চলারপথে রিপোর্ট :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে আব্দুল হাদিস নামের একজন গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ৯ জনের নামে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে।
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার হাদিসের ভাই আখাউড়া পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. বাহার মিয়া বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন আহমেদের আদালতে অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, এ বিষয়ে শুনানির পর ২০১৪ সালে হওয়া হত্যার অভিযোগটি আমলে নিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য আদালত আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে অজ্ঞাতনামা আরো ১০০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন: আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা, তৎকালীন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সরাইল ১২ ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর এরশাদ, আখাউড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কাশেম ভূঁইয়া, তাকজিল খলিফার আপন বড় ভাই আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান খলিফা, মো. জাহাঙ্গীর মিয়া, জুয়েল খান, নাহিদ খান ও নাছির মিয়া। এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রীকে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিষয়ে মামলার আইনজীবী নুরুজ্জামান লস্কর সাংবাদিকদের জানান, দ্রুত বিচার ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ধারাসহ হত্যার অভিযোগে এজাহার করা হয়। আদালত এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করার জন্য আখাউড়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিলেন বায়ান্নর ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া আব্দুল মতিন ভূঁইয়া। আজ ২১ অক্টোবর শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মিয়া আব্দুল মতিনের বাড়ি আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী টনকী গ্রামে। তার বাবার নাম মুত হাসিম ভূঁইয়া। তারা চার ভাই ও এক বোন ছিলেন। আর তার মধ্যে মিয়া আব্দুল মতিন ছিলেন সবার বড়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও ৫ মেয়ে রেখে গেছেন।
আব্দুল মতিন ভূঁইয়া তখন আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তখন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য আটজনের মিছিলে আব্দুল মতিন নেতৃত্ব দেন। সেই মিছিলটি আখাউড়া উপজেলার মোগড়া বাজার ও গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। ‘উর্দু ভাষায় লাথি মার, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চালু কর’, ‘রাষ্ট্রভাষা চাই’, ‘আমাদের ভাষা বাংলা ভাষা’ এমন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে মিছিলটি এগিয়ে যেতে থাকে। সে সময় ওই মিছিলে বিদ্যালয়ের ৮০০-এর মতো শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের জন্য মিয়া আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে শুরু করা আন্দোলনটি গণবিক্ষোভে রূপ নেয়। আর সেই বিষয়টি জেনে যায় তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার। নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। টানা দুই মাস কারাভোগ শেষে জেল থেকে তিনি ছাড়া পান।
১৯৫৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা সৈনিক মিয়া মতিনসহ আরো কয়েকজনকে ঢাকায় ডেকে পাঠান এবং সাহসিকতার জন্য তাদের উপহার দেন।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
আখাউড়া উপজেলার ৫ নং দক্ষিণ ইউনিয়ন প্রবাসী আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বেলা ১২ টার দিকে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল দক্ষিণ ইউনিয়ন প্রবাসী আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিকে আগামী ২ বছরের জন্য অনুমোদন দেন।
এসময় উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আবদুল মমিন বাবুল, উপজেলা ছাত্রলীগে সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নয়ন, দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ পারভেজ, মোসাদ্দেক ভূইয়া, সজিব ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা রাফসান জানি, ছাত্রলীগ নেতা লুৎফুর রহমান সজীব, আখাউড়া উপজেলা প্রবাসী আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
নব গঠিত সংগঠনের আরিফ ভূইয়া বলেন, ৯ জনকে উপদেষ্টা করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট দক্ষিণ ইউনিয়ন প্রবাসী আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতি আমাকে সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুজন মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল চৌধুরী’কে করা হয়। এই কমিটির নবনির্বাচিত সদস্যরা নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় রেলওয়ে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে রেললাইনে বাঁশের বেড়া দিলেন এক ভুক্তভোগী।
আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পের শূন্যরেখার পাশে এ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন শাহানুর সরকার নামে একজন জমির মালিক। তিনি ওই ইউনিয়নের খারকোট এলাকার মৃত খোরশেদ মিয়ার ছেলে।
আজ ১৩ আগস্ট রবিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশের ও গাছের ডালপালা দিয়ে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইনের ওপর দুপাশে লম্বা বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন শাহানুর সরকার।
ভুক্তভোগী শাহানুর সরকার বলেন, ‘আমি প্রবাসে ছিলাম। ফেরার পর এখন অসুস্থ। আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পে আমার ২৬ শতাংশ জায়গা পড়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের সময় আমার শীবনগর মৌজায় ১৬৮ দাগের সাড়ে ৮ শতক ও ১৬৫ দাগের সাড়ে ১৭ শতকসহ দুই দাগে মোট ২৬ শতক জমি রেলওয়ে অধিগ্রহণ করে নেয়। আমার জায়গা দখলের দীর্ঘদিন পর এর ওপর রেললাইন তৈরির কাজ প্রায় শেষ হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমার এ জায়গার মূল্য এখনো এক টাকাও পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রায় পাঁচমাস ধরে আমি অসুস্থ। অসুস্থ শরীর নিয়ে রেলের বিভিন্ন দপ্তরে ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমি অধিগ্রহণের পাওনা টাকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করে যাচ্ছি। তারপরও টাকা পাচ্ছি না। তাই ক্ষোভ থেকে আমার যতটুকু জমি রেলের মধ্যে পড়েছে সেই জায়গায় বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে শাহানুর রহমান বলেন, ‘সরকার বা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি আমার জমির মূল্য না দিয়ে ট্রেন চালানো শুরু করে তাহলে আমার শরীরের ওপর দিয়ে ট্রেন নিয়ে যেতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া-আগরতাল রেল প্রকল্পের সিনিয়র সার্ভে ইঞ্জিনিয়ার রিপন শেখ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। উনি জানিয়েছেন, উনার টাকা পরিশোধ করে দেওয়া হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী অ্যাড: আনিসুল হক বলেছেন ‘বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সংবিধানের অধীনে বাংলাদেশ চলে। বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে বিএনপি-জাতীয় পার্টি স্বৈরশাসনের সময়ে অনেক ফুটবল খেলেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা এই ফুটবল খেলা বন্ধ করেছে। এখন বাংলাদেশে সাংবিধানিক পন্থায় নির্বাচন হবে।
আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার সকালে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে কর্মীসভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এক সময় নির্বাচনের আগে তিন মাসের জন্য কেয়ারটেকার সরকার হতো। ওই কেয়ারটেকার সরকারের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হলে হাইকোর্ট রায় দেয় কেয়ারটেকার সরকারের কোন বৈধতা নাই, এটা বৈআইনি। এই মামলাটি আপিল বিভাগে গেলে আপিল বিভাগও কেয়ারটেকারকে অবৈধ বলে রায় দেয়। পরে সংসদে ১৫তম সংশোধনী পাশ হয়েছে। সেখানে কেয়ারটেকার সরকারের যে ব্যবস্থা ছিল তা বাতিল করা হয় এবং ‘৭২-এ সংবিধান যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপহার দিয়েছিলেন সে মোতাবেক নির্বাচন এবং বাংলাদেশ চলবে এটাই সিদ্ধান্ত হয়। এখন সেই মোতাবেকই বাংলাদেশ চলছে। আগামী নির্বাচন সেই মোতাবেক হবে। কোন নির্দলীয় সরকার, কোন কেয়ারটেকার সরকার থাকবে না। নির্বাচন করবে নির্বাচন করবে কমিশন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চালানোর দায়িত্ব ন্যাস্ত থাকবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। সেভাবেই গত ৩ বার নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এবারও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে ইনশাল্লাহ।
দেশে আইনের শাসন নেই বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী অ্যাড: আনিসুল হক বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারসহ হত্যা করা। এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচার করতে পারবে না বলে আইন পাশ করেছিল খন্দকার মোস্তাক ও জিয়াউর রহমান। সেটা আইনের শাসন মনে করে বিএনপি। আমরা মনেকরি আইনের ঊর্ধ্বে কেউ না। আমাদের সময়ে আইনে যা আছে জনগণকে তা পালন করতে হয়। আমরা মনেকরি সেটাই আইনের শাসন। এখন দেশে আইনের শাসন আছে। হত্যার বিচার হয় না এমন কথা কেউ এখন বলতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি জিয়াউর রহমান হত্যার বিচার করতে পারে নাই। তারা মুখে আবার আইনের শাসনের কথা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল, আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সেলিম ভূইয়া, মনির হোসেন বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বাদল, সাধারণ সম্পাদক কাজী লিটন খাদেম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মুরাদ হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ নাজিম, আব্দুল মমিন বাবুল, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।