চলারপথে রিপোর্ট :
কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ ইলিয়াছ ও তার তার ভাই মোঃ জাহাঙ্গীর দখল থেকে নিজের সম্পত্তি ফিরে পেতে ও তাদের অত্যাচার থেকে পরিবার-পরিজনসহ রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কসবা পৌর এলাকার খাড়পাড়ার বাসিন্দা ও উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া। আজ ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ ইলিয়াছ ও তার তার ভাই মোঃ জাহাঙ্গীর তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া জানান, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র মোঃ ইলিয়াছ ও তার তার ভাই মোঃ জাহাঙ্গীরের ভূমি দখলসহ নানা অত্যাচারে তিনি ও তার পরিবার এক ধরণের মানসিক পীড়া নিয়ে বসবাস করছেন। তাদের অত্যাচারের নিষ্পোষিত হয়ে বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার এলাকাছাড়া। সংবাদ সম্মেলনে সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পর আইন-শৃংখলা বাহিনীর নমনীয়তার সুযোগে গত ৭ আগস্ট থেকে মোঃ ইলিয়াছ ও তার ভাই জাহাঙ্গীর তার জায়গা জবর দখল শুরু করে।
তিনি বলেন, কসবা পৌর শহরের খাড়পাড়ার ওই জায়গাটি তার স্বামী মোঃ সামছুল আলম পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রে মালিক। ২০১৮ সালে মোঃ সামছুল আলম মৃত্যুবরণ করলে তিনি ১ মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে ওই জায়গায় বসবাস করে আসছেন। গত ৭ আগস্ট জায়গা দখল শুরু হলে তিনি সেখানে গেলে ইলিয়াছ ও জাহাঙ্গীরের বাহিনী আমার উপর চড়াও হয় এমনকি হত্যার হুমকি দেয়। এরপর থেকে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি বলেন, আমার দাদা শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আলমের দুইজন স্ত্রী ছিলেন। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন আরা বেগমকে সাথে নিয়ে কর্মস্থল পাকিস্তানের করাচিতে চলে যান ও পরে তারা করাচীতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানেই রওশন আরার পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ে নাছরিন আলম, ছেলে মনজুরুল আলম, মাসুদ আলম ও মহসনি আলম জন্মসূত্রেই পাকিস্তানে বসবাস করতে থাকেন।
ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আলম মৃত্যুর আগেই সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বন্টন করে দেন। এরই আলোকে দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন আরাসহ তার সন্তানদের পাকিস্তানে একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ সকল সম্পত্তি দিয়ে দেন ও পান। অন্যদিকে প্রথম স্ত্রী ও তার তিন সন্তান মনিরুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম ও মোর্শেদ আলমকে বাংলাদেশের সকল সম্পত্তি বুঝিয়ে দেন। এরই সূত্র ধরে আমার শশুর আনোয়ারুল ইসলামের হিস্যা হিসেবে আমার স্বামী সামশুল আলম কাউছার কিছু সম্পত্তি পান। আমার শশুরের স্ত্রী অর্থাৎ শাশুরি, পাঁচ মেয়েও অনুরূপভাবে সম্পত্তি পেয়েছেন। এরই সূত্র ধরে ২০১৪ মালের একটি দলিল মূলে আমি ও আমার সন্তানেরা ৩.৮০ একর জমির মালিক হই। কিন্তু পাকিস্তানের নাগরিক প্রয়াত মনজুরুল আলমের ওয়ারিশদের কাছ থেকে কিছু সম্পত্তির “পাওয়ার” নিয়ে পুরো জায়গা দখলে নিয়ে নেন জাহাঙ্গীর।
তিনি জানান, মনজুরুল আলম বাংলাদেশি নাগরিক নয়, মর্মে আদালত সন্দেহ পোষণ করে। তার নাগরিকত্ব প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত আদালত মামলাটি স্থগিত রাখে। তবে সম্প্রতি জায়গা নিয়ে আদালতে অভিযোগ দেয়ার পর স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করেন আদালত। সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া আরো বলেন, ওই সময়ে পৌর মেয়রের দায়িত্বে থাকা মোঃ ইলিয়াছ এক প্রত্যায়নপত্রে মনজুরুল আলমসহ তাদের পরিবার যে বাংলাদেশে থাকেন না সেটি নিশ্চিত করেন। পরে অবশ্য মনজুরুল আলম বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বানায়।
সংবাদ সম্মলেন উপস্থিত মোঃ হারুন মিয়া নামে কসবার এক ব্যক্তি জানান, সাঈদা সুলতানার কাছ থেকে তিনি কিছু জায়গা কিনেছিলেন। ওই জায়গাটাও ইলিয়াছ ও তার ভাই দখল কওে নিয়েছে। তিনি জানতে চাইলে তারা বলেন, তারা নাকি জায়গার মালিক। এ ব্যাপারে কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ ইলিয়াছের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি সাঈদা সুলতানার ৫ ননদ, শ্বাশুড়ির কাছ থেকে ১৫ বছর আগে জায়গা কিনেছেন ও জায়গাটি ভোগ দখল করে আসছেন।
