চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামীসহ একাধিক মামলার ২জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। ১৬ অক্টোবর বুধবার রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ভাদুঘর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে মোঃ অলিউল্লাহ (৬৬) এবং রূপসদী গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মোঃ কামাল মিয়া- (৫৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি রাম দা, ৩টি টেটা, ২টি ছুরি, ৩ টি বল্লম, ৪৫০ ইউরো, ১২২ ইউএস ডলার ও নগদ ৭ লাখ ৩০ হাজার ৮শত টাকা উদ্ধার করা হয়।
আজ ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। যৌথ বাহিনীর দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের জমি সংক্রান্ত মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী মোঃ অলিউল্লাহকে গ্রেফতার করে।
একই সময়ে যৌথ বাহিনীর অপর একটি টিম বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে একাধিক মামলার আসামী ও সন্ত্রাসী মোঃ কামাল মিয়াকে গ্রেফতার করে।
এ সময় তার কাছ থেকে ৫টি রাম দা, ৩টি টেটা, ২টি ছুরি, ৩ টি বল্লম, ৪৫০ ইউরো, ১২২ ইউএস ডলার ও নগদ ৭ লাখ ৩০ হাজার ৮শত টাকা উদ্ধার করা হয়।
দীর্ঘ দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ৮ নং নাটাই(উত্তর) ইউনিয়ন ৪ নং ওয়ার্ড বিহাইর বিএনপি’র সহযোগি সংগঠন জাতীয়তাবাদী তাতি দলের কার্যালয় উদ্বোধন ও আলোচনা সভার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয়তাবাদি কৃষক দল (যুক্তরাজ্য) এর সদস্য সচিব এবং জাতীয়তাবাদী ফোরাম যুক্তরাজ্য এর আহবায়ক শাহ মোঃ ইব্রাহীম মিয়ার এর সৌজন্যে এই কার্যালয়ে উদ্বোধন হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা শহীদ প্রেসিডন্ট জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের উন্নয়নে তাতি দল, শ্রমিক দল কৃষক দল গঠন করেছিলেন। তারা আমাদের দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রবাসে এসে দক্ষতার সাথে অবদান রাখছে। আমাদের মাঝে সকল দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভূলে সবাই একসাথে কাজ করে যাবো। তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী জনগণের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও তার ফ্যাসিজম রয়ে গেছে। তারা বিভিন্ন ভাবে অপকর্ম করে সরকার ও বিএনপির উপর দায় চাপাতে চাইবে। আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা এসব অপকর্ম রুখে দাঁড়াবো এবং শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় জনগণের মনে আস্থা অর্জন করে যাবো। আগামীতে আমাদের দল যেন ক্ষমতায় যেতে পারে সেই লক্ষ্যে ভাল কাজ করে যাবো এবং অন্যায় প্রতিহত করব জনগনকে সাথে নিয়ে। অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা তাতি দল সভাপতি মোঃ আবু তাহের গাজী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তাঁতি দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমানের যৌথভাবে সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তাঁতী দলের সভাপতি ইকবাল খান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয়তাবাদি কৃষক দল (যুক্তরাজ্য) এর সদস্য সচিব এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম (যুক্তরাজ্য) এর আহবায়ক শাহ মোঃ ইব্রাহীম মিয়া। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য এবং সাবেক জিএস ও এমএসসি চপল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা যুবদল আহবায়ক জিয়াউল হক জিয়া, সদর উপজেলা যুবদল সদস্য সচিব তানভীর রুবেল প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ৮ নং নাটাই (উত্তর) ইউনিয়নের বিএনপি সভাপতি ইয়াকুব ভূঁইয়া, শামীম রেজা, রুবেল, রনি, মনির গাজী, আবু বক্কর সিদ্দিক, জসীমউদ্দীন, সালাউদ্দিনসহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর ও জনসাধারণ।
আলোচনা সভা শেষে তাতী দলে’র কার্যালয় আনুষ্ঠানিক ভাবে লাল ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন জাতীয়তাবাদি কৃষক দল (যুক্তরাজ্য) এর সদস্য সচিব এবং জাতীয়তাবাদী ফোরাম যুক্তরাজ্য এর আহবায়ক শাহ মোঃ ইব্রাহীম মিয়া।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা আদালত বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে আদালতে ফিরছেন। আজ মঙ্গলবার থেকে তাঁরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত ছাড়া বাকি আদালত গুলোতে যাবেন।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার সাধারণ সভা শেষে আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় আইনজীবী সমিতির ভবনের দ্বিতীয় তলায় সাধারণ সভায় বসেন আইনজীবীরা। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে তাদের সভা।
দুপুরে সাধারণ সভা শেষে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা সাংবাদিকদের বলেন, “সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাননীয় আইনমন্ত্রী মহোদয় আমাদের যে অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর অনুরোধের প্রতি সবাই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন এবং এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।
তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী ও আইন সচিব শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নন সমগ্র বাংলাদেশের আইন অঙ্গনের অভিভাবক। আমরা তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস স্থাপন করি। আমরা আগামীকাল (আজ) মঙ্গলবার আদালতে যোগদান করব। আমাদের বিষয়ে যা যা করার তাঁরা তা করবেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বাদে সবগুলো আদালতে যাব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবগুলো দাবির কোনো কোনোটা পূরণ হয়েছে এবং বাকিটা পূরণ হবে বলে বিশ্বাস করি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিষয়ে হয়তো দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল সোমবার ব্যবস্থা নেয়া হলে আমরা কাল মঙ্গলবার থেকেই ওই আদালতে ফিরে যাব।
এর আগে গত রবিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্কিট হাউজে আইনজীবী নেতাদের সাথে আইনমন্ত্রীর অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর আইনজীবীরা নেতারা আদালতে ফেরার করার কথা জানান।
বৈঠকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, আইন সচিব গোলাম সারোয়ার, জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক রবিউল হাসান, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোঃ নজরুল ইসলাম, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আল-আমিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান কানন, সাবেক সভাপতি শফিউল আলম লিটন, সাবেক সভাপতি নাজমুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে আইনন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বর্জনের বিষয়টি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। আইনজীবীরা আদালত বর্জন প্রত্যাহার করবেন। আইনজীবীরা কাল আদালতে যাবেন।
এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল বলেন, আন্দোলনের শুরু থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। রবিবার মাননীয় আইনমন্ত্রী, আইন সচিব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর মধ্যস্থতায় বিষয়টির সুরাহা হয়েছে।
এদিকে জজ আদালতের নাজির মুমিনুলকে গত ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মোঃ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত আন্তঃজেলা বদলি সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে “প্রশাসনিক কারণ” দেখিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মোঃ মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীকে চাঁদপুর জেলা জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে মুমিনুল ইসলামের বদলিকে অভিহিত করা হয় “মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফার” হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এর অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মোঃ ছানাউল্যা তালুকদার তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
উল্লেখ্য, আদালতের শীতকালীর ছুটির আগে গত ১ ডিসেম্বর আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল। ওই দিন তিনটি মামলা না নেয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল -১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন শুরু করেন আইনজীবীরা। ২ জানুয়ারি বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সাথে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বিচারকের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগে গত ৪ জানুয়ারি আদালতের কক্ষে ও প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে একদিনের কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালন করে জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন।
এ ঘটনার পর গত ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের কর্মসূচি শুরু করেন আইনজীবীরা। তারা জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ ও জজ আদালতের নাজির মমিনুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে বিচারকের সাথে অশোভন আচরনের অভিযোগে সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে ১৭ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এছাড়াও আন্দোলন চলাকালে জেলা ও দায়রা জজের বিরুদ্ধে অশালীন শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে গত ১১ জানুয়ারি ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে গত ১২ জানুয়ারি রাতে ঢাকায় আইনমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে আইনমন্ত্রী আইনজীবীদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আদালতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা।
মন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর ২৪ জানুয়ারির মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ ও ও জজ আদালতের নাজির মমিনুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে দুই আদালত ব্যতিত (জেলা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত) সকল আদালতে ফিরে যান আইনজীবীরা। এতে আদালতের অচলাবস্থা দূর হয়।
গত ২৪ জানুয়ারির মধ্যে আইনজীবীদের দাবি পূরন না হওয়ায় তারা ওইদিন বিশেষ সাধারণ সভা করে তারা তাদের কর্মসূচি ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। ৩০ জানুয়ারি মধ্যে তাদের দাবি পূরন না হওয়ায় তাদের কর্মসূচি আবার ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি আইনজীবীরা তাদের দাবি পূরন না হওয়ায় বিশেষ সাধারণ সভা করে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন।
এদিকে মাসাধিককাল ধরে আইনজীবীদের আদালত বর্জনের ফলে শত শত বিচারপ্রত্যাশী সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় তছনছ করেছে চোরেরা। গত শনিবার বিকেলে শহরের হালদারপাড়ায় অবস্থিত জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অফিসের কেয়ারটেকার দীপ্ত চক্রবর্তী ওরফে জনি বাদি হয়ে শনিবার রাতে সদর মডেল থানায় একটি জিডি করেছেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অফিস ত্যাগ করার পর বিকেল ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোরেরা অফিস কক্ষের পেছনের বারান্দার গ্রীলে থাকা এসএস পাইক ফাঁক করে অফিসে প্রবেশ করে। পরে চোরেরা পিছনের দরজার ছিটকারি ভেঙ্গে বিভিন্ন রুমে প্রবেশ করে ও কার্যালয়ে থাকা সভাপতির কক্ষ ( সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী) কক্ষ তাঁর ব্যক্তিগত ড্রয়ার এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে।
