চলারপথে রিপোর্ট
সরাইল উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের ভাই বাচ্চু ফকির সিপাহীকে (৪৯) ২ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। ২৯ সেপ্টেম্বর রোববার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার আঁখিতারা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই এলাকার মাদক সম্রাট খ্যাত প্রয়াত আলী হোসেনের ছেলে বাচ্চু গ্রেপ্তারের খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। একসময় ভাইয়ের ক্ষমতার প্রভাবে পুলিশ রাতে ধরে পরের দিন ভোরেই ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গত রোববার রাতে এস আই মো. ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আঁখিতারা গ্রামে বাচ্চু ফকির সিপাহীর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানকালে বাচ্চুর হেফাজতে থাকা ২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন। পরে মাদক কারবারি বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করেন। বাচ্চু গ্রেপ্তারের খবরে গোটা আঁখিতারা গ্রামের লোকজন স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেন। এলাকার একাধিক ব্যক্তি মুঠোফোনে গণমাধ্যম কর্মীদের বাচ্চু যেন থানা থেকে ছাড় না পায় সেই অনুরোধ করতে থাকেন।
তারা বলেন, বাচ্চু ও আরেক মহিলা আঁখিতারা গ্রামকে মাদকে সয়লাব করে দিয়েছেন। তাদের নিয়োগকৃত অগণিত লোক গ্রামের আনাচে কানাচে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছেন। ফলে গ্রামের উঠতি বয়সের ছেলেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। যে বাঁধা দিত তাকেই হুমকি দিতেন। বাচ্চুর ভাই ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা হওয়ায় পুলিশ রাতে ধরে নিয়ে পরের দিন ভোর বেলাই ছেড়ে দিত। তবে এ যাত্রা বাচ্চু গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তার বিরূদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুর রাজ্জাক বাচ্চুকে মাদকসহ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদকের বিরূদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। আগে কি হয়েছে তা ভুলে যান। বাচ্চুর বিরূদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। গতকাল তাকে আলামতসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আসন্ন সরাইল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষে পূর্বনির্ধারিত আগামী ২ মে বৃহস্পতিবারের সরাইল উপজেলা জাতীয় পার্টির (রওশন পন্থী) সভা স্থগিত করা হয়েছে।
আজ ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কালিকচ্ছ বাজার জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসময় জাতীয় পার্টির ( রওশন পন্থী) কো-চেয়ারম্যান সাবেক এমপি এডঃ জিয়াউল হক মৃধাসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকায় জাতীয় পার্টির এক সভা ছিল। সেই সভায় আসন্ন সরাইল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে আগামী ২ মে বৃহস্পতিবার কালিকচ্ছ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু অনিবার্য কারণ দেখিয়ে সভা স্থগিতের কথা জানিয়েছেন সরাইল উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আলী নেওয়াজ।
সরাইল প্রতিনিধি:
শ্রমিক নেতা ছায়েদ মিয়া হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ ২১ জানুয়ারি সরাইলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরাইল উপজেলার পশ্চিম কুট্টাপাডা গ্রামের ভিতরের রাস্তায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানান।আজ শনিবার অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এলাকার জনপ্রতিনিধ সাদেক মেম্বার, বিশিষ্ট সরদার আহাদ আলী, আনারুল্লা, সানাউল্লা, দানু মিযা আলমাস মিযা, সিদ্দিক মিযা শেখ আবুল কালাম, আক্কি মিয়া, ওসমান মিয়া, হামিদ মিয়া, আবুল ফয়েজ, ওসমান মিযা, জামির আলী, আবেদ আলী, নিহতের সন্তান মোহাম্মদ আসমত আলীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ এলাকা সাধারণ নারী পুরুষ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, মামলার আসামিরা জামিনে এসে বাদিসহ অন্যান্যদেরকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে। বক্তারা এর প্রতিবাদ করে অবিলম্বে শ্রমিক নেতা ছায়েদ মিয়া হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। বক্তারা মানববন্ধনে এ হত্যাকা- ও জামিনে এসে হুমকি-ধমকির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচারসম্পন্ন করে দোষীদেরকে কঠোর শাস্তির দাবি দেয়ার দাবী জানান। বক্তারা জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর জেলার সদর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড়ে শ্রমিক নেতা ছায়েদ মিয়াকে মারধর করে দুষ্কৃতিকারীরা। পরে ২৭ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কুখ্যাত ডাকাত শফিকুল ইসলাম (৩৫) কে ১টি সুইচ গিয়ার যুক্ত স্টীলের চায়না ধারালো চাকুসহ গ্রেফতার করেছে সরাইল থানার পুলিশ।
আজ ৮ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সরাইল থানা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ এমরানুল ইসলাম। এর আগে রবিবার রাত ১০টার দিকে সরাইল নাসিরনগর লাখাই আঞ্চলিক সড়কের ধরন্তি নামক এলাকায় আজম ২ নং ব্রীকস ফিল্ডের সামনে সড়কে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শফিকুল ইসলাম উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তী গ্রামের আঃ রশিদ মিয়া ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরাইল থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এসআই (নিঃ) নুরুন নবী, এএসআই (নিঃ) দিলিপ কুমার নাথ সঙ্গীয় ফোর্সসহ রবিবার রাত ১০টার দিকে সরাইল নাসিরনগর লাখাই আঞ্জলিক সড়কের ধরন্তী নামক এলাকায় আজম ২ নং ব্রীকস ফিল্ডের সামনে রাস্তার উপর হতে কুখ্যাত ডাকাত শফিকুল ইসলামকে লুঙ্গীর কোমরের ডান পার্শ্বে খোচার মধ্যে ১টি সুইচ গিয়ার যুক্ত স্টীলের চায়না ধারালো চাকু, যাহা খোলা অবস্থায় লম্বা ৯ ইঞ্চিসহ আটক করা হয়।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ এমরানুল ইসলাম জানান, চাকুসহ কখ্যাত ডাকাত শফিকুলকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গত ৫ তারিখ ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল। তার বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি, পুলিশ আক্রান্ত মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সোমবার সকালে গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ছাগলে চারাগাছ খাওয়ায় জীবন দিতে হলো অটোরিক্সা চালক লিয়াকত মিয়াকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে প্রতিবেশী রেজেক মিয়ার কিল-ঘুসিতে লিয়াকত মিয়া (৪৫) নামে এক অটোরিক্সা চালকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলার পাকশিমুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
থানা-পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়, ওই গ্রামের ছান্দু মিয়ার ছেলে লিয়াকত মিয়ার ছাগল প্রতিবেশী রেজেক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে চারাগাছ খেয়ে ফেলে। এতে রেজেক মিয়া ছাগলটি আটকে রাখে। শুক্রবার সন্ধ্যায় লিয়াকত মিয়া প্রতিবেশী রেজেক মিয়ার বাড়িতে ছাগল আনতে গেলে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রেজেক মিয়া কিল ও ঘুসি দিয়ে দুহাত দিয়ে গলায় টিপে ধরলে লিয়াকত মিয়া অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় স্বজনেরা তাকে সরাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নোমান মিয়া বলেন, পাকশিমুল এলাকা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় লিয়াকত মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনেরা। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ সরাইল থানায় আছে। ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে থানায় এখনো মামলা হয়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল ও নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তরুণ-তরুণীদের মতো ভোটকেন্দ্রে হাজির হয়েছেন প্রবীণ ভোটাররাও। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে খুশি তারা।
আজ ৮ মে বুধবার দুপুর পৌনে ১২টায় সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নাতির কোলে করে আসেন ৯০ বছর বয়সী কাশেম মিয়া। নাতির কোল থেকে নেমে দাঁড়ানোটাই অসাধ্য কিন্তু ভোট দেওয়ার ইচ্ছে ধরে রাখতে পারেননি এই বৃদ্ধ। কথা হলে কাশেম মিয়া বলেন, ‘ভোট দিতাম আইসি।’
এ ছাড়া যেন আর কোনো কথাই মুখে ফুটছে না। এ সময় নাতি ইদ্রিস বলেন, সকাল থেকেই ভোট দিতে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছেন। বয়স হয়ে গেছে, তারপরও ভোট দিতে এসেছেন। দাদাকে কোলে নিয়ে ভোট দেওয়াটা হয়ত একদিন স্মৃতি হয়ে থাকবে। একই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা ৭০ বছরের ওসমান গণি বলেন, ছেলের কাঁধে ভর করে ভোট দিতে এসেছি। এই বয়সে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলে কষ্ট হত। কিন্তু তা হয়নি বলে বেশ ভালোভাবেই ভোট দিতে পেরেছি। ভোট দিয়ে ভালো লাগছে।
এদিকে বুধবার সকালে সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া কাদেরিয়া সুন্নিয়া ইবতেদায়ি মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর কথা হয় প্রবীণ নাগরিক রহিমার সঙ্গে। প্রায় ৯০ বছরের এই নাগরিক ভোট দিতে এসেছেন ছেলের স্ত্রী সাকেরা বেগমের হাত ধরে।
রহিমা বেগম বাড়িউড়া গ্রামের মৃত জারু মিয়ার স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভোট দিতে আইসি। কবে মরে যাই কইতে পারি না।’
অন্যান্য ভোটকেন্দ্রগুলোতেও প্রবীণ ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে প্রতিটি কেন্দ্রেই বয়স্ক ভোটারদের লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। তারা সরাসরি ভোট দিয়েছেন।
সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মোমিনুর রহমান বলেন, নাতির কোলে করে আসা বৃদ্ধ কাশেম মিয়াকে আমি নিজে ভোট দিতে সাহায্য করেছি। তাছাড়া পুলিং অফিসারদের বলা ছিল এ সমস্ত ভোটারদের যেন আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বাড়িউড়া কাদেরিয়া সুন্নিয়া ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রিসাইডিং অফিসার রাশেদুল ইসলাম বলেন, প্রবীণ ভোটাররা যে কষ্ট করে ভোট দিতে আসেন এটাই সৌভাগ্য। ভোট দিতে এসে তারা যেন হেনস্তা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেছি।