাত্তারের সমর্থনে ‘কলারছড়ি’ প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ করেন।