সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ ঘোষণা

জাতীয়, 5 September 2024, 526 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) আজ ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছে। পদত্যাগ ঘোষণার আগে ‘বিদায়ী ব্রিফিং’–এ ভবিষ্যতের প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের পরামর্শ দিয়েছেন হাবিবুল আউয়াল। তাঁর আরও পরামর্শ, এ নির্বাচনে বিরতি দিয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে হবে।

banner

হাবিবুল আউয়ালের ব্রিফিংয়ে পড়া লিখিত ভাষণের শব্দসংখ্যা ছিল সাত শতাধিক। লিখিত ভাষণের শেষে ‘নিজের অভিজ্ঞতার নিরিখে’ তিনি কিছু প্রস্তাবনা দেন। হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘বর্তমান ও অতীত থেকে আহৃত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও উপলব্ধি থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাবনা সরকারের সদয় বিবেচনার জন্য রেখে যাওয়া কর্তব্য মনে করছি। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সমরূপতার কারণে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (দলীয়–ভিত্তিক) নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ ক্ষেত্র হতে পারে। সেই সঙ্গে নির্বাচন চার বা আটটি পর্বে, প্রতিটি পর্বের মাঝে তিন থেকে পাঁচ দিনের বিরতি রেখে, অনুষ্ঠান করা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে সহজ ও সহায়ক হতে পারে। আমাদের প্রবর্তিত অনলাইনে নমিনেশন দাখিল অব্যাহত রেখে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপটিমাইজ করতে পারলে উত্তম হবে। প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হলে উদ্দেশ্য অর্জন আরও সুনিশ্চিত হতে পারে।’

ভাষণে দেশের প্রতিটি নির্বাচনের ইতিহাস তুলে ধরেন হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, দেশের প্রথম সাংবিধানিক সাধারণ নির্বাচন ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক ছিল। ১৯৭৯ ও ১৯৮৭ সালের সাধারণ নির্বাচন সামরিক শাসনামলে হয়েছে। ফলাফল নিয়ে বিতর্ক ছিল। ১৯৯১ সালের নির্বাচন রাজনৈতিক রূপরেখার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন হয়েছিল। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন সাংবিধানিক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন, সূক্ষ্ম বা স্থূল কারচুপির সীমিত সমালোচনা সত্ত্বেও সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল।

হাবিবুল আউয়াল আরো বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন সেনাসমর্থিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিএনপি সংসদে মাত্র ২৭টি এবং আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসন পেয়েছিল। নির্বাচন বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। নিরাপদ প্রস্থান বিষয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সেনাসমর্থিত অসামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দর–কষাকষির বিষয়টি প্রকাশ্য ছিল। সে প্রশ্নে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অবস্থানও গোপন ছিল না। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন সংবিধানমতে দলীয় সরকারের অধীন হয়েছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক দলই অংশগ্রহণ করেনি উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ফলে সেই নির্বাচনও ২০২৪ সালের অনুরূপ অন্তর্ভুক্তিমূলক ছিল না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে। আসন পেয়েছিল মাত্র ৬টি। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৫৮টি। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে বর্তমান কমিশনের অধীন। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৮টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো সেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে। নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। কমিশন বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য একাধিকবার আহ্বান করা সত্ত্বেও তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না–করার বিষয়টি দলের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করে দেওয়ার মতো কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল না। সে কারণে অনেকেই কমিশনকে দোষারোপ করছেন। নির্বাচন কখন, কী কারণে, কত দিনের জন্য স্থগিত করা যাবে, তা–ও সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। অতীতে কখনোই কোনো কমিশন নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেননি। সম্প্রতি ভেঙে দেওয়া সংসদের ২৯৯টি আসনে নির্বাচন প্রার্থীদের মধ্যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হয়েছে; দলের মধ্যে নয়। ২৯৯ আসনে ১ হাজার ৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

পদত্যাগী সিইসির কথা, ‘নির্বাচন নিষ্পন্ন করা অতিশয় কঠিন একটি কর্মযজ্ঞ। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ার সব দোষ বা দায়দায়িত্ব সব সময় কেবল নির্বাচন কমিশনের ওপর এককভাবে আরোপ করা হয়ে থাকে। একটি কমিশন না হয় অসৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে; কিন্তু সব সময় সব কমিশনই অসৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে না। কমিশন বিভিন্ন কারণে নির্ভেজাল গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে অক্ষম বা অসমর্থ হতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় আমাদের বিশ্বাস, কেবল কমিশনের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ, কালোটাকা ও পেশিশক্তি-বিবর্জিত এবং প্রশাসন-পুলিশের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। নির্বাচনী পদ্ধতিতে দুর্ভেদ্য মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আচরণে এবং বিশেষত প্রার্থীদের আচরণে পরিবর্তন প্রয়োজন হবে।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ১৯৭৩ সাল থেকে হওয়া অতীতের অন্যান্য নির্বাচন ছাড়াও ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের বিতর্কিত বা সন্দিগ্ধ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন পরবর্তী সব নির্বাচন সতর্কতার সঙ্গে আয়োজনের চেষ্টা করেছে। জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনে দিনের বেলায় ব্যালট পেপার প্রেরণ, কিছু উপনির্বাচনে ভিডিও পর্যবেক্ষণ, ইভিএম ব্যবহার, দেশের সব জেলায় একই দিনে তবে প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক সীমানার মাঝে তিন থেকে পাঁচ দিন বিরতি দিয়ে পাঁচ থেকে ছয়টি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠান, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপকভাবে রদবদল ইত্যাদি গৃহীত ব্যবস্থা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুশৃঙ্খল করতে অনেকটাই সহায়ক হয়েছিল। নির্বাচন মূলত একদলীয় হওয়ার কারণে কারচুপি বা সরকারিভাবে প্রভাবিত করার প্রয়োজনও ছিল না। নির্বাচন দলের ভেতরেই হয়েছে; মধ্যে হয়নি। উইথইন হয়েছে, নট বিটুইন।

নিজেদের কমিশনের কর্মকাণ্ড নিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দুই বছর সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের ৯৯২টি, উপজেলা পরিষদের ৪৯৬টি, জেলা পরিষদের ৭১টি, পৌরসভার ৯০টি এবং সিটি করপোরেশনের ১৬টি নির্বাচন করেছে। নির্বাচনগুলোর সততা, সিদ্ধতা, নিরপেক্ষতা অবাধ হওয়া নিয়ে অতীতের মতো ব্যাপক বিতর্ক বা সমালোচনা হয়নি। উপনির্বাচনসহ জাতীয় সংসদের মোট ৩১৮টি আসনে কমিশন নির্বাচন করেছে। দলীয়ভাবে ইনক্লুসিভ না হওয়ার কারণে নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। এটি সঠিক ও যৌক্তিক। কিন্তু বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোনো নির্বাচন কমিশন সংবিধান উপেক্ষা করে স্বেচ্ছায় নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেছে এবং সেই কারণে নির্বাচন হয়নি-এমন উদাহরণ নেই। সরকার বারবার বলছে, ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। নির্বাচন বারবার ব্যর্থ হওয়ার প্রকৃত সত্য ও কারণ এ কথার মধ্যেই নিহিত।

হাবিবুল আউয়াল আরো বলেন, ‘কমিশনের সদস্যরা সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আমাদের কর্মকালে আমরা গণমাধ্যম, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীসহ আবশ্যক সবার সহযোগিতা পেয়েছি। কৃতজ্ঞচিত্তে তা স্মরণ করছি।’

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

পরিকল্পনার মাধ্যমে জলবায়ু সহিষ্ণু একটি গ্রিন নগরীতে গড়ে তোলা যায় এই পরিকল্পনা করেছি: গণপূর্তমন্ত্রী

জাতীয়, 11 July 2024, 571 Views,

অনলাইন ডেস্ক:
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, যে পরিকল্পনায় বাস্তব অগ্রগতি নেই সে পরিকল্পনা মূল্যহীন।

