সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন

জাতীয়, রাজনীতি, 24 October 2024, 510 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার রাতে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

banner

গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিল শেখ হাসিনার পতনের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর পরদিনই নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অজ্ঞাত স্থান থেকে গতকাল রাতেই বিবৃতিতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান নিষিদ্ধকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজন ছাত্রনেতা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনটির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শক্তি ছিল ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন। তবে স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের অনেকের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দখলদারিত্ব, মারামারি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদক বাণিজ্য, বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচিতে হামলা, দমনপীড়ন, অস্ত্রবাজির মতো অপরাধের শত শত অভিযোগ ওঠে।

এই সময়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ দাস এবং ২০১৯ সালে আবরার হত্যায় সংগঠনটি ধিকৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘গেস্ট রুম’ নামে নিপীড়নের কুখ্যাতিও রয়েছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ ছিল দমনকারীর ভূমিকায়। গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরুর পর শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মারমুখী ছিল। গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নজিরবিহীন মারধর করে, যা থেকে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিনেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর অভ্যুত্থান দমনে অস্ত্র হাতে রাজপথে দেখা যায়। অভ্যুত্থানের সময় এবং শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র পাওয়া যায়। মধ্য জুলাই থেকেই অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগকে বের করে দিয়েছে অভ্যুত্থানকারীরা। ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।

প্রজ্ঞাপনেও ছাত্রলীগকে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে হত্যা, নির্যাতন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ। এসবের প্রমাণ দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীর অপরাধ আদালতেও প্রমাণ হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও জনগণের ওপর আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী; অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক, উস্কানিমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। সরকারের কাছে এসব কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন নামাঙ্কিত রাজনৈতিক শাখা-২-এর জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ১৮-এর উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।

আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী, নি‌ষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুন‌র্বিবেচনার আবেদনে ৩০ দিন সময় পা‌বে ছাত্রলীগ। আবেদন কর‌লে সরকার তা ৯০ দি‌নের ম‌ধ্যে নিষ্প‌ত্তি কর‌বে। নি‌ষি‌দ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাক‌লে ৩০ দি‌নের ম‌ধ্যে হাইকোর্টে আ‌পিলের সু‌যোগ পা‌বে।

সন্ত্রাসবি‌রোধী আইনের ২০ ধারায় উল্লেখ করা হ‌য়ে‌ছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সত্তার কার্যালয় বন্ধ করবে সরকার। ব্যাংক হিসাব বা অন্য সম্পদ জব্দ হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা দেশ ত্যাগ করতে পারবে না। সংগঠনের পক্ষে বা সমর্থনে বিবৃতি, বিজ্ঞপ্তি, প্রকাশনা, প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা নিষিদ্ধ হবে।

গত ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একই আইনে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের আবেদনে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৮ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধে বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিলের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নুসরাত তাবাসসুম বলেন, জীবনের অন্যতম আনন্দের দিন আজ। ছাত্রলীগ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ ছিল না। এই ছাত্রলীগ ১৫ জুলাই আমাদের ওপর হামলা করেছে। সারাদেশে তারা অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে শহীদ করেছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায়। আর কোনো ছাত্র সংগঠন যেন এমন সন্ত্রাসী না হয়।

সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, যারা কথায় কথায় আন্দোলনে জঙ্গিবাদ খুঁজত, তাদেরকেই জঙ্গি ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের গর্ত থেকে বের করে ধোলাই দিতে হবে।

আশরিফা খাতুন বলেন, আবু সাঈদের মৃত্যুর পর ছাত্রলীগ রাজাকার দমন হয়েছে বলে উল্লাস করেছিল। যখনই কোনো ন্যায্য দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়েছি, ছাত্রলীগ মেরেছে। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য গেলে, সেখানেও মারত। কোনোভাবেই ছাত্রলীগ যেন ফিরতে না পারে।

অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে না বললেও উচ্ছ্বাস দেখায়নি। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ছাত্রলীগ খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। সব জঙ্গি সংগঠন মিলে যত মানুষ খুন করেছে; ছাত্রলীগ এককভাবে বেশি করেছে। ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছে এবং শহীদ হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে ছাত্র রাজনীতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। সুস্থ রাজনীতিচর্চার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধই সমাধান নয়। সংগঠনটির যারা সন্ত্রাস করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে ছাত্রলীগ। সন্ত্রাস, নিপীড়ন, নির্যাতনের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে চায় না। ছাত্রলীগের অপরাধীদের বিচার চায়।

ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকে সাধুবাদ জানাই। নিষিদ্ধ হলেই অপতৎপরতা বন্ধ হবে না। অপরাপর সংগঠনের সঙ্গে আলাপে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ছিল। ছাত্রলীগের তৎপরতা বন্ধে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বোস বলেন, নির্বাহী আদেশে কয়েক দিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ক্ষমতার পরিবর্তনে তা বদলেও গেছে। একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, জানি না। নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে কতটুকু নিঃশেষ করা যাবে, জানি না। ছাত্রলীগকে মোকাবিলা করতে হবে আদর্শের জায়গায় এবং মাঠের রাজনীতিতে। রাজনৈতিকভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

Leave a Reply

ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৬৩৯জন নিহত

অনলাইন ডেস্ক : ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত Read more

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

জুয়া খেলার সময় পুলিশের হাতে আটক ৫ জুয়াড়ি

জাতীয়, 11 May 2023, 1422 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ভোলার তজুমদ্দিন থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাঁচ জুয়াড়িকে আটক করেছে। আটক ৫ জনের বিরুদ্ধে জুয়া আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।

banner

থানা সূত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন থানার এস আই রাসেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১ টায় চাচড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড’র আনন্দ বাজারের পুর্ব পাশে গিয়াস উদ্দিনের মুদি দোকানের মধ্যে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার সময় তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলো, উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বালিয়াকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সোহাগ (২৫), আব্বাসের ছেলে ঈমন (১৯), মান্নানের ছেলে জসিম (৩৭), সামছুল হকের ছেলে আলাউদ্দিন (৪৫) ও মনোয়ার আলীর ছেলে আলাউদ্দিন (৪৬)।

এসময় গ্রেফতার ব্যক্তিদের জুয়া খেলার স্থান হতে নগদ টাকা, জুয়া খেলার খোলা তাস আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে আটক ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে কোর্টে চালান দেয়া হয়।

থানার অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, প্রকাশ্য জুয়া খেলা রোধে জুয়া আইনে মামলা করা হয়।পাঁচ আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় বেগম খালেদা জিয়া

জাতীয়, 6 May 2025, 103 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
দীর্ঘ চার মাস পর দেশে ফিরে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজ ৬ মে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে তিনি গুলশানের বাসভবনে পৌঁছান। সেখানে পৌঁছালে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে অভ্যর্থনা জানান। এর আগে, আজ সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেগম জিয়াকে বহনকারী কাতারের আমিরের বিশেষ ফ্লাইটটি অবতরণ করে। তাঁর সাথে এসেছেন বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি।

banner

বেগম খালেদা জিয়া স্বাগত জানাতে বিমানবন্দর এলাকায় ঢল নেমেছে নেতাকর্মীদের। বিমানবন্দর সড়ক থেকে বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ‌‌‘ফিরোজা’ পর্যন্ত সড়কের দু’ধারে অপেক্ষা করেন দলটির হাজারো নেতাকর্মী। তারা বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত পুরো পথে বেগম জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান।

এসময় ‘বেগম খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’সহ নানা শ্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। তাদের কেউ হাতে ফুল, কেউ ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, কেউ-বা বেগম জিয়ার ছবিসংবলিত টি-শার্ট পরে ছিলেন।

এদিন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবরে সকাল থেকেই বিএনপির শত শত নেতাকর্মী গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি ‘ফিরোজা’র সামনে জড়ো হন। বেগম জিয়ার আগমনকে ঘিরে আজ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এর আগে, ৫ মে সোমবার বাংলাদেশে সময় ৯টা ৩৫ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। মাঝে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাদ ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার জন্য বিরতি ছিল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির।

ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গুলি ও বন্দুকসহ ৬ ডাকাত গ্রেফতার

জাতীয়, 17 September 2023, 913 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় ৫ রাউন্ড তাজা গুলিসহ একটি দেশীয় বন্দুক উদ্ধারসহ ও দুটি ড্যাগার জব্দ করা হয়।

banner

গ্রেফতার ডাকাত সদস্যরা হল, আলমগীর শেখ(৩০), মাসুম শেখ (৩৬), তারা মিয়া (৩৮), আব্দুল মালেক (৩৫), হাসান আলী শেখ (৩৮), রহমত আলী (৫৫)। এদের সকলের বাড়ি জেলার ফুলছড়ি উপজেলায়।

আজ দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন।

পুলিশ সুপার জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির একটি চৌকস দল অস্ত্রসহ ডাকাতির প্রস্তুতির সময় অভিযান পরিচালনা করে। পরে সন্ধ্যার দিকে ফুলছড়ি উপজেলার ৫নং ও ১৫ নং ইউপির খোলাবাড়ী এলাকা থেকে আসামি আলমগীর শেখকে ৫ রাউন্ড তাজা গুলি ও একটি দেশীয় বন্দুকসহ, মাসুম শেখকে একটি ড্যাগার ও হাসান আলী শেখকে একটি ড্যাগারসহ তারা মিয়া, আব্দুল মালেক, রহমত আলীসহ ছয়জনকে আটক করে। এসময় আরও ৩ থেকে ৪ জন পালিয়ে যায়। ডিবি পুলিশ উদ্ধারকৃত আলামতগুলো জব্দ করে।

কামাল হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিরা একই সাথে পরস্পর যোগসাজসে জব্দকৃত অস্ত্রগুলি ও ড্যাগারসহ নৌযানে ডাকাতির জন্য উক্তস্থানে অবস্থান করছিল মর্মে স্বীকার করে। আসামিদের দেয়া তথ্য মতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সে ব্যাপারে আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আসামিদের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা ফুলছড়ি থানায় অস্ত্র ও ডাকাতি প্রস্তুতির পৃথক ২টি মামলা রুজু করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান (অর্থ ও প্রশাসন), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘বি’ সার্কেল আবদুল্লাহ আল মামুন, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা মোখলেছুর রহমানসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার সদস্যবৃন্দ।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে জাতিসংঘ সহকারী মহাসচিব

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 11 September 2023, 1636 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব কান্নি উইগনারাজাসহ জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ৯ সদস্যদের প্রতিনিধি দল।

banner

আজ ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে পৌঁছে প্রতিনিধি দলটি।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক নাফিউল হাসান, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, ইউএনডিপির বাংলাদেশ আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান ওলোফ লিলার, ডেপুটি আবাসিক প্রতিনিধি সুশ্রী সোনালী দয়ালনে, কৌশলগত যোগাযোগ ও আউটরিচ বিশেষজ্ঞ কীর্তিজাই পাহারি, ইউএনডিপির কক্সবাজার সাব অফিস প্রধান কেইটা সুগিমোতো, হেড অব কমিউনিকেশনস মো. আব্দুল কাইয়ুম ও কনসালটেন্ট ভিডিওগ্রাফার রাগীব আহসান শামরাত।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিয়োজিত এপিবিএন’র ১৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. ইকবাল জানিয়েছেন, প্রতিনিধি দলটি ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক সি এর সাব ব্লক এইচ/৭১-এ অবস্থিত ইউএনইচসিআর এবং এনজিও ফোরাম পরিচালিত পাইলট প্রকল্পের মর্ডান ভিলেস, ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও পরিচালিত বর্জ্য অপসারণ, ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ সুরক্ষা ও প্রকৃতি কেন্দ্র, ৪ নম্বর ক্যাম্পের সিআইসি অফিস এবং খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

এরপর প্রতিনিধিদলটি কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের আওতাধীন দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে নির্মিত শেল্টার গুলো ঘুরে দেখেন ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের ঘরে ঢুকে তাদের জীবনযাপনের মান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন।

প্রতিনিধি দলটি দুপুর ২টায় উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা ত্যাগ করেন বলে জানান তিনি।

এর আগে সকাল ৮টার দিকে খুনিয়া পালং ইউনিয়নের মির্জা আলীর দোকান সংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ গৃহহীনদের মধ্যে বিতরণ করা মুজিব বর্ষের ঘর পরিদর্শন করেন।

ইশরাকের গেজেট প্রকাশে মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষা করেনি ইসি: ড. আসিফ নজরুল

জাতীয়, 28 April 2025, 114 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের গেজেট প্রকাশে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষা করেনি। ২৮ এপ্রিল সোমবার রাজধানীর উসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

banner

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ডিএসসিসির নতুন মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের গেজেট প্রকাশে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষা করেনি ইসি। তাদের সাংবিধানিক অধিকারের মাধ্যমেই তারা তাদের মত প্রকাশ করেছে।

এ সময় ড. আসিফ নজরুল বলেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। মন্ত্রণালয়ের সেখানে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। এছাড়া যারা উদ্দেশ্য ও হয়রানিমূলক মামলা করছে তাদের বিষয়ে সরকার নজর রাখছে। কোনো লিগ্যাল ইস্যু না পেলে মামলা থাকবে না। যারা এমন মামলা করে তাদের চেহারা উন্মুক্ত করা করতে হবে।

দেশে প্রতি বছর ৫ লাখ মামলা হয় জানিয়ে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, মামলার জট কমাতে পরিকল্পনা করছে সরকার। ছোট ছোট মামলার জন্য লিগ্যাল এইড সংস্থায় যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। এই সংস্থার নাম পরিবর্তন করে ছোট করে রাখা হবে। খুব সহজে যোগাযোগের জন্য একটা সহজ নম্বর থাকবে। লিগ্যাল এইড সংস্থায় ৪০ শতাংশ মামলা নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে। জেলায় থাকবেন তিনজন বিচারক।

প্রসঙ্গত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নাম ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার (২৭ এপ্রিল) রাতে কমিশন গেজেট জারি করে।