চলারপথে রিপোর্ট :
জন্মের পর শিশুদের ধাপে ধাপে দেওয়া সম্প্রসারিত টিকা দান কার্যক্রমের (ইপিআই) টিকা গত এক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোথাও নেই। ফলে কেন্দ্র এসেও সন্তানদের নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন মায়েরা। একাধিকবার এসেও টিকা না পাওয়ায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইপিআই কর্মসূচিতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধযোগ্য বিভিন্ন ধাপে টিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছে যক্ষ্মা, পোলিও, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা। সময়সূচি অনুযায়ী টিকা না নিলে শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে না।
শিশু জন্মের পর প্রথম বিসিজি টিকা দিতে হয়। বয়স ছয় সপ্তাহ হলে আইপিভি টিকার প্রথম ডোজ ও ১৪ সপ্তাহে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়। একই সময় পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপিটি, হেপাটাইটিস-বি, হিব), ওপিভি এবং পিসিভি টিকার প্রথম ডোজ দিতে হয়। কমপক্ষে চার সপ্তাহর ব্যবধানে এ সব টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ দিতে হয়। শিশুর ২৭০ দিন পূর্ণ হলেই এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকার প্রথম ডোজ এবং ১৫ মাস হলেই দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়।
কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত একমাস ধরে বিসিজি টিকা ছাড়া শিশুদের কোনো টিকা মজুত নেই। ফলে শিশুদের সময় অনুযায়ী টিকাগুলো দেওয়া যাচ্ছে না।
গত শনিবার জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়ে দেখা যায়, ইপিআই টিকা কেন্দ্রে স্টাফরা অলস সময় পার করছেন। মাঝে মধ্যে বিসিজি টিকা দিতে নবজাতকদের নিয়ে মায়েরা আসছেন। তাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ধাপে টিকাগুলো দিতে আসা শিশুদের অভিভাবকদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
টিকার জন্য সন্তানকে কেন্দ্রে নিয়ে আসেন আসমা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার বাচ্চার তৃতীয় ধাপের টিকা দেওয়ার সময় ছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি। সেদিন আসার পর জানানো হয়েছিল টিকা নেই। কয়েকদিন পর আসবে। আজকে আসার পর টিকা কেন্দ্র থেকে একই কথা বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
নাজনীন বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমার সন্তানের প্রথম টিকা দিয়েছিলাম ২৮দিনের মাথায়। আজকে ছিল দ্বিতীয় ডোজের তারিখ। কিন্তু টিকা না থাকায় পরে আসতে বলেছে।’
এ বিষয়ে জেলার ইপিআই সুপারিন্টেনডেন্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একবছরে ৯১ হাজার শিশুকে টিকা দিয়ে থাকি। জেলার ৯৮টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২৪টি কেন্দ্রে মাসে একবার করে টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন টিকা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রতি তিন মাস পর পর টিকা পাঠানো হয়। এতদিন ঢাকাতেই টিকা ছিল না। আমরা কিছুদিনের মধ্যে টিকা পেয়ে যাবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, টিকার জন্য আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। যেন দ্রুত টিকা আসে, চেষ্টা করে যাচ্ছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট মহান গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচি আজ ৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শহরের লোকনাথ উদ্যানে (টেংকেরপাড়) এই অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল।
ড্যাব ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ডা. মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. জহিরুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ হিমেল খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।
বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. মো. নোমান মিয়া, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জহিরুল হক খোকন, সহ-সভাপতি এ.বি.এম. মোমিনুল হক, সহ-সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিন রিপন, সহ-সাধারণ আলী আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাহিন, নিউরোলজিস্ট অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতা ডা. নাজমুল হুদা বিপ্লব, জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ পিবি রায় সুপ্রিয়।
অনুষ্ঠানে ড্যাব জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ, জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এই দিনগুলোকে স্মরণ করে আমরা রক্তদানের মতো মহৎ কাজে অংশ নিয়েছি, যা মানবতার সেবায় নিবেদিত।
