চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে অবৈধভাবে অবাধে চলছে পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর সহ অন্যান্য ইঞ্জিন চালিত যানবাহন। এতে শহরে যানজট সহ দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়শ। কৃষিকাজে ব্যবহৃত যান সড়ক পথে চালাচ্ছে প্রশিক্ষণ বিহীন চালকরা। এতে দুর্ঘটনায় হতাহত হয়েছে মানুষ।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের প্রধান সড়কে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশী যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ সময়ে শহরে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার নির্মাণ সামগ্রী সহ মালবোঝাই করে চলতে দেখা গেছে। বিগত দিনে অবৈধভাবে টোকেন প্রথায় এসব যানবাহন চলতো একশ্রেণীর অসাধু প্রতিরোধকারীদের সহায়তায়।
সম্প্রতি জেলা পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে গিয়ে ফুটপাত হকার মুক্ত সহ বিভিন্ন কাজ শুরু করেছে। এতে পথ চলাচলে শহরবাসী স্বস্তি পায়। কিন্তু সড়কে অবৈধযান প্রবেশে তেমন বাধা লক্ষ্য করা যায়নি। এতে বিভিন্ন স্থানে দীর্র্ঘ সময় যানজট হয়েছে। শহরের হাসপাতাল রোডে যানজটে পাওয়ার টিলারের পেছনে আটকে পড়েন ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক নিখিল জীবন চাকমা। এসময়ে অবৈধভাবে পাওয়ার টিলার শহরে চলতে পারে কিনা প্রশ্ন করলে, তিনি জানান, এই শহরে ইঞ্জিনচালিত রিকসা যদি চলতে পারে, তাহলে এসব চলতে দোষ কি? পরে বলেন, আমি নতুন এসেছি এসব বন্ধে আমাদের সময় প্রয়োজন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫জন। আর সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ২ জন করে। আজ ৭ ডিসেম্বর শনিবার শহরের পৌর মুক্তমঞ্চে এই সম্মেলন। সম্মেলন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোটে নির্বাচিত হবেন নেতা। আলোচনার বিষয় হচ্ছে সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন। ভোটে নেতা নির্বাচন হবে বলে প্রার্থীরা গত দু’দিন ইউনিয়নে ইউনিয়নে কাউন্সিলরদের দুয়ারে ছুটেছেন। ৭৮১ জন কাউন্সিলর ভোট দিয়ে নির্বাচন করবেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। এনিয়ে সরগরম সদরে বিএনপি’র রাজনীতি। সভাপতি প্রার্থীরা হচ্ছেন এডভোকেট তারিকুল ইসলাম খান রুমা (রিকসা), জহিরুল ইসলাম চৌধুরী লিটন (মোটর সাইকেল), নুরুল হাসান আলম (গরুর গাড়ি), মো: শামীম মোল্লা (প্রাইভেটকার), শাহআলম (ঘোড়া)। সাধারণ সম্পাদক পদের ২ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন (মোরগ) ও রাহিম উদ্দিন রায়হান (ঘোড়া), সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী মো: সালাউদ্দিন (আনারস) ও শাহানুর ইসলাম (আম)। গত ২৯ নভেম্বর জেলা বিএনপি সদর উপজেলা বিএনপি’র নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। পরদিন থেকে শুরু হয় মনোনয়ন বিতরণ। ৫ ডিসেম্বর ছিলো প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ। এরপরই গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রার্থীরা দিনরাত এক করে ছুটতে শুরু করেন কাউন্সিলরদের কাছে।
মাছিহাতা ইউনিয়ন বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ডাক্তার আবদুর রহমান ভূইয়া বলেন-এডভোকেট তারিকুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন এ দু’জনকেই আমরা আশা করছি। তারাই সবার কাছে জনপ্রিয়। সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আজম বলেন, সম্মেলন নিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশ। দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর পর আউটডোরে এমন একটা সম্মেলন করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা চাই কর্মীরা প্রাণভরে তা উপভোগ করুক। নেতাকর্মীদের মুল্যায়ন হোক।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আলমগীর হোসেনও নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
সভাপতি প্রার্থী এডভোকেট তারিকুল ইসলাম রুমা বলেন, দলের নেতাকর্মীদের ভালোবাসা নিয়ে জয়ী হব ইনশাল্লাহ।
এডভোকেট রুমা এরআগেও সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ছিলেন। আর আলমগীর সদর উপজেলা বিএনপি’র বর্তমান সদস্য সচিব।
জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন- সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রথম অধিবেশন। যদি প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় পৌছে তাহলে আর দ্বিতীয় অধিবেশন হবেনা। আমরা শুধু নাম ঘোষণা করে দেব। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো: সেলিম ভূইয়া।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুই মাদ্রাসার ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার নিহত নাইমা আক্তারের বাবা বিল্লাল মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর আগে, গত ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার ভোরে সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রাম থেকে নাইমা আক্তার (১৩) ও মাইমুনা আক্তার (১৫) নামের দুই মাদ্রাসার ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলায় সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের ময়না বেগম ইসলামিয়া হাফিজিয়া মহিলা মাদ্রাসার দুই শিক্ষক হাফেজ জুনায়েদ খন্দকার (২৮) ও হাফেজ রায়হান খন্দকার (২৬) সহ অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
হাফেজ জুনায়েদ খন্দকার ও হাফেজ রায়হান খন্দকার সদর উপজেলার পয়াগ গ্রামের আব্দুল খায়ের খন্দকারের ছেলে।
মামলার পর পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ময়না বেগম ইসলামিয়া হাফিজিয়া মহিলা মাদ্রাসায় গত ৬ মাস যাবত নাইমা আক্তার ও ২০২১ সাল থেকে মাইমুনা আক্তার পড়াশুনা করে আসছে। অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার পর মাদ্রাসা এক সপ্তাহের জন্যে বন্ধ থাকায় তারা দুইজন বাড়িতে চলে যায়। মাদ্রাসা খোলার পর গত ২৩ আগস্ট তাদের দুইজনকে যার যার পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসায় এনে শিক্ষকদের কাছে দিয়ে যায়। কিন্তু পরদিন ২৪ আগস্ট সকালে মাদ্রাসা থেকে মোবাইলের মাধ্যমে জানানো হয় নাইমা ও মাইমুনাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই খবরে মাদ্রাসায় গিয়ে সিসি টিভি ফুটেজ দেখতে চাইলে তা দেখানো হয়নি। তাদের দুইজনকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এই অবস্থায় গত ২৭ আগস্ট ভোরে সাদেকপুরে নাইমা ও মাইমুনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের পর দুইজনের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। মরদেহের অবস্থা ও বর্ণিত আলামতের প্রেক্ষিতে বাদী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন দুই মাদ্রাসার ছাত্রীকে দুই শিক্ষক সহোদর হাফেজ জুনায়েদ খন্দকার ও হাফেজ রায়হান খন্দকার ধর্ষণের পর হত্যা করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন জানান, হত্যা মামলার পর মাদ্রাসার দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন আলেম-ওলামারা।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের কাউতলি এলাকায় এ অবরোধ করেন তারা। এর ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পরায় মহাসড়কের দুইপাশে যানজট তৈরি হয়। তবে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে এবং জনদুর্ভোগ বিবেচনায় তিন ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ ও ২০২১ সালে পৃথক সহিংসতার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় ৭৫টি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় ৩ হাজারেরও বেশি হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীসহ আলেম-ওলামাদের আসামি করা হয়। এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন আলেম-ওলামারা। এর ফলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। সরকারের তরফ থেকে আজকের মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে অবরোধ চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন অবরোধকারীরা।
জেলা হেফাজতে ইসলামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকারিয়া ণমাধ্যমকে জানান, ৫ আগস্টের পর অনেক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হেফাজতে ইসলাম নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের নামে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় করা মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। আজকের মধ্যে মামলাগুলো প্রত্যাহারের ঘোষণা না এলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয় ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য আলেম-ওলামাদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেছেন, গত ৪ মাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে ভেঙ্গে পড়া আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। শহরের ট্রাফিকিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছি। এই শহর নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো। স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেছি, কিন্তু সময় পাইনি।
তিনি বলেন, আরো তিন মাস সময় পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দাঙ্গা চিরতরে নির্মূল করতে পারতাম। ২২ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে তাঁকে দেয়া বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজনের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি নিয়াজ মোঃ খান বিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদায়ী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান আরো বলেন, বিগত ১৫ বছরে পুলিশ একটি দলের হয়ে কাজ করেছে। যার জন্য পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের একটা বিদ্বেষ ছিলো। বর্তমান সরকার পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে দাঁড় করাতে কাজ করছে।
তিনি বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যোগদান করেই প্রথমে প্রেসক্লাবে এসেছি। আবার চলে যাবার সময়ও আবার প্রেসক্লাবে এসেছি। আমার সাড়ে ৩ মাস সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য কতটুকু কাজ করেছি তার মূল্যায়ন আপনারা করবেন। তিনি বলেন, পুলিশের অনেক ভুল-ত্রুটি ছিলো। বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশে ৪৪জন পুলিশকে মারা হয়েছে। এতে করে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছিলো। আমরা পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি। তিনি বলেন, পুলিশের সংস্কার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ও থানার সকল গাড়ি, আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। একটা ধ্বংসস্তুপের উপর আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছিলাম। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি বলতে কিছুই ছিলোনা। এমন পরিস্থিতিতে কাজ করতে কষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সংকট রয়েছে, গাড়ির সংকট রয়েছে। এই সমস্যা একদিনে নিরসন করা সম্ভব নয়। তারপরও বর্তমানে পুলিশ ভালো কাজ করছে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কাজ করতে পেরে ভালো লেগেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকতা খুবই সমৃদ্ধ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকরা পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য কাজ করতে পেরেছি এটাই আমার সান্তনার জায়গা। পুলিশ সুপার বলেন, ৫ আগস্টের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রাফিকিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছিলো। আমরা আস্তে আস্তে ট্রাফিকিং ব্যবস্থা আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।