ঘরের মাঠে বড় পরাজয় বাংলাদেশের

খেলাধুলা, 24 October 2024, 496 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিল শান্ত বাহিনী। কিন্তু সিরিজের প্রথম এবং মিরপুর টেস্টেও নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি স্বাগতিকরা। যার ফলে প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়াদের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে টাইগাররা।লক্ষ্য ছিল চতুর্থ দিন যতক্ষণ ও যত ওভার ব্যাটিং করা যায়। এই ক্ষণটা ভেঙে বললে একটা সেশন। কিন্তু সকালে ক্ষণের হিসেবে ২৫ মিনিটি এবং ৪.৫ ওভার স্থায়ী হলো বাংলাদেশের ইনিংস। দুর্দান্ত দৃঢ়তা দেখানো এবং আশা দেওয়া মেহেদী মিরাজ মিস করেন সেঞ্চুরি। জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ১০৫ রানের লক্ষ্য। জিততে ৩ উইকেট হারালেও খুব একটা বেগ পেতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার।

banner

বৃষ্টির পরে চতুর্থ দিনের উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা একটু ধীরে এগোবে এমনটা মনে হয়েছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় দানার কথা মাথায় রেখে রান তোলার দিকেও বেশ মনোযোগ ছিল তাদের। যে কারণে ২২ ওভার ব্যাটিং করেই তারা তুলে ফেলেছে রান। এতে কেটেছে তাদের একটি ফাঁড়াও। এর আগে ২০১৫ সালে জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে এসে বৃষ্টির কারণে মিরপুর ও চট্টগ্রামে দুই টেস্টেই ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাদের।

মিরপুর টেস্টে টস জেতে বাংলাদেশ। অনুমিতভাবে ব্যাটিং করতে নামলেও প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়। জবাবে প্রথম ইনিংসে ৩০৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০৮ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। সেখান থেকে উইকেটরক্ষক ব্যাটার কাইল ভেরায়েনে ও পেস অলরাউন্ডার ওয়ান মুলদার ১১৯ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ বাংলাদেশের নাগালের বাহিরে নিয়ে যান। মুলদার ৫৪ রান করে ফিরলেও ভারায়েনে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১১৪ রানে থামেন।

প্রথম ইনিংসে ২০২ রানের লিড নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে বেশ ভালো ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ দল। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারালেও মেহেদী মিরাজ ও জাকের আলীর ব্যাটে ভর করে ৩০৭ রান তোলে স্বাগতিকরা। মিরাজ খেলেন ৯৭ রানের ইনিংস। শেষ ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন। অভিষেক টেস্ট খেলা জাকের ৫৮ রান যোগ করেন। এছাড়া ওপেনার জয় ৪০ ও মিডলে মুশফিক ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন।

বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়ায় প্রোটিয়া ওপেনার টনি ডি জর্জি ৪১ রান করেন। অধিনায়কি এইডেন মার্করাম ২০ রানের ইনিংস খেলেন। ত্রিস্তান স্টাবস ৩০ রান যোগ করেন।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ দলের হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন তাইজুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। প্রথম দিন প্রোটিয়াদের ৬ উইকেটের ৫টিই নেন তাইজুল। ক্যারিয়ারের ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের পক্ষে ৩ উইকেটই নেন তিনি। পেসার হাসান প্রথম ইনিংসে নেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসু রাবাদা ও মুলদার ৩টি করে উইকেট নেন। স্পিনার কেশব মহারাজ নেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে রাবাদা নিয়েছেন ৬ উইকেট। ৩ উইকেট নিয়েছেন মহারাজ।

Leave a Reply

IAHS এর এমবিবিএস কোর্সের ১ম বর্ষের…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী জাতীয় অধ্যাপক ডাক্তার নুরুল Read more

ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৬৩৯জন নিহত

অনলাইন ডেস্ক : ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত Read more

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত

খেলাধুলা, 30 June 2024, 607 Views,

স্পোটর্স ডেস্ক :
৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। হাইনরিখ ক্লাসেন এক ওভারেই ম্যাচটাকে নিয়ে আসেন প্রায় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয়। ভারতের করা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দলীয় সর্বোচ্চ ৭ উইকেটে ১৭৬ রানও তখন সহজ লক্ষ্য মনে হচ্ছিল। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা তাদের সেই সহজ কাজটাকেই কঠিন করে তোলেন অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে। ডেথ ওভারে ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ওভারে সমীকরণটা কমিয়ে আনেন ১৬ রানে।

