চলারপথে রিপোর্ট :
হত্যা মামলায় আট দিনের রিমান্ড শেষে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমকে (শিউলি আজাদ) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাগত সাম্য এ আদেশ দেন। এর আগে রিমান্ড শেষে উম্মে ফাতেমাকে আদালতে হাজিরের পর কারাগারে রাখার আবেদন করে সরাইল থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহমান খান পাঠান আদালতকে লিখিতভাবে জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মামলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সরাইল থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় উম্মে ফাতেমাকে ৬ অক্টোবর রাতে ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ওই রাতেই তাঁকে সরাইল থানা-পুলিশের জিম্মায় দেওয়া হয়।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরাইলের চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিন বাদী হয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ৬৭ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে ২০২১ সালের ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায় আসামিদের গুলিতে নিহত হন উপজেলার কাটানিশার গ্রামের বাসিন্দা লিটন মিয়া (২৭)।
রিমান্ডে থাকা অবস্থায় মামলাটির বিষয়ে শিউলি আজাদের দেওয়া তথ্যের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানান সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল হাসান। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে তাঁকে আবারও রিমান্ডে আনার আবেদন করা হবে।
এদিকে শিউলি আজাদের আইনজীবী জয়নাল উদ্দিন জানান, আগামী ৩ নভেম্বর শিউলি আজাদের জামিন আবেদনের ওপর আদালতে শুনানি হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নিজ জেলা পাবনায় এসে পৌঁছেছেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আজ ১৫ মে সোমবার দুপুর ১২টা ০৮ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে পাবনা শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে এসে পৌঁছান তিনি। এরপর পাবনা সার্কিট হাউজে উপস্থিত হয়ে গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন।
পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
রাষ্ট্রপতির প্রটোকল অফিসার নবিরুল ইসলাম সাক্ষরিত সফরসূচি অনু্যায়ী জানা গেছে, দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে জেলা পরিষদ বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরের নাম ফলক উদ্বোধন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর ১টা ৪৫ মিনিটে পাবনা সদর আরিফপুর কবরস্থানে উপস্থিত হয়ে বাবা-মায়ের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাতে অংশ নিবেন। এরপর বেলা ২ টায় স্কয়ার বাগানবাড়িতে পারিবারিক সমাধিস্থলে উপস্থিতি, পুষ্প অর্পণ এবং প্রার্থনায় অংশ নিবেন।
পরদিন ১৬ মে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পাবনা বিসিক শিল্পনগরীতে স্কয়ার সাইন্স এন্ড লাইফ প্ল্যান্ট উদ্বোধন করবেন। বেলা ১১টায় পাবনা প্রেসক্লাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বেলা ৩টায় পাবনা সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজ মাঠে নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
১৭ মে বুধবার বেলা ১১টায় পাবনা ডায়াবেটিক সমতি পরিদর্শন। বিকেল ৪টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের যাদুঘর, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল উদ্বোধন এবং আইনজীবীদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। এছাড়া বিকেলে ৫টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিনোদন পার্ক পরিদর্শন করবেন। ১৮ মে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় সার্কিট হাউজে গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে ১১টক ৪০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবেন।
পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সী বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির পাবনা সফরকে কেন্দ্র করে সর্বোস্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির পাবনা সফর ঘিরে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তার পাবনা সফর যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
সৌদি আরবের আল নাজাদ অঞ্চলের আপিপ শহরে কাজে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় তিন জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
১৩ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ও সৌদি সময় সকাল ৯টার দিকে আপিপ থেকে নির্মাণ কাজে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার সময় তিন শ্রমিকের মধ্যে সবুজ গাড়ির চালক ছিলেন। নিহতরা হলেন সবুজ চৌকিদার (৩৮), মো. সাব্বির (২১) ও মো. রিফাত (২০)।
নিহত শ্রমিকদের মধ্যে সবুজ ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পশ্চিম বিশকাটালি গ্রামের জামাল চৌকিদারের ছেলে। অপর নিহত সাব্বির পার্শ্ববর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির ইসমাইল ছৈয়ালের ছেলে এবং রিফাত আলগী উত্তর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
