চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার এজাহারনামীয় এক আসামিকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বাদীর অনাপত্তি ও উপজেলা বিএনপিসহ স্থানীয় লোকজনের চাপের মুখে গতকাল ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছেড়ে দেওয়া ওই আসামির নাম রোমান মিয়া। তিনি ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গত ২০ আগস্ট আশুগঞ্জ থানায় হওয়া একটি মামলার ৬ নম্বর আসামি। গত বুধবার দিবাগত রাতে তাঁকে আটক করে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছিল সেনাবাহিনী।
পুলিশ বলছে, বাদী ভুলক্রমে মামলায় ওই ব্যক্তিকে আসামি করেছে বলে আদালতে হলফনামা দিয়েছেন। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে আসামি ছেড়ে দেওয়ার পর দুপুরে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেনসহ পুলিশের তিন সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহার হওয়া অন্য দুই সদস্য হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী। তাঁদের প্রশাসনিক কারণে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, ওসি ও দুই এসআইকে প্রশাসনিক কারণে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে। প্রত্যাহারের সাথে আসামি ছেড়ে দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আশুগঞ্জ বাজারের ভাড়া বাসা থেকে রোমান মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন সেনাসদস্যরা। রাত থেকেই তাঁকে ছেড়ে দেয়ার জন্য আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মী ও উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লোকজন থানায় চাপ দিতে থাকেন। তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে বৃহস্পতিবার সকালে থানার সামনে অনেকেই অবস্থান নেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে থেকে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে আশুগঞ্জ গোলচত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। তখন রোমান মিয়াসহ অনেকেই ককটেল বিস্ফোরণ করে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা পিস্তল দিয়ে ছাত্রদের ওপর গুলি ছোড়েন। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় ২০ আগস্ট রমজান মিয়া নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিনসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলার ৬ নম্বর আসামি রোমান। রোমানের ছোট ভাই ও দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মিয়া মামলার ৫ নম্বর আসামি।
মামলার বাদী রমজান মিয়া বলেন, ভুল করে রোমান মিয়াকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। রোমানের বিষয়ে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। এ ছাড়া উপজেলা বিএনপি দু’টি পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ায় বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, বাদী বিএনপির সমর্থক এবং ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন। উপজেলার একটি স্বার্থান্বেষী মহল, যারা জীবনে কোনো দিন বিএনপি করেনি, তারা এখন নিজেদের বিএনপির নেতা-কর্মী দাবি করে ওই আসামিকে ছাড়িয়ে নেয়। এর সঙ্গে উপজেলা বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কারণ রোমান মিয়া সুবিধাবাদী ও আওয়ামী লীগের লোক। তিনি আওয়ামী লীগের একাধিক সভায় উপস্থিত ছিলেন। এক সভায় সারা জীবন আওয়ামী লীগ করবেন বলে বক্তব্য দেন, যেটি ভাইরালও হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, সেনাসদস্যরা ওই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে মামলার বাদী থানায় গিয়ে তাঁকে ভুলক্রমে মামলার আসামি করা হয়েছে বলে জানান। এ বিষয়ে তিনি আদালতে একটি অ্যাফিডেভিট (হলফনামা) দিয়েছেন এবং পুলিশকে সেটি কপি দেন। বাদীর অভিযোগ না থাকায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। সূত্র : প্রথম আলো
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ সার কারখানার পিয়ন বোরহান উদ্দিন বাহার হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনকে (৪৪) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২ অক্টোবর বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বোরহান উদ্দিন বাহারের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ায়। তিনি সার কারখানায় চাকরির পাশাপাশি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুবারের ইউপি সদস্য ছিলেন।
আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম জানান, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানির কোয়ার্টার থেকে বোরহান উদ্দিন বাহারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনা নিহতের ছেলে আব্দুল্লাহ ফারুক অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশি তদন্তে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দেলোয়ার জানায়, ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর বোরহান উদ্দিন বাহারের কাছে বেড়াতে আসেন তিনি। পরদিন রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে বোরহান উদ্দিন বাহার ব্যাংকের চেকের কাজ করছিল। ৩০ ডিসেম্বর ভোরে দেলোয়ার কাজ বন্ধ করতে বোরহানকে বললে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। উত্তেজিত হয়ে বোরহানকে ধাক্কা দিলে তিনি খাটের সঙ্গে লেগে আঘাত পান। এক পর্যায়ে আসামি দেলোয়ার সজোরে ধাক্কা দিলে দেওয়ালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায় বোরহান।
চলারপথে রিপোর্ট :
দোকান থেকে দিয়াশলাই আনতে গিয়ে ফাতেমা ও মঈন উদ্দিন নামের দুই ভাই-বোন নিখোঁজের ১০ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ২০ নভেম্বর সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার তারুয়ার শালুক পাড়া বাজারের সামনে থেকে নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধার করে সদর মডেল থানার পুলিশ। এর আগে সকাল ৭টার দিকে মধ্যপাড়া শান্তিবাগ এলাকার পোয়া পুকুরের উত্তর পাড় থেকে দুই শিশু নিখোঁজ হয়।
উদ্ধারকৃত শিশু ফাতেমা ও মঈন উদ্দিন শান্তিবাগ মহল্লার পোয়া পুকুরের উত্তর পাড় এলাকার কাউসার মিয়ার সন্তান।
নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধারের বিষয়টি সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসাইন নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার বিকেলে আশুগঞ্জ উলজেলার তারুয়া ইউনিয়নের তারুয়া গ্রামের শালুক পাড়া বাজারে একটি গাড়ি থেকে দুই শিশুকে ফেলে চলে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। পরে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে শিশুদের খোঁজ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং শিশুদের উদ্ধার করি। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে শিশুদের তাদের বাবা-মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, সকালে ৭টার দিকে মধ্যপাড়া শান্তিবাগ এলাকার পোয়া পুকুরের উত্তর পাড় হাজী মোহাম্মদ আলী ভবনের রাস্তার পাশের মুদি মালের দোকানে যাওয়ার পর শিশুরা নিখোঁজ হয়। পরে শিশুদের খোঁজে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ শিশুদের উদ্ধারের কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে শিশুদের আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে উদ্ধার করি।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘জীবনের জন্য হাসি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সেচ্ছাসেবী সংগঠন স্মাইল ইন লাইফ’র উদ্যোগে মাস ব্যাপী তিন হাজার মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচির চর্তুথ ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলায় অসহায়, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ২’শত পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নের ভবানীপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি কামরুল হাসান মোবারক, বিশেষ অতিথি ছিলেন আশুগঞ্জ উপজেলার সমাজ সেবা কর্মকর্তা সৈয়দ রাফিউদ্দিন, স্মাইল ইন লাইফ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা আসিফ ইকবাল খান ও বৈশাখি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আল মামুন প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, ‘স্মাইল ইন লাইফ’ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই সময় তাদের এই মানবিক কার্যক্রমকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ কেজি গাঁজা এবং ৩ হাজার ৭৭৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ১৬ জুলাই রবিবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে ও গতকাল শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর-আখাউড়া আঞ্চলিক সড়কের কোড্ডা রেলগেইটের পাশ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ডহরগাঁও গ্রামের মোঃ জালাল উদ্দিন (৩২), একই জেলার আড়াইহাজার উপজেলার বাটিকবালিয়াপাড়ার মোঃ রবিন মিয়া রনি (২৩), কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবপুর গ্রামের নিবির মিয়া (২১) ও ভৈবর টিনবাজার এলাকার অন্তর দাস (১৯)।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার সকালে আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকারে তল্লাশী চালিয়ে ২৪ কেজি গাঁজাসহ জালাল উদ্দিন ও রবিন মিয়া রনিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে।
অপর দিকে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার সুলতানপুর-আখাউড়া আঞ্চলিক সড়কের কোড্ডা রেলগেইটের পাশে অভিযান চালিয়ে নিবির মিয়া-ও অন্তর দাসকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।