এ সময় কার্যালয়ের ৪ নম্বর কক্ষে থাকা অফিসের কেয়ারটেকার ভেতরে থাকা দীপ্ত চক্রবর্তী ওরফে জনি ও অফিসের পিয়ন মোঃ ছাদেকুল ইসলাম শব্দ পেয়ে সভাপতির কক্ষের দিকে গিয়ে দেখেন কক্ষটি ভেতর থেকে বন্ধ। তখন অফিসের পিয়ন পেছনের বারান্দায় গিয়ে দেখতে পান গ্রীলের এসএস পাইপ ফাঁক। পরে তারা অফিসের বিভিন্ন রুম ঘুরে জিনিসপত্র তছনছ অবস্থায় দেখতে পান।
পরে তারা বিষয়টি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে জানালে সভা শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অফিসে এসে অফিসে জিনিসপত্র তছনছ অবস্থায় দেখতে পান ও সদর থানার পুলিশকে বিষয়টির আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে জিজিতে থাকা স্বাক্ষী ও জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুজন দত্ত বলেন, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে ও সভাপতির কক্ষের জিনিসপত্র ও মালামাল তছনছ করা হয়েছে তবে কোন কিছু চুরি হয়নি। কারা এমন কাজ করেছে সেখানে থাকা সিসিটিভির ফুটেজের মাধ্যমে বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, অভিযোগটি কিছু সংশোধন করে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করব আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
আজ ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কাউতলী কাঁচা বাজার ও মৌড়াইল বৌ-বাজারে গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গণ সংযোগকালে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সারা দেশে সকল সেক্টরে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড আপনাদের চোখের সামনে দৃশ্যমান। এটা দেখে বিচার-বিবেচনা করে এবং আগামী দিনে যাতে শেখ হাসিনা আবারো সরকার গঠন করতে পারে সেই বিবেচনা করে আপনারা ভোট দিবেন।
তিনি বলেন, আমি দাবি করব, আপনারা উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। ভোট আপনাদের পবিত্র আমানত। আপনারা চিন্তা-ভাবনা করে ভোট দিবেন।
র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, আমি মনে করি, আমি একজন দুধের ফেরিওয়ালা, বাজারে গেলে আপনার দুধই কেনা উচিত। দুধ ছাড়া পঁচা-দুর্গন্ধযুক্ত জিনিসের দিকে নিশ্চয়ই আপনাদের নজর যাবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেকেই প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। কোন প্রার্থী সম্পর্কে আমি কোন কথা বলবোনা। বিবেচনা আপনাদের, বিচার আপনাদের। তিনি বলেন, আমি কোনো দিন আপনাদের প্রতি কোন ধরনের অন্যায় করিনি। আপনাদের কোনো ক্ষতি করিনি। এই কথাটি আপনারা একটু মনে রাখবেন। আমার সাধ্য অনুযায়ী ও আল্লাহতায়ালার ইচ্ছায় যতটা পেরেছি মানুষের জন্য কাজ করেছি। আপনারা দেশের উন্নয়ন -অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করবেন।এ সময় জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁর সাথে ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাষ্ট্র পুনর্গঠন থেকে পিছিয়ে গেলে দেশ এবং দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যদি শুধু নিজেদের স্বার্থের জন্য তর্কে লিপ্ত থাকি, তাহলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার। আগামী দিনে সংসদ কীভাবে পরিচালিত হবে, সংসদের মেয়াদ কতদিন হবে, একজন মানুষ কতবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন-এমন বিভিন্ন বিষয় আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে সক্ষম। এগুলো নিয়ে আমরা মাত্রাতিরিক্ত আলোচনা করলে রাষ্ট্র পুনর্গঠন থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব। আর রাষ্ট্র পুনর্গঠন থেকে যদি আমরা পিছিয়ে যাই, তাহলে দেশ এবং দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আজ ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার আব্বাস উদ্দিন খান মডেল কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে আরো বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর জনগণের ভোট দেওয়ার কোনো উপায় ছিল না। জনগণের ভোট দেওয়ার ক্ষমতা অস্ত্রের বলে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। অস্ত্র দিয়ে আমরা দেখেছি কখনও ডামি নির্বাচন, কখনও আমরা দেখেছি ভোটারবিহীন নির্বাচন। সেকারণেই আমরা দেখেছি উন্নয়নের নাম করে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে নিয়ে গেছে। কোনোরকম জবাবদিহিতা ছিল না বলেই দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমান আরো বলেন, ‘নির্বাচন অথবা বিচার ব্যবস্থা-প্রত্যেকটি ব্যবস্থাকে আবার পুনর্গঠন করতে হবে। রাষ্ট্রকাঠামোর এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া যত দ্রুত শুরু করা যাবে, আমরা তত দ্রুত দেশকে উন্নত করতে পারব। বিএনপি একমাত্র দেশকে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। এ সময় দেশ পুনর্গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা বিএনপি’র আহবায়ক এডভোকেট আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: সেলিম ভুইয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মোস্তাক আহম্মেদ, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, বিএনপি’র কুমিল্লা বিভাগীয় সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সায়েদুল হক সাইদ, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহি কমিটির সদস্য শেখ মোঃ শামীম, সালাউদ্দিন শিশির, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও জেলা বিএনপি নেতা মোঃ কবির আহম্মেদ ভুইয়া প্রমুখ।
এদিকে দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর জেলা বিএনপির এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলার সর্বত্রই ছিল উৎসবের আমেজ। সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন রং-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসতে থাকে। দুপুর ১২টার আগেই দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।