চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পূর্বাঞ্চল সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় বিভিন্ন ব্রান্ডের এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, মাদক, ওষুধ, চশমা, চকলেট, থান কাপড়সহ একাধিক চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ২৫ বিজিবি। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। গতকাল ৩ নভেম্বর রোববার দুপুরে ২৫ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতেয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে সরাইল ২৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পূর্বাঞ্চলের আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলা সীমান্তে বিজিবি গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় ৩১ অক্টোবর রাত থেকে ২ নভেম্বর শনিবার সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
বিজিবি কর্তৃপক্ষ জানায়, অভিযানে ভারতীয় উন্নতমানের ব্লেজারের থান কাপড় ১২২৪ মিটার, ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার উন্নতমানের চশমা ৭৮৭০ পিস, ভারতীয় চকলেট ৩১৮০ পিস, বিভিন্ন ব্রান্ডের এন্ড্রয়েড মোবাইল ২৬টি, কুকুর ও বিড়ালের ওষুধ সামগ্রী ৩৬২ পিস, বিভিন্ন প্রকার প্রসাধনী সামগ্রী ৪৩ পিস, ইস্কফ ৪৩০ বোতল, মদ ৫৭ বোতল এবং ভারতীয় গাঁজা ১০ কেজি আটক করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত মাদকদ্রব্য এবং চোরাচালানি মালামালের সর্বমোট বাজার মূল্য ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।
ভারত থেকে আনা চোরাচালানি মালামাল জব্দ করা হলেও কোনো চোরাকারবারিকে আটক করতে পারেননি বিজিবি জওয়ানরা।
২৫ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতেয়াজ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তপথে যাতে চোরাচালানি মালামাল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) বদ্ধ পরিকর ও অবৈধ চোরাচালানি মালামাল আটকে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হরে বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ। ইতিমধ্যেই উদ্বোধনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আজ ২ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন রেলওয়ের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোঃ ইয়াছিন।
প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েলগেজ ডাবললাইন প্রকল্পের পরিচালক মোঃ সুবক্তগীনসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের প্রারম্ভিক স্টেশন আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্যাক কারে করে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শন শেষে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। খুব শীঘ্রই এটি উদ্বোধন হবে। কিছু কাজ যেগুলো বাকি আছে- তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে। রেলপথটি দিয়ে প্রথমে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এর মাধ্যমে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য আরো বাড়বে।
উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। রেলপথটির ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশ অংশে। প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়ন করছে ভারতের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের সাড়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা।
দেড় বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারীসহ নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে কয়েক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। এই রেলপথটি উত্তর-পূর্ব ভারতের সাথে সরাসরি যুক্ত করবে বাংলাদেশকে।
ইতিমধ্যেই প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের রেলপথে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ। এছাড়াও প্রকল্পের ১৬টি সেতু ও কালভার্টের সবকটিরই কাজ শেষ হয়েছে। আর ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৯৫ ভাগ।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলার আব্দুল্লাহপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে ফেরার সময় দুই বাংলাদেশি নাগরিক বিজিবি’র হাতে আটক হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে আটক ওই দুইজনকে আখাউড়া থানায় সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।
আটককৃতরা হলো, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার দক্ষিণ সিংহগ্রামের নগেন্দ্র ভৌমিকের ছেলে নরেন্দ্র ভৌমিক (৫০) ও নারায়ণ ভৌমিকের ছেলে বিশ্বজিৎ ভৌমিক (২৫)। প্রায় এক মাস আগে তারা হবিগঞ্জের মাধবপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিল।
বিজিবি থেকে পাওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানায় যায়, সীমান্তে দায়িত্বরত বিজিবি টহলরত অবস্থায় ওই দুজনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, আগরতলার লঙ্কামোড়া এলাকার সমীর নামে একজনকে ১২ হাজার ও আখাউড়ার আব্দুল্লাহপুরের শামস্ ভূঁইয়ার ছেলে মো. আরিফকে দুই হাজার টাকা দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে। এর আগে তারা চিকিৎসার জন্য অবৈধভাবে ভারতে যায়।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
আখাউড়া উপজেলায় জোর করে থানায় নেওয়ার সময় পুলিশের সামনে মৌসুমী আক্তার (২৫) নামে এক নারী বিষপান করেছেন। ২৩ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় নুরপুর গ্রামে মৌসুমির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও প্রতিবেশিরা ওই নারীকে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার পাকস্থলি পরিষ্কার করে সেখানকার চিকিৎসক তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠায়। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
মৌসুমী আক্তার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের আইয়ুব খানের মেয়ে।
তার মা শাহানা বেগম হাসপাতাল চত্বরে অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আখাউড়া থানার এএসআই আব্দুল আজিজ মহিলা পুলিশসহ ৮/১০ জন মিলে আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে ধরে থানায় নিয়ে যেতে চায়। আমার মেয়ে তখন তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চেয়ে বলে, আমাকে থানায় নেবেন কেন, আমি কী করেছি? আমার দুইটা ছেলে আছে, আমার স্বামী পাগল। আমি থানায় যাবো কেন? আজিজ দারোগা বলল ওসি সাহেব তোমাকে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে। এ সময় আমি পুলিশকে বলি, আমার মেয়ের হার্টে ব্লক আছে, তাকে নিয়েন না। দরকার হলে আমি থানায় যাব। এ সময় পুলিশ জোরাজোরি করে ধরে নিতে চাইলে আমার মেয়ে পুলিশের সামনে বিষ খেয়ে ফেলে। কিন্তু পুলিশের সামনে বিষপান করলেও কেউ তাকে আটকাতে আসেনি। পরে আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তিনি আরো অভিযোগ করেন, এর আগেও পুলিশ কয়েকবার আমাকে ধরে আনতে চেয়েছিল।
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক ওই নারীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ সময় আখাউড়া থানা পুলিশের ওসি আসাদুল ইসলামসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য উপস্থিত রয়েছেন। পরে রাত ৮টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় থানার এসআই আবু ছালেক সঙ্গে যান।
এ ব্যাপারে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. লুৎফুর রহমান বলেন, রোগীর প্রেসার অনেক কমে গিয়েছিল। স্টমাক ওয়াশ করে বিষ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়।
তবে, আখাউড়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আজিজকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
আখাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, কিছু মাদক উদ্ধার হয়েছিল। আমাদের কাছে তথ্য ছিল মাদকগুলো তাদের। এ প্রেক্ষিতে আমি পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট ছিল না। তার ঘরে কিছু পাওয়া যায়নি। আগে রোগীর চিকিৎসা হোক। তারপরে যদি তদন্তে এএসআই আজিজের কোনো অপরাধ থাকে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।