চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ সার কারখানার পিয়ন বোরহান উদ্দিন বাহার হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনকে (৪৪) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২ অক্টোবর বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বোরহান উদ্দিন বাহারের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ায়। তিনি সার কারখানায় চাকরির পাশাপাশি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুবারের ইউপি সদস্য ছিলেন।
আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম জানান, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানির কোয়ার্টার থেকে বোরহান উদ্দিন বাহারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনা নিহতের ছেলে আব্দুল্লাহ ফারুক অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশি তদন্তে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দেলোয়ার জানায়, ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর বোরহান উদ্দিন বাহারের কাছে বেড়াতে আসেন তিনি। পরদিন রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে বোরহান উদ্দিন বাহার ব্যাংকের চেকের কাজ করছিল। ৩০ ডিসেম্বর ভোরে দেলোয়ার কাজ বন্ধ করতে বোরহানকে বললে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। উত্তেজিত হয়ে বোরহানকে ধাক্কা দিলে তিনি খাটের সঙ্গে লেগে আঘাত পান। এক পর্যায়ে আসামি দেলোয়ার সজোরে ধাক্কা দিলে দেওয়ালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায় বোরহান।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রায় ২ হাজার বোতল ফেনসিডিলসহ শেখ শাখাওয়াত হোসেন (৪০) নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে পুলিশ।
১ জুন রোববার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ সোহাগপুর আব্বাস উদ্দিন কলেজের সামনে একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে ফেনসিডিলসহ তাকে আটক করা হয়। এ সময় ফেনসিডিল পরিবহনে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়।আটক
শেখ শাখাওয়াত হোসেন (৪০) ঢাকা জেলার গেন্ডারিয়া উপজেলার ডিস্টিলারি (১২৯/৪/১) এলাকার শেখ সাঈদ হোসেনের ছেলে।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বিল্লাল হোসেন জানান, রবিবার দুপুরে সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের আশুগঞ্জ সোহাগপুর আব্বাস উদ্দিন কলেজের সামনে আশুগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর নুরন্নবীর নেতৃত্বে মাদক বিরোধী অভিযান চালানো হয়। এসময় একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে মোট ১৯৭০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ সময় প্রাইভেটকারে থাকা শেখ শাখাওয়াত হোসেন (৪০) নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। পরে জনসম্মুখে জব্দ করা ফেনসিডিল গণনা করে ও প্রাইভেটকারসহ জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে সিরাজ মিয়া (৪৪) নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ ২০ আগস্ট রবিবার সকাল আটটার দিকে উপজলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের মৈশাইর আলাকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সিরাজ মিয়া উপজেলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের মৈশাইর গ্রামের উত্তর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত সোলায়মান মিয়ার ছেলে।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি আহত প্রতিবন্ধী সিরাজ মিয়া জানান, সরাইল উপজেলার কালিগচ্ছ গ্রামের ব্রিকস ফিল্ড তার বড়ভাই সাধনের ৮ শতাংশ জায়গা রয়েছে। এ জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে মন মিয়ার সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এ জায়গাটি জোরপূর্বক ভাবে মন মিয়া দখল করে রেখেছে। মন মিয়ার বিরুদ্ধে তার বড়ভাই সাধনে একটা মামলা করেছে। এসব বিষয় নিয়ে মন মিয়ার সাথে প্রায় ঝগড়া হতো তার। আজকে সিরাজ মিয়া বাড়ি থেকে আশুগঞ্জ যাওয়ার পথে মন মিয়া, সোহাগ, হারিজ মিয়াসহ ৭-৮ জন তাকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি করেন।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ জানান, এক প্রতিবন্ধীকে মারধরের কথা শুনেছি। হাসপাতালে ও ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
একই বিদ্যালয়ে পাশাপাশি দুটি ভবন। একটি নির্মাণের চার বছর পর আরেকটি নির্মাণ করা হয়। পুরাতন ভবনটির সব ঠিক থাকলেও পরবর্তীতে নির্মাণ করা ভবনটি মাত্র ১৭ বছরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের পিলারে পলেস্তারা খসে পড়ে দেখা দিয়েছে ফাটল এবং বের হয়ে এসেছে রড। বিদ্যালয়ের ছাদ থেকেও খসে পড়ছে পলেস্তারা। ছাদের বেশ কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হলেও মেলেনি কোনো সাড়া। ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠদান।
