চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ৯ হাজার ৩৯৫ ইয়াবাসহ তাজুল ইসলাম নামে এক মাদক পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি। আজ ১৩ নভেম্বর বুধবার সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন ৬০ বিজিবির টহল দল মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী খারকুট এলাকা থেকে তাকে ইয়াবাসহ তাকে আটক করে। আটক তাজুল ইসলাম মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা।
বিকেলে ৬০ বিজিবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। এর আগে মামলা দায়ের করে থানায় সোপর্দ করে বিজিবি। এসময় একটি সিএনজি আটক করা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে মাদক বিরোধী অভিযানে উপজেলার ভারত সীমান্ত পিলার ২০২৫/২৫-এস থেকে আনুমানিক ৬০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে খারকোট এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি সিএনজি তল্লাশি করে ৯ হাজার ৩৯৫ ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়।
সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন ৬০ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল এ এম জাবের বিন জব্বার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশের সরকারি কর্তব্য কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরনের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় আখাউড়ায় বিএনপি-জামাতের ১৯ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। ২৮ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে আখাউড়া পৌরশহরের নারায়ণপুর বাইপাস তিন রাস্তার মোড়ে পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা ও বিস্ফোরণের অভিযোগে ২৯ অক্টোবর উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোবারক আলী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আটককৃতদের মধ্যে ১৭ জন বিএনপির নেতাকর্মী এবং ২ জন জামাতের। তবে, উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দাবি, আন্দোলন দমনে মিথ্যা মামলায় তাদের নেতাকর্মীদের আটক করছে পুলিশ।
গত ১৬ দিনে পুলিশের অভিযানে আটককৃতরা হলো উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান খান সানি (৩২), উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম রানা (৫০), উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মোঃ আমজাদ খান (৫০), উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মোবারক হোসেন (৩১), উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ লুৎফুর রহমান ভূইয়া (৪৫), মনিয়ন্দ ইউনিয়ন বিএনপির য্গ্মু সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজিবুর চৌধুরী (৫৪), মনিয়ন্দ প্রবাসী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাবিব সরকার (২৯), উপজেলা যুবদলের সদস্য শেখ সুমন (৪২) দরখার ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আতিকুর রহমান মানিক (৫০), ধরখার ইউনিয়ন যুবদলের সহ সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম খন্দকার (৩৭, মোগড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ (৪০), উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য মোঃ আলমগীর মিয়া (৪৬), মোগড়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি মোঃ ইয়াছিন মিয়া (৪০), বিএনপির কর্মী মোঃ কাউছার (১৯), বিএনপি কর্মী মোঃ ইকবাল (৫০), মনিয়ন্দ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রতন মিয়া (৫৪) জেলা স্বেচ্ছা সেবক দলের সদস্য মোঃ আসাদুল ইসলাম আশিক (৪৭) উপজেরা জামাতের শ্রমিক কল্যাণ সংগঠনের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আল আনসারী (৫৫), জামাতের কর্মী মোঃ রতন (৪৫)।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, যে তারিখ ও সময়ে যে ঘটনার কথা উল্লেখ করে পুলিশ মামলা করেছে। প্রকৃতপক্ষে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। বিএনপির নেতাকর্মীকে আটক করার জন্য মিথ্যাা মামলা দিয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সামনে নির্বাচন, গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীকে দূরে রাখার জন্য এ মামলা করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, তারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। ঘটনাস্থলে পুলিশের উপর হামলা করে। সরকারি কাজে বাধা দেয়।