banner

আজ ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে রাজউক ভবনের অডিটোরিয়ামে সিটি ক্লাইমেট ফাইন্যান্স গ্যাপ ফান্ড এর সহায়তায় রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং GIZ (Deutche Gesellschaft Fur Internationale zusammenarbeit) কর্তৃক প্রস্তুতকৃত “হাজারীবাগ ও লালবাগের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু সবুজ কর্ম পরিকল্পনা” শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু পরিকল্পনার কথা বলি, কিন্তু বাস্তবে হাজারীবাগের ট্যানারিগুলি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল এখন পর্যন্ত তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। যেখানে সরিয়ে নিয়েছি সেখানেও কাজটি ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হলে শুধু পরিকল্পনা করে লাভ নেই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। আমি চাই আগামীকাল থেকেই আপনারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করবেন। এবছরের শেষেই যেন কাজের অগ্রগতি দৃশ্যমান হয় আপনারা সেভাবে কাজ করবেন।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা আইন কানুন ও বিধিনিষেধ মেনে চলি। ক্লাইমেটের রেজিলিয়েন্সের জন্য ওয়ার্কশপ ও প্লানিং এর প্রয়োজন আছে। কিন্তু একটা কথা সবসময় চিন্তা করতে হবে আমাদের দ্বারা যেন ক্লাইমেট নষ্ট না হয়। আমরা যখন বাড়ি বানাবো তখন যতটুকু ছেড়ে দেয়া দরকার ততটুকু যেন ছেড়ে দেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় আমাদের পাশের যে বাড়ি আছে পারলে আমরা সেটিও দখল করার চেষ্টা করি। এই সব থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, রাজউককে বলব আমরা সবাই মিলে এই কাজটি শুরু করে দিতে চাই। ২০২৪ সালের ইতোমধ্যে ৬ মাস চলে গিয়েছে। সময় চলে যাবার আগেই এই কর্মপরিকল্পনাটি শেষ করতে না পারলেও অন্তত যেন শুরু করতে পারি।

কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্যে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয় শুধুমাত্র পুরান ঢাকার জন্য। ৪০০ বছরের এই শহরে নগরায়নের ফলে পুরান ঢাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা থেকে আবাসন ব্যবস্থায় নানা ধরনের ঘাটতি আছে। যার কারণে এখানে প্রতিনিয়ন নানা দুর্ঘটনা ঘটে।

মন্ত্রী আরও জানান, পুরান ঢাকাকে কিভাবে আরো উন্নত করা যায় সে লক্ষ্যে আমরা লালবাগ ও হাজারিবাগ এলাকাকে উন্নত করার পরিকল্পনা করেছি। ওভার পপুলেটেড একটি নগরীকে কিভাবে পরিকল্পনার মাধ্যমে জলবায়ু সহিষ্ণু একটি গ্রিন নগরীতে গড়ে তোলা যায় সে জন্য এই পরিকল্পনা করেছি। আমরা একটি ব্রাউন ফিল্ডকে কিভাবে গ্রিন আইল্যান্ড করা যায় সে ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জি আই জেড কান্ট্রিডিরেক্টর মার্টিনা বারকার্ড বলেন, জার্মান ও বাংলাদেশ সরকার মিলে পুরান ঢাকার জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু সবুজ কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এবং নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই পরিকল্পনাটি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এই দুই এলাকার নগরবাসীর জীবন মান আরো উন্নত হবে।

কর্মশালায় হাজারিবাগ ও লালবাগের জলবায়ু সহিষ্ণু সবুজ কর্ম পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন। কর্মশালাটির সভাপতিত্ব করেন রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) মো ছিদ্দিকুর রহমান সরকার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো নবীরুল ইসলাম, জি আই জেড কান্ট্রিডিরেক্টর মার্টিনা বারকার্ড।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মঞ্জুরুর রহমান, রাজউক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সভাপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন প্রমুখ।

ধামরাইয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা স্বামীর

জাতীয়, 20 August 2025, 136 Views,

ধামরাইয় প্রতিনিধি :
ঢাকার ধামরাইয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পরে স্বামী আত্মহত্যা করেছে। আজ ২০ আগস্ট বুধবার সকালে ধামরাইয়ের কালাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ধামরাই উপজেলা কালাপুর এলাকার আনছার আলীর মেয়ে পিংকি (২৫) এবং একই উপজেলার বাথুলী এলাকার ইনসান আলীর ছেলে বদর উদ্দিন (২৮)।

banner

স্থানীয়রা জানান, পিংকি ও বদর উদ্দিনের সঙ্গে চার বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু গত এপ্রিল মাসে পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে পিংকি তার সন্তানকে নিয়ে বাবা বাড়ি কালাপুরেই থাকতেন।

