অনলাইন ডেস্ক :
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার রাতে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিল শেখ হাসিনার পতনের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর পরদিনই নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অজ্ঞাত স্থান থেকে গতকাল রাতেই বিবৃতিতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান নিষিদ্ধকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজন ছাত্রনেতা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনটির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শক্তি ছিল ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন। তবে স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের অনেকের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দখলদারিত্ব, মারামারি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদক বাণিজ্য, বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচিতে হামলা, দমনপীড়ন, অস্ত্রবাজির মতো অপরাধের শত শত অভিযোগ ওঠে।
এই সময়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ দাস এবং ২০১৯ সালে আবরার হত্যায় সংগঠনটি ধিকৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘গেস্ট রুম’ নামে নিপীড়নের কুখ্যাতিও রয়েছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ ছিল দমনকারীর ভূমিকায়। গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরুর পর শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মারমুখী ছিল। গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নজিরবিহীন মারধর করে, যা থেকে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিনেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর অভ্যুত্থান দমনে অস্ত্র হাতে রাজপথে দেখা যায়। অভ্যুত্থানের সময় এবং শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র পাওয়া যায়। মধ্য জুলাই থেকেই অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগকে বের করে দিয়েছে অভ্যুত্থানকারীরা। ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
প্রজ্ঞাপনেও ছাত্রলীগকে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে হত্যা, নির্যাতন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ। এসবের প্রমাণ দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীর অপরাধ আদালতেও প্রমাণ হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও জনগণের ওপর আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী; অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক, উস্কানিমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। সরকারের কাছে এসব কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন নামাঙ্কিত রাজনৈতিক শাখা-২-এর জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ১৮-এর উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।
আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী, নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনে ৩০ দিন সময় পাবে ছাত্রলীগ। আবেদন করলে সরকার তা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিলের সুযোগ পাবে।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২০ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সত্তার কার্যালয় বন্ধ করবে সরকার। ব্যাংক হিসাব বা অন্য সম্পদ জব্দ হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা দেশ ত্যাগ করতে পারবে না। সংগঠনের পক্ষে বা সমর্থনে বিবৃতি, বিজ্ঞপ্তি, প্রকাশনা, প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা নিষিদ্ধ হবে।
গত ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একই আইনে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের আবেদনে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৮ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধে বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিলের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নুসরাত তাবাসসুম বলেন, জীবনের অন্যতম আনন্দের দিন আজ। ছাত্রলীগ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ ছিল না। এই ছাত্রলীগ ১৫ জুলাই আমাদের ওপর হামলা করেছে। সারাদেশে তারা অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে শহীদ করেছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায়। আর কোনো ছাত্র সংগঠন যেন এমন সন্ত্রাসী না হয়।
সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, যারা কথায় কথায় আন্দোলনে জঙ্গিবাদ খুঁজত, তাদেরকেই জঙ্গি ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের গর্ত থেকে বের করে ধোলাই দিতে হবে।
আশরিফা খাতুন বলেন, আবু সাঈদের মৃত্যুর পর ছাত্রলীগ রাজাকার দমন হয়েছে বলে উল্লাস করেছিল। যখনই কোনো ন্যায্য দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়েছি, ছাত্রলীগ মেরেছে। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য গেলে, সেখানেও মারত। কোনোভাবেই ছাত্রলীগ যেন ফিরতে না পারে।
অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে না বললেও উচ্ছ্বাস দেখায়নি। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ছাত্রলীগ খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। সব জঙ্গি সংগঠন মিলে যত মানুষ খুন করেছে; ছাত্রলীগ এককভাবে বেশি করেছে। ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছে এবং শহীদ হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে ছাত্র রাজনীতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। সুস্থ রাজনীতিচর্চার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধই সমাধান নয়। সংগঠনটির যারা সন্ত্রাস করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে ছাত্রলীগ। সন্ত্রাস, নিপীড়ন, নির্যাতনের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে চায় না। ছাত্রলীগের অপরাধীদের বিচার চায়।
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকে সাধুবাদ জানাই। নিষিদ্ধ হলেই অপতৎপরতা বন্ধ হবে না। অপরাপর সংগঠনের সঙ্গে আলাপে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ছিল। ছাত্রলীগের তৎপরতা বন্ধে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বোস বলেন, নির্বাহী আদেশে কয়েক দিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ক্ষমতার পরিবর্তনে তা বদলেও গেছে। একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, জানি না। নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে কতটুকু নিঃশেষ করা যাবে, জানি না। ছাত্রলীগকে মোকাবিলা করতে হবে আদর্শের জায়গায় এবং মাঠের রাজনীতিতে। রাজনৈতিকভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অফিসে যাওয়ার পথে চার পোশাককর্মীকে পিষে মারলো বাস। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১০ জন।
আজ ১১ অক্টোবর বুধবার সকাল আটটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেলেরঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন জানান, সকালে শেরপুর থেকে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাটে চাকা পাংচার হলে বাসের যাত্রীরা অন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সকাল আটটার দিকে সেখানে একটি পোশাক কারখানার বাস রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল। এসময়ে পেছন থেকে একটি বাস দ্রুত গতিতে ওই বাসকে ধাক্কা দিলে সেটি যাত্রীদের ওপর উঠে যায়। এতে বাসের চাপায় চারজন নিহত হয়। আহত হয়ে আরো ১০ জন।
ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সাদেকুর রহমান জানান, নিহতদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন মহিলা। আহত ১০ জনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ২৪ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ জনকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) পদে বদলি করা হয়। অন্যদের পুলিশের অন্যান্য বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে। আজ ১৭ জুলাই সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
পুলিশ সুপার পদে বদলি: সিনিয়র সহকারী সচিব মাহাবুর রহমান শেখ সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী- ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসানকে ঝিনাইদহ, ঢাকা পুলিশ অধিদপ্তরের এআইজি মনজুর রহমানকে মৌলভীবাজার, ঢাকা টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনকে বান্দরবান, বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামকে নাটোর, নাটোর পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানকে রাজশাহী, অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধরকে খাগড়াছড়ি, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার উত্তম প্রসাদ পাঠককে ঠাকুরগাঁও, ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জি এম আব্দুল কালাম আজাদকে রাজবাড়ী, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবুল হাসনাত খানকে বাগেরহাট, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার তারেক বিন রশিদকে লক্ষ্মীপুর এবং শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামানকে জামালপুরে পুলিশ সুপার পদে বদলি করা হয়েছে।
অন্যান্য বিভাগে বদলি: একই কর্মকর্তার অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আশিকুর রহমানকে ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াকে হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার, রাজশাহী পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার নাইমুল হককে ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার, ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার, রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামানকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, জামালপুর পুলিশ সুপার নাছির আহমেদকে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের পুলিশ সুপার, বাগেরহাটের পুলিশ কে এম আরিফুল হককে রাজশাহী মহানগরের উপপুলিশ কমিশনার, লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার, পিরোজপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামকে ঢাকা বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার, পুলিশ অধিদপ্তর ঢাকার (টিআর) পুলিশ সুপার শামীমা আক্তারকে ঢাকা স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশনের পুলিশ সুপার, পুলিশ স্টাফ কলেজের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সরকার ওমর ফারুককে রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ অধিদপ্তর ঢাকার (টিআর) পুলিশ সুপার তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরীকে সিলেট মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার পদে বদলি করা হয়েছে।
জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, এক মাস পেরোতেই আবার পুলিশের মাঠ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন পদে রদবদল হলো। আগের দিন রোববার ১৬ উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও ৩৫ অতিরিক্ত ডিআইজির পদমর্যাদার কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজিসহ একই পদমর্যাদার ১৩ কর্মকর্তারও কর্মস্থল বদল করা হয়েছে। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে গত ১৩ জুন পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার সাত কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ২২ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছিল। নির্বাচনের আগে পুলিশের মাঠ প্রশাসনে এই রদবদলকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ পদক্ষেপ বলে অনেকে মনে করছেন। পুলিশ সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, এসপি পদে রদবদল হলে ২৫তম ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা অগ্রাধিকার পাবেন। এ ছাড়া ২৮ ব্যাচের একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতিপ্রত্যাশী।
এদিকে, পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের ৭২০ কর্মকর্তার পদোন্নতি চেয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবটি পাওয়ার পর তা মূল্যায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শূন্য পদ না থাকলেও সুপারনিউমারারি বা সংখ্যাতিরিক্ত পদোন্নতি দিয়ে ইনসিটু (পদোন্নতির পরও আগের পদে দায়িত্ব পালন) করা যেতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
আমেরিকার সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপস হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকালে আমিনবাজারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুই সেলফিতে বাজিমাত হয়ে গেছে। আমেরিকার সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপস হয়ে গেছে। দিল্লি কিংবা আমেরিকারসহ সবার সঙ্গে আওয়ামী লীগের বন্ধুত্ব রয়েছে, কারো সঙ্গে শত্রুতা নেই।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞা কিংবা ভিসানীতির পরোয়া করে না। বিএনপি যতই ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবেই হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তা নেই, এটা সঠিক সময়েই হবে। বিএনপি কোনো কারণে ফাউল করলে লাল কার্ড পাবে। তারা আন্দোলনের হেরে গেছে, নির্বাচনেও হেরে যাবে।
বিএনপির কারণেই খালেদা জিয়ার মামলার নিষ্পত্তি হয়নি বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া ইলেকশনে না যাওয়ার হুমকি বিএনপি আর কত দেবে? বিএনপি খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন করবে না, এ কথা একেবারেই মিথ্যা। তাদের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার জন্য একটি আন্দোলনও করতে পারলেন না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আবারও ক্ষমতায় গেলে দেশের সম্পদ চুরি, লুটপাট, ষড়যন্ত্র সন্ত্রাস করবে। গণতন্ত্রকেও গিলে খাবে। আবারও এই দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানাবে। তাদের নেতা কাপুরুষের মতো লন্ডনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কেন, সাহস থাকলে ঢাকায় আসুক।
ওবায়দুল কাদের দেশের জনগণকে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ছাড়া জনপ্রিয়, বিশ্বস্ত এবং সাহসী নেতা আর নেই।
অনলাইন ডেস্ক :
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল ব্যাংকক সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
যার মধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকবেন।
বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, আগামী ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন অভ্যর্থনা জানাবেন। একইসঙ্গে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। একইদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গভর্নমেন্ট হাউসে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ড রাজপ্রাসাদে রাজা ও রানীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। শেখ হাসিনা তার সম্মানে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সফরের সময় বেশ কয়েকটি চুক্তি ও এমওইউ স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইউএনস্ক্যাপের কমিশনের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তিনি ২৫ ইউএনস্ক্যাপের অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন। একইদিন জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল এবং ইউএনস্ক্যাপের এশিয়া ও প্যাসিফিকের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় সফর হবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারপ্রধান পর্যায়ের প্রথম সফর। এ সফর বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এটি দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৮ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় কসবা মহিলা ডিগ্রী কলেজ মাঠে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মুশফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে কসবা উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা।
কসবা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা খন্দকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ. বি. এম. মোমিনুল হক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাইনুল হোসেন চপল প্রমুখ।
ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপারসনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দোয়া করেন।
কসবা উপজেলা, পৌর ও ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড শাখা বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।