আজ ১৪ জুন শুক্রবার সকালে নিহত তিন শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে শোকের মাতম দেখা গেছে। আসন্ন ঈদুল আজহার সময় দুর্ঘটনাটি প্রতিটি পরিবারে হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। রিফাত তিন বছর আগে সৌদি আরবে যায়। সে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো।
রিফাতের বাবা বলেন, কয়েকদিন আগেও ছেলের সাথে কথা হয়েছে। বাবার আবেদন ছিল ছেলে যেন বাড়িতে এসে ঈদ করে। কিন্তু তা আর হলো না। রিফাত খুব কম বয়সী। এমন দুর্ঘটনায় সবাই মর্মাহত। ছেলেটি তাদের সংসারে উপার্জনের হাল ধরেছিল।
নিহত সাব্বিরের বাবা ইসমাইল ছৈয়াল ও মা ফাতেমা বেগমের একটাই দাবি তাদের সন্তানকে দেশে আনার জন্য যেন সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হয়। মা ফাতেমা বেগম ছেলের শোকে অনেকটা বাকরুদ্ধ। প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিয়েও মাকে বুঝাতে পারছেন না। কিছু সময় পর পর ছেলের নাম নিয়ে কেঁদে উঠেন।
সাব্বিরের বোন স্নেহা বলেন, ভাই আমাকে ফোনে অনেক স্বপ্নের কথা বলতেন। দেশে আসলে কি কি করবেন। গত কয়েকদিন আগে কথা হলে আমি দেশে আসার জন্য বলি। কিন্তু ভাইয়ের আর আসা হলো না। দুই ভাইয়ের মধ্যে আমি ছোট। বড় ভাইও সৌদিতে থাকেন। সাব্বির ও রিফাতকে সৌদিতে কাজের জন্য নিয়ে যায় সবুজ চৌকিদার। তিনি তাদেরকে আপিপ শহর ও আশপাশের এলাকায় ভবন নির্মাণের কাজ করাতেন। নিজেদের গাড়িতে করে তারা কাজে আসা-যাওয়া করতেন। গাড়িটির চালক ছিলেন সবুজ।
জামাল চৌকিদার বলেন, তার ছেলে সবুজ প্রায় ১৮ বছর সৌদিতে থাকেন। বেশ কয়েকবার দেশে এসেছেন। তার স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদেরকেও ভ্রমণ ভিসায় কয়েকবার সৌদিতে নিয়েছেন। সর্বশেষ দুই সপ্তাহ পূর্বে দেশ থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের সৌদিতে নিয়েছেন। তারা এখন সৌদি আরবে আছেন।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি সময় ৪টায় সবুজসহ তিন জনের দুর্ঘটনার খবর পান। রাত ১০টায় সেখানে অবস্থানরত স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারেন দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
সবুজের মৃত্যুতে তার মা ও স্বজনরা শোকাহত। তার মৃত্যুতে ছেলের বউ ও নাতনিরা কেমন আছেন। তাদের কথা মনে করে কেঁদে উঠেন। আমি আমার ছেলেকে নিজ চোখে এবং একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই।
নিহত তিনটি পরিবারের দাবি, তাদের সন্তানের মরদেহ আনার বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যাতে সহযোগিতা করে।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা জানান, সৌদি আরবে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে আমাদের জানালে তাদের জন্য যেসব করণীয় আছে, তাদের সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।
বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।
প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।
কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।
কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।
সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আজ ৩০ মে বৃহস্পতিবার টোকিওতে জাইকা সদর দপ্তরে জাইকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কাওয়ামুরা কেনিচির সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নবীরুল ইসলাম এবং দূতাবাসের ইকনমিক মিনিস্টার সৈয়দ নাসির এরশাদ উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাতকালে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান সফরের মধ্য দিয়ে দুই বন্ধু প্রতীম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তি পায়। তিনি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন সময়ে জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০২৩ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ জাপান সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছে।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে জাইকার সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি ভূমিকম্প সহনশীল নগর অবকাঠামো উন্নয়নে জাপানি মডেলের কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের আবাসন খাত ও নগর উন্নয়নে জাপানের এ অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগাতে জাইকার সহায়তা কামনা করেন।
জাইকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কাওয়ামুরা কেনিচি জাইকার সদর দপ্তরে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পিকে স্বাগত জানান। তিনি নাগাসাকিতে শান্তি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ উদ্যোগ পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় দু’দেশের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি বাংলাদেশে জাইকার চলমান প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ দূতাবাস ও জাইকার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।