ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

আশুগঞ্জ, 17 November 2024, 284 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় (২৪) ও পঞ্চান্ন রায় (২৪) নামে দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

banner

আজ ১৭ নভেম্বর রোববার সকাল ৭টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত গোপাল রায় সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার বনগ্রাম গ্রামের মুদ্ধতেশ্বর রায়ের ছেলে ও পঞ্চান্ন রায় একই গ্রামের হারা কুমার রায়ের ছেলে। আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ মিডিয়া উইংস থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদেও ভিত্তিতে সকালে আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি মিনি পিকআপভ্যান আটক করা হয়। পরে পিকআপভ্যানে তল্লাশী চালিয়ে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

সেচ বন্ধে ক্ষতির মুখে ৫০ হাজার কৃষক

আশুগঞ্জ, 1 March 2024, 619 Views,

আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন প্রকল্প

চলারপথে রিপোর্ট :
মেয়াদ শেষে নতুন প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় প্রায় তিন বছর বন্ধ সেচ কার্যক্রম। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ ও নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ৫০ সহস্রাধিক কৃষক বাড়তি সেচ খরচ মেটাতে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন প্রকল্পের আওতায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদ। প্রতি মৌসুমে প্রায় ৭০ হাজার টন ধান উৎপাদন কম হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রকল্প প্রস্তাবনা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন দ্রুত না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।

banner

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বলছে, কিছু সংশোধন, সরেজমিন যাচাইসহ সেচ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ও টেকসই প্রকল্প প্রস্তাবনা চূড়ান্তের কাজ শেষ পর্যায়ে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই বাস্তবায়ন শুরু হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন ইউনিটের টারবাইন ঠান্ডা রাখতে মেঘনা নদীর বিপুল পরিমাণ পানি লাগে। পরে এই বর্জ্য পানি একটি আউটার চ্যানেল দিয়ে পুনরায় নদীতে ফেলা হয়। ১৯৭৫ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি হেড রেগুলেটর নির্মিত হলে পানির গতিপথ আংশিক পরিবর্তন করে তা পার্শ্ববর্তী জমির সেচ হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। এটিই ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছরে বিএডিসির অধীনে ‘আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প’ নামে সেচ কার্যক্রম শুরু করে। একই সময় নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় এ ধরনের প্রকল্প গড়ে ওঠে। পরে ১৯৯০-৯৫ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দুটিকে একীভূত করে যাত্রা শুরু হয় ‘আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন প্রকল্প’, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ৩০ জুন।

কৃষকরা জানায়, গভীর কিংবা অগভীর নলকূপ থেকে ভূগর্ভস্থ পানি সেচকাজে ব্যবহার করলে একরপ্রতি তাদের জ্বালানি খরচসহ লাগে ৮-১০ হাজার টাকা। বিপরীতে প্রকল্পের পানিতে একরে সেচ খরচ ২ হাজার টাকার মতো। কৃষি বিভাগের হিসাবে প্রকল্পের অধীনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ, সরাইল, সদর ও নবীনগর উপজেলার প্রায় ৩৪ হাজার এবং পলাশের ১৬ হাজার কৃষক এর সুবিধাভোগী। তারা নামমাত্র খরচে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা পেয়ে আসছিল। ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ যেমন কমত, তেমনি গড়ে ৭০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় হতো। কৃষকরা প্রতি বোরো মৌসুমে আশুগঞ্জ অংশে প্রায় ৭০ হাজার টন ধান উৎপাদন করে আসছিল, যা এখন একেবারে বন্ধের পথে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পুকুর আংশিক ভরাট ও পরে ২০২০ সালে আশুগঞ্জ নৌবন্দর-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ক চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়নে সেচ প্রকল্পের প্রায় ১১ কিলোমিটার ড্রেন ও খাল ধ্বংস হয়ে যায়। এর পরই সেচ ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে। এক পর্যায়ে ‘আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে স্থানীয় কৃষকরা আন্দোলনে নামলে বিএডিসির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব পায়। ২০১৯ সালের আগস্টে বিএডিসি, সওজ ও সিইজিআইএস যৌথ জরিপ শেষে সেচ সুবিধা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয় ও বিএডিসির কাছে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব দেয়। ২০২০ সালের ১৭ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রকল্পটি সচলে যেসব সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়, তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। পাশাপাশি বিএডিসি সেচ ব্যবস্থা সচল রাখতে প্রায় ৪৭০ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়। কিন্তু সেটি সাড়ে তিন বছরেও অনুমোদন পায়নি।

