অনলাইন ডেস্ক :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সকল ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানবকল্যাণ। আমরা সবাই বাংলাদেশি। এখানে সবাই একই সূত্রে গাঁথা। এখানে মেজরিটি বা মাইনরিটির কোনো স্থান নেই। সবাই এক এবং অভিন্ন সত্ত্বা। ধর্মীয় মূল্যবোধকে দেশ ও জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।
শারদীয় দুর্গোৎসব ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ ১৩ অক্টোবর রোববার বঙ্গভবনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বিশিষ্ট ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মত বিনিময়ের আগে এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপ্রধান বিশ্বাস করেন, আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে বিদ্যমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি একটি সুন্দর আগামী ও আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর অবদান রাখবে। তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্বে যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিস্থিতির কারণে মানবতা আজ বিপর্যস্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ পুরো বিশ্ব অর্থনীতির সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এছাড়া দেশের বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরোপকারের মহান ব্রত নিয়েই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের এ সংকটকালে সহায়-সম্বলহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পরমত সহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস আর সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদা ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করবে- এটাই সকলের প্রত্যাশা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দেশের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের সাথে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। দুর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি সামাজিক উৎসবও। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ এ উৎসবকে সর্বজনীন রূপ দিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রাখতে হবে। মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের বন্ধনে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি প্রগতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হোক এবারের বিজয়ার অঙ্গীকার।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান শেষে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে সকল অতিথিগণের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, বিচারপতি বিশ্বজিৎ দাস, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, হিন্দু ধর্মীয় গুরু রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস কুমার পাল অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করেছেন। বিকল্প রপ্তানি বাজার অন্বেষণ করতে বলেছেন। কারণ বিগত বছরগুলোতে উৎপাদন ও রপ্তানিযোগ্য পণ্যের সংখ্যা বেড়েছে।
আজ ১১ মে বৃহস্পতিবার আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিতে গিয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘উই মাস্ট ফিল সেল্ফ রেসপেক্টস’। নিজের আত্মসম্মান নিজের সমুন্নত রাখতে হবে। এটা দেশের প্রতি আহ্বান এবং আমাদের জন্য নির্দেশ। প্রতিটি পয়সা যেখানে প্রয়োজন সেখানে বিধি-বিধান এবং জনগণের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এবং বিলাসবহুল মানসিকতা পরিহার করে সরকারি ব্যয়ে সংযত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে মান্নান বলেন, আমরা খরচ করব, কিন্তু যেখানে প্রয়োজন সেখানে খরচ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিদেশি ঋণ সমর্থিত প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন। মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে আরো প্রকল্প গ্রহণ করার পর্যাপ্ত সক্ষমতা রয়েছে তাদের আরো প্রকল্প গ্রহণের এবং সাধারণভাবে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে সরকার জনগণকে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করবে কি না জানতে চাইলে মান্নান বলেন, সরকার তার নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে। আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাব। আমরা জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করি।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফরকালে বিশ্বব্যাংককে বলেছেন, তারা আরো ঋণ দিলে বাংলাদেশ তা যথাসময়ে পরিশোধ করবে।
এ সময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, এখন থেকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বৈদেশিক সাহায্যের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ প্রকল্প ঋণ বা প্রত্যক্ষ প্রকল্প অনুদান শব্দটি ব্যবহার করবেন।
তিনি জানান, এনইসি এডিপিতে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে করা বিনিয়োগ প্রতিফলনের একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পিছিয়ে থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে এডিপি বাস্তবায়নে সক্ষমতা বাড়াতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে বলেছেন।
তিনি আরো বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো মন্ত্রণালয়গুলো আরো প্রকল্প নিয়ে আসতে পারে। সূত্র : বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির শোকের দিন। ইতিহাসের কলঙ্কিত কালো দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে সংঘটিত হয়েছিল এ কলঙ্কিত অধ্যায়। ৪৮ বছর আগে এ দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল। বাঙালির মুক্তির মহানায়ক স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে যখন ক্ষত-বিক্ষত অবস্থা থেকে দেশটির পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তখনই ঘটানো হয় ইতিহাসের নির্মম এ ঘটনা। সেই নির্মম ঘটনার বর্ণনায় কবি রফিক আজাদ তার ‘এই সিঁড়ি’ কবিতায় লিখেছেন- ‘সিঁড়ি ভেঙে রক্ত নেমে গেছে-/ স্বপ্নের স্বদেশ ব্যেপে/ সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে/ অমল রক্তের ধারা ব’য়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে॥’
সেদিন ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও পারভীন জামাল রোজী। পৃথিবীর এ জঘন্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ ও মেয়ে বেবি, সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।