banner

হার্দিক পান্ডিয়ার করা ওই ওভারের প্রথম বলটা ছিল ফুলটস। স্ট্রাইকে থাকা ডেভিড মিলার ঠিকঠাক মেরেছিলেনও। কিন্তু লং অফ বাউন্ডারিতে থাকা সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য রিলে ক্যাচে নিশ্চিত ছক্কাটাই হয়ে যায় আউট। জয় তখন উল্টো ভারতের হাতের মুঠোয়, টি–টোয়েন্টি শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটা আবার মাথায় উঠল বলে। শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া সেই সুযোগ হাতছাড়া হতে দেননি। ওভারের পঞ্চম বলে কাগিসো রাবাদাকে আউট করলেন। শেষ ওভারে মাত্র ৮ রান দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। ৭ রানের জয়ে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। প্রথম শিরোপা ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে।

ডেভিড মিলারের অবিশ্বাস্য চোখজোড়া দেখে মনের কথাগুলো আন্দাজ করা যায় এমন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনে এখন প্রবাদটা বেশ পরিচিত।
দেশটির রেসলার ড্রিসুস ডু প্লেসিস কথাটা জনপ্রিয় করেছেন সম্প্রতি, অবশ্যই নিজেদের যন্ত্রণা বোঝাতে।

কিন্তু সূর্যকুমার যাদব কী ভাবছিলেন? শেষ ওভারে যখন ১৬ রান দরকার, অসহনীয় চাপ তখন ঘিরে থাকার কথা। এর মধ্যে বলটা ধরে ভেতরে রাখলেন সূর্য, নিজে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ফিরে এসে নিলেন ক্যাচটা। আউট হলেন মিলার, নিশ্চিত হলো ভারতের বিশ্বকাপও।

অসহনীয় চাপ, বহুবার কাছে গিয়েও শিরোপা না জিততে পারার আফসোস, এত এত প্রত্যাশার শেষে দুঃখের কান্না; ভারতও কি কম ভুগেছে একটি বিশ্বকাপের জন্য? এক দশক অথবা তারও বেশি সময় আগে বিশ্বকাপ জেতা হয়েছিল তাদের। ২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে ‘ফিনিশেস থিংস অব ইন স্টাইল’ করে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি। এরপর এবার। মাঝে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া নেই আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপাও। ক্রিকেট প্রায় ধর্ম যেখানে, তাদের জন্য কতটা হতাশার, ওই যন্ত্রণাই বা কে জানতে চেয়েছে এতদিন!

শনিবার রাতে বার্বাডোজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে ভারত। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের বেশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম আট বলের পাঁচটিতেই বাউন্ডারি পায় ভারত। মার্কো ইয়ানসেনের করা প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান বিরাট কোহলি, আসে ১৫ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে খরুচে প্রথম ওভার করেন ইয়ানসেন।

পরের ওভারে স্পিনার কেশভ মাহারাজকে নিয়ে আসেন প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তাকে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান রোহিত। এক বল ডট দেওয়ার পরেরটিতেই উইকেট এনে দেন মাহারাজ। তাকে সুইপ করতে গেলে বল কিছুটা শূন্যে ভেসে ছিল, স্কয়ার লেগে নিচু হওয়া ক্যাচ দারুণভাবে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৫ বলে ৯ রান করে ফিরতে হয় রোহিতকে।

মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান ঋষভ পান্তও। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের আগায় লেগে বল উপরে উঠে যায়, সহজ ক্যাচ নেন কুইন্টন ডি কক। ২ বলে শূন্য রান করে আউট হন পান্ত। ভালো শুরুর পর হুট করেই খেই হারায় ভারত।

তাদের বিপদ আরও বাড়ে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে সূর্যকুমার যাদব আউট হলে। কাগিসো রাবাদার বলে ফাইন লেগে তার ক্যাচ নেন ক্লাসেন। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরত যান সূর্য। এরপর পাঁচে অক্ষর প্যাটেলকে পাঠায় ভারত। তাদের এই কৌশল কাজে লাগে ভালোভাবেই।

বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানেন অক্ষর। সুযোগ পেলেই ছক্কা হাঁকিয়ে রানের চাকাও সচল রাখেন। কোহলির সঙ্গে তার জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ রান। কিন্তু নিজের হাফ সেঞ্চুরি ছুতে পারেননি তিনি। অক্ষরের অলসতা ও কুইন্টন ডি ককের চতুরতায় কোহলির সঙ্গে তার জুটি ভাঙে।