পরে কর্মসূচিতে বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। এছাড়া ব্লাড গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে নতুন অনেকেই নিজেদের রক্তের গ্রুপ জানার সুযোগ পান।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলন্ত উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢিল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকায় আজ ২৬ এপ্রিল শনিবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের এসি ‘গ’ বগির একটি জানালার কাচ ভেঙে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ট্রেনের স্টুয়ার্ড ম্যানেজার বুলবুল আহমেদ জানান, নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের কিছু আগে শিমরাইলকান্দি এলাকায় পৌঁছালে কে বা কারা বাইরে থেকে ট্রেন লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে। জানালার গ্লাসটি ডাবল হওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চন্ডালখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে উঠান বৈঠক ও তেলীনগর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কমিউনিটি সভার আয়োজন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠান সমূহে তথ্য অফিসার দীপক চন্দ্র দাস এর সভাপতিত্বে ভিডিও কলে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মাঠ প্রচার) ফাহিমা জাহান। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে ডেঙ্গু, শিশুকে মাতৃদুগ্ধ দান, শিশু ও নারীর অধিকার, শিশুর যথাযথ বিকাশ, অটিজম, ও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য, জন্ম নিবন্ধন, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধ, পরিবেশ সুরক্ষা ও দুর্যোগকালীন নারী- শিশুর সচেতনতা, জেণ্ডার সমতা, নিরাপদ মাতৃত্ব, বাল্য বিবাহ, ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে উন্মুক্ত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠান সমূহে চণ্ডালখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আসমা বেগম, সহ: শিক্ষক সাবেকুন নাহার, মাহবুবা খানম, তানজিয়া ইসলাম, ওমর ফারুক, আবু তাহের এবং তেলীনগর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোছাঃ মাহমুদা আক্তার, সহ: শিক্ষক ফৌজিয়া আছমা, মমতা বালা দেবী, সাবরিনা আক্তার সহ প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশি শক্তির দাপট, ভিজিএফ ও ভিজিডির মাল আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন সদস্যরা। সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ৯ সদস্য এ অনাস্থা দিয়েছেন।
এ ঘটনায় সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ছায়েদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে ২৭ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
অভিযোগপত্রে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেন, টিআর/কাবিখার জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরের জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। সরকারের কৃষি প্রণোদনা সার এবং বীজ কৃষকের মাঝে বিতরণ না করে নিজেই তা লুটপাট করেছেন। এছাড়া গ্যাস ফিল্ড থেকে প্রাপ্ত ট্যাক্সের ৪ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা কাজ করে অবশিষ্ট টাকা আত্মসাৎ করেন। ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ এলাকার জনগণ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে সম্পূর্ণ টাকা জমা না রেখে বেশির ভাগ অংশ আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, এলাকার অসহায়-হতদরিদ্র মানুষদের কাছ থেকে জন্মনিবন্ধন আবেদন, সংশোধন পরিবর্তন, পরিবর্ধন বাবদ বিভিন্ন অসুবিধা জটিলতা দেখিয়ে দুই হাজার, তিন হাজার, পাঁচ হাজার টাকা নিয়া জনগণের কাজ করে দেয় এমনকি চাহিদা মত টাকা না পেলে দীর্ঘদিন হয়রানি করেন। চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ নিজ ইচ্ছায় অসৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করার লক্ষ্যে ডালিম নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে বিভিন্ন সরকারি অনুদান যেমন প্রেগনেন্সি ভাতা, কৃষি প্রণোদনা, সার, বীজ, ধান বীজ, সরিষাসহ সরকারি টিউবওয়েল, টিসিবির পণ্য বিক্রি করে টাকা উপার্জন করে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারীদের একজন সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নাসরিন আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ নির্বাচিত হওয়ার পর নাটাই উত্তর ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে তিনি স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে গেছেন। অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করা সব ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ হয়ে আছেন।
৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল হাই বলেন, লিখিত অভিযোগে যা লেখা হয়েছে, তা সামান্য মাত্র। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সবশেষ বরাদ্দ পাওয়া টিউবওয়েলও লুট করে খেয়েছেন। তার সঙ্গে আমাদের কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা অনাস্থা দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইউপি সদস্যরা অহেতুক কারণে এমন করছেন। তাদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপসচিব) রুহুল আমিন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে একটি আবেদন দেওয়া হয়েছিল জেলা প্রশাসকের কাছে। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে অভিযোগ জানিয়ে আবেদন করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। তিনি তদন্ত করে বিষয়টি জানাবেন জেলা প্রশাসককে। আমরা তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি ইউএনওর কাছে আবেদন করতে।