হঠাৎ সকালে সন্তানকে দেখার জন্য বদর উদ্দিন পিংকিদের বাড়িতে আসে। তখন বদর উদ্দিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিংকিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এতে ঘটনাস্থলে পিংকি মারা যান এবং বদর উদ্দিন বিষপান করে অচেতন হয়ে পড়ে। সেসময় তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে স্বামী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।এঘটনায় ধামরাই থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

খুলনায় ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 13 November 2023, 891 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনায় ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।

banner

তিনি আজ ১৩ নভেম্বর সোমবার খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে এক মহাসমাবেশে সম্পন্ন হওয়া ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

গণপূর্ত বিভাগের বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে গণহত্যা ও নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ভবন, সিভিল সার্জন অফিস ভবন ও বাসভবন, পাইকগাছা উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুলনা শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ অফিসের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, বিএসটিআইয়ের খুলনা আঞ্চলিক অফিসের ১০তলা ভবন। ১০তলা বিশিষ্ট মহিলা হোস্টেল ভবন, পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (সিভিল, স্যানিটারি ও ইলেকট্রিক্যাল) কাজ এবং দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ৪ তলা বয়েজ হোস্টেল নির্মাণ।

শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ (ইইডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত ১১টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক কাম ৪ তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন, বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, খুলনা কলেজিয়েট স্কুলের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, সরকারি এলবিকে মহিলা ডিগ্রি কলেজের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, ৬ তলা তালিমুল মিল্লাত রহমতিয়া ফাজিল মাদ্রাসা একাডেমিক ভবন, নজরুল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ তলা একাডেমিক ভবন, আগর ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা একাডেমিক ভবন, পাইকগাছা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ ভবন।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) খালিশপুর বিআইডিসি সড়কের ড্রেন, ফুটপাথ, রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ বাস্তবায়ন করেছে। ডুমুরিয়া উপজেলাধীন বসুন্দিয়াডাঙ্গা বাজার-মুগুর খালি ইউপি অফিস সড়কে ভদ্রা নদীর ওপর সেতু (৩১৫.৩০ মিটার) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে। এছাড়া সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ শেখেরটেক ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার এবং কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ (ডিএই) ৬ তলা নবনির্মিত খুলনা আঞ্চলিক অফিসের কাজ বাস্তবায়ন করেছে।

এছাড়া যেসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে: কেসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাথাভাঙ্গা এলাকায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল, ইইডির দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ তলা একাডেমিক এবং ৪ তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন, বিআইডব্লিউটিএর সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় রাজা বোহয়ংতো রায়ের স্মৃতিসৌধ এবং এলজিইডির কুরুলিয়া নদী সেতু (৭৪৮.৯০ মিটার)। সূত্র : বাসস

জাল নোট তৈরির মেশিনসহ আটক ১

জাতীয়, 15 March 2024, 798 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাগেরহাটে ১৬ লাখ টাকার জাল নোট এবং জাল নোট তৈরির মেশিন ও সরঞ্জামসহ একজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

banner

আজ ১৫ মার্চ শুক্রবার বিকেলে শহরের দশানী এলাকায় অবস্থিত একটি ভবনের কক্ষ থেকে তাঁকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির নাম মো. ফয়সাল ইউনুস (৩৫)। তিনি বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বারদাড়িয়া গ্রামের মহিউদ্দিন শেখের ছেলে।

উদ্ধার করা জাল টাকার মধ্যে রয়েছে এক হাজার, পাঁচ শ ও দুই শ টাকার নোট। এ ছাড়া জাল নোট তৈরির মেশিন, রং, কাগজ, বিভিন্ন ধরনের ফরমা ও সিল উদ্ধার করা হয়।

বাগেরহাট জেলা ডিবি পুলিশের ওসি স্বপন কুমার রায় বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে শহরের দশানী যদুনাথ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে জনৈক কামাল হোসেনের ছয়তলা ভবনের ছয়তলার একটি কক্ষে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ১৬ লাখ টাকার জাল নোট এবং জাল নোট তৈরির মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

এ সময় জাল নোট তৈরির চক্রের সদস্য ফয়সাল ইউনুসকে আটক করা হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা খালাস পেলেন এটিএম আজহার ইসলাম

জাতীয়, 27 May 2025, 246 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ ২৭ মে মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

banner

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এ প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পেলেন। এ রায়ের ফলে জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। এর আগে ৬ মে প্রথম দিনের মতো শুনানি হয়।

রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুল হালিম, মোবারক হোসাইন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।