চলারপথে ডেস্ক :
নির্বাচনে অনিয়ম করে কেউ জয়ী হওয়ার পর ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হলেও তা বাতিলের ক্ষমতা পাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এমন ইঙ্গিত দেন।
তিনি জানান, গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ভোট বাতিলের ক্ষমতা সংক্রান্ত ওই সংশোধনী প্রস্তাবে আইন মন্ত্রণালয়ের সায় মিলেছে।
আরপিও সংশোধনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক এ জেলা জজ বলেন, দুয়েকটি জায়গায় আরো চিন্তাভাবনা করার জন্য আইন মন্ত্রণালয় বলেছিল। ইভিএমে আঙুলের ছাপ মেলে না, তাই ১ শতাংশ ভোটারের ভোট প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার আঙুলের ছাপ ব্যবহারের বিষয়টি আমরা নির্ধারিত করে দিতে চাচ্ছিলাম। আইনে এক শতাংশের বেশি অনুমোদন করবো না, এমনটি আসুক। উনারা (আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা) জানালেন, এটা বিধিমালা দিয়ে আওতায় আনা সম্ভব। এ বিষয়টিতেই তারা আপত্তি করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের গেজেট হওয়ার পর অনিয়ম হলে আরপিওতে কোনো কিছু করার ক্ষমতা নাই। বন্ধ করা বা এ সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য সংশোধনীর প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম। যাতে ফলাফল ঘোষণার পর ক্ষমতা কমিশনের হাতে থাকে। কিন্তু উনারা বললেন, ৯১ (ধারা) দিয়েই কাভার হচ্ছে। কিন্তু তা হয় না আমরা জানি। উনাদের যুক্তিটা তুলে ধরলাম।
বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, আমি কমিশনে যোগ দেওয়ার পর একটি ফাইল এলো। ময়মনসিংহের দুর্গাপুরে একটা নির্বাচনে হয়ত ব্যালট ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল। তখন কমিশন গেজেট হওয়ার পর ভোট বাতিল করেছিল। কিন্তু মাননীয় হাইকোর্ট বললেন, গেজেট হওয়ার পর কমিশনের করার কিছু থাকে না। আমরা এজন্য কমিশনের হাতে ক্ষমতা যেন থাকে; প্রস্তাব করেছিলাম। উনারা জানতে চাইলে আমরা এই ঘটনাটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম।
গেজেট হওয়ার পরে ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে, তার আগে তো পারা যাবে না। যখন একজন হারবেন, তিনি আইনের আশ্রয় নিতেই পারেন, উনার অধিকার। তখন কোর্ট কমিশনের কাছে ব্যালট চাইলেন। কিন্তু সেটি তো উদ্ধার হয়নি। কখন কার কাছে চলে গেছে। তো যেটা উদ্ধার হয়নি, সেটা কীভাবে কোর্টকে দেবে? এক্ষেত্রে তো কমিশনের কিছু করার থাকবে না। এই রকম পরিস্থিতি যদি সামনে আসে কমিশনের হাতে অবশ্যই একটা ক্ষমতা থাকা উচিত যাতে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া যায়। কারণ, যিনি ডিপ্রাইভড হলেন বলে মনে করেন, তার তো ক্ষতিপূরণের জায়গা নেই। এই কারণে আমরা সংশোধন আনার প্রয়োজন মনে করেছি।
এ নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের যারা বৈঠকে ছিলেন তারা আমাদের জাস্টিফিকেশনে খুশি। তারা বলছেন আর কোনো অসুবিধা নেই। এখন কেবিনেটে যাবে। পাশ হবে সংসদে। এটাই উনারা পাঠাবেন। ভেটিংয়ে আর বাদ যাচ্ছে না। কেবিনেট থেকে সংসদে যাবে। উনারা যদি মনে করেন কোনটা রাখবো, কোনটা রাখবো না, এতে তো কারোরই কিছু বলার নাই। আইন মন্ত্রণালয়েরও প্র্যাকটিক্যালি কিছু করার থাকবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রত্যেকটা নির্বাচনে আমরা বলেই দেব কত শতাংশ ভোটারের আঙুলের ছাপ না মিললে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তার আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে ইভিএমের ব্যালট ইউনিট ওপেন করতে পারবেন। কেননা, যার আঙুল নেই তাকে তো ভোট দেওয়ার সুযোগটা দিতে হবে। ১ শতাংশ একটি জাস্টিফাইড সংখ্যা। প্রতি নির্বাচনের আগে বিধি দ্বারা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। অতীতে নাকি ৫ শতাংশও দেওয়া হয়েছিল; এমন অভিযোগ অনেকে করেন। কাজেই জাস্টিফাইড একটা সংখ্যা দিলে কেউ আর বলতে পারবে না তাই আমরা ১ শতাংশ দিতে চেয়েছিলাম।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসিনি। প্রত্যেক ভোটের আগে আমরা সার্কুলার দিয়ে দিতে পারবো। কমিশন যখন সার্কুলার দেয় সেটাও কিন্তু আইন। আমরা আরপিওতে পাচ্ছি না, তবে বিধি দিয়ে করতে পারবো। আমরা সার্কুলার দিয়েই আগে করেছি। একটা পরিপত্র দিয়ে দিলেই হবে।
ভোটে সাংবাদিকদের দূরে রাখার বিষয়ে কমিশনার বলেন, সাংবাদিকদের দূরে রাখতে চাই না। রংপুরে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা আমরা দিইনি। কোথা থেকে যে হলো আমি নিজেও জানি না। হয়তো আগের কোনো নির্দেশনায় ছিল। সম্ভবত মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছিল। আমরা আপনাদের জন্য আরপিওতে ব্যবস্থা রাখছি। যন্ত্র কেড়ে নিলে শাস্তির প্রস্তাব করেছি।
চলারপথে রিপোট
নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রাম ও মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজবাড়ীয়া গ্রামের একমাত্র সংযোগ সেতুটি ১০ বছর ধরে ভেঙে থাকার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষকে। সেতুটি ভাঙার প্রায় ১০ বছর পার হলেও এখনো সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। নারী-পুরুষ, বয়স্ক মানুষ, রোগীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দায়িত্বশীল কেউ উদ্যোগ নেয়নি সেতু মেরামতের বা নির্মাণের। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার বাসিন্দা সেতুটি পারাপার হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে দুই ইউনিয়নের সংযোগ এই সেতু ভেঙে আছে। লোকজন থেকে কিছু টাকা তুলে কাঠ দিয়ে সেতুটি প্রতিবছর সংস্কার করা হয়। কিন্তু অনেক গাড়ি ও লোকজন চলাচল করায় কাঠ দিয়ে সংস্কার করলে বেশিদিন টিকে না। ফলে গ্রামীণ জনপদের লোকজন ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। এই সেতুটি বছরের পর বছর পার হলেও নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙা ওই সেতু দিয়ে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যানগাড়িসহ যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ ছাড়াও ভারী যানবাহন চলাচল না করতে পারায় অনেকেই দুর্ভোগে পড়ছেন।
মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজা বাড়িয়া গ্রামের আব্দুল বারেক হাওলাদার বলেন, ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটা অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।
রানাপাশা ইউনিয়নের ইসালাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ বলেন, সেতুটির জন্য হাজার হাজার মানুষ বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে কেউ নতুন করে সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে না।
অটোরিকশা চালক দেলোয়ার হাওলাদার ও রাজ্জাক ফকির বলেন, আমাদের প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা পারাপার করতে হয়। এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নে যেতে এই সেতুটি ব্যবহার করতে হয়। কিছুদিন আগে এই সেতু দিয়ে একটি টমটম পার হতে গিয়ে উল্টে যায়। আমরা গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে তারপর গাড়ি পার করি। এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মোল্লারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেএম মাহাবুবুর রহমান সেন্টু বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু কিছু কাছ অসমাপ্ত রয়েছে। এই সেতুটির কারণে দুই ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নলছিটি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইকবাল কবীরের সঙ্গে সেতুর বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ঝালকাঠি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকার বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে আন্ডার হান্ড্রেড মিটার প্রকল্পের আওতায় ওই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনুমোদন পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের দেশীয় খেলাধুলাগুলোর চর্চা বেশি বেশি করে করা উচিত। এই খেলাধুলার মধ্য দিয়ে শরীরচর্চা হয়। খেলাধুলা হলে বাচ্চাদের মধ্যে ছোটবেলা থেকে ঐক্যের মনোভাব গড়ে ওঠে। তাই আমরা এ বিষয়ে আরো বেশি মনোযোগী হয়েছি।
ছেলে এবং মেয়েদের জন্য বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা টুর্ণামেন্ট শুরু করেছি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও খেলাধুলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও সেভাবে গড়ে তুলতে হবে।’
দেশের সব বিভাগীয় শহরেই একটি করে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) কেন্দ্র করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খেলাধুলায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হলে উন্নত প্রশিক্ষণ দরকার।
এ জন্য দেশের সব বিভাগীয় শহরে একটি করে বিকেএসপি করা হবে। ইতিমধ্যে এর কাজও শুরু হয়েছে।’
আজ ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখন প্রশিক্ষক তৈরি করতে হবে।
সে জন্য প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে একটা করে বিকেএসপি গড়ে তুলতে হবে। এটা আটটা বিভাগে আটটা হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ছোটবেলা থেকে ভালো ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে তারা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা খুবই এগিয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে।
ফুটবলে ভুটানকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে। আমরা প্রত্যেক উপজেলায় খেলার মাঠ, মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করছি। আরো কয়েকটা বাকি আছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মিনি স্টেডিয়াম করেছি একটা লক্ষ্য নিয়েই যে খেলাধুলা হবে, প্রতিযোগিতা হবে। আমি মনে করি, লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার আয়োজন করলে ছেলে-মেয়েরা মন-মানসিকতায় উদার হবে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে।’
খেলাধুলার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা নিজে খেলাধুলার প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন। জাতির পিতার উদ্যোগেই এই শীতকালে শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। জাতির পিতার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের পরিবারটি সব সময় খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। আমার বাবাও নিজে ফুটবল খেলতেন। আমার ভাই কামাল এবং জামাল নিজেও খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।’
স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. অলীউল আলম, রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. হুমায়ুন কবির, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী ড. মুহম্মদ মনিরুল হকসহ দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, শিক্ষা অফিসার ও ক্রীড়া কর্মকর্তরা উপস্থিত হয়েছেন।
‘খেলাধুলায় স্মার্ট দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা সমিতি ৫২তম এই শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। গত জানুয়ারিতে সারা দেশে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে প্রায় সাত লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে চূড়ান্ত পর্বের খেলায় অংশগ্রহণে সারা দেশের ৮২৪ জন রাজশাহী এসেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী এর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে।
ছয় দিনব্যাপী এই ক্রীড়াযজ্ঞের সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
