অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী আর নেই। আজ ১৬ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এভার কেয়ার হাসপাতালের গ্রুপ মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, সকাল ১১টার দিকে ’কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয় মতিয়া চৌধুরীকে। অ্যাটাক খুব ভয়াবহ ছিল। চিকিৎসকরা সাধ্যমতো চেষ্টা করলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
৮২ বছর বয়সী মতিয়া চৌধুরী বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই আজ তাঁর মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবারের একটি সূত্র।
মতিয়া চৌধুরীর জন্ম পিরোজপুরে ১৯৪২ সালের ৩০ জুন। তিনি সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
মতিয়া চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে। ১৯৬০–এর দশকে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু হয়, তাতে মতিয়া চৌধুরী সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। আইয়ুব খানের আমলে চারবার কারাবরণ করেন। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন।
স্বাধীনতার পর মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর তিনি দলটির হয়ে বিভিন্ন আন্দোলনে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সামরিক বিভিন্ন সরকারের সময় কারাবরণ করেন।
১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন।
অনলাইন ডেস্ক :
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় সব ধরনের অপরাধ কাজ সংঘটিত হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জায়গাগুলো ধর্মান্ধতার জন্য প্রজনন স্থান হয়ে উঠেছে।
ধর্মান্ধ গোষ্ঠীগুলোর লোকবল সংগ্রহের একটি জায়গা হয়ে উঠেছে এটি।
আজ ২৬ আগস্ট শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের উদ্যোগে ‘জেনোসাইড অ্যান্ড জাস্টিস : বাংলাদেশ রেসপন্স টু দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো ধর্মান্ধতার জন্মস্থান ও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর লোকবল সংগ্রহের জায়গা হয়ে উঠেছে। এটি একটি অনেক বড় সমস্যা। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য সমস্যা নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য সমস্যা। এজন্য রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান জরুরি৷
তিনি আরো বলেন, আমাদের বুঝতে হবে কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী বাছাই করে কানাডা, ইউরোপ, আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া কোনো সমাধান নয়। এটি বরং সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। কারণ মিয়ানমারে শরণার্থীরা এটি জানতে পারলে তারা বাংলাদেশে আসতে উৎসাহ বোধ করে। এই সমস্যার সমাধান হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদা, সম্মান ও পূর্ণ নাগরিক অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা তাদের দায়িত্ব এড়াতে না পারে। এরা তাদের নাগরিক, তাদের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।
এ সময় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গারা যেই এলাকায় বসবাস করছে সেখানে নিরাপত্তা একটি বড় ইস্যু। সেই এলাকাগুলোতে নিয়মিতভাবে হত্যা, খুন, গুম, মানবপাচারসহ নানা রকমের অনৈতিক ও অবৈধ কার্যক্রম চলছে। সেখানে ১০টির মতো জঙ্গি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে৷ আমরা সেই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবিলম্বে দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কার্যকর উপায় বের করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের সভাপতিত্বে সেমিনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি জোহার ভ্যানদার ক্ল্যাও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এয়ার কমোডর (অব:) ইশফাক এলাহী চৌধুরী, মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিপিজের (গবেষণা) পরিচালক ড. এম সঞ্জীব হোসেন প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জামিলা এ চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন।
স্টাফ রিপোর্টার:
আজ মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্ম সমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন কাল। জাতীয় পর্যায়ে এদিন ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তববক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিতিতে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় ‘জয়বাংলা’ বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজিবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তাহার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্তাকে।
আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। প্রথম আগুন জ্বলে ’৫২-র একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাগুণের আগুনে ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মাতাল গণমানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলীদান বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় বাঙালির শেকল ভাঙার লড়াই। পাকিস্তানিদের সাথে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালি শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদ্দৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। ’৫২ সালে যে আগুন জ্বলেছিল রাজধানী ঢাকা শহরে সে আগুন যেন ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে। যে আগুন জ্বলেছিল মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে সবখানে সবখানে। বাঙালির বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন যেন সহস্র বাঙালির মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে।
বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব করতে বসে। হিসেব-নিকেশ আর দেনা-পাওনায় পাকিস্তানিরাও বসে নেই। তারাও অংক কষতে থাকে কিভাবে বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায়। তাদের কাছে এই অলংকারই বাঙালির শ্রেষ্ঠ প্রাপ্য। ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ জানিয়ে যায় সময় আসছে হিসেব নিকেশ চুকিয়ে দেয়ার পালা। অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে জেগে উঠে হিরন্ময় হাতিয়ার। ৭ মার্চ একাত্তরের বিশাল জনসমুদ্র থেকে যুগের কবি, মহাকাব্যের প্রণেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ঘোষণা দেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরো দেব, তবুও এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই একটি মাত্র উচ্চারণে যেন বাঙালি সত্যিকার দিক-নির্দেশনা পেয়ে যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি। বাঙালি বুঝে যায় শেষ কামড় দেয়ার সময় আসন্ন। পাকিস্তানিরাও আর বসে নেই। পুরো জাতিকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে মারাত্মক মারণাস্ত্র নিয়ে ২৫ মার্চ একাত্তর ঘুমন্ত জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালি নিধন যজ্ঞ। বাতাসে লাশের গন্ধ, বারুদে বারুদে আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশ। এ যেন এক প্রেতপুরী। আকাশে শকুনের উদ্যত থাবা, নিচে বিপন্ন মানুষের বিলাপ। হায় বাংলাদেশ। একি বাংলাদেশ। এ যেন এক জ্বলন্ত শ্মশান। কিন্তু ঠিকই হাড়ের আর খুলির স্তুপ একদিন পাললিক হয়।
মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।
অবশেষে ন’মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সূচিত হল মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।
অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ব ইজতেমায় এবার টঙ্গীর তুরাগ তীরের পাশাপাশি নদীর পশ্চিম পার ও উত্তরার দিয়াবাড়িতে মূল প্যান্ডেল হচ্ছে। টঙ্গীর মূল মঞ্চের পাশাপাশি দিয়াবাড়িতে আরেকটি মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। তবে টঙ্গীতে অবস্থিত মূল মঞ্চ থেকে দিয়াবাড়ি মঞ্চে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বয়ান প্রচারিত হবে। কিন্তু ইজতেমা ময়দানের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হবে পৃথকভাবে।
অতিরিক্ত মুসল্লির ভিড় সামলাতে ও দুর্ভোগ কমাতে এই আয়োজন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আজ ২১ জানুয়ারি রবিবার বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ঘুরে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
টঙ্গী ইজতেমা ময়দানের বয়ান মঞ্চের জিম্মাদার হাজী মোহাম্মদ রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘এবার টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের মূল বয়ান মঞ্চের পাশাপাশি উত্তরার দিয়াবাড়িতে আরেকটি মঞ্চ প্রস্তুত করা হচ্ছে। টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের মূল মঞ্চের বয়ান আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে দিয়াবাড়ি মঞ্চে সরবরাহ করা হবে।
সেখান থেকে দিয়াবাড়ি মাঠে মুসল্লিরা বয়ান ও আখেরি মোনাজাতে শরিক হবেন। তবে প্রতিবছরের মতো এবার টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হবে এবং দিয়াবাড়িতে আলাদাভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হবে।’
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান বলেন, ‘আগামীকাল বিকেলে টঙ্গীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস ব্রিফিং করে বিশ্ব ইজতেমার বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন।’
তিনি বলেন, ‘এবার বিশ্ব ইজতেমায় ১০৫টি খিত্তা থাকবে। টঙ্গীর মূল মঞ্চে ৭২টি, টঙ্গীর তুরাগ তীরের পশ্চিম পারে ১০টি ও উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরে দিয়াবাড়ি মাঠে ২৩টি খিত্তা থাকবে। দিয়াবাড়িতে এবার নতুনভাবে মাঠ প্রস্তুত করায় বেশ কিছু কাজ করা হচ্ছে। দিয়াবাড়িতে ৬০ একর জায়গার মাঠ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় মাঠ। দিয়াবাড়ি ময়দানে আটটি গভীর নলকূপ, ১৪টি বড় চৌবাচ্চা ও দুই হাজার ৫০০ টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে।’
