চলারপথে রিপোর্ট :
একটি প্রতারক চক্র মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন।
আজ ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে থানায় যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওসি উল্লেখ করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কতিপয় ব্যক্তি কম্পিউটার টাইপের মাধ্যমে ২০০-৩০০ বা তার অধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে মামলার অভিযোগ লিখে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেওয়া ও মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে টাকা- পয়সা আদায়সহ জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এ ধরণের অভিযোগ দেখে আতঙ্কিত হয়ে টাকা-পয়সা লেনদেন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান ওসি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, প্রতারক চক্র বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম লেখে টাকা-পয়সা নিচ্ছে বলে সূত্র থেকে জানা গেছে। থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হলে, মামলা রজু হলে প্রতি পাতায় স্বাক্ষর ও সীল থাকে। প্রতারকদের বিষয়ে তথ্য দিতে তিনি ওসি ও ডিউটি অফিসারের নম্বর ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জুড়ে দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভূয়া অভিযোগ/এজাহার প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রতারকদের বিষয়ে তথ্য দিতে যোগাযোগ ০১৩২০-১১৪৯৮১ (অফিসার ইনচার্জ, সদর মডেল থানা), ০১৩২০-১১৪৯৮৬ (ডিউটি অফিসার)। নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ আগষ্টের পর গত প্রায় ৩ মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দায়ের হওয়া বিভিন্ন মামলা নিয়ে বাণিজ্যের এই অভিযোগ আলোচিত। গত ২৮ অক্টোবর ৩৫০ জনের নামে একটি এবং ২৫ অক্টোবর ২৪০ জনের নামে আরো দুটি মামলা হয়। এসব মামলা রজু হওয়ার আগেই মানুষের মুখে মুখে চাউর ছিলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপুর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, তার স্ত্রী মাউশি’র সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুনসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউপির নন্দনপুর বিসিক রাস্তার সামনে সংঘর্ষের সময় কাউসার আহম্মেদ হত্যার ঘটনায় তার চাচা আকরাম হোসেন আদনান বাদী হয়ে আজ ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে এ মামলাটি দায়ের করেন। মৃত কাউসার আহম্মেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল পশ্চিমপাড়া এলাকার আলী আহম্মেদর ছেলে ছিলেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত মো. মোজাফফর হোসেন। মামলায় ১৯৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন খোকন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ ভূঁইয়া, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান রবিউল আলম, মাছিহাতা ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান আল-আমিন পাভেলসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১৯৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় আকরাম হোসেন আদনান অভিযোগ করেন, মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আন্দোলন কর্মসূচির সময় জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল হয় ও মিছিলে কাউসার আহম্মেদ অংশগ্রহন করে। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউপির নন্দনপুর বিসিক রাস্তার সামনে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোরা গুলি কাউসারের নাভিতে লেগে গুরুত্বর আহত হয়।
পরে কাউসার জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ মার্চ রাত সাড়ে ৮ দিকে মারা যায়। ওই সময় পুলিশ ও প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৫ জুন চতুর্থধাপে অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলা, বিজয়নগর উপজেলা ও নবীনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২০জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১২জন, বিএনপির ৩জন ও স্বতন্ত্র ৫জন রয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, বিজয়নগরে ৬জন এবং নবীনগর উপজেলায় ৯জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ লোকমান হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখনের অনুজ মোঃ হেলাল উদ্দিন, সৌদি আরবের রিয়াদস্থ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী সেলিম রেজা, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন ও স্বতন্ত্র আবদুল কারিম।
এছাড়াও সদর উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বিজয়নগর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেত্রী নাছিমা মুকাই আলী (নাছিমা লুৎফুর রহমান), উপজেলা বিএনপির সাবেক যুুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোঃ রফিকুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ আল জাবেদ।
অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলীর দেবর মোশাহেদ হোসেন ও বক্তিগত সহকারী হারুনুর রশিদ এবং যুবদল নেতা মোঃ আল জাবেদের ব্যক্তিগত সহকারী মুজিবুর রহমান।
এছাড়াও বিজয়নগর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নবীনগর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামীলীগের ৭ নেতা, বিএনপির ১ নেতা ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটো, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক অধ্যাপক নুরুন্নাহার বেগম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য এইচ.এম. আল আমিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান, নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহ আলম, বিএনপির সমর্থক ফারুক আহমেদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আবদুল মতিন।
এছাড়াও নবীনগর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, শিশু সমাবেশ, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিত্বে পুষ্পার্ঘ অর্পন, প্রতিবন্ধীদের মধ্যে চাল বিতরণ ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৭ মার্চ রবিবার সকাল ৯টায় স্থানীয় লোকনাথ উদ্যান (টেংকের পার) থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে এসে শেষ হয়।
পরে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাথন পৌর মুক্তমঞ্চে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন পুষ্পস্তক অর্পন করেন। পরে পুলিশের একটি চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
গার্ড অনারের পর মুক্তমঞ্চটি সকল শ্রেনী-পেশার মানুষের জন্য উম্মুক্ত করে দিলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ, জেলা আওয়ামীলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিট, এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, গণপূর্ত বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ, জেলা কারাগার, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষাথী ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পন করে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১০০ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের (প্রতিবন্ধী) মাঝে চাল বিতরণ করা হয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে চাল বিতরণ করেন। প্রত্যেক প্রতিবন্ধীকে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। চাল বিতরনের পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপারমোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবীর প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে মন্ত্রী জাতির জনকের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন।