অনলাইন ডেস্ক :
নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উদযাপিত হলো থ্যাংকস গিভিং ডে। প্রতিবছর নভেম্বরের শেষ বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২৮ নভেম্বর এই উৎসব উদযাপন করা হয়। এ দিনে দেশ ও জাতির প্রতিটি সাফল্যের জন্য সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানান সর্বস্তরের নাগরিক। কয়েক শতাব্দী ধরেই মূলত মার্কিনদের উৎসব হলেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উত্তর আমেরিকাজুড়ে উদ্যাপন হয়ে আসছে থ্যাংস গিভিং ডে।
সর্বজনীন সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয় এ দিন। প্রতি বছরের মতো এ বছরও নিউইয়র্ক এর ম্যাসির উদ্যোগে ম্যানহাটনে এদিন অনুষ্ঠিত হয় এক বর্ণিল শোভাযাত্রা। বিশাল বর্ণাঢ্য প্যারেডে অংশ নেন হাজার হাজার নারী পুরুষ।
আমেরিকানদের পাশাপাশি বাংলাদেশি কমিউনিটিও উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটি নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে থ্যাংকস গিভিং ডে উদযাপন করে।
ইতিহাসবিদরা জানান, ১৬২১ সালের ২৬ নভেম্বর ছিল প্রথম থ্যাংকস গিভিং ডে। ১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন একটি জাতীয় ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা দিবস উদ্যাপন করার আহ্বান জানান। তিনি নভেম্বর মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ‘থ্যাংস গিভিং ডে’ হিসেবে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করেন। এরপর থেকে বন্ধুত্ব ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশে নভেম্বরের শেষ বৃহস্পতিবারেই উৎসবটি পালনের প্রথা শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গোটা উত্তর আমেরিকাতেই ছড়িয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশনের ভাষ্যমতে, ৯০ শতাংশ আমেরিকান এই দিনে টার্কি দিয়েই সারা দিনের ভোজনপর্ব সম্পন্ন করে। তবে রীতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন থেকে প্রাপ্ত একটি টার্কিকে জীবন ভিক্ষা দিয়ে সাধারণ ক্ষমা করেন প্রেসিডেন্ট। এটি ‘হোয়াইট হাউজ টার্কি পার্ডন’ নামে পরিচিত। ১৯৪৭ সাল থেকে হোয়াইট হাউজে এ রীতি প্রচলিত রয়েছে।
থ্যাংকস গিভিং ডে’র পরের দিন শুক্রবার। ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ নামে পরিচিত এই শুক্রবার ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য কোনো কালো দিন নয়। বরং বছরের সেরা মূল্য হ্রাসের দিনটি ক্রেতাদের কাছে যেমন রঙিন তেমনি পণ্য বিক্রি করে লাভবান ব্যবসায়ীদের কাছেও আনন্দঘন। কম দামে ভালো একটা কিছু কেনার জন্য দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন ক্রেতারা। সে হিসাবে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বিপনী বিতানগুলোতে।
ইউএসএ ৯৭-৯৯ : গত ১ ডিসেম্বর রোববার হয়ে গেল জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হলে ফেসবুকভিত্তিক সংগঠন ইউএসএ ৯৭-৯৯ এর থাংকস গিভিং পার্টি। গ্রুপটির অন্যতম অ্যাডমিন জামিল সারোয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর মঞ্চে আসেন অ্যাডমিন তানভীর আতাহারী। তিনি তার স্বাগত বক্তব্যে গ্রুপটি কীভাবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটা নতুন মেম্বারদের কাছে তুলে ধরেন।
এরপরে মঞ্চে আসেন আরেক অ্যাডমিন সাম শাহরিয়ার, তিনি তার বক্তব্যে গ্রুপটির বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে নতুন বন্ধুদের চাকরি পেতে সহযোগিতা, বিভিন্ন ধরনের গ্রুপভিত্তিক অনুষ্ঠান, বাংলাদেশে এবং প্রবাসে যখন বন্ধুরা অসুস্থ হয়ে পড়েন তাদের আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এই অনুষ্ঠানে এক শতাধিক লোকের সমাগম হয় এখানে গ্রুপের সদস্যরা ছাড়াও তাদের পরিবার পরিজন ছিল এবং অন্যান্য স্টেট থেকেও বন্ধুরা আসেন। গ্রুপটির অ্যাডমিন জামিল সরোয়ার বলেন, তারা গ্রুপের শুরু থেকেই যেভাবে নতুন বন্ধুদের চাকরিসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে সাহায্য করে আসছেন, এভাবেই তারা তা অব্যাহত রাখবেন আগামী দিনগুলোতে এবং সবার সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকবে এই আশা করেন। বর্তমানে চার শতাধিক সদস্য রয়েছে এই সংগঠনে। অনুষ্ঠানটি সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শুরু হলেও সময় গড়িয়ে রাত একটা পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি হয়। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী প্রতীক হাসানসহ প্রবাসের জনপ্রিয় সঙ্গীত কণ্ঠশিল্পী আফতাব জনি, খন্দকার সোহাগ। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ছিল রাফেল ড্র।
আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব : নিউইয়র্কে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে থ্যাংকসগিভিং ডে উদযাপন করেছে পেশাজীবী সাংবাদিকদের সংগঠন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব। গত ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার জ্যাকসন হাইটসে একটি পার্টি হলে এ আয়োজনে অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেনিফার রাজকুমার।
তিনি বলেন, এখন সময় হচ্ছে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার আদায়ের পথ সুগম করার। সামনের বছর নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার হিসেবে আমি ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়নের দৌঁড়ে রয়েছি। আশা করছি অতীতের মত সামনের নির্বাচনেও বাংলাদেশিদের সমর্থন পাবো।
প্রধান অতিথি শাহনেওয়াজ বলেন, সংবাদকর্মীরা বিশাল এই কমিউনিটির পথপ্রদর্শক। তারা বিগত দিনের মত অনাগত দিনেও সার্বিক কল্যাণে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা অব্যাহত রাখবেন বলে আশা করছি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দুলাল বেহেদু, নুরুল আজিম ও আহসান হাবিব।
স্বাগত বক্তব্য দেন এবিপিসিরি সাবেক সভাপতি লাবলু আনসার। সংগঠনের সভাপতি রাশেদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহ ফারুক রহমান ও রেজওয়ানা এলভিস।
অতিথির মধ্যে আরও ছিলেন ব্রঙ্কস কমিউনিটি বোর্ডে ইমিগ্রেশন বিষয়ক কমিটির চেয়ারপারসন শাহজাহান শেখ এবং শোটাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম। উপস্থিত ছিলেন, এবিপিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট আলিম খান আকাশ, কোষাধ্যক্ষ জামান তপন, নির্বাহী সদস্য কানু দত্ত, নুরুন্নাহার খান নিশা ও অনিক রাজ।
কুইন্স প্যালেসে ফ্যামিলি নাইট পার্টি : প্রবাসী বাংলাদেশিদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশে সোসাইটির নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে থ্যাংকস গিভিং ফ্যামিলি নাইট পার্টির আয়োজন করেছে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এ আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা ইশতিয়াক রুমি, এজাজুল ইসলাম নাঈম ও ন্যান্সি।
২৭ নভেম্বর উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নতুন কমিটির সবাইকে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও সংবর্ধনা দেয়া হয়।অনুষ্ঠানে সোসাইটির নবনির্বাচিত সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সিনিয়র সহসভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ সভাপতি মোহাম্মদ কামরুল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অনিক রাজ, স্কুল সম্পাদক হাসান জিলানীসহ সবাইকে বরণ করে নেয়া হয়।সঞ্চালনায় শো টাইমে মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলমের সঞ্চালনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট, সিইও এবং সেলিম আলী পরিষদের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটর আহ্বায়ক শাহনেওয়াজ। উপস্থিত ছিলেন নাসির আলী খান পল, নুরুল আজিম, রায়হান জামান, কাজী আজম, আহসান হাবীব, মহিউদ্দিন দেওয়ান, কামরুজ্জামান কামরুল, অনিক রাজ, সেজাদ রহমান, বদরুদ্দোজা সাগর, মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শাহনেওয়াজ সবাইকে থ্যাংস গিভিংস-এর শুভেচ্ছা জানিয়ে নবনির্বাচিত কমিটির সবাইকে একইসাথে মঞ্চে আহ্বান জানান এবং কমিউনিটি বিনির্মাণে সোসাইটির সবার সহযোগিতা কামনা করেন। নতুন সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন। এজন্য সব বাংলাদেশিকে পাশে থাকার আহ্বান জানান। নতুন সাধারণ সম্পাদক মো. আলী সোসাইটির কল্যাণে কাজ করার জন্য সবাইকে এগিযে আসার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে একে একে উপস্থিত বিশিষ্টজনরা এক মিনিট করে বক্তব্য দেন এবং শুভেচ্ছা জানান।