দিয়াবাড়ি ইজতেমা ময়দানের জিম্মাদার মাওলানা ফরিদ আহমদ বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান সাহেব। আমি দিয়াবাড়ি ময়দানের জিম্মাদার।’
দিয়াবাড়ি ময়দানের প্রস্তুতি কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে ময়দান প্রস্তুত করার কাজ চলছে। টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সর্বসম্মতিক্রমে দুটি ময়দান করা হয়েছে। তবে টঙ্গীর ময়দানের মূল মঞ্চ থেকে বয়ান সরবরাহ করে দিয়াবাড়িতে শোনানো হবে। আখেরি মোনাজাতও বয়ানের মতো সরবরাহ করা হবে। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দুই ময়দানে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’
আয়োজকরা বলছেন, টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে ১০ লাখ, তুরাগ নদীর পশ্চিম পারে এক লাখ ও দিয়াবাড়িতে দুই লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন। আখেরি মোনাজাতে প্রায় ৪০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১১ সালে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে প্রতিবছর দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আর এবারই প্রথম দুটি ময়দানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম পর্ব ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ও ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে আলু, পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ঝিটকা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এ জরিমানা করা হয়।
নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল।
আসাদুজ্জামান রুমেল জানান, ক্রয় রশিদ সংরক্ষণ না করে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি করার অপরাধে ঝিটকা বাজার এলাকার অনন্ত ভাণ্ডারকে পাঁচ হাজার ও দুদু বেপারীকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি মাঝে মধ্যে এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করে। সুতরাং নতুন করে আবার এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা- বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তবে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে থাকব, কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ দেব না।
আজ ১১ জুলাই মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মতবিনিময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা অতীতেও দেখেছি বিএনপি যখনই কর্মসূচি ঘোষণা করে, তখনই তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়। জনজীবনে ভোগান্তি ঘটায়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারই তাদের মূল উদ্দেশ্য। সেই সুযোগ আমরা দেব না। আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল, আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকব, জনগণের পাশে থাকব।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় প্রতিনিধি দল এখন দেশে অবস্থান করছে। এ সময় বিএনপির এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার অর্থ হলো তারা কর্মসূচি জনগণকে দেখাতে চায় না, দেখাতে চায় বিদেশিদের। কারণ বিদেশিরা তাদের শক্তি সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান। তাই তারা শক্তি দেখানোর জন্য চেষ্টা করছে মাত্র।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির কোনো অনুযোগ, অভিযোগ থাকলে সেটি জনগণের কাছে বলতে পারে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তাদের সব কর্মসূচি, সব কথাবার্তা হচ্ছে বিদেশিদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য। এটি একটি রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াত্বের প্রকাশ।
রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) সংশোধন বিল পাশ হওয়ায় নির্বাচন কমিশন সন্তোষ প্রকাশ করলেও বিএনপি বিরূপ মন্তব্য করেছে- এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। তারা যখন সন্তোষ প্রকাশ করে আমি সেটির সঙ্গে সহমত পোষণ করি।
‘আমরা রাজা-রানির দেশে বাস করতে চাই না, গণতন্ত্রের জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলাম’- বিএনপি মহাসচিবের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কখন মুক্তিযুদ্ধ করেছেন আমি সেই প্রশ্ন রাখতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের পরে তো উনি কিছু দিন উনার বাবাসহ আÍগোপনে ছিলেন। উনি তো মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই। বরং ক’দিন আগে মির্জা ফখরুল সাহেব বলেন, পাকিস্তানই ভালো ছিল। যে দলের মহাসচিব পাকিস্তানই ভালো ছিল বলে, সেই দল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে কতটুকু বিশ্বাস করে সেটি নিয়েই তো প্রশ্ন থেকে যায়।