প্রতি বছর দিনটি আসে বাঙালির হৃদয়ে শোক আর কষ্টের দীর্ঘশ্বাস হয়ে। পুরো জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় শ্রেষ্ঠ সন্তানকে স্মরণ করে।
আজ জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে পালন করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। এছাড়া জাতীয় দৈনিক ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছাত্রাবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সংগ্রামী নেতা। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ৬ দফার প্রণেতা ছিলেন। সত্তরের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীকে পরিণত করেন। পাকিস্তানের সামরিকজান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ষাটের দশক থেকে তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উত্তাল সমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বজ কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এ ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছিনিয়ে আনে দেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি এ স্বাধীন বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর গোটা বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। হত্যাকারীদের প্রতি ছড়িয়ে পড়েছিল ঘৃণা। পশ্চিম জার্মানির নেতা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।
বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পুনর্বাসিত হতে থাকে। তারা এ দেশের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে নানা পাঁয়তারা করে। শাসকদের রোষানলে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণও যেন নিষিদ্ধ হয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল মোশতাক সরকার। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসীন হলে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করা হয়। বিচার শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ললাটে যে কলঙ্কতিলক পরিয়ে দেয়া হয়েছিল, ৩৫ বছরেরও বেশি সময় পর ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি সেই কলঙ্ক থেকে জাতির মুক্তি ঘটে। বঙ্গবন্ধু হত্যার চূড়ান্ত বিচারের রায় অনুযায়ী ওই দিন মধ্যরাতের পর পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে, বিভিন্ন দেশে পলাতক থাকায় আরো কয়েকজন খুনির সাজা এখনও কার্যকর করা যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চালের ড্রামে গাঁজা পাচারকালে ২২ কেজি গাঁজাসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। আজ ৩০ জুলাই রবিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের একটি দল।
র্যাব সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের দলটি ভৈরব উপজেলার জগন্নাথপুর বেণীবাজারে একটি মাদ্রাসার সামনে অভিযান চালায়। এ সময় উজ্জ্বল মিয়া (১৯) নামে একজনকে আটক করে। পরে তার কাছে থাকা একটি চালের ড্রাম তল্লাশি করে ৮টি বান্ডিলে মোড়ানো ২২ কেজি গাঁজা, একটি মোবাইল ফোনসেট ও নগদ ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। উজ্জ্বল মিয়া হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মুড়াপাড়া গ্রামের মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে।
র্যাবের স্কোয়াড কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আক্কাছ আলী গ্রেফতার উজ্জ্বল মিয়াকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করে জানান, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে ভৈরব থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী মামলা দিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২০০টি ভাষণ সংবলিত ‘ভায়েরা আমার’ শিরোনামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ১২ জুন সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের শুরুতেই বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। ‘ভাইয়েরা আমার’ নামটি প্রধানমন্ত্রীর নিজের দেওয়া। এ ছাড়া বইটির ভূমিকাও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাষণসমগ্রটির সংগ্রহ, সংকলন ও সম্পাদনা করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম। বইটি প্রকাশ করে জিনিয়াস পাবলিকেশন।
জাতির পিতার এই ভাষণসমগ্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এতে এখন পর্যন্ত পাওয়া সকল ভাষণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বইটির দুইশ’ ভাষণের মধ্যে বাংলাদেশ বেতারের আর্কাইভস থেকে প্রাপ্ত টেপ/সিডি হতে একশ’র বেশি ভাষণ সংগ্রহ করা হয়; যা শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে বইটিতে সংযোজন করা হয়েছে। প্রতিটি ভাষণের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে। বইটিতে প্রতিটি ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হাইলাইট করে আলাদাভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে। এছাড়া সূচিতে ভাষণের বিষয়বস্তু, সাল ও তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতির পিতার ভাষণ শুধু বাংলাদেশেই নয় সমগ্র বিশ্বে এক অমূল্য দলিল। ভাষণসমগ্রটির ভূমিকাতে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘নতুন প্রজন্ম, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু পড়া নয়, সেগুলোর মর্মার্থ অনুধাবন করে নিজ নিজ জীবনে অনুশীলন করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ‘জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। এই সোনার মানুষ হতে হলে জাতির পিতার আদর্শ ও জীবনাচরণ চর্চা করা অত্যাবশ্যক।’
ভাষণসমগ্রটি রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী, ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে মর্মে মন্তব্য করেন এর সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশে আজ ৩ অক্টোবর পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে ৫ অক্টোবর শনিবার থেকে রবিউস সানি মাস গণনা শুরু হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার পালিত হবে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম।
আজ ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার।
সভায় ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. সাইফুল ইসলাম, তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের সহকারী প্রশাসক মো. মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক মো. রুহূল আমিন, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ, লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ নিয়ামতুল্লাহ, চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।