সংগীত পরিবেশন করেন রানো নেওয়াজ, কৃষ্ণা তিথি, বিন্দু কণা ও অংকন।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি : যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো প্রথমবারের মত থ্যাংক গিভিংস ডে উপলক্ষে এক ব্যতিক্রমী গেট টুগেদারের আয়োজন করে। এ গেট টুগেদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমন্বয়ক ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম শিকদার।
পরিচালনায় ছিলেন জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সমন্বয়ক মোতাহার হোসেন। অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র নেতা আবদুস সবুর, বিএনপি নেতা ডা. শাহজাহান মিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক, সাহিত্যিক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মুরাদ হাছান রেজা, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ সাজ্জাদ ,জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাবেক সভাপতি নাছিম আহম্মেদ, প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতা বাচ্চু মিয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, সৌদি বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল বাতেন, বিএনপি নেতা জাফর ছাদিক, বরিশাল জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বিএনপি নেত্রী নীরা রাব্বানী, বরিশাল ফোরাম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, হোসেন মোল্লা, মনি আক্তার, জাহিদ ইসলাম, আসাদুজ্জামান মিয়া ,তারেক ইব্রাহিম, সাইদ ইসলাম জয়,তামিম আহসান, জিসান হোসেন, নাজিম উদ্দিন, রায়হান রকিব, সাইদুর রহমান, বেলালুর রহমান. ফারুক হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক ফৈজি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জন্য দোয়া করা হয়। আরও দোয়া করা হয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডাঃ মজিবুর রহমানের মজুমদারের সুস্থতার জন্য।
এদিকে ‘৯৪ ইউএসএ’ গ্রুফ কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসে থ্যাঙ্কস গিভিং ডে উপলক্ষে গত ৩০ নভেম্বর শনিবার আয়োজন করে ‘ফ্রেন্ডস গিভিং ডিনার’ অনুষ্ঠানের। এতে এসএসসি ৯৪ ব্যাচের বন্ধু ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। অন্যদিকে সোস্যাল মিডিয়া পার্সনাল মাকসুদা আহমদও এদিবসটি পালন করেছেন ।
অনলাইন ডেস্ক :
যারা নারীদের হিজাব খুলে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করবেন তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আলী জামাদী ১৫ এপ্রিল শনিবার এমন হুঁশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করে বলেছেন, যারা এ ধরনের কাজ করবে তাদের বিচার করা হবে অপরাধ আদালতে। এছাড়া এ অভিযোগে যারা শাস্তি পাবেন তারা শাস্তির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আপিল করার সুযোগও পাবেন না।
তিনি এমন সময় এ হুঁশিয়ারি দিলেন যখন ইরানে দিনে দিনে নারীদের মধ্যে হিজাব ছাড়াই বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শপিং মল, রেঁস্তোরা, দোকান, রাস্তা এবং অন্যান্য পাবলিক এরিয়াগুলোতে হিজাব ছাড়া অসংখ্য নারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে।
ইরানের নারী অধিকারকর্মী ও তারকারা কয়েকদিন ধরে হিজাব ছাড়াই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ করেছেন। এরমাধ্যমে মূলত হিজাব না পরতে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করছেন তারা।
এসব তারকা ও নারী অধিকারকর্মীদের আকারে-ইঙ্গিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আলী জামাদী বলেছেন, ‘হিজাব খুলে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করার অপরাধের বিচার করা হবে অপরাধ আদালতে। এই আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে এবং এর বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘হিজাব খুলে ফেলার চেয়ে হিজাব খুলে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করার অপরাধের সাজা আরও কঠোর হবে। কারণ এটি দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অন্যতম পরিষ্কার উদাহরণ।’
তবে কী ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে এ বিষয়টি পরিষ্কার করে জানাননি তিনি।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনী নামের এক কুর্দি তরুণী হিজাব ইস্যু নিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন। এরপর পুলিশ হেফাজতেই মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর পুরো ইরানজুড়ে হিজাব বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ওই আন্দোলনের পরই অনেক নারী হিজাব ছাড়া বাইরে বের হওয়া শুরু করেন।
এদিকে হিজাব ছাড়া নারীদের শনাক্ত ও তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে শনিবার বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা বসিয়েছে ইরান পুলিশ। গত সপ্তাহে ক্যামেরা বসানোর ঘোষণা দিয়েছিল তারা।
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠি লেখা মার্কিন কংগ্রেসের ছয় সদস্যকে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশন’। সেখানে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির তথ্যকে অসত্য বলে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চিঠির তথ্যের সত্যতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কংগ্রেসের যে ছয় সদস্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন ব্যারি মুর, টিম বার্চেট, ওয়ারেন ডেভিডসন, বব গুড, স্কট পেরি ও কিথ সেলফ।
গত ২৬ আগস্ট ওই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ২৬৭ জন বাংলাদেশি-আমেরিকান স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, মার্কিন সরকারি উচ্চপদে কর্মরত বাংলাদেশি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণরা।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাইডেন প্রশাসনের কাছে লেখা চিঠিতে নিজের জন্মভূমি সম্পর্কে মিথ্যা ও অসম্পূর্ণ তথ্য লেখা হয়েছে।
এতে গর্বিত বাংলাদেশি হিসেবে তাদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।
চিঠিতে জানানো হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী-পুরুষের সম-অধিকার, নারী উন্নয়ন প্রগতি, ধর্মীয় সহিষ্ণুতাকে বিবেচনা না করে খুবই সংকীর্ণ আর একচোখাভাবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশনের সদস্যরা চিঠিতে মনে করিয়ে দেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীসহ বাংলাদেশবিরোধী দলগুলো বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে লবিস্ট ফার্ম দিয়ে এসব অপপ্রচার চালিয়ে থাকে। চিঠিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশি খ্রিস্টান কমিউনিটি প্রধানের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সবাই সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের শন্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা এবং অর্জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের হয়ে শান্তিরক্ষা করতে গিয়ে বিদ্রোহীদের হাতে নিহতদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনার কারণে এত বিশাল অবদান আর আত্মত্যাগ কি অস্বীকার করবে জাতিসংঘ? জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের উজ্জ্বল অংশগ্রহণকে নিষিদ্ধ করা কোনোভাবেই নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বমানবতা রক্ষায় ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেয়। এত বিশাল সংখ্যক উদ্বাস্তু পৃথিবীর আর কোনো দেশ একসঙ্গে আশ্রয় দেয়নি উল্লেখ করে মানবতা রক্ষায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও প্রধানমন্ত্রীর অবদান তুলে ধরা হয়। শেখ হাসিনা নিজ দেশের স্বার্থের কথা না ভেবে এত বিশাল সংখ্যক অসহায় উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘ থেকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃত হন।
গণতন্ত্র নস্যাতের অভিযোগের জবাবে বাংলাদেশি আমেরিকানদের সংগঠন অতীতের গণতন্ত্র ধ্বংসকারী বিএনপি-জামায়েত-শিবিরের সন্ত্রাস ও একনায়কতান্ত্রিক শাসনের কথা উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, আমেরিকান হিসেবে তারা ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করছে, কিন্তু তার পরও আমেরিকা গণতন্ত্র ব্যবস্থা, মানবিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সে তুলনায় ৫২ বছর বয়সী বাংলাদেশের চেষ্টাটি প্রশংসার দাবি রাখে কি না, সেই প্রশ্ন রাখা হয়েছে চিঠিতে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং মানবতা উন্নয়নের চারটি দিক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই দুর্নীতি দমনে কার্যকর ও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের নানা পর্যায়ে দুর্নীতি কমে আসছে ক্রমান্বয়ে। দীর্ঘ সময় অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি ও অন্যান্য স্বৈরশাসকের আমলে দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে বিস্তার লাভ করেছিল যে রাতারাতি তা নির্মূল করা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ সামরিক শাসকদের দুঃশাসন ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত বাংলাদেশ ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসে। ইতিহাস থেকে আমরা জানি, দীর্ঘদিন সামরিক শাসিত একটি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কোনো সহজ কাজ নয়। তার পরও বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক মানের গণতান্ত্রিক ভাবধারায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে।
তৃতীয়ত, রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক বিরোধী মতকে দমন-নিপীড়ন ও হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ও সামরিক শাসকদের আমল থেকে। সেখান থেকে বাংলাদেশকে আইনের শাসনে ফিরিয়ে এনে সন্ত্রাস-মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ দেখিয়ে বাংলাদেশ সুশাসনের ধারায় ফিরছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
চতুর্থত, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মার্কিন বন্ধুদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে আবার যদি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে এ অঞ্চলে মৌলবাদের বিস্তার লাভ করবে আগের মতো। যা প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। ২০০১-০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারের ছত্রচ্ছায়াতেই এ অঞ্চলে ইসলামী জিহাদি আর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যে।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস গত সোমবার কমিউনিটি অপ-এডে লিখেছেন, তিন বছর আগে আমি আপনার মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার মুহূর্ত থেকে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো নিরাপদ রাস্তা, নিরাপদ পাতাল রেল এবং নিউইয়র্ক পরিবারের জন্য একটি নিরাপদ শহর তৈরি করা। এর অর্থ হলো অস্ত্র সহিংসতার ইস্যুটিকে সামনের দিকে মোকাবেলা করা এবং অপরাধীদের আরো দমন করার আগে তাদের হাত থেকে অবৈধ অস্ত্রগুলো বের করার জন্য কাজ করা।
