চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ৮০জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বিকেল ৩টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী মোড়ে সংঘর্ষের সময় আশিক মিয়া (১৭) হত্যার ঘটনায় তার পিতা সাগর মিয়া বাদী হয়ে গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ২০০/৩০০ লোককে আসামী করা হয়েছে।
মৃত আশিক মিয়া পৌর এলাকার কলেজপাড়ার সাগর মিয়ার ছেলে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোঃ মহসিন, তানজিল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হালিম শাহ লিল মিয়া, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারী, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাকিল মিয়া, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সামি আহমেদ নাবিল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুরে মাওলা ফারানি, বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান, বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব হোসাইন প্রমুখ। এজাহারে মামলার বাদী সাগর মিয়া অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মোদি বিরোধী আন্দোলনের সময় জেলার বিভিন্ন ¯’ানে বিক্ষোভ মিছিল হয় ও মিছিলে অংশ গ্রহণ করে আশিক মিয়া।
২৬ মার্চ বিকেল ৩ টার দিকে শহরের কাউতলী মোড়ে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আসামীরা আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ও ককটেল নিপে করে। তাদের ছোড়া গুলি আশিকের বুকে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিসৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় হাসপাতাল থেকে কোন স্লিপ দেয়া হয়নি ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই আশিকের লাশ দাফন করা হয়। ওই সময় স্বৈরাচারি সরকারের দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সতিন মোচর, দুধপুলি, মিষ্টি কুমড়া, চিড়াপুলি, শুটকী পুলি, দুধ চিতই, ঝাল চিতই, হান্দেশ নামক নকশী, মাংসপুলি, পোয়া, মালপোয়া, ঝালভর্তা, ঝিনুক, চকলেট পাটিসাপটা, পাটিসাপটা, ঝুরি, পাপর, ঝিরমিল, শামুক, ঝাল ও মিষ্টি দুই ধরণের ভাপা, মাছ পিঠা, ফুল পিঠা, ভাপা, মেরা, গোল পিঠা, বউ সুন্দরী, আলু পিঠা প্রভৃতি বাহারী নামের অর্ধ শতাধিক জাতের মুখরোচক লোভনীয় পিঠার সমাহার নিয়ে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী পূর্বাঞ্চল সীমান্তের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ইন্ডাষ্ট্রিয়েল স্কুল চত্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় চলছে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব-১৪৩০ এবং লোক সংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিবেশনা।
স্থানীয় সরকারি মহিলা কলেজ, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ, নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী মহিলা কলেজ, উপজেলা মহিলা উন্নয়ন ফোরাম, সরকারি শিশু পরিবার, ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন, চাপুইর মহিলা উন্নয়ণ সমিতি, দরিদ্র মহিলা উন্নয়ন সংস্থা, আনোয়ারা পিঠাঘর সহ ১৭টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত ষ্টল প্রতিদিন বিকেল ৪টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত পিঠা প্রদর্শণ এবং বিক্রয় করছে। গত বুধবার বিকেলে প্রধান অতিথি নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান গেটে ফিতা কেটে উৎসব উদ্বোধন করেন।
এ উপলক্ষে প্রতিদিন ভেন্যু এলাকায় বিপুল সংখ্যক পিঠাপ্রেমী শিশু শিক্ষার্থী, নারী, পুরুষের সমাগম ঘটছে। এই উৎসব সমগ্র জেলা সদরে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে আয়োজিত শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম মাহমুদুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ছড়াকার কবি জয়দুল হোসেন।
উপস্থাপনা করেন প্রভাষক ওসমান গণি সজিব।
বক্তারা বলেন, শীতকালে ঘরে ঘরে বাঙালী লোক সংস্কৃতির ঐতিহ্য পিঠা উৎসব আমরা ভুলতে বসেছি। ছোট বেলায় মায়ের বকুনি খেয়েও পিঠা না খাওয়া পর্যন্ত পড়তে বসতাম না। পিঠা উৎসব শুধু হিন্দুর নয়, শুধু মুসলমানের নয়। এটা বাঙালী জাতির লোকজ সংস্কৃতির ঐতিহ্য। এই পিঠা উৎসব আমাদের জাতির হারানো সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনবে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই ঘরে ঘরে পিঠা তৈরী করতে আবারো মনোযোগী হবে। ঘরে ঘরে মা চাচীদের শীতকালীন পিঠা আয়োজন আমাদের অতীত স্মৃতির একটা অংশ। পিঠা উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব। এটাকে আমরা ধরে রাখতে চাই, হারাতে দিব না।
প্রতিদিন বিকেল ৪টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৭টি ষ্টলে বাহারী নাম ও সৌন্দর্যের পিঠা বিক্রির পাশাপাশি মঞ্চে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনায় লোকজ অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিবেশ করে সবাইকে মুগ্ধ করছেন। আগামী কাল শুক্রবার রাতে তিনদিন ব্যাপী পিঠা উৎসবের সমাপনী ঘটবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের চান্দি গ্রামে চান্দি যুব কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে দুইশত পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছে যুবকরা।