রাবাদার বলে ফ্লিক করতে যান কোহলি। কিন্তু ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি, বল থাকে উইকেটরক্ষকের কাছাকাছি। এর মধ্যে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর, কিন্তু কোহলি ফিরিয়ে দেন তাকে। ফেরার জন্য যথেষ্ট সময় পেলেও দ্রুততা ছিল না অক্ষরের। উইকেটরক্ষকের জায়গা থেকে সরাসরি থ্রোতে নন স্ট্রাইক প্রান্তে স্টাম্প ভাঙেন ডি কক। ৩১ বলে ১টি চার ও চারটি ছক্কায় ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান অক্ষর।

তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। এই টুর্নামেন্টে প্রথমবার এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আগের সাত ইনিংসে স্রেফ ৭৫ রান করেছিলেন, দুবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। ফাইনালে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোহলি।

ফিফটি পাওয়ার পর কিছুটা চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ১১ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মার্কো ইয়ানসেনের আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পরেরটি একটু স্লো করেন তিনি, এবার পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন রাবাদার হাতে।

কোহলির সঙ্গে পরে পঞ্চাশ পেরোনো জুটি হয়েছিল দুবেরও। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন দুবে। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষ বলে জাদেজাও আউট হন। তবে ততক্ষণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান করে ফেলেছে ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩ রান টপকে তারা করে ১৭৬ রান।

রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই স্বস্তি উবে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের হয়ে কাজটি যার করার কথা ছিল, করেছেন তিনিই। দুর্দান্ত এক ডেলেভারিতে রেজা হেনরিকসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৫ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন রেজা।

দ্বিতীয় উইকেটের জন্যও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ভারতকে। আর্শদ্বীপের করা পরের ওভারে মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন ডি কক, তার সঙ্গী হন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস। পাওয়ার প্লের শুরুতে চাপে পড়া দলকে ছয় ওভারে ৪২ রান এনে দেন তারা।

যখন মনে হচ্ছিল স্টাবস-ডি কক জুটি জমে গেছে নবম ওভারে গিয়ে তখনই দুজনের জুটি ভাঙে। অক্ষরকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান স্টাবস। ২১ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি, ভাঙে ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি। তার আউট হওয়ার পর হতাশায় নিজের ব্যাটে ঘুষি মারেন ডি কক।

কিন্তু তার পরের সঙ্গীকে নিয়েও দারুণভাবেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। ভারতের ভয়ও বাড়তে থাকে। স্পিনের বিপক্ষে ভয়ঙ্কর ক্লাসেন নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে শুরু করেন। কিন্তু এর আগেই সাজঘরে ফেরেন ডি কক। আর্শদ্বীপ সিংয়ের শর্ট বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে কুলদ্বীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দেন ডি কক। ওই বলের আগেই তাকে নেওয়া হয়েছিল পেছনে।

এরপর উইকেটে এসে ক্লাসেনের সঙ্গী হন ডেভিড মিলার। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসকে নতুন প্রাণ দেন তিনি। এমনকি ম্যাচটাও নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। শুরুটা হয় কুলদ্বীপের করা ১৪তম ওভারে। শেষ দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান মিলার।

পরের ওভারে আসা অক্ষরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন ক্লাসেন। এরপর ওই ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান। এই ওভারের আগে ৬ ওভারে দরকার ছিল ৫৪ রানের। অক্ষরের ওভারের পর সেটি হয়ে যায় ৩০ বলে ৩০ রান।

কিন্তু এই জায়গা থেকেও ম্যাচ আরও একবার মোড় নেয় উল্টোপথে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে প্রাণ ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। তার করা ১৭তম ওভার শুরুর আগে কিছুটা সময় ব্যয় করে ভারত। মোমেন্টাম বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেন, সেটি তারা পারেনও। পান্ডিয়ার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্লাসেন। ২৭ বলে ২ চার ও ৫টি ছক্কায় ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।

ক্লাসেনের বিদায়ের পর অনুমিতভাবেই কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচ। ১৮তম ওভারে এসে দুই রান দিয়ে ইয়ানসেনের উইকেট তুলে নেন বুমরাহ। পরের ওভারে ৪ রান দেন আর্শদ্বীপ। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ আসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে।

তাদের জন্য তখনও সবচেয়ে বড় ভরসা মিলার। ৩০ বলে ৩০ থেকে ৬ বলে ১৬ রানের সমীকরণে চলে আসা ম্যাচেও তাদের একমাত্র আশা। কিন্তু প্রথম বলেই সেটি শেষ হয়ে যায়। হার্দিকের ফুলটস এগিয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন মিলার। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে তখনই ওই অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন সূর্যকুমার।