এমন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা পূর্বপাড়ায় ১৯৬৮ সালে খড়িয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ে ২৪৭ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী ১০৮ ও মেয়ে শিক্ষার্থী ১৩৯ জন আছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও একজন সংযুক্তি শিক্ষকসহ পাঁচজন আছেন।
২০০১-২০০২ অর্থ বছরে বিদ্যালয় চত্বরের পূর্বদিকে একটি পাকা ভবন এবং ২০০৫-০৬ অর্থবছরে পশ্চিমদিকে আরেকটি পাকাভবন নির্মাণ করা হয়। দুটি ভবনই পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০০৫-২০০৬ সালে নির্মাণ করা বিদ্যালয়ের পশ্চিমদিকের ভবনের নিচের পিলার, বিমের পলেস্তরা খসে পড়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় রড বের হয়ে গেছে। পশ্চিমদের ভবনে শ্রেণিকক্ষ, বারান্দা, দপ্তরের ছাদের ওপর একাধিক জায়গায় ফাটল আছে। খসে পড়ছে পলেস্তরা। এর মধ্যেই প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগমসহ অন্য শিক্ষকরা ঝুঁকি নিয়েই সেখানে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। পশ্চিমদিকের জরাজীর্ণ ভবনে দুটি শ্রেণিকক্ষ, একটি দাপ্তরিক কাজ ও শিক্ষকদের বসার জন্য একটি কক্ষ এবং শৌচাগার আছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমদিকের ভবনে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রাক প্রাথমিকের এবং সাড়ে ১২টা থেকে সোয়া ৪টা পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলে। পাশের ভবনে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণির পাঠদান চলে। প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগম গত বছরের শেষ দিকে বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনের কথা উল্লেখ করে নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি লিখেন। একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভবনটির দুরবস্থার কথা জানালেও কোনো কাজ হয়নি। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই সেখানে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল হাই, রোমান মিয়া, জোনাকি আক্তার জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করতে তাদের ভয় লাগে। ছাদের রড বের হয়ে গেছে। স্কুলের ছাদ থেকে সিমেন্ট খসে খসে পড়ে। সিঁড়ির দেওয়ালও ভেঙে গেছে। সিঁড়ির দিকের ফাটল দেখলে ভয় লাগে। ভয় নিয়ে আমরা ক্লাস করি।
স্থানীয় হানিফ মিয়া বলেন, চার বছর আগে নির্মাণ করা ভবন ভালো আছে। পরে নির্মাণ করা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ ভবনে আতঙ্ক নিয়ে চলে শিক্ষা কার্যক্রম।
খড়িয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগম বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালের শেষের দিকে বিদ্যালয়ের একটি ভবনের জরাজীর্ণের অবস্থা উল্লেখ করে নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। আগেও বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাঠদান চালানোর জন্য বিকল্প কোনো ভবন নেই। তাই বাধ্য হয়েই জরাজীর্ণ ভবনে শ্রেণির কার্যক্রম এবং দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বলেন, জেলা ও সব উপজেলার জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের তালিকায় এ বিদ্যালয়ের নামও আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে পাঁচজনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। আজ ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত এই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ কাঁচা বাজার মনিটরিং করেন। কাচা বাজারে মূল্য তালিকা না থাকার কারণে তিনি বাজারের পাঁচজন ব্যবসায়ীর প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে মোট ৫ হাজার টাকা মোবাইল কোর্টে জরিমানা করেন এবং খুচরা মনিহারী ব্যবসায়ীকে সতর্ক করেন।
বাজারে সবজি, ডিম, ব্রয়লার মুরগি, আলু, ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, আদা ও ভোজ্য তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামল চন্দ্র বসাক।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। কেউ ইচ্ছামত নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতার কাছ থেকে নিলে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে সে যতোবড় ব্যবসায়ী হোক না কেন তাকে আইনের আনা হবে এতে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আশুগঞ্জে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার মূল নায়ক আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ মিজানুর রহমান ওরফে আডা মিজানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ বাজার থেকে আশুগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসাইন জানান, আটক মিজানের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় একাধিক বিস্ফোরক মামলা রয়েছে।
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আশুগঞ্জ গোল চত্বর এলাকায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এর মূল নেতৃত্ব দেন মিজান। শিক্ষার্থীদের উপর হামলার সময়ের মিজানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় উঠেছিল।