অনলাইন ডেস্ক :
৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে দিনটি। এ উপলক্ষে আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে মেহেরপুর কলেজ মোড়ে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জেলা প্রশাসক, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতর।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাউন্সিল মেহেরপুরের উদ্যোগে শহীদ স্মৃতিতে জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, পুলিশ সুপার মাহমুদা খানমসহ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নেন।
পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ডেস্ক :
২০২৩ সাল থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাদ দেওয়ার সুপারিশ অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনুযায়ী পাবলিক বা বোর্ড পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা না থাকায় জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ ১৬ জানুয়ারি সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব আক্তার উননেছা শিউলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ অনুযায়ী জেএসসি ও জেডিসি পাবলিক/বোর্ড পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা রাখা হয়নি বিধায় ২০২২ ও ২০২৩ এবং তার পরে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাদ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাবের সম্মতি দিয়ে পরীক্ষা বাতিল করার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন।
বর্ণিতাবস্থায়, উল্লিখিত বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো, বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা গেছেন বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের নেতৃত্বে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রতিনিধি দল।
আজ ১ সেপ্টম্বর শুক্রবার দুপুরে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলটি আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে আগরতলায় গমন করেন। আগরতলা প্রেসক্লাবের আমন্ত্রনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আগরতলায় যান। আগামীকাল শনিবার বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাব ও আগরতলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মধ্যে একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের নেতৃত্বে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ স্থলবন্দরে পৌছলে জিরো পয়েন্টে তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান আগরতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত দে। এ সময় আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনের প্রথম সচিব আল-আমিন সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সাংবাদিক প্রতিনিধিদলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সৌহার্দপূর্ন সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আগরতলার সাংবাদিক বন্ধুদের সাথে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচে অংশ নিবো। আগরতলায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এলাকা ঘুরে দেখবো। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথেও আলোচনা করবো।
আগামী চার সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সাংবাদিকগন দেশে ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টীয় নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘আজ আমরা যে সময়কে পেছনে ফেলে নতুন দিনের আলোয় উদ্ভাসিত হতে যাচ্ছি, সে সময়ের যাবতীয় অর্জন আমাদের সম্মুখ যাত্রার শক্তিশালী সোপান হিসেবে কাজ করছে। তাই নতুন বছরের এই মাহেন্দ্রক্ষণ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নতুন নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির নতুন শিখরে আরোহণের সোপান রচনা করার অনুপ্রেরণা।’
খ্রিষ্টীয় নতুন বছর-২০২৪ উপলক্ষে আজ ৩১ ডিসেম্বর রবিবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো জোরদার হোক, সকল সংকট দূরীভূত হোক, সকল সংকীর্ণতা পরাভূত হোক এবং সকলের জীবনে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই প্রার্থনা করি।’
২০২৩ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এক স্বর্ণযুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গত ২০২২ সালের ২৫ জুন নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর সেতুতে রেল যোগাযোগের শুভ উদ্বোধন করেছি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল চালুর পর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা সম্প্রসারণ করেছি।’
আমাদের অন্যান্য মেগা ও মাঝারিসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করেছি। ৫ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করেছি। ফলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং ১৯ অক্টোবর দেশের ৩৯টি জেলায় ১৫০টি সেতু এবং ১৪টি ওভারপাস একসাথে উদ্বোধন করেছি। ২৮ অক্টোবর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছি। ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেল চালু করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে। আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচন হতে পরপর তিন দফা জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে গত ১৫ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছি।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিও কিছুটা মন্থর হয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক অবরোধ ও পাল্টা অবরোধ সারা পৃথিবীতে নিরীহ মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এরই মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই দেশের যেকোনো সংকট আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময় করেছি। মিয়ানমারে গণহত্যা থেকে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের ৩৩টি জেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছি। প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ঔষধ দিচ্ছি। ২ কোটি ১০ লাখ কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান করেছি। ২ কোটি ৫৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট চারটি ক্যাটেগরিতে ১০ কোটি মানুষের জন্য সার্বজনীন পেনশন চালু করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দিচ্ছে। এই বই উৎসব বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রেও এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।
‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টি করছি এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছি। ২০২১ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের সময় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ ঘোষণা করেছে। আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয় এবং জনগণের মঙ্গল হয়। কারণ, একমাত্র আওয়ামী লীগই স্বাধীনতার সুমহান আদর্শকে ধারণ করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি, অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিহত করে মানুষের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করি এবং সর্বোপরি গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র নয় মাসেই তিনি আমাদের একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ৭ এপ্রিল প্রথম অধিবেশন বসেছিল। ২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল মহান জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ২২তম/বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই অধিবেশনে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শূন্য হাতে সদ্যস্বাধীন দেশকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে তুলেছিলেন। তখন ব্যাংকে কোন রিজার্ভ মানি ছিল না, কোনো কারেন্সি নোট ছিল না। সেই অবস্থায় গণতন্ত্রের মজবুত ভিত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার গঠনের পর ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন এবং জাতিসংঘ সেই স্বীকৃতি দিয়েছিল।বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৭ জুন শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা। বাঙালি সমাজে কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত মুসলমানদের এই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর করে আসছে।
ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। ঈদুল আযহার সাথে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। গতকাল শুক্রবার মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করবে। স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী ৬ জুন শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজীরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করবেন।
ঈদুল আযহা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইসলামে বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবেহ সম্পন্ন করেন তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।
ইসলামে কোরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে সুরা কাউসারে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।’ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঈদুল আযহার দিন কোরবানির চেয়ে আর কোনো কাজ আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় নয়।’ গরু, মহিষ, উট, ভেড়া, ছাগল, দুম্বাসহ যে কোনো হালাল পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যায়।
শনিবার সকালে মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনি-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
অনলাইন ডেস্ক :
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে মর্যাদা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৫ ডিসেম্বর রোববার ২০২৪ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ২৪ মে ১৯৭২ সালে কলকাতা হতে সপরিবারে ঢাকায় আনা হয় এবং তার বসবাসের জন্য ধানমন্ডিস্থ ২৮ নম্বর (পুরাতন) সড়কের ৩৩০-বি বাড়িটি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। কবিকে ১৯৭৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় এবং একই বছরে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। জীবনাবসানের পর কবিকে পরিপূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে সম্বোধন করে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৮ জারি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর অবিভক্ত ভারতের কলকাতার এলবার্ট হলে সমগ্র বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে নেতাজী সুবাস চন্দ্র বসু, বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, এস, ওয়াজেদ আলী, দীনেশ চন্দ দাশসহ বহু বরণ্যে ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কাণ্ডারি’ এবং ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী/প্রধান উপদেষ্টাগণ কবিকে ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। কাজী নজরুল ইসলাম সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃত হলেও তাকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে সরকারিভাবে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, যেহেতু কবি কাজী নজরুল ইসলামের জাতীয় কবির মর্যাদার বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে স্বীকৃত এবং যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাকে জাতীয় কবি ঘোষণা করেয সরকারি প্রজ্ঞাপন প্রত্যাশা করে, সেহেতু তার ঢাকায় আগমনের তারিখ হতে (৪ মে ১৯৭২) জাতীয় কবি ঘোষণাপূর্বক গেজেট প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রস্তাব গত ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, যেহেতু কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭২ সালের ৪ মে থেকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদিত হয়েছে, সে কারণে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি ঘোষণা করা হলো এবং ইহা সকলের অবগতির জন্য গেজেট আকারে প্রকাশ করা হলো।