এই প্রতিযোগিতায় ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা ইভেন্টে অ্যাথলেটিকস, দৌড়, বর্শা নিক্ষেপ, দীর্ঘ লাফ, চাকতি নিক্ষেপ, গোলক নিক্ষেপ, দড়ি লাফ ইভেন্টসহ হকি, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন একক ও দ্বৈত, সাইক্লিং ইভেন্টে জাতীয় স্কুল, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির শীতকালীন খেলার মহারণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এই আটটি ডিসিপ্লিনে সারা দেশ থেকে আট শতাধিক ছাত্রছাত্রী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। চূড়ান্ত পর্বে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে- চারটি ফুলের নামে।
এগুলো হলো- রাজশাহী ও দিনাজপুর ‘চাঁপা’ অঞ্চল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ ‘পদ্ম’ অঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা ‘বকুল’ অঞ্চল এবং খুলনা ও বরিশাল ‘গোলাপ’ অঞ্চল। বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নানা ধরনের ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা দূরে সরিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট যথোপপযুক্ত হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘(বাজেট সম্পর্কে) কে কি বলছে তা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই। আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার জন্য আমরা একটি উপযুক্ত বাজেট ঘোষণা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আজ ৩ জুন শনিবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন (ঢাকা জেলা ও ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যালয়) উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগরের হাজার হাজার উৎসাহী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাদের দলীয় প্রধানকে দেখতে সমবেত হওয়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি একটি মহাসমাবেশে পরিণত হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ আমাদের পক্ষে আছে। তাই, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
প্রায় ৭.৬২ লাখ কোটি টাকার এত বিশাল বাজেটের বাস্তবায়নে যারা শঙ্কিত, তাদের কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর বাজেট পাশের আগে কেউ কেউ বলেন, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব না। কিন্তু, আমরা প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এমপি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান, এমপি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। সূত্র : বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
সাবিয়া আক্তার মুমুকে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন বাবা মোহাম্মদ লোকমান। ফেরার পথে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইমামনগর স্কুলের সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেকটি প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দেয়।
এসময় প্রাইভেটকারটি লোকমানের মোটর সাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ দুর্ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার।
বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জানে আলম বলেন, নিহত লোকমানের মেয়ে সাবিয়া আক্তার মুমু চলতি বছর ভাটিয়ারীর সাজেদা আলম বিদ্যানিকেতন থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ফৌজদারহাট কেএম হাই স্কুল কেন্দ্রে তার পরীক্ষা হচ্ছে। মঙ্গলবার তার বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা ছিল। লোকমান মেয়েকে মোটর সাইকেলে কেন্দ্রে পৌঁছে দেন। পরে তিনি বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে ভাটিয়ারী ইমামনগর স্কুলের সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে লোকমান গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পরীক্ষা চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পাঁচ স্কুলের ২২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অনেকে আবার ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে যায়।
আজ ৭ জুন বুধবার সকালে উপজেলার গৌরীপুর সুবল আলতাফ, বিলকিস-মোশাররফ, চিনামুড়া, চশই ও তিতাসের নারান্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মিন্টু সরকার বলেন, সারাদেশের ন্যায় একযোগে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমে দুইজন শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আরও চার স্কুলের ১৪ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাদেরও হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আলম, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আকতার, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর অব. মোহাম্মদ আলী সুমন, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিনুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জিয়াউর রহমান, মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর ভূঞা। তারা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নেন।
ডিসি শামীম আলম বলেন, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারা দেখেছেন। অসুস্থদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছে। বাকিরাও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আকতার বলেন, গৌরীপুর স্কুলসহ আরও পাঁচটি স্কুলের ১৭ জন শিক্ষার্থী তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের দেখে অন্য শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ২২ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ জন। বাকি পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গৌরীপুর সুবল আলতাফ উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে উম্মে হাবিবা (১২) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে তার।