অনলাইন ডেস্ক :
পদত্যাগের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ প্রধান ও উৎখাত হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
মামলার পরবর্তী তারিখ ১৮ নভেম্বর রেখে এই সময়ের মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে।
গত ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর প্রথমবারে মতো বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কাজ শুরু হয়। এদিন বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে কোর্টের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর চিফ প্রসিকিউটর মামলার আবেদন পড়ে শোনান।
এ সময় সংবিধানের বিভিন্ন সংশোধনী, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে গুম, খুন, তথ্য প্রযুক্তি আইনে হওয়া মামলার পরিসংখ্যান, অর্থ পাচারের পরিসংখ্যান এবং সর্বশেষ ছাত্র আন্দোলনে বল প্রয়োগের তথ্য তুলে ধরেন।
চিফ প্রসিকউটর আদালতে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে তদন্তে গণহত্যার প্রাথমিক অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি প্রভাবশালী। এখনো দেশের বিভিন্নস্থানে আসামির লোকজন বিভিন্ন পজিশনে আছে। তাই আলামত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মামলার তদন্ত কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করছি।
এক পর্যায়ে আদালত জানতে চান, রাষ্ট্রীয়ভাবে আসামির অবস্থান জানেন কিনা। জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, না।
তারপর আদালত চিফ প্রসিকিউটরের আবেদন মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। আর ১৮ নভেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ রেখে এই সময়ের মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির করেত বলেন।
পরে তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আদালত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করে এই আদালতে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পক্ষ থেকে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতরা এর আওতায় থাকবে। ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশকে।
অপরাধের ধরণে উল্লেখ করা হয়েছে, এক থেকে নয় নম্বর আসামির নির্দেশ ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশিয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাদের হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অপরাধ।
গণহত্যার অভিযোগে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ১৪ দলীয় জোটের শরীক দলের নেতৃবৃন্দ, পুলিশের তৎকালীন আইজিসহ বেশ কয়েকজন সদস্য, র্যাবের তৎকালীন ডিজি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে।
স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়। এখন একটি ট্রাইব্যুনালে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১) চলছে বিচারকাজ।
গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের কিছুদিন পরেই ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন চেয়ারম্যান অবসরে যান। আর এক সদস্যকে হাইকোর্টে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। অপর সদস্য অব্যাহতি নেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া প্রসিকিউটররা পদত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে গত ৫ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটরসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ।
এদিকে গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরপর ১৫ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে যোগ দেন তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল। ১৬ অক্টোবর তাদেরকে এজলাসে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার বিচার কার্যক্রম শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আজ ২৫ আগস্ট রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণ বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড এবং বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে একযোগে সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, একটা বিষয়ে সবাই জানতে আগ্রহী, কখন আমাদের সরকার বিদায় নেবে। এটার জবাব আপনাদের হাতে, কখন আপনারা আমাদেরকে বিদায় দেবেন। আমরা কেউ দেশ শাসনের মানুষ নই। আমাদের নিজ নিজ পেশায় আমরা আনন্দ পাই। আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীও এই লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই মিলে একটা টিম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছে। আমরা ক্রমাগতভাবে সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাবো যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয়- আমরা কখন যাব। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাব।
ড. ইউনূস বলেন, আমরা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করব। কমিশনকে যে কোনো সময় আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখব।
ইউনূস আরো বলেন, একটা বিশেষ ব্যাপারে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিদিন সচিবালয়ে, আমার অফিসের আশপাশে, শহরের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরের অনেক দুঃখ- কষ্ট আপনাদের জমা আছে। সেটা আমরা বুঝি। আমাদের যদি কাজ করতে না দেন তাহলে এই দুঃখ ঘোচানোর সব পথ বন্ধ হয়ে থাকবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাদের কাজ করতে দিন। আপনাদের যা চাওয়া তা লিখিতভাবে আমাদের দিয়ে যান। আমরা আপনাদের বিপক্ষ দল নই। আইনসংগতভাবে যা কিছু করার আছে আমরা অবশ্যই তা করব।
তিনি বলেন, আমাদের ঘেরাও করে আমাদের কাজে বাধা দেবেন না। সবাই মিলে তাদের বোঝান তারা যেন এ সময়ে তাদের অভিযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমাদের দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাধা না দেন।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর ৬ আগস্ট বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
গত ৯ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. ইউনূস।
চলারপথে ডেস্ক :
বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং ব্যবস্থায় তিনটি সেবা অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে। এর আওতায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) যাচাইপূর্বক ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে ১ মার্চ বুধবার।
তিনটি সেবার মধ্যে রয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটিং, টিকিট চেকিং ব্যবস্থায় পস (পয়েন্ট অব সেলস) মেশিনের প্রবর্তন এবং অনলাইনের মাধ্যমে কেনা টিকিট অনলাইনেই ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা।