এরপর বাকি পাঁচ বলে কেবল ৯ রানই করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আরও একবার ‘এত কাছে তবুও কত দূরে’র গল্প লেখা হয়েছে তাদের সঙ্গে। ভারতের বহু বহু অপেক্ষার ইতি ঘটেছে এক জয়ে। হয়তো সরেছে শত কোটির চাপিয়ে দেওয়া ভীষণ এক চাপও, শিরোপা না জেতার; দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ভারতও বলতে পারে ‘আমরা যা জানি, তারা তো জানে না’!

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮
ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী

বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

খেলাধুলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 6 November 2024, 718 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজকে যারা জেলা স্টেডিয়ামে ফুটবল প্রতিযোগিতা করছে আগামীতে তাদেরকে বিভাগীয় বা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতায় দেখতে চাই। তিনি বলেন আমরা তোমাদের নিয়ে ভবিষ্যৎ চিন্তা করি তোমরা যেন ভাল মানুষ হয়ে দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জল করবে। এ ক্ষুদে খেলোয়াড়রা খেলাধূলায় অংশ গ্রহন করে ক্রীড়াঙ্গনকে আরও সমৃদ্ধি করার আহবান জানান। তিনি বলেন, খেলাধূলার মান উন্নয়নে এবং নিয়মিত পরিচর্চার জন্য তৃর্ণমুল পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশের উদ্দেশ্যে জেলা ক্রীড়া অফিস যে আয়োজন করে তা প্রশংসার দাবিদার।

banner

আজ ৬ নভেম্বর বুধবার সকাল ১০টায় নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে ক্রীড়া পরিদপ্তর যুব আওতায় ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ক্রীড়া অফিস আয়োজিত বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি-২০২৪-২৫ অনুর্ধ্ব-১৫ ফুটবল প্রতিযোগিতা উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম একথা বলেন। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহ্মুদা আক্তার। ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, তেলিনগর উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, পাকশিমুল হাজী শিশু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং ইউনাইটেড ফুটবল একাডেমী। এসময় প্রতিটি বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।

সাফের সেমিতে বাংলাদেশের যুবারা

খেলাধুলা, 11 May 2025, 99 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ভুটানকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের যুবারা। ১১ মে রবিবার ভারতের অরুনাচল স্টেডিয়ামে ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শেষ চারে ওঠে লাল-সবুজের জার্সিধারিরা।

banner

ম্যাচ শেষে কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন বলেন, আমি প্রথমেই অভিনন্দন জানাই আমার ছেলেদেরকে দুর্দান্ত একটা ম্যাচ খেলার জন্য। আজকের ম্যাচটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যেহেতু মালদ্বীপের সাথে দুর্ভাগ্যবশত আমরা ড্র করেছি। তো ছেলেরা তাদের শতভাগ দিয়ে আজকে ৩ পয়েন্ট অর্জন করেছে। এটা আমার বিশ্বাস ছিল যে, ছেলেরা আসলে এটা করতে পারবে। এবং ছেলেরা তাদের দেশপ্রেম থেকে তারা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে খেলে নাইন্টি মিনিটস গেমস ডমিনেট করেই তারা জয়লাভ করেছে।

নেইমারের গোল, জিতলো দল

খেলাধুলা, 17 February 2025, 233 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর আল হিলালের হয়ে শেষ গোল করেছিলেন নেইমার। প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে এটাই এতো দিন ছিল তাঁর সবশেষ কোনো গোল। সৌদি ক্লাবের হয়ে গোলের পর কেটে গেছে প্রায় দেড় বছর। অবশেষে গোলের অপেক্ষা ফুরোল নেইমারের।

banner

অ্যাগুয়া সান্তার বিপক্ষে ক্যাম্পেওনাতো পাউলিস্তা টুর্ণামেন্টে আজ বাংলাদেশ সময় সকালে খেলেছে সান্তোস। ভিলো বেলমিরো স্টেডিয়ামে ১২ মিনিটে বক্সের ভেতর ড্রিবল করে ঢুকতে গিয়ে ফাউলের শিকার হয়েছেন নেইমার। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে ১৪ মিনিটে স্পটকিক থেকে গোল আদায় করে নেন ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড। এই গোলে তাঁর ফুরিয়েছে ৫০২ দিনের অপেক্ষা। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের গোলখরা কাটানোর দিনে জিতেছে তাঁর দলও। অ্যাগুয়া সান্তাকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে সান্তোস। ২৬ ও ৭০ মিনিটে থাচিয়ানো ও গিলার্মে করেছেন সান্তোসের অপর দুই গোল। অ্যাগুয়া সান্তার একমাত্র গোল ৪৩ মিনিটে করেন নেতিনহো।