উল্লেখ্য, পুলিশের সরকারি কর্তব্য কাজে বাধা, পুলিশের উপর আক্রমণ, ও ককটেল বিস্ফোরনের দায়ে আখাউড়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোবারক আলী বাদী হয়ে ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছে। মামলায় অজ্ঞাতানামা আরো শতাধিক লোককে আসামী করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলায় বিজিবি’র পৃথক অভিযানে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য উদ্ধার হয়েছে। ২৫ অক্টোবর শুক্রবার রাতে আখাউড়ার বাউতলা সীমান্ত ও বিজয়নগরের চান্দুরা এলাকায় বিজিবি-২৫ ও বিজিবি-৬০ ব্যাটালিয়ন এ অভিযানচালায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রাত ১০টার দিকে বাউতলা এলাকায় বিজিবি’র ৬০ ব্যাটালিয়নের অভিযানে ৫২৬০ পিস ভারতীয় অবৈধ মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে জব্দ করা হয়। এসব ডিসপ্লে’র আনুমানিক মূল্য দুই কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ২৫ ব্যাটালিয়নের অভিযানে রাত একটার দিকে চান্দুরা এলাকায় অভিযানে ৪৫০ কেজি জিরা, ৯৪২ মিটার সোফা ও কুশন কাভারের কাপড়, ১২ হাজার ৮৪৭ পিস বিভিন্ন ওষুধ, ছয় হাজার ৬৩৮ পিস সানগ্লাস, ২৮পিস শাড়ি, এক ৭৪৩ পিস ডগ ফুড, ২৩ হাজার ৫২০ পিস প্রসাধনী। এসব পণ্যের আনুমানিক মূল্য দুই কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার ৭৪০ টাকা। এসব পণ্য আখাউড়া কাস্টমসে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে বিজিবি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে খাতা-কলম বিতরণ করেছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতিনিধিরা। আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার এসব শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। দুইটি বিদ্যালয়ের মোট ১০০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে এসব খাতা কলম দেওয়া হয়। বিডি অ্যানিমেল হেলথ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী ইনামুল হক এ কাজে সহায়তা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। পরে রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খাতা-কলম দেওয়া হয়।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া পৌরসভার কাউন্সিলর শিপন হায়দার, উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক দীপক কুমার ঘোষ, যায়যায়দিনের সাংবাদিক কাজী হান্নান খাদেম, নয়াদিগন্তের মো. নুরুন্নবী ভূঁইয়া, আনন্দ বাজারের কাজী মফিকুল ইসলাম, খবরের কাগজের জুটন বনিক, সাবেক ছাত্রনেতা মো. মনির হোসেন, প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু এই আয়োজনের সমন্বয় করেন।
এ সময় জানানো হয়, বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগটি অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী অতিথি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ কাজের প্রশংসা করে বলেন, বন্যার সময় শিক্ষার্থীদের বই খাতা পানিতে নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের ক্ষতির কথা কারোর মাথায় ছিল না। বসুন্ধরা শুভসংঘের এই ধরনের চিন্তাটা খুবই সৃজনশীল। এতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উপকার হলো। আব্দুল্লাহপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শাহীন ও সুলতানা তাহমিনা এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। প্রশংসা করেছেন রহিমপুরের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম। বন্যার্ত শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করায় তারা বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে স্থলপথে বাংলাদেশের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর। ভারতে পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি যাত্রী পারাপারও হয়ে থাকে এ বন্দর দিয়ে। ধীরে ধীরে যাত্রীদের কাছে পছন্দের রুট হয়ে উঠছে আখাউড়া স্থলবন্দর। ফলে যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়ছে। তবে যাত্রীর সঙ্গে রাজস্বের পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা মিলছে না আখাউড়া স্থলবন্দরে। আন্তর্জাতিক এই স্থলপথের যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্য রপ্তানি বাণিজ্য চলছে। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক গুরুত্ব বাড়ায় ২০০৮ সালে স্থল শুল্ক স্টেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে আখাউড়া স্থলবন্দর। বর্তমানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকার বরফায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, পাথর, তুলা, প্লাস্টিক ও কাঠের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। রপ্তানিকৃত পণ্য ত্রিপুরা থেকে সরবরাহ করা হয় উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতেও।
পণ্য রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি সরকার যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদও বিপুল রাজস্ব পায় আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে। চিকিৎসা ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন আটশ থেকে এক হাজার যাত্রী আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত গমন করে থাকেন। বিভিন্ন উৎসবের সময় এই সংখ্যা প্রায় তিনগুণ হয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দর পার হলেই আগরতলা শহর। সেখান থেকে মাত্র মিনিট বিশেকের পথ পাড়ি দিলেই আগরতলা বিমানবন্দর। এছাড়া রেলস্টেশনও শহরের কাছাকাছি। এর ফলে আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করে বাংলাদেশি যাত্রীরা সহজে কলকাতা, গৌহাটি, দিল্লি, চেন্নাই, জয়পুর, গ্যাংটক ও শিলংসহ দেশটির পর্যটন শহরগুলোতে যাতায়াত করতে পারেন। এতে খরচও সাশ্রয় হয়। মূলত এসব কারণেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার বাড়ছে। এছাড়া আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেনের জাতীয় মহাসড়কের কাজ শেষ হলে আখাউড়া স্থলবন্দর যাত্রী পাপারের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম রুট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন দুই লাখ ৫৭ হাজারের কিছু বেশি যাত্রী। এ সময় যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকার রাজস্ব পেয়েছে প্রায় আট কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩ হাজার। সরকার রাজস্ব পেয়েছে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকার কিছু বেশি। বিগত অর্থবছরে যাত্রীর ভ্রমণ কর পাঁচ শ টাকা থাকলেও চলতি অর্থবছর থেকে তা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। ভারতীয় যাত্রীরা বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্যও এই কর দিতে হয়। তবে বন্দরে কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
জরাজীর্ণ কাস্টমস ভবনের ছোট্ট এক কক্ষে কাস্টমসের কাজ শেষ করে যাত্রীদের আরেক ভবনে যেতে হয় ব্যাগেজ স্ক্যানিংয়ের জন্য। এরপর সেখান থেকে বিজিবি চৌকি পার হয়ে যেতে হয় ইমিগ্রেশন ভবনে। রুগ্ণ ইমিগ্রেশন ভবনটিও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে আরও কয়েক বছর আগেই। তবুও ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের কাজ করা হয়।
ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনের বেশির ভাগ অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত জায়গা না পেয়ে ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী আবুল কাশেম জানান, ঢাকা থেকে ভারতের সব শহরে ফ্লাইট সুবিধা নেই। এছাড়া ঢাকা থেকে ফ্লাইটে খরচও বেশি। এক্ষেত্রে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলা থেকে আকাশপথে ভারতের বিভিন্ন শহরে সহজেই যাতায়াত করা যায়। এতে সময় যেমন বাঁচে, তেমনি খরচও লাগে কম। ফলে আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করেন তিনি। তবে আগরতলা স্থলবন্দরের তুলনায় আখাউড়া স্থলবন্দরে যাত্রীদের জন্য তেমন কোনো সেবা নেই।
ফজলে রাব্বি নামে আরেক যাত্রী জানান, ট্রলি সুবিধা না থাকায় যাত্রীদের লাগেজ বহনে সমস্যা হয়। এছাড়া ইমিগ্রেশন ভবনে যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নেই। এতে করে নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অথচ আগরতলা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এবং ব্যাগেজ স্ক্যানিং সুবিধা মিলে একই ছাদের নিচে। সেখানে যাত্রীদের জন্য আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী মাহাবুবুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনে একসঙ্গে অনেক যাত্রী বসার সুবিধা নেই। ফলে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে গরমের সময় ভোগান্তি বাড়ে। এছাড়া বৃষ্টি হলে জমে হাঁটুপানি। এসব সমস্যা নিরসন করলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার আরও বাড়বে এবং সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে বলে জানান তিনি।
যাত্রী দুর্ভোগ কমানোর পাশাপাশি যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আখাউড়া স্থলবন্দরে আধুনিক ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্টরা। ২০১৬ সালে পুরাতন ইমিগ্রেশন ভবনের পাশে শুরু হয় ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন জটিলতায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তিতে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভবনের নকশা পরিবর্তন এবং দুইতলা ভবন নির্মাণের শর্তে নির্মাণকাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু একতলা করার পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আবারও বাধা আসে বিএসএফের তরফ থেকে। ফলে এখনো বন্ধ রয়েছে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা নিজেরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনটি হয়ে গেলে যাত্রীরা এক ছাদের নিচেই সব ধরনের সেবা পাবেন। তখন আর দুর্ভোগ থাকবে না। তবে সীমান্ত আইন জটিলতায় ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজটি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ ফের শুরু হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় চার হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মোঃ রুবেল ভূইয়া (২৮) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার তুলাই শিমুল গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত রুবেল ভূইয়া উপজেলার মিনারকোট গ্রামের লিটন ভূঁইয়ার ছেলে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সকাল নয়টার দিকে তুলাই শিমুল গ্রামের রাস্তা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে চার হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত রুবেল ভূইয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আগেও তিনটি মাদকের মামলা রয়েছে।