এ ব্যাপারে মোঃ জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিএসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি যাদের কাছ থেকে জায়গা নিয়েছি তাদের বাড়ি আছে কুমিল্লায়। বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। সাঈদা সুলতানা যেসব অভিযোগ করেছেন সবই মিথ্যা। ওনি এ নিয়ে মামলা করলেও আদালতের রায় আমার পক্ষে গেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টাকালে আরাফাত ভূইয়া (১৯) নামে এক যুবককে কারাদন্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ ২৬ মে রবিবার দুপুরে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম. রাহাতুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের ৪০নং বাইসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাকে ৫দিনের কারাদন্ড প্রদান করেন। সাজাপ্রাপ্ত আরাফাত ভূঁইয়া উপজেলার কুটি গ্রামের বাসিন্দা।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম. রাহাতুল ইসলাম জানান, দুপুরে কুটি ইউনিয়নের ৪০ নং বাইসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টাকালে আরাফাত ভূঁইয়াকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৭১-চ ধারায় আরাফাত ভূঁইয়াকে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল রবিবার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৩ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সকাল ৮টা থেকে ১১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। দুপুরের দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউসুফ আহমেদ দেখতে পান ব্যালট পেপারে তার প্রতীক অটোরিকশার বদলে প্যাডেল চালিত তিন চাকার রিকশা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে তার ভোটারা বিব্রত হচ্ছিলেন। পরে দুপুর ১টার দিকে তিনি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগের বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করলে সেখান থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানান। রবিবার স্থগিত হওয়া চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের ১৭ সদস্যকে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশ থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। সেই দিনের খুনি ও রাজাকারদের দেশে ফিরিয়ে এনেছিল বিএনপি। তারা দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল। সেখান থেকে দেশকে মর্যাদার আসনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করার মাধ্যমে তাঁর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তাহলে বাস্তবায়ন হবে জাতির পিতার স্বপ্ন।
আজ ১১ আগস্ট শুক্রবার কসবা ওয়েস্ট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শোকসভায় কলকাতা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করছেন। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে হবে উন্নত। আর এ দেশ শুধু শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কাছেই নিরাপদ।
উপজেলায় মাসব্যাপী শোক পালন উপলক্ষে কসবার পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ ক্ষমতাসীন দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।
কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া মিলনের পরিচালনায় শোকসভায় বক্তব্য দেন কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল কাওসার ভুইয়া জীবন, কসবা পৌর মেয়র এম জি হাক্কানী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহীদউল্লাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সোহাগ, সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল, জেলা পরিষদ সদস্য এম এ আজিজ, অধ্যাপক রুমানুল ফেরদৌস প্রমুখ। পরে মিলাদ ও দোয়া শেষে তবারক বিতরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলমান বন্যায় ৪ উপজেলার ৮৬০টি পুকুরের অন্তত ৭৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আখাউড়া উপজেলার খামারিসহ মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পুকুর, দিঘি ও খামারের সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৮। এগুলোর মোট আয়তন ৬২১ হেক্টর। এসব জলাশয়ে প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ী মাছ চাষ করেন। আর চাষির সংখ্যা ২ হাজার ১০৭। বন্যায় ১২১ দশমিক ৮৬ হেক্টর আয়তনের ৪৩০টি দিঘি, খামার ও পুকুরের সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের মোট ৪৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আর ১ কোটি ১৫ লাখ পোনা পানিতে ভেসে গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়নের নিলাখাদ গ্রামের খামারি বলেন, ‘বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামলে ওঠা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। বন্যার পানিতে পাঁচ কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ করব, বুঝতে পারছি না।’
বন্যার পানিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ার দাবি করেছেন কর্ণেল বাজারের বাসিন্দা বাছির মিয়া। তিনি বলেন, পুকুরে মাছ মাত্র বড় হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে দেড় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।
মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, ‘পানি কমলেও আমার পুকুরে আর মাছ নেই। যা মাছ ছিল সব পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।’
এ বিষয়ে ক্ষয়ক্ষতি-সংক্রান্ত প্রাথমিক একটি তালিকা করেছে আখাউড়া উপজেলার মৎস্য কার্যালয়।
আখাউড়া উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে খামারিদের ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
এদিকে কসবা উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বন্যার পানিতে ২০০ পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। এগুলোর আয়তন ৩৮ হেক্টর। ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ ও ১০ লাখ টাকার পোনা পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় জানিয়েছে, সদর উপজেলায় ৬০ হেক্টর আয়তনের ১৪৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১২ লাখ পোনা ও ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। অবকাঠামো ভেঙে যাওয়াসহ বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বিজয়নগর উপজেলায় ১১ হেক্টর আয়তনের ৮৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ পোনা ও ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে যাওয়ায় মোট ৫৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, বন্যার পানিতে ৮৬০টি পুকুর প্লাবিত হয়ে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। খামারি ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে ৮৬০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
২০ আগস্ট রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ইমিগ্রেশন-সংলগ্ন খাল দিয়ে ভারতে থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসতে শুরু করে। এরপর আখাউড়া উপজেলাসহ পর্যায়ক্রমে কসবা উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেলা যুবলীগ নেতা ও ওয়ার্ড মেম্বারের লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার গোপীনাথপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয় সাতজন।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের কসবা উপজেলার আহ্বায়ক মান্নান জাহাঙ্গীর জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সদস্য তসলিমুর রেজা ও ওই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মুক্তার হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার বিকালে গোপীনাথপুর বাজারে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে একটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত তসলিম রেজা ও মুক্তার হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছিলেন চট্টগ্রামে। এরপর গত তিন দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার ব্যবসায়ী উত্তম দাস (৩৭)। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে যাওয়ার পর শুক্রবার রাত থেকে পরিবারেরর লোকজন তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না। উত্তম দাসের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন রয়েছে বন্ধ। বিষয়টি চট্টগ্রামের কতোয়ালি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
উত্তম দাস কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের জাজিরা গ্রামের গৌরাঙ্গ দাসের ছেলে। পেশায় একজন শুঁটকি ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই চট্টগ্রাম যেতেন বলে পরিবারের লোকজন জানান। তিন দিন ধরে তার খোঁজ না পেয়ে পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
নিখোঁজ উত্তম দাসের ভাগ্নে সত্য রঞ্জন দাস জানান, বৃহস্পতিবার ব্যবসায়িক কাজে তিনি চট্টগ্রামে যান। শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ পরিবারের লোকজনের সাথে তার সর্বশেষ কথা হয়। একটি আবাসিক হোটেলে তিনি অবস্থান করবেন বলে তিনি জানান। এরপর থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
তার সাথে দু’টি আইফোন, হাতে স্বর্ণের ব্রেসলেট ও আংটি ছিল। নিখোঁজের পর থেকে পরিবারের সদস্যরা প্রথমে বিষয়টি কসবা থানা পুলিশ ও পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পরিবারের সদস্য এখনো চট্টগ্রামে খোঁজাখুঁজি করছেন।
উত্তম দাসের ছোট ভাই সুশান্ত দাস জানান, দাদা শুঁটকি মাছের পাইকারি ব্যবসা করেন। চট্টগ্রামের বড় আড়তে প্রায়ই যেতেন তিনি। শুক্রবার রাতে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর থেকে খোঁজ করে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি সেখানকার স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল করিম গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি তারা অবগত আছেন। ওই ব্যবসায়ীকে খোঁজে বের করতে পুলিশ কাজ করছে বলে ই কর্মকর্তা জানান।