ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু

আশুগঞ্জ, 28 November 2024, 396 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার তালশহর (নাওঘাট) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির (ইনচার্জ) এসআই সুব্রত বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার সকালে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। পরে রেলওয়ে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠায়। তিনি আরো জানান, তার বয়স আনুমানিক ৭০ হবে। অজ্ঞাত বৃদ্ধের লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পিবিআই ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয়েছে।

banner

Leave a Reply

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

গাছের ডালে ঝুলিয়ে কিশোরকে নির্যাতন, মূল হোতা গ্রেফতার

আশুগঞ্জ, 2 March 2024, 750 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলায় দিদার হোসেন (১৪) নামের এক কিশোরের এক পা গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরের ঘটনার মূল হোতা মো. জামিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

banner

১ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাতে আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জামির গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে গাছের ডালে এক পা বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে দিদার হোসেনকে মারধর করে এবং তার পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। অভিযুক্ত জামির উপজেলার চরচালতলা এলাকার বোমা কুদ্দুস মিয়ার ছেলে।

আশুগঞ্জ থানায় তার নামে মোট ৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে একই এলাকার চরচারতলা গ্রামের ল্যাংটার ব্রয়লারের সামনে তোফাজ্জলের কাছে নৌকার কাজের পাওনা টাকা চাইতে গেলে দিদারের সঙ্গে তোফাজ্জলের বাকবিতন্ডা হয়। পরে দুপুরে দিদার বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হলে একই এলাকার কুদ্দুছ ওরফে বোমা কুদ্দুস মিয়ার ছেলে জামির (৪০), ইসলাম মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল (২৮), ইউনুছ মিয়ার ছেলে মাসুদ (৩৮), শাহজাহান মিয়ার ছেলে শাকিল (৩০), হামদু মিয়ার ছেলে আকাশ (৩০) ও হারুন মিয়ার ছেলে নাসির (৪০) দিদারকে ধরে নিয়ে যায়। পরে দিদারকে মিডল্যান্ড পাওয়ার প্লান্টের পাশে নিউ এশিয়া প্রজেক্টের খালি জায়গায় নিয়ে যায়। এরপর সেখানে একটি কড়ই গাছের ডালে দিদারের ডান পায়ে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে জামিরসহ অন্যরা মোটা রশি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। এরপর দিদারের মাকে মাসুদের মোবাইল দিয়ে কল করে তার ছেলেকে ২ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে বলা হয়। এসময় দিদারের মা আশপাশের প্রতিবেশী নিয়ে দৌড়ে ছেলেকে উদ্ধার করতে যায়। সেখানে গিয়ে সে তার ছেলেকে গাছ থেকে নামিয়ে আনার জন্য সবার পায়ে ধরে অনুরোধ করে। টাকা না দিলে দিদারকে নামানো হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা। পরে দিদারের মা টাকা দিতে রাজি হলে দিদারকে গাছ থেকে নামিয়ে আনা হয়। দিদারের মা বাসায় এসে আশপাশের লোকের কাছ থেকে ধার দেনা করে ৩০ হাজার টাকা জামির ও তোফাজ্জলের কাছে দেয়। জামির, তোফাজ্জল, মাসুদ, শাকিল, আকাশ ও নাসিরসহ সবাই এই বিষয়ে কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। এই ঘটনায় দিদারের বাবা বাদি হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে আশুগঞ্জ থানায় জামিরসহ আরো কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাহিদ আহমেদ বলেন, দিদারের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা পেয়ে আমরা আসামিদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাই। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালাই। সেখান থেকে মূল হোতা জামিরকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো জানান, শনিবার সকালে জামিরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জামিরের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় মোট ৮টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

ভোটের মাঠে সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান

আশুগঞ্জ, সরাইল, 2 December 2023, 1489 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ভোটের মাঠে নেমেছেন ধানের শীষ প্রতীকের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান। তাঁরা হলেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান।

banner

মাইনুল হাসান গত বৃহস্পতিবার সরাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় সহস্রাধিক অনুসারী-সমর্থক মোটর শোভাযাত্রাসহ উপজেলা সদরে প্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সরাইল সদর ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া। আবুল হাসানাতের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা সদরের দুই বাসিন্দা; যারা আবুল হাসানাতে প্রার্থিতার প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী হয়েছেন। ধানের শীষের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই পুত্র বর্তমানে নিজ দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করতে চান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান আলম। এখানে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মোট ১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আবুল হাসানাত আমিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের আমিনপুরের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার লালবাগে। তিনি আগে ভোটার ছিলেন আমিনপুরের। তবে ২০১৫ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করে সরাইল উপজেলা সদরের হালুয়াপাড়ার বাসিন্দা হয়েছেন। তবে এখানে তাঁকে দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

