চলারপথে রিপোর্ট :
জুলাই গণহত্যাসহ সকল হত্যার বিচারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় গণসমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। আখাউড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আজ ২৬ অক্টোবর শনিবার বিকালে পৌর শহরের সড়ক বাজার মুক্ত মঞ্চের সামনে গণ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর মোঃ গোলাম ফারুক।
সমাবেশে কয়েক’শ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোঃ ইকবাল হোসেন ভূইয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মোঃ সানাউল্লাহ, জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আতিকুল ইসলাম, আখাউড়া পৌর জামায়েতের আমির মোরশিদ আলম, পৌর জামায়েতের সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রহমান কাশগরি, উপজেলা যুব বিভাগের সভাপতি মোঃ আজিম উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ সিফাত উল্লাহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা লগি বৈঠা দিয়ে পৈশাচিক ভাবে পিটিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ৬ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। লাশের উপর নৃত্য করেছিল। কথিত বিচারের নামে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর সহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। ২০০৯ সালে পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে আলেম ওলামাসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হাসিনার নির্দেশে অসংখ্য ছাত্র জনতাকে গুলি করে হত্যা করেছে। বক্তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সকল হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা মোঃ বোরহান উদ্দিন খান।
অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপির আইনজীবীদের আদালত বর্জনকে রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি বলে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, এর কোন মর্মার্থ নাই। কারণ হচ্ছে, আদালত আদালতের কাজ করে যাচ্ছে। আদালত বিচার কার্যে মনোনিবেশ করছেন। আদালতকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্যে টেনে আনা আমার মনে হয় বিএনপির ভুল বা অন্যায়। আজ ৩ জানুয়ারি বুধবার সকালে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে সাংবাদিকদের সাথে তিনি এসব কথা বলেন।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন তামাশার নির্বাচন, বিএনপির এমন মন্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, যারা এ নির্বাচনকে তামাশা বলছেন, তাদের বক্তব্যটাই তামাশা। কারণ হচ্ছে, জনগণ এ নির্বাচনকে মেনে নিয়েছেন এবং নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবেন বলে জনগণের এখনের কার্যকলাপে বুঝা যাচ্ছে। উনারা (বিএনপি) কথা বলে যেতে পারেন কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সঠিকভাবে তাদের অধিকার ব্যক্ত করবে।
এর আগে তিনি আন্ত:নগর মহানগর প্রভাতী ট্রেনে সকাল সাড়ে দশটায় ঢাকা থেকে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে এসে পৌঁছে। এসময় আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাঁকে স্বাগত জানায়। পরে তিনি সড়ক পথে কসবা উপজেলায় নিজ বাড়িতে যান।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
প্রথম দেখায় জায়গাটিকে সড়ক বলে বোঝাই দায়। নোংরা পানি-কাদায় একাকার হয়ে আছে শতাধিক পরিবারের চলার পথটি। কয়েক মাস ধরে এমন ভোগান্তিতে আছেন আখাউড়া উপজেলার ধাতুরপহেলা গ্রামের কয়েকশ মানুষ। চলার পথের এ অবস্থার কারণে তাঁদের পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিয়েও ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
গ্রামবাসীর ভাষ্য, প্রভাবশালী কয়েকটি পরিবারের বাড়ির নোংরা পানি সরাসরি পড়ছে সড়কটিতে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে সেখানে। ইট ফেলে হাঁটার ব্যবস্থা করেছেন ভুক্তভোগীরা। এভাবে চলাচল করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
এক ভুক্তভোগী বলেন, মোগড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুর রহমানের গোয়াল থেকে প্রতিদিন গরুর বর্জ্য মেশানো পানি সরাসরি এখানে পড়ে। এ ছাড়া ভুট্টো মিয়া, আমির হোসেন, সেলিম মেম্বার, নাজির মিয়া, হামদু মিয়া, বিল্লাল, আনার, হেলাল, শামিম ও মোতালিব মিয়ার বাড়ির শৌচাগারের নোংরা পানি ও কলতলার পানিও উপচে আসে এ পথে। তবে তাঁরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
আনু মিয়া নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্রপক্ষের লোকজন এ পথের জন্য আসতে পারে না। লজ্জায় পড়তে হয়।’ শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে তাঁর এক সন্তানও নোংরা পানির কারণে অসুস্থ হয়েছিল। পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয়।
হাবিবুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুধু আমার বাড়ির গোয়ালের পানিই নয়, আরো কয়েকটি পরিবারের পানি রাস্তায় পড়ে।’ তবে মানুষ চলাচলের জন্য রাস্তাটি উপযোগী করতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বলেন, কয়েকটি পরিবারের ময়লা পানির কারণে শতাধিক পরিবার ওই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। বিষয়টি চেয়ারম্যানও জানেন। তিনি দ্রুতই উভয়পক্ষকে ডাকবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন বলেন, রাস্তায় কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের আশা করছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় প্রায় ১৫ বছর ধরে নির্যাতনের কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজালা পারভীন রুহীর কাছে তুলে ধরেছেন উপজেলা বিএনপির নেতারা।
