চারপথে রিপোর্ট :
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনোভাবেই প্রয়োজনীয় সময়ের একদিনও বেশি ক্ষমতায় থাকবে না।
তিনি জানান, এই সরকার ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে গঠিত এবং আমাদের দায়িত্ব হলো এমন পরিবেশ তৈরি করা যাতে জনগণের নির্বাচিত সরকার গঠন হতে পারে।
আজ ১৭ নভেম্বর রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে আয়োজিত আন্তঃস্কুল বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন এবং উন্নয়ন সংস্থা এআরডির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী এই মেলায় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবিত প্রকল্পগুলো প্রদর্শন করে।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘আমরা সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ই নিচ্ছি। সংস্কারের কাজে কোনো ধরনের বিলম্ব হবে না। তবে, এই সময়টা কেউ যদি বেশি মনে করে, তা হলে সেটা তাদের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করছে। আমরা একদম চাই না, আমাদের সময়ের একদিনও বেশি থাকুক। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের রিপোর্ট পাওয়া যাবে এবং তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর যে নতুন বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে, তা যেন পূর্বের অনাচার, দুর্নীতি ও অত্যাচারের দিকে ফিরে না যায়। আমরা পুরোপুরি সবকিছু ঠিক করতে পারব না, তবে যদি সঠিকভাবে নির্বাচিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান এবং এআইইউবির অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম। মেলার উদ্বোধনের পর ফরিদা আখতার অতিথিদের সঙ্গে স্টলগুলো পরিদর্শন করেন। মেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ক্লাব অংশগ্রহণ করে, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রকল্প প্রদর্শন করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করায় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সফলভাবে নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক শক্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।
আজ ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণের শুরুতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের রায় মেনে নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।
তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্ত-স্নিগ্ধ যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের গণতন্ত্র বিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে জনগণকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখলেও ভোটারদের ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সব পদক্ষেপ সার্থক হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। আমি আশা করি— ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে। সরকারও এক্ষেত্রে সংযত আচরণ করবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের বর্বর হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক অধ্যায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী দেশে যে নৃশংস সহিংসতা হয়েছিল তা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এর মাধ্যমে আমাদের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনসহ পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি।
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের নিষ্কণ্টক পথচলার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো উদার ও গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াবে এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।
অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ ১১ মে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সভায় এ তথ্য জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, এই ৬৫ দিন দেশি-বিদেশি মৎস্য আহরণকারীদের অবৈধ মৎস্য আহরণ যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৪টি জেলার ৬৭টি উপজেলা এবং চট্টগ্রাম মহানগরে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধের এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে। কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য ৩ লাখ ১১ হাজার ৬২ জেলের জন্য প্রথম ধাপে ১৭ হাজার ৪১৯ টন ভিজিএফের চাল এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সরকার উপকরণ সহায়তা দেবে।
মন্ত্রী বলেন, মাছকে বেড়ে উঠতে দেওয়া এবং অবৈধ আহরণ বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। কাউকে আইনের বাইরে কিছু করতে দেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে যে কোনো চাপ মোকাবিলা করা হবে। দায়িত্ব পালনে কোনো শৈথিল্য দেখা গেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন নৌবাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি, নৌ পুলিশের ডিআইজি, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বেশ কয়েকজন বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মেরিন হোয়াইট ফিশ ট্রলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী বোট মালিক সমিতি, বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন ও জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উম্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা বালু অপসারণ কাজ শুরু হয়েছে। আজ ১৬ মে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেনের উপস্থিতিতে বালু অপসারণ কাজ শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত জলাশয় থেকে প্রায় ৫০ ট্রাক্টর বালু অপসারণ করা হয়।
এ সময় নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলমসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৮ মে সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়হরন লেবেল ক্রসিং এলাকায় রেলওয়ে জলাশয় অবৈধভাবে বালু ফেলে ভরাটের দায়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে একটি ভেকুসহ জলাশয়ে ফেলা প্রায় ১৫ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেন। পরে তিনি চার কার্যদিবসের মধ্যে উম্মুক্ত নিলাম ডেকে বালু বিক্রির জন্য নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমকে নির্দেশ দেন।
এসিল্যান্ডের নির্দেশে গত ১০ মে বুধবার বিকেলে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে উম্মুক্ত নিলাম আহবান করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম।
সে সময় এসিল্যান্ড মোঃ মোশারফ হোসেনের উপস্থিতিতে নিলামে বড়হরণ গ্রামের মোঃ মাঈনুদ্দিন নামে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ মূল্য ৮১ হাজার টাকায় জব্দ করা বালু কিনে নেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে নিলাম ডাকা মোঃ মাঈনুদ্দিন কয়েকটি ট্রাক্টর দিয়ে বালু অপসারনের কাজ শুরু করেন।
সদর উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় লোকজন ও নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, বড়হরণ এলাকায় রেলের জলাশয় বালু ফেলে ভরাট করে ফেলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গত ৭ মে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার বড়হরণ লেবেল ক্রসিং এলাকায় মানববন্ধন করে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।
পরদিন দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ঘটনাস্থল থেকে একটি ভেকুসহ জলাশয়ে ফেলা প্রায় ১৫ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেন।
এ ব্যাপারে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, রেলওয়ের জলাশয়ে অবৈধভাবে ফেলা বালু ৮১হাজার টাকায় উম্মুক্ত নিলামে বিক্রির পর মঙ্গলবার থেকে এই বালু অপসারণ কাজ শুরু হয়।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, উম্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা বালু মঙ্গলবার সকাল থেকে অপসারণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সারাদিনে প্রায় ৫০ ট্রাক্টর বালু অপসারণ করা হয়। কয়েকদিনর মধ্যেই জলাশয়ে ফেলা বালু অপসারণ করা শেষ হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীর আনন্দ মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি করে আশরাফুল ইসলাম ইজাজ ওরফে আয়াশ আহমেদ ইজাজ (২৩) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে খুনের ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান আল ফারাবী ওরফে জয়কে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার পর গত বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠনের শৃংখলা ও মর্যাদা পরিপন্থী এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে হাসান আল ফারাবী ওরফে জয়কে (সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা) কে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়।
নিহত আশরাফুল ইসলাম ইজাজ কলেজপাড়ার আমিনুল ইসলামের ছেলে। ইজাজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও জেলা ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী।
গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পৌর এলাকার কলেজপাড়া খান টাওয়ারের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে আজ ৬ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ইজাজের লাশ ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে পৌছেনি।
পুলিশ জানায়, দুপুরে ইজাজের লাশ নিয়ে তার স্বজনরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে রওয়ানা হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে ইজাজের হত্যা ঘটনায় এখনো থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অভিযুক্ত হাসান আল ফারাবী ওরফে জয়কে গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার করা হয়নি হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রও।
ঘটনার পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে দেখা যায় ঘটনার পর ছাত্রলীগ নেতা ফারাবী তার হাতে থাকা পিস্তল কোমড়ে নিয়ে সরে যাচ্ছেন। ইজাজকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয় বলে ওই ভিডিওতে ধারণা পাওয়া যায়।
স্থানীয় সূত্র ও জেলা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান আল ফারাবী ওরফে জয়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই ইজাজের বিরোধ চলে আসছিলো।
গত বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট চলাকালে ভোট কেন্দ্রে জয় ও ইজাজের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যায় শহরের মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বিজয়ী হওয়ার খবর পেয়ে তার সমর্থকরা আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি কলেজপাড়া এলাকার খান টাওয়ারের সামনে পৌছলে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান আল ফারাবী ওরফে জয় মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে আশরাফুল ইসলাম ইজাজ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
পরে মিছিলে থাকা তার সহপাঠীরা দ্রুত ইজাজকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন।
পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকগণও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা নেয়ার পথে সে পথিমধ্যেই মারা যায়।
নিহতের মামাতো ভাই জুনায়েদ চৌধুরী জানান, কলেজপাড়ার বাসিন্দা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জালাল হোসেন খোকার অনুসারী ছিলো জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান আল ফারাবী ওরফে জয়। সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল চলাকালে খোকার নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল নিয়ে এসে হাসান আল ফারাবী ওরফে জয় প্রকাশ্যে গুলি করে পালিয়ে যায়।
নিহতের চাচা আনিসুর রহমান বলেন, হাসান আল ফারাবী ওরফে জয় প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে ইজাজের মাথায় বামদিক দিয়ে গুলি করে। তখন ইজাজ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। জালাল হোসেন খোকার নির্দেশে জয় ইজাজকে গুলি করেছে।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আরিফুজ্জামান বলেন, ইজাজের মাথার বাম পাশের কানের উপরে মারাত্মক একটি ক্ষত রয়েছে। তার সাথে আসা বন্ধুরা জানিয়েছেন ইজাজের গুলি লেগেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, নিহত ইজাজ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলো। সে আমার নির্বাচন করেছে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে আনন্দ মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসাইন বলেন, ইজাজ হত্যা ঘটনায় এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি। তার লাশ ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনা হচ্ছে। ঘাতক জয়কে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন তল্লাশী চৌকি বসিয়েছে। এখনো তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঘূর্ণিঝড়, বন্যাসহ দেশের দুর্যোগে মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রম প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারণায় অবদান রাখায় বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মো: মানসুরুল হক।
‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস, ২০২৪ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে তাকে উক্ত সম্মাননা প্রদান করা হয়।
জাতিসংঘের ডি আর আর ফেলো- মো: মানসুরুল হক মডেলিং, নাট্যাভিনয় সহ উপস্থাপনার মাধ্যমে মিডিয়া জগতে পরিচিত হলেও মূলত তিনি দেশের প্রথম স্যাটেলাইট চ্যানেল এটিএন বাংলায় প্রচারিত ‘উন্নয়নে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার মাধ্যমেই দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেন।
এছাড়া মানসুরুল হকের পরিকল্পনা ও উপস্থাপনায় চ্যানেল আই- তে ‘দুর্যোগ কথা’ -ও আরটিভিতে ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে নিয়মিতভাবে। সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে কর্মরত মানসুর সাম্প্রতিক সময়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, তার পিতা মোঃ জহিরুল হক ছিলেন বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট এসোসিয়েশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। তারই সুযোগ্য উত্তরসূরী মোঃ মানসুরুল হক কর্মজীবনে একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার হাস্যোজ্জ্বল প্রাণবন্ত ব্যক্তিত্ব ও মানবিক কার্যক্রমের জন্যও তিনি সুপরিচিত। একজন উপদেষ্টা হিসেবে ড্রিম ফর ডিসএবিলিটি ফাউন্ডেশনের সাথে সম্পৃক্ত মানসুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন। দেশের কল্যাণে আজীবন কাজ করে যাওয়া তার অন্যতম স্বপ্ন ও লক্ষ্য।