রেল কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এতে কমবে টিকিট কালোবাজারি এবং যাত্রীদের ভোগান্তি। রেলওয়ে সূত্র বলছে, যাত্রীসেবা বাড়াতে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ শীর্ষক স্লোগানকে সামনে রেখে ও বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে টিকিটিং ব্যবস্থায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে।
১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং ব্যবস্থায় সাতটি শর্ত জুড়ে যাচ্ছে।
১। ১২-১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা পিতা বা মাতার নাম ও এনআইডি দ্বারা নিবন্ধনকৃত রেলওয়ে অ্যাকাউন্ট অথবা জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে এবং জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত অ্যাকাউন্ট দিয়ে পৃথক/এককভাবে টিকিট কিনতে পারবে। এরূপ ক্ষেত্রে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত নামের সঙ্গে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণকালে বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
২। বিদেশি নাগরিকেরা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে এবং পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
৩। সফলভাবে এনআইডি/ পাসপোর্ট/ জন্মনিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন ব্যতিত কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না।
৪। ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট/ ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড সাথে রাখতে হবে।
৫। পরিচয়পত্রের সঙ্গে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৬। যাত্রীরা ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম নিবন্ধন/ পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিস্টেমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
৭। দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তঃনগর ট্রেনের প্রারম্ভিক স্টেশনসমূহে সর্বসাধারণের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি করে হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রেলভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
অনলাইন ডেস্ক :
ভুল চিকিৎসায় ও চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে রোগী মারা গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাসহ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতাল, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, কুমুদিনী নার্সিং কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমসসহ কুমুদিনী কমপ্লেক্সের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ইউনিট পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ যাতে ঘরে বসেই চিকিৎসার সেবা পায় এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হন সেই লক্ষ্য নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় কাজ শুরু হয়েছে।
এ সময় তিনি জানান, যেকোনো উপায়ে দেশের চিকিৎসাসেবার মান আমূল পরিবর্তন করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গত পরশু দিন আমি দেখা করেছি। দেশের চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধিসহ ঘরে বসে মানুষ যেন চিকিৎসা সেবা পান সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।
আমি একেবারে তৃণমূল গ্রাম থেকে উঠে এসেছি। চিকিৎসা সেবার কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে আমি তা জানি। দেশের উপজেলা সরকারি হেলথ কমপ্লেক্স এবং জেলা সদরের হাসপাতালগুলোকে স্বাবলম্বী করতে হবে, বলেন ডা. সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ যাতে শহরে চিকিৎসার জন্য এসে বিড়ম্বনার শিকার না হয় সে জন্য চিকিৎসকসহ আমদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধিসহ সরকারি সেবা ছড়িয়ে দিতে হবে।
এ সময় কুমুদিনী হাসপাতালের সেবার মান, পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা, নিয়ম-কানুন, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক চর্চার পরিবেশ দেখে প্রশংসা করেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
অনলাইন ডেস্ক :
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও তার স্বামী সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুর বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিং আইনে দুদক ঢাকা ও পাবনা কার্যালয়ে মামলা দুইটি দায়ের করা হয়েছে।
দুদক ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ আলম সেখ বাদী হয়ে আজ ২৩ ডিসেম্বর সোমবার পাবনা জেলা কার্যালয়ে এবং দুদক ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ বাদী হয়ে রবিবার ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে পৃথক মামলা দুইটি দায়ের করেন।
বাদী শাহ আলম সেখ এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের করবর্ষে শামীম তালুকদার লাবু’র আয়কর নথি ও অন্যান্য রেকর্ড পর্যালোচনা করে স্থাবর ও অস্থাবর বৈধ সম্পদের হিসাবের চেয়ে ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা বেশি সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যার বৈধ কোনো ও গ্রহণযোগ্য উৎস তিনি প্রদর্শন করেননি। এ ছাড়াও লাবু’র নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১২টি এবং তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লাম টান্সপোর্টের ২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
এসব কর্মকাণ্ডে লাবু’র স্ত্রী সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী তাকে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা মোতাবেক এই দুইজনকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলার বাদী আসিফ আল মাহমুদ এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের করবর্ষে জান্নাত আরা হেনরীর আয়কর নথি ও অন্যান্য রেকর্ড পর্যালোচনা করে স্থাবর ও অস্থাবর বৈধ সম্পদের হিসাবে চেয়ে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকা বেশি সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যার কোনো বৈধ উৎস ও গ্রহণযোগ্য তথ্য প্রদর্শন করতে পারেননি তিনি। এ ছাড়াও নিজের ৩৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ড এবং তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাম এন্টারপ্রাইজের ৯টি এবং তার ৩টি কোম্পানির অ্যাকাউন্ডের মাধ্যমে ২০০২ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৭ টাকা এবং ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এ কারণে হেনরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০১ এর ২৭ (১) ও ১৯৪৭ এর ৫ (২) এবং মানিলন্ডারিং আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা মোতাবেক মামলা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবু সরকার পতনের পর গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ নেতাকর্মী হত্যাসহ আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।