গতকাল ৭ আগস্ট বুধবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় তারা তাদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন। এসময় বিএনপি নেতারা আরো বলেন, গত ৫ আগস্ট মেয়রের রাধানগরের সাততলা বাড়িতে হামলা করে বিক্ষুব্ধরা। দীর্ঘদিন ধরে মানুষের উপর মেয়র যে অত্যাচার চালিয়ে গেছেন এরই প্রতিফলন এটা। বলা যায় এটা এক ধরণের পঞ্জিভূত ক্ষোভ। তবে হামলার পর যে লুটতরাজ হয়েছে সেটি আরেকটি পক্ষের কাজ। তাদের উদ্দেশ্যই ছিলো লুটপাট করা। মেয়রের সাথে থাকতেন, আওয়ামীলীগের কর্মসূচিতে যেতেন এমন লোকজনও এই লুটপাটে অংশ নেয়।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আখাউড়ায় আন্দোলনের মতো পরিস্থিতি ছিলো না। কেউ করতোও না। একদিন একটা মিছিল হয়। ৪ আগস্ট আরেকটি মিছিলে বাঁধা দেয় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু। এরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়। পরদিন আন্দোলনের সাথে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন যোগ দিলে সেটি আরো জোরালো হয়। এ সময় মেয়রকে অনুরোধ করা হয় কিছুক্ষণ মিছিল করে সবাই চলে যাবেন। কিন্তু মেয়র এতে বাঁধ সাধেন। এরই মধ্যে বড় একটি মিছিল এসে পৌর এলাকায় ঢুকে। এরপরই মেয়র, ছাত্রলীগ সভাপতিসহ বেশ কয়েকজনের বাড়িতে হামলা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জয়নাল আবেদীন, সদস্য সচিব মোঃ খোরশেদ আলম, পৌর বিএনপির আহবায়ক সেলিম ভূঁইয়া, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ আক্তার হোসেন প্রমুখ। সভায় মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ভোটের লড়াইয়ে আপন দুই ভাই একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। পৌর শহরের খড়মপুরস্থ প্রখ্যাত আওলিয়া কল্লা শহীদ (র.) মাজার শরীফ পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে উত্তর পাড়া থেকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই সহোদর।
তারা হলেন বড় ভাই মোঃ মলিন খাদেম (আনারস) ও ছোট ভাই মোঃ খোকন খাদেম (মোরগ)। খোকন খাদেম বর্তমানে কমিটির সদস্য।
একই পদে দুই ভাই প্রার্থী হওয়ায় এলাকায় ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মাজার কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কল্লা শহীদ (র.) মাজারটি বাংলাদেশ ওয়াকফ্ এস্টেট এর তালিকাভুক্ত একটি দরগাহ শরীফ। ই. সি. নং ৪৫৬৬। ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি মাজার পরিচালনা করে। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক ওই কমিটির সভাপতি এবং আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিনিয়র-সহ সভাপতি। গ্রামের ৭টি পাড়া থেকে ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন। প্রত্যেক পাড়া থেকে ৩ জন করে ২১ জন সদস্য নির্বাচন করবেন ভোটাররা। পরবর্তীতে সদস্যের ভোটে একজন সাধারণ সম্পাদক ও একজন সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ওয়াকফ প্রশাসকের সুপারিশক্রমে ২ জন সদস্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। কমিটির মেয়াদ ৩ বছর।
এদিকে মাজার কমিটির নির্বাচনে আপন দুই ভাই প্রার্থী হওয়ার আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য, একই পরিবার থেকে দু’জন প্রার্থী হওয়ায় বিষয়টি অশোভন দেখাচ্ছে। এতে তাদের নিজেদের ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। ভোটাররাও বিভ্রান্ত হবে। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের সুযোগ নিবে অন্যান্য প্রার্থীরা। ফলে নির্বাচনে জয়লাভ করা উভয়ের জন্য কঠিন হবে। কিন্তু এক ভাই প্রার্থী হলে দুই ভাইয়ের সম্বলিত শক্তিতে জয়লাভ করা সহজ হতো।
উত্তর পাড়া থেকে অপর প্রার্থীরা হলেন মোঃ কামরুল হাসান (দেয়াল ঘড়ি), মোঃ বাহাদুর খাদেম (চশমা), রোজবেল খাদেম (আম), সাকির খাদেম (হারিকেন) ও জাকির খাদেম (কলস)।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই সরগরম খড়মপুরের পাড়া মহল্লা। প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক সম্বলিত মিনি পোষ্টারে ছেয়ে গেছে গ্রামের পাড়া মহল্লা। বাসা বাড়ির দেয়াল, বিদ্যুতের খুঁটি ও দোকান-পাটে প্রার্থীদের পোস্টার লাগানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে প্রচার প্রচারণা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে।
জানতে চাইলে, মলিন খাদেম বলেন, দুই ভাই নির্বাচন করলেও সমস্যা নাই। ভোটাররা যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকে ভোট দিবেন।
অপর দিকে ছোট ভাই মোঃ খোকন খাদেম বলেন, কেউ ষড়যন্ত্র করে বড় ভাইকে প্রার্থী করেছে। তবে আমি সব সময় পাড়ার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। আশা করি ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি ফেরার পথে তিন মেয়েসহ নিখোঁজ গৃহবধূর (২৮) সন্ধান পাওয়া গেছে।
আজ ৯ জুন রবিবার দুপুরে বগুড়ার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করে বিজয়নগর থানা পুলিশ। বিজয়নগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, ওই গৃহবধূ ও তার তিন সন্তানকে উদ্ধার করে পুলিশী হেফাজতে রাখা হয়েছে। গৃহবধূর জবানবন্দি নেওয়া হলে নিখোঁজের কারণ জানা যাবে। প্রসঙ্গত, গত ২ জুন রবিবার ওই গৃহবধূ ও তাদের তিন মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে বিজয়নগর উপজেলার মিরাশানী (ভূঁইয়া বাড়ি) বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত ৭ জুন শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি তিন মেয়েকে নিয়ে আখাউড়া থেকে আবার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে অটোরিকশায় করে বিজয়নগরের সিঙ্গারবিল বাজারে আসেন। এরপর থেকে আশপাশের আত্মীয়-স্বজন, হাসপাতালসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করেও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় ৮ জুন শনিবার নিখোঁজ গৃহবধূর বাবা আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।