আমি গর্বিত যে আমাদের প্রশাসন আমাদের রাস্তা থেকে এবং আমাদের কমিউনিটির বাইরে অস্ত্র কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমরা প্রথম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত সপ্তাহে পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছি। এই ২০,হাজার অস্ত্র আর আমাদের প্রতিবেশী, আমাদের পরিবার এবং আমাদের শিশুদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি দেয় না; একজন নিউইয়র্কবাসীকে গুলি বা হত্যা করার সম্ভাবনা কম। এই পরিসংখ্যানটি শুধুমাত্র একটি বড় সংখ্যার চেয়েও বেশি- এটি আমাদের শহরের জন্য একটি বড় মাইলফলক এবং সঠিক দিকের একটি স্পষ্ট পরিবর্তন।
আমরা আগের তিন বছরের সময়ের তুলনায় ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমাদের রাস্তা থেকে আরও ৩ হাজার অস্ত্র তুলে নিয়েছি। আমরা যে ২০ হাজার অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছি, তার মধ্যে ১ হাজার চার শোর বেশি গোস্ট গান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে- যা খুঁজে পাওয়া যায় না এমন আগ্নেয়াস্ত্র। এসব আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা এবং কিনতে পাওয়া খুব সহজ। আমরা আমাদের রাস্তা থেকে বিপজ্জনক অস্ত্রগুলো সরিয়ে ফেলছি এবং আমাদের কমিউনিটিগুলোকে নিরাপদ রাখছি- এবং আমাদের কৌশল কাজ করছে।
পরপর তিন বছর খুন ও গোলাগুলির সংখ্যা দ্বিগুণ সংখ্যায় হ্রাস পেয়েছে: মানুষ খুন প্রায় ২৩ শতাংশ কমেছে এবং গোলাগুলি ৪২ শতাংশেরও বেশি কমেছে। এর মানে হলো আমরা ২৬৮ অতিরিক্ত জীবন বাঁচিয়েছি এবং ১,৫০০ কম গুলির শিকার দেখেছি।
গত বছর ব্রুকলিনের ইতিহাসে সর্বনিম্ন পরিমাণে বন্দুক সহিংসতা দেখা গেছে। অন্যদিকে পুরো শহরজুড়ে ডিসেম্বরে সামগ্রিক অপরাধ ১৫ শতাংশ কমেছে। বন্দুক সহিংসতা নির্মূলে আমাদের অবিচল মনোনিবেশের কারণে, নিউইয়র্ক সিটি আমেরিকার সবচেয়ে নিরাপদ বড় শহর হিসেবে অবিরত রয়েছে।
আমরা নতুন বছর শুরু করার সাথে সাথে আমাদের অগ্রাধিকার একই থাকে: বন্দুক সহিংসতা মোকাবেলা করা এবং আমাদের শহর থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র অপসারণের মাধ্যমে নিউইয়র্কবাসীদের নিরাপদ রাখা। এনওয়াইপিডি অফিসাররা ইতিমধ্যেই ২০২৫ সালের প্রথম কয়েক সপ্তাহে ৩৫০ টিরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছেন। তবে আরও এগিয়ে যেতে আমরা করতে পারি এবং আমরা করব।
গত কয়েক মাসে, আমরা এলোমেলো সহিংসতা দেখেছি যা অনেক নিউইয়র্কবাসীকে নাড়া দিয়েছে। আমরা সকলেই জানি যে নিরাপত্তা কেবল পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি কিছু – মানুষ অবশ্যই নিরাপদ থাকবে এবং তাদের অবশ্যই নিরাপদ বোধ করতে হবে। সেই পরিচিত নীল ইউনিফর্মের উপস্থিতির চেয়ে উপলব্ধিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য আর কিছুই ভাল কাজ করে না। তাই, নিউইয়র্কবাসীকে সুরক্ষিত রাখতে আমরা রাতভর প্রতিটি সাবওয়েতে দুইজন অফিসারসহ টহলের জন্য শত শত অতিরিক্ত পুলিশ অফিসারকে নিযুক্ত করছি।
এটি তিন বছর আগে আপনাদের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি ছিল এবং আজও রয়েছে। যখন অন্যরা পুলিশকে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিল, আমি তাদের রক্ষা করেছি, কারণ আপনার সুরক্ষার জন্য লড়াই করার জন্যই আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। নিউইয়র্ক সিটিকে আরও নিরাপদ করতে অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা, পাচারের পাইপলাইনগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং গুলিবর্ষণের আগেই গুলি প্রতিরোধ করার মতো বিভিন্ন কাজে এনওয়াইপিডি কঠোর পরিশ্রম করতেই থাকবে।
আমি এই মাসের শুরুর দিকে আমার স্টেট অফ দ্য সিটি ভাষণে বলেছিলাম, আমাদের অবশ্যই নিউইয়র্ক সিটিকে একটি পরিবার গড়ে তোলার জন্য বিশ্বের সেরা জায়গা বানাতে হবে। এটি শুরু হয় আমাদের পরিবারের জন্য নিরাপদ হাঁটার রাস্তা, নিরাপদ ট্রানজিট চালানো এবং খেলার জন্য আরও নিরাপদ পার্ক দিয়ে। আমরা আমাদের রাস্তা থেকে যে বন্দুক জব্দ করি তা আমাদের সেই লক্ষ্যের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। প্রতিদিন আমি আমাদের শহর ও আমাদের দেশে বন্দুক সহিংসতা বন্ধ করতে কাজ চালিয়ে যাব।
অনলাইন ডেস্ক :
সম্প্রতি বাংলাদেশের বগুড়া জেলা কারাগারের ছাদ ফুটো করে ৪ কয়েদি পালিয়ে যায়। তারা চারজন ছিলেন ফাঁসির আসামি। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে অবশ্য তাদের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পালানোর কয়েক ঘণ্টা মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এবার পাকিস্তানের একটি কারাগারের টয়লেট ভেঙে বিচারাধীন তিনজন কয়েদি পালিয়ে গেছেন। ২ জুলাই মঙ্গলবার কোয়েটা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের বেলুচিস্তানের কেন্দ্রীয় শহর দুকির একটি সাবজেল থেকে এই তিনজন আসামি পালিয়ে যান। এ নিয়ে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে দেশটিতে দ্বিতীয়বারের মতো জেল পালানোর ঘটনা ঘটলো। খবর দ্য ডনের।
দুকি থানার এসএইচও জলিল আহমেদ মারি জানান, ডাকাতি ও খুনসহ গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত তিনজন কয়েদি টয়লেটের ভেন্টিলেটর ভেঙে দুকি কারাগার থেকে পালিয়ে গেছেন। এই কারাগারে রাখা ১৩ জন বিচারাধীন কয়েদিকে সকালে টয়লেট ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হয়। তখন ওই তিনজন পালিয়ে যায়।
তিনি জানান, জেল পালানো কয়েদিরা হলেন, আসমাতুল্লাহ, আবদুল কবির ও মুহাম্মদ সাদিক। তাদের ধরতে ইতোমধ্যে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।
এ ঘটনায় কয়েদিদের নজরদারির কাজে নিয়োজিত কারা ওয়ার্ডেন ও দুই পুলিশসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনজন পুলিশ সদস্য হলেন- ওয়ার্ডেন গুল খান, হেড কনস্টেবল আব্দুল গনি ও কনস্টেবল ইসমাইল মারি। তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বেলুচিস্তানের কারা মহাপরিদর্শক এ ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত ৩০ জুন রবিবার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনসহ ১৯ কয়েদি আজাদ কাশ্মিরের রাওয়ালাকোটের একটি কারাগার থেকে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের মধ্যে একজন কয়েদি আহত হয়েছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় বেনু রাজ্যে বন্দুকধারীদের চারটি পৃথক হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। গতকাল রবিবার রেড ক্রসের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
নাইজেরিয়ার জোস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত শনিবার রাতে চারটি গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মধ্য নাইজেরিয়ায় জমি ব্যবহার নিয়ে যাযাবর গবাদি পশুপালক এবং কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষ সাধারণ ঘটনা। বেনু রাজ্যের রেড ক্রস কর্মকর্তা অ্যান্থনি আবাহ এএফপিকে বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনে বিভিন্ন হামলায় কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।’
রেড ক্রসের মাঠ পর্যায়ের দুর্যোগ কর্মকর্তাদের তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, উকুমে আটজন, লোগোতে নয়জন, গুমা ও কোয়ান্ডেতে তিনজন করে নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পুলিশের এক মুখপাত্র বলেছেন, হামলার বিষয়ে তিনি অবগত নন।
একটি রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার সেফাস কাঙ্গেহ এএফপিকে বলেন, তিনি তিনটি হত্যার কথা শুনেছেন, যার মধ্যে একটি মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় অতর্কিত হামলায় এক দম্পতি নিহত হয়েছেন।
সাম্প্রতিক কিছু হামলা এমন এলাকায় চালানো হয়েছে যেখানে এক মাস আগেও হামলা হয়েছিল এবং হামলায় কমপক্ষে ৫৬ জন নিহত হয়েছে। ধর্মীয় উত্তেজনায় টালমাটাল এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
এপ্রিলের শুরুতে পার্শ্ববর্তী মালভূমি রাজ্যে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের দুইটি হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।