আজ ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে চান্দি যুব কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ভূূঁইয়া। অনুষ্ঠানে তেল, চিনি, ছোলা বুট, ডাল, মুড়ি, শরবত, আলু ইত্যাদি বিতরণ করা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, গরীব-দুখী মানুষ যাতে রমজানে রোজা রেখে ভালোভাবে ইফতার করতে পারেন এজন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী ইফতার সামগ্রী দেয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, কৃষকের অধিকার রক্ষায় কৃষকবান্ধব একটি রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
আজ ৪ মে শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা কৃষক লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায়না। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত কৃষক কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্য পায় না। কৃষক সংগঠন শক্তিশালী না হওয়ায় তারা তাদের দাবি-দাওয়া সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেনা। এজন্য কৃষকের অধিকার রক্ষার স্বার্থে একটি কৃষিবান্ধব রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা প্রয়োজন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষক লীগ হতে পারে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী একটি রাজনৈতিক শক্তি।
তিনি আরো বলেন, যারা মুখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলে অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কাজ করে এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে যাদের সখ্য তাদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে। সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের আসন্ন সম্মেলন সফল করতে এবং একটি গতিশীল সংগঠন গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি দক্ষ, যোগ্য ও কর্মঠ লোকের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন শুধু চেহারা দেখে নয় কর্মকাণ্ড দেখে কমিটি গঠন করতে হবে। যারা দলের জন্য কাজ করবে এবং শ্রম দিবে তাদেরকে কমিটিতে স্থান দিতে হবে।
গত ২৯ জুলাই ২০২২ খ্রিস্টাব্দে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের এটা দ্বিতীয় বর্ধিত সভা। সভায় বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হেজবুল বাহার রানা আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান শরীফ এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ বিশেষ বর্ধিত সভা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট সমীর চন্দ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাজির মিয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার মজিবুর রহমান মিয়াজী প্রমুখ। সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল উপজেলার কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। জেলার ৯টি উপজেলায় বসেছে ৭১টি পশুর হাট। ইতিমধ্যেই এসব হাটে বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। তবে ক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর গবাদি পশুর দাম একটু বেশী।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৬৬টি গবাদি পশু লালন-পালন করা হয়। তবে জেলায় কোরবানীর জন্য গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার। চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে ২০ হাজার গবাদি পশু।
তবে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন।
এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। যার জন্য জেলায় কোরবানীর পশু নিয়ে কোন সমস্যা হবেনা। তিনি বলেন, এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু কেনা বেচা হবে বলে আশা করছি।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে মধ্যে সদর উপজেলায় ৪১০৬টি খামার, সরাইল উপজেলায় ৯৬৬টি, আখাউড়া উপজেলায় ৬৭৪টি, কসবা উপজেলায় ২১৩৬টি, নাসিরনগর উপজেলায় ১৬০৭টি, নবীনগর উপজেলায় ১৫৯৫টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১২৫০টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৯৩৭টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ৬২০টি খামার রয়েছে।
এসব খামারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ৫২০৭৭টি ষাঁড়, ১৯১৯৫টি বলদ, ১৭৬৮৪টি গাভী, ১২২১৩টি মহিষ, ১৩৫৮৮টি ছাগল, ৫৯০৭টি ভেড়া, অন্যান্য ৩২টি লালন-পালন করা হয়। এছাড়াও অনেক কৃষক পরিবারেই কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন।
এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন উপজেলায় কোরবানীর হাট বসছে ৭১টি। এইসব হাটের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় পৌরসভার ১টিসহ মোট ৫টি, সরাইল উপজেলায় ৯টি, নাসিরনগর উপজেলায় ৯টি, আখাউড়া উপজেলায় ৫টি, কসবা উপজেলায় ১১টি, নবীনগর উপজেলায় ১৩টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৫টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ও বিজয়নগর উপজেলায় বসবে ৮টি কোরবানীর হাট।
