চলারপথে রিপোর্ট :
নৌকাভ্রমণে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার খোলাপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আব্দুল হকের ছেলে ও সাংবাদিক মোঃ শাহজাদা’র চাচাত ভাই মোঃ আরিফুল ইসলাম (৫০)।
গত ২১ সেপ্টেম্বর আশুগঞ্জ থেকে নৌকা যোগে কিশোরগঞ্জ জেলার অস্টগ্রামে নৌকাভ্রমণে গিয়ে চর দেওঘর এলাকায় নৌকাটি ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজের দীর্ঘ ৬৬ ঘন্টা পর আজ ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সরাইলে ডুবাজাল নদীতে তার লাশ ভেসে উঠে।
হুমাইপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার, স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের নিরলস চেষ্টায় আরিফুল ইসলাম এর লাশ পাওয়া যায়। তাঁর পকেটে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগে রক্ষিত আইডি কার্ডের মাধ্যমে সনাক্ত করে স্থানীয় প্রশাসন ও ইউপি সদস্য রাকিব খান বাধন পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করে।
আজ বাদ আসর খোলাপাড়া গ্রামে মরহুমের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যুবলীগ নেতা জনি মিয়াকে (৩৫) ছুরিকাঘাতে পায়ের রগ কেটে হত্যার ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছেলে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
১৬ আগস্ট বুধবার রাতে নিহতের বাবা মকসেন মিয়া বাদী হয়ে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সামা ও তার ছেলে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আমির হোসনসহ ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। বাবা-ছেলে দুজনই আওয়ামী লীগ নেতা এবং দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১১টায় পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। তারা হলেন, তালশহর গ্রামের আজহার শেখের ছেলে আজিম শেখ (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ (৩২)।
এর আগে গত সোমবার রাতে উপজেলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের তালশহর বাজারের অদূরে ওই গ্রামের মকসেন মিয়ার ছেলে যুবলীগ নেতা জনি মিয়া ও আওয়াল মিয়া নামে দুজনকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা জনি মিয়ার দুই পায়ের রগ কেটে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর জখম করে এবং আওয়ালকেও কুপিয়ে আহত করে। তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক তাদের ঢাকায় পাঠান। ঢাকায় যাওয়ার পথে রাত ২টার দিকে নরসিংদীতে জনি মিয়া মারা যান।
আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ জানান, বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে হত্যা মামলা রজু করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন জানান আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে আজ ১১ অক্টোবর বুধবার আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ বিভিন্ন পার্টির ৬জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। প্রার্থীরা সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাচনে সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
মনোনয়নপত্র দাখিলকারীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত মোঃ শাহজাহান আলম, জাতীয় পার্টি মনোনীত মোঃ আবদুল হামিদ, জাকের পার্টি মনোনীত জহিরুল ইসলাম জুয়েল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মনোনীত মোঃ রাজ্জাক হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহিম।
বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাচনে সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোঃ আবদুল হামিদ, দুপুর পৌনে ১টার দিকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ শাহজাহান আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, পরে পর্যায়ক্রমে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মনোনীত মোঃ রাজ্জাক হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহিম।
অপরদিকে দুপুর সোয়া ১টার দিকে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল।
মনোনয়রপত্র দাখিল শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ শাহজাহান আলম বলেন, ১৯৭৩ সালের পর এই আসনে আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেনি। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছে মহাজোটের শরীকদল জাতীয় পার্টির প্রার্থী। উপ-নির্বাচনে দল আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীরা খুশী। জনগনের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করে আসনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিব ইনশাল্লাহ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা বলেন, আমার অসমাপ্ত কাজগুলোসমাপ্ত করার জন্য উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমি জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদের অনুসারী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। জাতীয় পার্টিতে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা আছে। যার কারনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আশা করি নির্বাচনে জনগণের দোয়া এবং ভালোবাসা নিয়ে আমি বিজয়ী হবো।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, এক মাসের জন্য নির্বাচন হলেও এটি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আমার বিশ্বাস। কেননা এর পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আশা করি নির্বাচন কমিশন এবং সরকার চাইবেনা নির্বাচনটি বিতর্কিত হোক। আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হবো।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার মোঃ শাহগীর আলম বলেন, উপ-নির্বাচনে ৬জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ি ১২ অক্টোবর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই, বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপীল ১৩ থেকে ১৭ অক্টোবর, আপীল নিষ্পত্তি ১৮ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ২০ অক্টোবর ও আগামী ৫ নভেম্বর ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে ১০৪ কেজি গাঁজাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৭ আগস্ট শনিবার সকাল ৮টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মো. মমিন শেরপুর জেলার সদর উপজেলার নয়াপাড়া (মোকচ্ছেদপুর) এলাকার ফজল হকের ছেলে ও একই উপজেলার তেতুলতলা এলাকার নওশের মিয়ার ছেলে মো. নয়ন মিয়া।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে আশুগঞ্জ থানার ওসি সফিউল কবির বলেন, শনিবার সকালে জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা করা হয়। অভিযানকালে টোল প্লাজার সামনে থেকে পিকআপভ্যানসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পিকআপভ্যান তল্লাশি করে ১০৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মো: রবিন, আশুগঞ্জ থেকে :
নবগঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে আশুগঞ্জ উপজেলার বিএনপির নেতৃবৃন্দ। গতকাল ১০ মে শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে আনন্দ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নবগঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন, জেলা বিএনপির কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জেলা বিএনপির কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন জয়, জেলা বিএনপির কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি হাজী মোঃ সাদেকুর রহমান।
এছাড়া আলোচনা সভায় উপজেলা বিএনপি, ইউনিয়ন বিএনপির ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভা শেষে দলীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। পরে নবগঠিত জেলা কমিটিতে ঠাই পাওয়া আশুগঞ্জের নেতৃবৃন্দকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাহীনের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। আমরা সকল নেতৃবৃন্দ আগামীদিন জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাহীনের নেতৃত্বে কাজ করবো। দলকে সু-সংগঠিত করবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার এক নারী বিয়ের দেড় বছরের মাথায় শ্বশুরবাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরায় মুক্তা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোররাতে মুক্তার লাশ শ্বশুরবাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা থেকে বাবার বাড়িতে এনে দেওয়া হয়।
সকালে আশুগঞ্জ থানার পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করেছে। এর আগে ভোর চারটার দিকে নিহতের লাশ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নিহতের স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ওই আত্মীয়কে লাশের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত মুক্তা বেগম আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর (কুড়ের পাড়) গ্রামের গোলাম মিয়ার মেয়ে। তার ৭ মাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের শ্বশুর রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান ও শাশুড়ি খোশনাহার বেগমকে আটক করেছে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মুজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী খোশনাহার বেগম মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, রাত ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত মুক্তা ও তার স্বামী আব্দুল্লাহর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। রাত ২টার দিকে স্বামী আব্দুল্লাহ মুক্তাকে মুখে হাত চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ঘটনা আড়াল করতে মুক্তার লাশ তার পরিবারের কাছে অসুস্থতার খবর দিয়ে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করলে খায়েশ মিয়া নামে আত্মীয়কে দিয়ে সিএনজিতে লাশটি মুক্তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মুক্তার বুকের ব্যথার কথা বলে তারা ওই আত্মীয়কে সহযোগিতা করতে সঙ্গে নিয়েছিল।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিগত দেড় বছর আগে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহর সঙ্গে মুক্তার বিয়ে হয়। আব্দুল্লাহ মিষ্টির দোকানের কারিগর। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন মিষ্টির দোকান দেয়ার জন্য মুক্তার বাবার কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকে। এ নিয়ে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরীসহ অন্যান্যরা প্রতিনিয়ত মুক্তাকে মানসিক নির্যাতনসহ মারধর করত। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে বিগত এক বছরে বেশ কয়েকটি সালিশ হয়েছে। মুক্তার বাবা গোলাপ মিয়া মেয়ের শান্তির কথা চিন্তা করে যৌতুকের টাকা দেয়ার আশ্বাস দিলেও অক্ষমতার জন্য ব্যবস্থা করতে না পারায় দিতে পারছিলেন না। এরই মধ্যে মুক্তার একটি ছেলে শিশুর জন্ম হয়। যার বয়স বর্তমানে ৭ মাস। গোলাপ মিয়া মেয়ের জামাইকে মিষ্টির দোকান দিতে টাকা দিতে না পারলেও তার মেয়ের ও নাতির চিকিৎসা, সিজারিয়ান অপারেশনের খরচ প্রদানসহ নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছিলেন।
গতকাল ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মুক্তার শ্বশুর বাড়ির পক্ষ থেকে তারা বাবা গোলাপ মিয়াকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে গোলাপ মিয়া জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছার আগেই তার লাশ নিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তিনি বাড়িতে এসে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান। এদিকে সকালে নিহতের শ্বশুর ও শাশুড়ি মুক্তার লাশ দেখতে এলে পুলিশ তাদের আটক করে।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি দাস বলেন, নিহতের লাশের সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করা হয়েছে। তার গলা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের শ্বশুর শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। যেহেতু ঘটনাস্থল নরসিংদী উপজেলার রায়পুরায় তাই নিহতের স্বজনদের রায়পুরা থানায় এজাহার দিতে বলা হয়েছে।