চলারপথে রিপোর্ট :
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহত ও শহীদদের স্মরণে নাসিরনগরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনা নাছরিনের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রবিউস সারোয়ারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিজিৎ রায়, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাসান জামিল খান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাখেশ পাল, উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মুফতি মুখলেছুর রহমান, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আকতার হোসেন ভূইয়া, ছাত্র প্রতিনিধি মোঃ সাইফুজ্জামান জনি, খালেদ সাইফুল্লাহ সোহাগ, মোহাম্মদ ওয়াসিম উদ্দিন, মোবাস্বির রহমান।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মৃতিচারণ করেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।
আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি, ছাত্র-জনতা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং আহতদের দ্রæত সুস্থতা কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন উপজেলা কমপ্লেক্স জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুখলেছুর রহমান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রার্থী বদরুদ্দোজ্জা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে হুমকি দেওয়া আওয়ামী লীগ নেত্রী রোমা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ সংসদীয় আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ রেজাউল হক এই বিষয়ে শোকজ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের পেশকার শাহজাহান বলেন, রোমা আক্তারকে ৩১ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অনুসন্ধান কমিটির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রোমা আক্তারের দেওয়া বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৭৭ (১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১ বিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন মর্মে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়।
গত বুধবার রাতে নাসিরনগর উপজেলা সদরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী সভা থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়। সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। রোমা আক্তার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নাজির মিয়ার স্ত্রী।
এ সময় রোমা আক্তারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা নাসিরনগরের মানুষ সহজ সরল মানুষ। দাঙ্গা হাঙ্গামা চাই না। আমাদের নেতৃবৃন্দ যে জেল খেটেছেন সেটা আমাদের কলঙ্ক। আপনাদের কাছে আকুল আবেদন ভোট দিয়ে অধিকার ছিনিয়ে নিবেন। উনি যে বেইজ্জতি করেছেন তার জন্য ধিক্কার জানাই। তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে হয়রানি করেছেন। উনি নাসিরনগর এসেছেন প্রবীণ নেতৃবৃন্দের নাম মুছে ফেলার জন্য। আরে নাম মুছে ফেলা এত সহজ নয়। এটা কাগজে লেখা নাম নয়। মানুষের হৃদয়ে লেখা নাম, মুছে ফেলতে পারবেন না। তবে আপনার নাম কেন, সাত তারিখের পর নাসিরনগরের মাটিতে আমরা আপনাকে পা রাখতে দেবো না।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ৯০টি অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মানবিক সহায়তা হিসেবে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি এসব ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন।
নাসিরনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাফিউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার, থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. সোহাগ রানা, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অসিম কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মো. লতিফ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপুর, প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি নির্মল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৯০টি পরিবারের মধ্যে নগদ ৬ লাখ টাকা ও ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ করা হয়। এসময় সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের দলীয় নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২২ এপ্রিল সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এ সময় সর্বজনীন পেনশন স্কিম একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন প্রান্তিক মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় একদিন বড় সম্পদে পরিণত হবে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে সকলকে এই পেনশন স্কিমের আওতায় আসার আহবান জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যার মো: রাফি উদ্দিন আহমেদ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোনাব্বর হোসেন, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহাগ রানা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: নুরে আলমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া, চাতলপাড় ইউপি চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর রহিম, প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তী, এনজিও প্রতিনিধি মো: আবু সাঈদ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি কুতুবুল আলম পাটোয়ারি প্রমুখ।
সভায় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ইউনিয়ন সচিব, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউজিসি) উদ্যোক্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়কের পিচ উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে এসব রাস্তা আরো বেহাল হয়ে পড়েছে। গর্তে যানবাহন আটকে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব সড়কে হেঁটে চলা দায় হয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর।
নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল, হরিপুর, চাতলপার, গোয়ালনগর, চাপরতলা, গোকর্ণ, কুন্ডা ও সদরের বিভিন্ন সড়কে চালক-যাত্রী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক বেহাল। সংস্কারও নেই। চার বছরে এসব সড়কে দুই শতাধিক যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ঝাঁকুনি থেকে বাচতে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। রোগী, বয়স্ক ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিয়ে পথ চলতে বেশি সমস্যা হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলায় এলজিইডির ১০৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের বন্যায় প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়ক, ১০টি সেতু-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব সড়কের অধিকাংশ সংস্কার হয়নি। তবে ২০২১-২২ ও ২৩ অর্থবছরে সদর থেকে তিলপাড়া হয়ে চিতনা পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করা হয়েছে।
নাসিরনগর থেকে ধরমন্ডল ইউনিয়নে যেতে ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এ রাস্তা ব্যবহার করে পাশের লাখাই উপজেলার ২০টি গ্রামসহ ধরমন্ডল ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ইট, বালু ও কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে মানুষ হেঁটে যেতেও ভয় পায়।
ধরমন্ডল ইউনিয়নের বাসিন্দা আতর চান বিবি বলেন, ‘গাড়িত উঠলে ঝাক্কি লাগে। মাজায় ব্যথা করে। তাই হাইট্ট্যা (হেঁটে) বাড়িত যাইতাছি।’
সদরের কলেজ মোড় থেকে গোকর্ণ ও হরিপুর ইউনিয়ন হয়ে পাশের উপজেলা মাধবপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কে প্রায় ১৮ হাজার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। তিন ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে আছে। কলেজ মোড় থেকে গোকর্ণ ইউনিয়নের ছৈয়ারকুড়ি বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কের প্রতি পাঁচ ফুট দূরত্বে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তায়েবা আক্তার বলল, তারা তিন কিলোমিটার হেঁটে বাড়িতে যাওয়া-আসা করে প্রতিদিন। যানবাহন থাকলেও ঝাঁকুনির ভয়ে কেউ গাড়িতে উঠতে চায় না।
হরিপুর ইউনিয়নের মঞ্জুর আলী বলেন, ‘রাস্তার অবস্থা এত খারাপ যে এক দিন গাড়িত উঠলে তিন দিন ঘুমান লাগে। ভোটের সময় নেতারা রাস্তা কইরা দেওনের কথা কইলেও ভোট চইলা গেলে দেয় না।’
স্বস্তিতে নেই কুন্ডা, ফান্দাউক ও চাপরতলা ইউনিয়নের লোকজনও। তাঁদের অভিযোগ, কুন্ডা ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া থেকে মছলেন্দপুর পর্যন্ত সাত কিলোমিটার, মছলেন্দপুর থেকে রানিয়াচং আশ্রয়ণ প্রকল্প পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার পাকা রাস্তা এখন কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে।
গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের রাস্তা এবং ওই এলাকার দুটি সেতু ভেঙে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্ষায় অতিরিক্ত পানি হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হবে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের।
বুড়িশ্বর ইউনিয়নের বেনীপাড়া গ্রামে হবিগঞ্জ-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের একটি সেতুর রেলিং ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাঁশ দিয়ে বেঁধে সেতুটি রক্ষার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্টরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ডেইজি রায় টুম্পা বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না তাঁর। তবে সেতুর অবস্থা দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, কুন্ডা ও গোকর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায় নতুন করে সেতু নির্মাণ করছেন না তারা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সেতুটি দেখভাল করবে।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল হোসাইন বলেন, এসব রাস্তা ও সেতুর টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। বর্ষায় যেন জনদুর্ভোগ কমানো যায়, সে জন্য কিছু রাস্তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে।