চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে ৫০ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মো. আবু তাহেরের ছেলে মো. আলম-মঈন।
জানা গেছে, আজ ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার আশুগঞ্জ থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. মহিউদ্দিন শেখ সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযানে যান। এ সময় চরচারতলা সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোলপ্লাজার পূর্ব পাশে পাকা রাস্তার উপর হতে ৫০ কেজি গাঁজা ও একটি সিঙ্গেল কেবিন টাটা পিকআপ জব্দসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধা মারা যান।
নিহত মালেকা বেগম (৫৫) আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মাজন খাঁর স্ত্রী।
নিহত মালেকা বেগমের নাতনি সানজিদা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তার মামা শাহিন মিয়া ও তার স্ত্রী জান্নাত এবং বড় মামি সেফালি ও মামাতো ভাই ইয়াসিন মালেকা বেগমকে মারধর করেন। তারা মালেকাকে মারধর করে প্রায়ই ৪ ঘণ্টা ঘরে ফেলে রাখে। এ সময় তার মেজো মামা তার নানিকে অজ্ঞান অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে ভর্তি করলে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বলেন, ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে মালেকা বেগমের প্রায়ই ঝগড়া হত। দুপুরে মালেকা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার এক নারী বিয়ের দেড় বছরের মাথায় শ্বশুরবাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরায় মুক্তা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোররাতে মুক্তার লাশ শ্বশুরবাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা থেকে বাবার বাড়িতে এনে দেওয়া হয়।
সকালে আশুগঞ্জ থানার পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করেছে। এর আগে ভোর চারটার দিকে নিহতের লাশ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নিহতের স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ওই আত্মীয়কে লাশের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত মুক্তা বেগম আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর (কুড়ের পাড়) গ্রামের গোলাম মিয়ার মেয়ে। তার ৭ মাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের শ্বশুর রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান ও শাশুড়ি খোশনাহার বেগমকে আটক করেছে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মুজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী খোশনাহার বেগম মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, রাত ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত মুক্তা ও তার স্বামী আব্দুল্লাহর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। রাত ২টার দিকে স্বামী আব্দুল্লাহ মুক্তাকে মুখে হাত চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ঘটনা আড়াল করতে মুক্তার লাশ তার পরিবারের কাছে অসুস্থতার খবর দিয়ে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করলে খায়েশ মিয়া নামে আত্মীয়কে দিয়ে সিএনজিতে লাশটি মুক্তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মুক্তার বুকের ব্যথার কথা বলে তারা ওই আত্মীয়কে সহযোগিতা করতে সঙ্গে নিয়েছিল।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিগত দেড় বছর আগে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহর সঙ্গে মুক্তার বিয়ে হয়। আব্দুল্লাহ মিষ্টির দোকানের কারিগর। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন মিষ্টির দোকান দেয়ার জন্য মুক্তার বাবার কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকে। এ নিয়ে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরীসহ অন্যান্যরা প্রতিনিয়ত মুক্তাকে মানসিক নির্যাতনসহ মারধর করত। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে বিগত এক বছরে বেশ কয়েকটি সালিশ হয়েছে। মুক্তার বাবা গোলাপ মিয়া মেয়ের শান্তির কথা চিন্তা করে যৌতুকের টাকা দেয়ার আশ্বাস দিলেও অক্ষমতার জন্য ব্যবস্থা করতে না পারায় দিতে পারছিলেন না। এরই মধ্যে মুক্তার একটি ছেলে শিশুর জন্ম হয়। যার বয়স বর্তমানে ৭ মাস। গোলাপ মিয়া মেয়ের জামাইকে মিষ্টির দোকান দিতে টাকা দিতে না পারলেও তার মেয়ের ও নাতির চিকিৎসা, সিজারিয়ান অপারেশনের খরচ প্রদানসহ নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছিলেন।
গতকাল ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মুক্তার শ্বশুর বাড়ির পক্ষ থেকে তারা বাবা গোলাপ মিয়াকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে গোলাপ মিয়া জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছার আগেই তার লাশ নিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তিনি বাড়িতে এসে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান। এদিকে সকালে নিহতের শ্বশুর ও শাশুড়ি মুক্তার লাশ দেখতে এলে পুলিশ তাদের আটক করে।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি দাস বলেন, নিহতের লাশের সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করা হয়েছে। তার গলা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের শ্বশুর শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। যেহেতু ঘটনাস্থল নরসিংদী উপজেলার রায়পুরায় তাই নিহতের স্বজনদের রায়পুরা থানায় এজাহার দিতে বলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ সার কারখানায় অবিলম্বে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। এছাড়া তিনদিনের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ না করা হলে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আজ ২৩ জুলাই রবিবার সকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। এজন্য সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রধান ফটক দিয়ে কারখানা থেকে সার সরবরাহ বন্ধ ছিল।
কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা জানান, একটি ইঞ্জিন দীর্ঘদিন চলার পর যখন কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে তখন যন্ত্রাংশ খুলে পরিষ্কার, মেরামত ও পরিবর্তন করে পুনঃসংযোগ করাকে ওভারহলিং বলে। গত ১ মার্চ থেকে ওভারহলিংয়ের জন্য আশুগঞ্জ সার কারখানায় দুই মাস উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। ওভারহলিং শেষে মে মাস থেকে কারখানা চালু করতে চাইলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। তাই প্রায় পাঁচ মাস ধরে কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকায় যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, দ্রুত গ্যাস সরবরাহ না করা গেলে কারখানাটি পুনরায় চালু রাখা সম্ভব হবে না। তাই কারখানা বাঁচাতে শ্রমিক-কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন এবং তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। কর্মসূচির মধ্যে ২৪ জুলাই ও ২৫ জুলাই কারখানায় গেটে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। এছাড়া তিনদিনের মধ্যে দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আশুগঞ্জ সার কারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি বাবুল মিয়ার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি তৈমুর রহমান, সাবেক সভাপতি সোহরাব হোসেন, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উৎপাদন চালু থাকলে আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হয়। এই সার ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এই আসনের ৫ বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (কলারছড়ি প্রতীক) বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৮১৭ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল প্রতীক) পেয়েছেন ৯ হাজার ৫৮৩। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ (মোটর গাড়ি প্রতীক) পেয়েছেন ৩ হাজার ২৩৮ ভোট। আবু আসিফ আহমেদ গত শুক্রবার রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
তবে, পুলিশের দাবি আবু আসিফ নিজেই আত্মগোপন করেছেন। ভোট গণনা শেষে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন একটি সূত্র এই ফলাফল নিশ্চিত করেছেন।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
আশুগঞ্জ উপজেলায় সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে মা ও দুই সন্তানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খোলাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয়রা তিনজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠান।
আহতরা হলেন- মনির হোসেনের স্ত্রী আকলিমা (৩৫), তার দুই সন্তান মোহাম্মদ (৮) ও মারিয়া (৬)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মনির মিয়া ইটভাটা শ্রমিক। গ্রামের অন্য বাড়িঘর থেকে মনির মিয়ার বাড়িটি কিছুটা দূরে। সেখানে চারচালা টিনের ঘর ও মেঝে কাঁচা অবস্থায় আছে। ইট তৈরির মৌসুম থাকায় তিনি ভাটায় আছেন। বাড়িতে শুধু তার স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান থাকে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, বুধবার রাতের কোনো এক সময় ঘরের সিঁদ কেটে ভেতরে ঢুকে মনিরের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে এসে দেখি তিনজন রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। তাদের দ্রুত স্থানীয়দের দিয়ে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়।
আব্দুর রউফ আরো বলেন, তিনজনকে কুপিয়ে জখম করলেও ঘরের কোনো জিনিস নেয়নি। বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পুলিশকে খবর দিয়েছি।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।