এসব হাটে কাজ করবে ৫৩টি মেডিকেল টীম। এর মধ্যে সদর উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, সরাইল উপজেলায় কাজ করবে ৪টা, নাসিরনগর উপজেলায় কাজ করবে ৯টা, আখাউড়া উপজেলায় কাজ করবে ৫টা, কসবা উপজেলায় কাজ করবে ৩টা, বাঞ্চারামপুর উপজেলা কাজ করবে ৫টা, আশুগঞ্জ উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, বিজয়নগর উপজেলায় কাজ করবে ২টা টীম।
সরজমিনে কয়েকটি খামারে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে খামারের মালিক- কর্মচারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খামারিরা রুটিন মাফিক গবাদি পশুর পরিচর্যা করছেন। প্রতিটি খামারেই কাজ করছে ৮/১০জন শ্রমিক। গবাদি পশুকে গোসল করানো, খাবার দেয়াসহ গবাদি পশুর গোবর পরিষ্কার করেন তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের নয়নপুর এলাকার রূপচান্দ বিবি ডেইরি খামারে গিয়ে দেখা যায় ওই খামারে কোরবানীর জন্য শতাধিক দেশীয় গরু লালন-পালন করা হচ্ছে।
খামারের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা দেড় শতাধিক গরু লালন-পালন করেছিলাম। গত বছর ৩০টি গরু বিক্রি করতে পানিনি। গত বছরের থাকা ৩০টি গরুসহ এই বছর শতাধিক গরু লালন-পালন করেছি। সবগুলোই দেশীয় জাতের। প্রতিদিন গরুগুলোকে ২/৩বার করে মোটরের পানি দিয়ে গোসল করাই। গরুর যাতে গরম না লাগে সেজন্য ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে খামারে। গরুগুলোকে স্বাভাবিক খাওয়ার দেয়া হয়। বেশীর ভাগ সময় দেয়া হয় ঘাস।
তিনি বলেন, এ বছর গুরুর খাবার ও ঔষধপত্রসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি গরুতে ২০/২৫ হাজার টাকা বেশী খরছ হয়েছে। আশা করি এই আমাদের সবগুলো গরু বিক্রি হবে, দামও ভাল পাবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের গোকর্ণঘাটের নিউ প্রিন্স ডেইরী খামারে কোরবানীর জন্য ২৬০টি গরু লালন-পালন করা হয়। ইতিমধ্যেই তারা ৩০ টি গরু বিক্রি করে ফেলেছেন। এই খামারে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে।
খামারের মালিক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, ২৬০টি গরুর মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩০ গরু বিক্রি করে দিয়েছি। ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা খামারে এসে গরু কিনে নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, খামারের বড় গরুটা ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। খামারে ১৮জন শ্রমিক কাজ করে। তিনি বলেন, এই বছর প্রতি গরু ১০-১৫ হাজার টাকা বেশী দিয়ে কিনতে হয়েছে। এছাড়াও এ বছর গবাদি পশুর খাবার ও ঔষুধপত্রের দাম বেশী। তিনি বলেন আশা করি ভারত থেকে গরু না আসলে আমাদের ব্যবসা ভালো হবে।
এ ব্যাপারে খান এগ্রো ডেইরি ফার্মের কর্ণধার ও জেলা ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ সাইফুদ্দিন খান শুভ্র জানান, জেলায় প্রায় ১৩ হাজার ৮শত খামারি রয়েছে। গো-খাদ্যের দাম বাড়াতে গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, দানাদার খাবারের পরিবর্তে, গো-খাদ্য ঘাসের উৎপাদন বাড়াতে পারলে গরুর দাম অনেক কমে যাবে।
তিনি বলেন, এ বছর তার খামারে বিক্রির জন্য ১০৭টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি খামার থেকেই গরু বিক্রি করি। তিনি বলেন, ভারত থেকে চোরাইপথে গরু না আসলে স্থানীয় খামারীরা লাভবান হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন। এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। এতে জেলার চাহিদা পূরণ হবে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু বিক্রি করা হবে বলে আশা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১২ অক্টোবর শনিবার বিকেলে শহরের পৌর মুক্ত মঞ্চে জেলা রিক্সা ভ্যান শ্রমিক দলের সভাপতি মো: দারু মিয়ার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক জননেতা ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল হক খোকন। বিশেষ বক্তা ছিলেন শ্রমিক দলের সভাপতি হেবজুল বারী ও জেলা শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: বাহার চৌধুরী। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন, শ্রমিকদের অধিকার এবং লাইসেন্স নিয়ে বিগত সরকারের আমলে যে অপকর্ম হয়েছে, যে বঞ্চনার ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, তা আর হতে দেওয়া হবে না। আমরা এই অন্যায় থেকে এই সেক্টরকে মুক্ত করবো। প্রত্যেক রিক্সা চালক লাইসেন্স পাবেন। কোন সিন্ডিকেট থাকবে না। তিনি আরো বলেন, অবৈধ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। তারা বারবার অবৈধ নির্বাচন করে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এজন্য তাদের পরিণতি ভয়াবহ হয়েছে। আমরা বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো এই অবস্থা চাই না। যে কাজ করে আওয়ামী লীগ বিদায় হয়েছে, আমরা বিএনপি সেই কাজ করবো না। রিকসার লাইসেন্স রিক্সাওয়ালারাই পাবে, এটা আমরা নিশ্চিত করবো। গরীব মানুষদের জন্য আমরা কাজ করবো। উল্লেখ্য, দুপুর থেকেই মিছিল সহকারে শ্রমিক দলের বিভিন্ন সেক্টরের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুনে সজ্জিত হয়ে মিছিল সহকারে জনসভায় যোগদান করেন। জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা রিক্সা ভ্যান শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মিয়া।