সেচ সুবিধাভোগী কৃষক রশিদ আহম্মদ, সেলিম মিয়া, দুলাল মিয়া ও স্কিম ম্যানেজার মো. বাছির জানান, সেচ বন্ধ থাকায় তিন বছর ধরে তাদের শত শত একর জমি অনাবাদী। অনেকে গভীর-অগভীর নলকূপের মাধ্যমে আবাদ করলেও খরচ পড়ছে কয়েক গুণ। প্রকল্পটি দ্রুত চালু না হলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন বলে জানান তারা।

আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শাহীন সিকদার বলেন, ‘এটি ব্যতিক্রমী সেচ প্রকল্প। দেশের কোথাও এতো কম খরচে সেচ সুবিধা নেই। প্রকল্প চালু থাকলে প্রতি মৌসুমে অন্তত ২৫ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারে এ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’

বিএডিসির উপপ্রধান প্রকৌশলী ও আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের ফোকাল পারসন মোহাম্মদ ওবায়েদ হোসেন বলেন, ‘পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত প্রকল্পের কিছু বিষয় যাচাই-বাছাই করছে। শীঘ্রই প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া সম্ভব হবে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে কাজ শুরু করব।’

ভোটের মাঠে সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান

আশুগঞ্জ, সরাইল, 2 December 2023, 1281 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ভোটের মাঠে নেমেছেন ধানের শীষ প্রতীকের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান। তাঁরা হলেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান।

banner

মাইনুল হাসান গত বৃহস্পতিবার সরাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় সহস্রাধিক অনুসারী-সমর্থক মোটর শোভাযাত্রাসহ উপজেলা সদরে প্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সরাইল সদর ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া। আবুল হাসানাতের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা সদরের দুই বাসিন্দা; যারা আবুল হাসানাতে প্রার্থিতার প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী হয়েছেন। ধানের শীষের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই পুত্র বর্তমানে নিজ দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করতে চান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান আলম। এখানে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মোট ১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আবুল হাসানাত আমিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের আমিনপুরের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার লালবাগে। তিনি আগে ভোটার ছিলেন আমিনপুরের। তবে ২০১৫ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করে সরাইল উপজেলা সদরের হালুয়াপাড়ার বাসিন্দা হয়েছেন। তবে এখানে তাঁকে দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

সদ্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরবেষ্টিত পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দলত্যাগের আগপর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। ছয়বারের মধ্যে চারবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। পরে সাত্তার টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী হন।

অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুফতি ফজলুল হক আমিনী ৪৩ হাজার ২৬১ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমকে পরাজিত করে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি একাধিকবার এ আসন থেকে বটগাছ এবং ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জাপার জিয়াউল হক মৃধার লাঙ্গল প্রতীকের কাছে ৪৯ হাজার ৩৯৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুর পর ৫ নভেম্বর আবারও উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধাকে ২৪ হাজার ৪৬৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপজেলায় ইসলামী ঐক্যজোটের অবস্থান এখন খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এলাকার কওমি মাদ্রাসাপন্থী লোকজন একসময় মুফতি ফজলুল হক আমিনীর অনুসারী ছিলেন। তাঁরাও এখন দুটি ধারায় বিভক্ত। বড় অংশটি বর্তমান নির্বাচন বিরোধী। এ কারণে এখানে ভোটার টানতে হাসানাত আমিনীকে বেগ পেতে হবে।

ইসলামী ঐক্যজোটের সরাইল উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড় না দিলে এখানে আমাদের পক্ষে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা আমাদের তুলে নেবেন (জয়ী করবে) বলেছেন।’ তিনি বলেন, সরাইল উপজেলায় ছোট-বড় সাড়ে তিন শতাধিক কওমি মাদ্রাসা আছে। তিনি দাবি করেন, অধিকাংশ মাদ্রাসার লোকজন তাঁদের পক্ষে আছেন।

তবে ইসলামী ঐক্যজোটের পুরোনো কমিটির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের ৯০ শতাংশ এ নির্বাচনের বিরোধী। তাই এ নির্বাচনে ইসলামী কোনো দলই ভোট টানতে পারবে না।

বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন একসময় ধানের শীষের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। যার কারণে ছয়বার সংসদ সদস্য হন বিএনপি নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাঁর দল ত্যাগের পর ধানের শীষের সমর্থকেরা সাত্তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে উপজেলার প্রত্যন্ত পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নে এখনো সাত্তার ভক্তের সংখ্যা কম নয়। তাঁরা এখন মাইনুলের অনুসারী। এ কারণে এ দুটি ইউনিয়নে শক্ত ঘাঁটি হতে পারে মাইনুল হাসানের। আবার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের সাবেক দু-একজন নেতা-কর্মীকে মাইনুলের পক্ষে দেখা যায়।