ব্রাজিলের জার্সিতে সর্বোচ্চ ৭৯ গোলের রেকর্ড নেইমারের। তাঁরই কি না গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫০০ দিনেরও বেশি। তাতে অবশ্য ব্রাজিলের ফরোয়ার্ডের দায় কম। কারণ, তাঁর চেয়ে সময়টা কেটেছে চোটের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে। এমন অবস্থায় আল হিলাল এ বছরের জানুয়ারিতে চুক্তি বাতিল করেছিল। সৌদির এই ক্লাবে ২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে দুই বছরের চুক্তিতে গিয়েছিলেন। বার্ষিক ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের চুক্তি করা হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ১২৭৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। তবে সৌদি ক্লাবে সব মিলে খেলতে পেরেছিলেন ৭ ম্যাচ।

আল হিলালের সাথে সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর নেইমার ফেরেন তাঁর শৈশবের ক্লাব সান্তোসে। ১২ বছর পর ব্রাজিলের ক্লাবটিতে ফিরলেও জয় পাচ্ছিলেন না কিছুতেই। সান্তোসে ফেরার পর নেইমারের প্রথম তিন ম্যাচের দুটিই ড্র হয়েছে। একটিতে হেরেছে সান্তোস। অবশেষে আজ তাঁর গোলখরা কাটানোর দিনে জিতলো সান্তোস। জয়ের পর নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে অ্যাগুয়া সান্তার বিপক্ষে জয়ের কিছু মুহূর্তের ছবি পোস্ট করেছেন ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড।

কোপা দেল রে’র শিরোপা বার্সেলোনার

খেলাধুলা, 27 April 2025, 125 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
কোপা দেল রে’র রোমাঞ্চকর ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিলো বার্সেলোনা। অতিরিক্ত সময়ের জুলস কুন্দের অসাধারণ গোলে কাতালানদের জয় নিশ্চিত হয়। ২৬ এপ্রিল শনিবার রাতে স্পেনের এস্তাদিও দে লা কার্তুজায় অনুষ্ঠিত হয় কোপা দেল রে’র ফাইনাল। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ২-২ গোলে। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে জুলস কুন্দের দুর্দান্ত গোলে জয় নিশ্চিত করে বার্সেলোনা।

banner

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় বার্সেলোনা। ১২ মিনিটে পেদ্রির দূরপাল্লার শটে এগিয়ে যায় তারা। রিয়াল মাদ্রিদ প্রথমার্ধে তেমন কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি।

দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচে ফিরে আসে। ৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে সমতা ফেরান। এরপর ৭৪ মিনিটে আর্দা গুলেরর কর্নার থেকে চুয়োমেনি গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন।

৮৩ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফেরান তরেস গোল করে বার্সেলোনাকে সমতায় ফেরান। এই গোলটি রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়া ও রুডিগার এর ভুলে সম্ভব হয়।

১১৫ মিনিটে রিয়ালের অর্ধে মদ্রিচের পাসপেতে গিয়ে ব্রাহিম দিয়াজ হোঁচটখান। এই সুযোগে দ্রুত বল দখল করে জুলস কুন্দে ছুটে এসে নেয় এক জোরালো শট— যা ঠেকাতে ব্যর্থ হন কোর্তোয়া। গোল লাইনের বল জালে জড়াতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে বার্সা শিবির।

এটি চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার দ্বিতীয় শিরোপা, এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপেও রিয়ালকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল তারা।
এ জয়ে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে বার্সার শিরোপার সংখ্যা দাঁড়াল ৩২-এ, যা সর্বোচ্চ।

১১৮ মিনিটে বার্সেলোনার ডি-বক্সে এমবাপ্পে পড়ে যান। কিন্তু অফসাইড হওয়ায় পেনাল্টি পায়নি রিয়াল। ম্যাচের শেষদিকে উত্তেজনা ছড়ায়। রেফারির সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে সাইডলাইনের ওপার থেকে কিছু একটা ছুঁড়ে মারায় লাল কার্ড দেখেন রুডিগার ও লুকাস ভাসকেস।