সদ্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরবেষ্টিত পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দলত্যাগের আগপর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। ছয়বারের মধ্যে চারবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। পরে সাত্তার টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী হন।

অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুফতি ফজলুল হক আমিনী ৪৩ হাজার ২৬১ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমকে পরাজিত করে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি একাধিকবার এ আসন থেকে বটগাছ এবং ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জাপার জিয়াউল হক মৃধার লাঙ্গল প্রতীকের কাছে ৪৯ হাজার ৩৯৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুর পর ৫ নভেম্বর আবারও উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধাকে ২৪ হাজার ৪৬৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপজেলায় ইসলামী ঐক্যজোটের অবস্থান এখন খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এলাকার কওমি মাদ্রাসাপন্থী লোকজন একসময় মুফতি ফজলুল হক আমিনীর অনুসারী ছিলেন। তাঁরাও এখন দুটি ধারায় বিভক্ত। বড় অংশটি বর্তমান নির্বাচন বিরোধী। এ কারণে এখানে ভোটার টানতে হাসানাত আমিনীকে বেগ পেতে হবে।

ইসলামী ঐক্যজোটের সরাইল উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড় না দিলে এখানে আমাদের পক্ষে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা আমাদের তুলে নেবেন (জয়ী করবে) বলেছেন।’ তিনি বলেন, সরাইল উপজেলায় ছোট-বড় সাড়ে তিন শতাধিক কওমি মাদ্রাসা আছে। তিনি দাবি করেন, অধিকাংশ মাদ্রাসার লোকজন তাঁদের পক্ষে আছেন।

তবে ইসলামী ঐক্যজোটের পুরোনো কমিটির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের ৯০ শতাংশ এ নির্বাচনের বিরোধী। তাই এ নির্বাচনে ইসলামী কোনো দলই ভোট টানতে পারবে না।

বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন একসময় ধানের শীষের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। যার কারণে ছয়বার সংসদ সদস্য হন বিএনপি নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাঁর দল ত্যাগের পর ধানের শীষের সমর্থকেরা সাত্তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে উপজেলার প্রত্যন্ত পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নে এখনো সাত্তার ভক্তের সংখ্যা কম নয়। তাঁরা এখন মাইনুলের অনুসারী। এ কারণে এ দুটি ইউনিয়নে শক্ত ঘাঁটি হতে পারে মাইনুল হাসানের। আবার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের সাবেক দু-একজন নেতা-কর্মীকে মাইনুলের পক্ষে দেখা যায়।

মাইনুল হাসান বলেন, ‘আমি তৃণমূল বিএনপির প্রাথমিক সদস্য। আমাদের দলের জেলা বা উপজেলা কমিটি নেই। তবে আমার আব্বু এখানে ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর অনুসারীরা আমার পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া আমার এলাকার দু-তিনটি ইউনিয়ন আছে, যেখানে আমি একচেটিয়া ভোট পাব।’ তিনি দাবি করেন, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। বিএনপির প্রকৃত কর্মীরা বলছেন, তাঁরা উকিল সাত্তারের পরিবারে পাশে থাকবেন। তিনি আশা করছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।

সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতা-কর্মী এ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। এমনকি আমাদের কোনো ভোটারও ভোট দিতে যাবে না। যাঁরা এখন তৃণমূলে যাচ্ছেন, তাঁরা বহিষ্কৃত।’

মাছের সংকটে শুঁটকির উৎপাদন কমেছে

আশুগঞ্জ, 14 January 2024, 777 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর গ্রাম। নদী ভিত্তিক গ্রাম হওয়ায় সবসময় এখানে ধরা পরে দেশী প্রজাতির মাছ। আর এই মাছ দিয়েই গ্রামটিতে উৎপাদন হয় শুঁটকি। নদীর তীরবর্তী স্থানে আট-দশ ফুট উঁচু বাঁশের মাচা বানিয়ে চলে এই শুঁটকির ব্যবসা। প্রতিবছর এখানে আনুমানিক ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়ে থাকে। তবে এই মৌসুমে নদীতে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বিক্রি কমার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আর সহজশর্তে ঋণ পেলে শুঁটকি ব্যবসা আরও সম্প্রসারণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

banner

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, আশুগঞ্জের লালপুর গ্রামের এই মেঘনা পাড়ের শুঁটকি ব্যবসা শত বছরে ঐতিহ্য। এই শুঁটকি পল্লিতে বর্তমানে ২৬টি মাচা রয়েছে, যেটাকে স্থানীয় লোকজন বলেন ডাঙ্গি। তাদের দাবি, গোটা গ্রামে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭০ থেকে ৮০টি ডাঙ্গি রয়েছে। এসব ডাঙ্গিতে সময়ভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ শ্রমিক কাজ করেন। ২০ আড়তদারসহ প্রায় ১৫০ জন এখানে শুঁটকির ব্যবসা করেন। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শুঁটকি উৎপাদনের কাজ চলে। লবণযুক্ত ও লবণ ছাড়া মানভেদে কয়েক ধরনের শুঁটকি উৎপাদন হয় এই পল্লিতে।

যে-সব মাছের শুঁটকি করা হয়- পুঁটি, শোল, গজার, বোয়াল, ঘইন্না, টেংরা, চাপিলা, লাসু, পাঙাশ, রুই, গজার, শোল, পাবদা, কাইক্কা, পুঠা মাছ। গুণে মানে ভালো ও সুস্বাদু হওয়ায় লালপুরের শুঁটকি ঢাকা, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি, খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ও ভারতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী থেকে মাছ ধরে জেলেরা এনে যার যার ডাঙ্গির নিচে রাখে। তারপর সেখানকার মহিলারা বসে পরে মাছ কুটা-কুটিতে। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা নয়, শিশু-কিশোরেরাও এসে তাদের অভিভাবককে সহযোগিতা করে। তারপর এগুলো কেটে সেই বাঁশের তৈরি মাচার ওপর দেওয়া হয় শুকাতে। পরে সেই মাছগুলো কয়েকদিন ধরে শুকিয়ে তৈরি হয় শুঁটকি। তারপর এগুলো সংরক্ষণ করে বাজারজাত করা হয়।

শুঁটকি ব্যবসায়ী সুকমল দাস জানান, তিন কেজি মাছ থেকে এক কেজি লবণযুক্ত ও পৌনে চার কেজি মাছ থেকে এক কেজি লবণ ছাড়া শুঁটকি হয়। প্রতি কেজি লবণযুক্ত পুঁটি শুঁটকির পাইকারি দাম ৬০০ টাকা ও লবণ ছাড়া প্রতি কেজি ৮০০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে পুঁটি শুঁটকি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হয়। তাছাড়া শোল ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, ট্যাংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, বাইম ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা, গনিয়া ৮০০ টাকা, মাঝারি গনিয়া ৬০০ টাকা ও ছোট গনিয়া শুঁটকি ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়।

তবে চাহিদা অনুযায়ী নদীতে মাছ না পাওয়ায় উর্ধ্বমুখী মাছের দাম। তাই মানভেদে শুটকির দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়বে বলে জানিয়েছে সুকমল দাস।

ব্যবসায়ী তপন দাস বলেন, এ মৌসুমে মাছের দাম চড়া। তাই ব্যবসার লাভের জন্য শুটকির দামও বাড়াতে হবে। ব্যাংক থেকে ঋণ না পাওয়ায় বিভিন্ন সমিতি ও এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। ফলে লাভের বড় অংশ তুলে দিতে হচ্ছে সমিতি ও এনজিওর হাতে।

ব্যবসায়ী লিটন চন্দ্র দাস জানান, গত ৫ বছর ধরে তিনি শুঁটকি উৎপাদন ও বিক্রি করছেন। তার ডাঙ্গিতে পুঁটি, বাইম ও চাপিলা শুকটি চাষ করেন তিনি। তবে মাছ সংকট ও অতিরিক্ত দামের কারণে উৎপাদন কমে এসেছে। আর যতটুকুই উৎপাদন হবে তা আগের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা বাড়াতে হবে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাজী আব্দুল কাইয়ূম খাদেম জানান, শুঁটকি পল্লির ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণের সুবিধা রয়েছে। তারা জামানত ছাড়াই সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা নিতে পারবে।

এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, নদী ও খালবিলে পানি কম থাকায় এবার মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া নিরাপদ শুঁটকি উৎপাদন ও সংরক্ষণে শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

আশুগঞ্জ সার কারখানার পিয়ন হত্যায় হকারের ১০ বছরের কারাদণ্ড

আশুগঞ্জ, 3 October 2024, 444 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ সার কারখানার পিয়ন বোরহান উদ্দিন বাহার হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনকে (৪৪) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

banner

২ অক্টোবর বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বোরহান উদ্দিন বাহারের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ায়। তিনি সার কারখানায় চাকরির পাশাপাশি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুবারের ইউপি সদস্য ছিলেন।

আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম জানান, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানির কোয়ার্টার থেকে বোরহান উদ্দিন বাহারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনা নিহতের ছেলে আব্দুল্লাহ ফারুক অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশি তদন্তে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দেলোয়ার জানায়, ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর বোরহান উদ্দিন বাহারের কাছে বেড়াতে আসেন তিনি। পরদিন রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে বোরহান উদ্দিন বাহার ব্যাংকের চেকের কাজ করছিল। ৩০ ডিসেম্বর ভোরে দেলোয়ার কাজ বন্ধ করতে বোরহানকে বললে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। উত্তেজিত হয়ে বোরহানকে ধাক্কা দিলে তিনি খাটের সঙ্গে লেগে আঘাত পান। এক পর্যায়ে আসামি দেলোয়ার সজোরে ধাক্কা দিলে দেওয়ালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায় বোরহান।

আব্দুস সাত্তার আমাদের ট্রাম্পকার্ড

আশুগঞ্জ, 24 January 2023, 1376 Views,

আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে কলার ছড়া প্রতীক পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। এ কলার ছড়ার অপর নাম ‘নৌকা’ বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।

banner

তিনি বলেছেন, ‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবো। ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর খবর হবে কলার ছড়া জিতেছে, নৌকা জিতেছে। কলার ছড়ার অপর নাম নৌকা। বেনামে দিলাম আরকি। এটা মনে করেই চলবেন। দেখলেন না, লোকজন সব আওয়ামী লীগের, নাম দিলাম সমর্থকগোষ্ঠী। আসলে ভাসুরের নাম বলা যায় না, এখানে সবই আমরা।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া সমর্থকগোষ্ঠীর ব্যানারে এক কর্মীসভায় তিনি এ কথা বলেন। ২৩ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন মিলনায়তনে এ কর্মীসভায় আয়োজন করা হয়।

সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘ওনারা (বিএনপি) এনেছেন ফারহানাকে। ফারহানা তোমার বাবা আওয়ামী লীগ করতো, পরে গিয়েছে মোশতাকের দলে। তুমি সংরক্ষিত আসনের এমপি হয়ে হাজার পাওয়ারের বাল্ব হয়ে গেলা। সে নাকি নেতৃকে চ্যালেঞ্জ করেছে। একটা চুটকি আমার নেতৃকে চ্যালেঞ্জ করে। আপনারা ১ তারিখ জবাব দেবেন কলার ছড়াতে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কলার ছড়ার প্রার্থীকে চিনি না, আমরা কলার ছড়াকে চিনি আর শেখ হাসিনাকে চিনি। আপনারা কী বোঝেন না! কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার রাজনীতি বোঝেন আপনি! বিএনপির পদত্যাগ করা প্রার্থীকে আমরা কেন দিলাম? এর রাজনৈতিক একটা তাৎপর্য আছে কিন্তু। যার আক্কেল আছে তাকে ইশারা দিলেই বোঝে, আর যে বেক্কল তাকে ধাক্কাইতে হয়। আগামী দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এটা সেমিফাইনাল, সেই সেমিফাইনালে জিততে হবে।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘আগামী এক তারিখের নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী তার নামও আমি ভুলে যাই, চিনি না আমি। প্রার্থীর জনমত নয়, আমাদের নৌকার জনমত, আওয়ামী লীগের জনমত, আওয়ামী লীগের শক্তি। এটা কী কেউ জানতে বাকি আছে, বাংলাদেশের সবাই জানে, মিডিয়ায় নিউজও করতেছে আওয়ামী লীগ এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে নামছে। তার মানে আওয়ামী লীগের শক্তি যেকোনো জিরোকে হিরো করতে পারে। আওয়ামী লীগের শক্তি হিরোকে জিরো করতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হেরেছে শুধু চক্রান্তের কাছে, আন্দোলনেও হারে নাই, নির্বাচনেও হারে নাই। কারণ আমাদের নেতা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এই নির্বাচনে জয়লাভ করা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার। সে (আব্দুস সাত্তার) আমাদের ট্রাম্পকার্ড।’