মাইনুল হাসান বলেন, ‘আমি তৃণমূল বিএনপির প্রাথমিক সদস্য। আমাদের দলের জেলা বা উপজেলা কমিটি নেই। তবে আমার আব্বু এখানে ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর অনুসারীরা আমার পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া আমার এলাকার দু-তিনটি ইউনিয়ন আছে, যেখানে আমি একচেটিয়া ভোট পাব।’ তিনি দাবি করেন, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। বিএনপির প্রকৃত কর্মীরা বলছেন, তাঁরা উকিল সাত্তারের পরিবারে পাশে থাকবেন। তিনি আশা করছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।

সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতা-কর্মী এ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। এমনকি আমাদের কোনো ভোটারও ভোট দিতে যাবে না। যাঁরা এখন তৃণমূলে যাচ্ছেন, তাঁরা বহিষ্কৃত।’

টার্মিনালটি নির্মিত হলে নৌপথে বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে : উপদেষ্টা

আশুগঞ্জ, জাতীয়, 11 November 2024, 610 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার অব. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, কার্গো টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে হাব হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। আগে এটি পরিপূর্ণ বন্দর ছিল না। টার্মিনালটি নির্মিত হলে নৌপথে বাণিজ্যের আরো প্রসার ঘটবে। এখানে সাইলোসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠান আছে। এটি বাংলাদেশের একটি হাব। আজ ১১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে কার্গো টার্মিনালের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

banner

বিগ্রেডিয়ার অব. এম শাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নৌবন্দরে নতুন কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ করছে বিআইডব্লিউটিএ। নতুন এই টার্মিনালে ৩টি জেটি ও স্টোরেজ সেডসহ বিভিন্ন অবকাঠামো রয়েছে। আগামী বছর প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি বলেন, অনেকদিন থেকেই আশুগঞ্জে কার্গো টার্মিনাল করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা হচ্ছিল। আরেকটি বিষয় হলো বিশ্বব্যাংক যখন অর্থায়ন করে, তখন তারা না দেখে করে না। তারা যদি মনে করে এটা লাভজনক, তখনই তারা অর্থায়ন করে।

আশুগঞ্জ নৌবন্দরে কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করেন নৌ উপদেষ্টা।

এ সময় উপদেষ্টার সাথে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ মোস্তফা, আশুগঞ্জ কার্গো টার্মিনাল প্রকল্পের পরিচালক আইয়ূব আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোঃ জাবেদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হাত হারানো শিশু নাঈমকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

আশুগঞ্জ, জাতীয়, 31 January 2024, 1262 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার ১৩ বছর বয়সি শিশু নাঈম হাসান নাহিদকে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

banner

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেয়।

রায়ে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট করতে হবে। ১০ বছর পর নাঈম হাসান নাহিদ ডিপোজিটের টাকা তুলতে পারবে।

রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়, শিশুটি এইচএসসি পাশ না করা পর্যন্ত তাকে প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে দিতে বলা হয়েছে। ভৈরবের নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিককে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও অ্যাডভোকেট মো. বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তামজিদ হাসান। তারা বিনা পয়সায় শিশুটির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন বলে জানান।

২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকার নুর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় শিশু নাঈমের ডান হাত মেশিনে ঢুকে যায়। এরপর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় তার হাত।

নাঈমের পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার দিন ওয়ার্কশপের ম্যানেজার রাজু আহমেদ তার ছেলেকে জোর করে মেশিন চালাতে দিলে এমন দুর্ঘটনা ঘটে।

২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর নাঈমের বাবা দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেন। এরপর চলতি বছরের গত ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট নাঈমের এক হাত হারানোর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে রুল জারি করে আদেশ দেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন গ্রেফতার

আশুগঞ্জ, 19 October 2024, 337 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আশুগঞ্জে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা হাজী আক্তার হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ১৯ অক্টোবর শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের মৈশার গ্রাম থেকে আশুগঞ্জ থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আক্তার হোসেন ওই গ্রামের মৃত সৈয়দ হোসেনের ছেলে। তিনি তালশহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।

banner

আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, আটক আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।

উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আশুগঞ্জ গোল চত্বর এলাকায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওইদিন বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। পরে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর আহতরা বাদী হয়ে বিষ্ফোরক আইনে ৫টি পৃথক মামলা দায়ের করে। আক্তার হোসেন এসব মামলার এজাহারভূক্ত আসামী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাকে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছিল।