জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি: সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক, 8 December 2024, 326 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিদ্রোহী যোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তার দেশ ছাড়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আজ ৮ ডিসেম্বর রবিবার এসব কথা বলেন তিনি। খবর-আল জাজিরার

banner

তিনি জানান, নিজের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই তার। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখতে কাজ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি আরও বলেন, এই দেশটি একটি স্বাভাবিক দেশ হতে পারে যেটি তার প্রতিবেশী এবং বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে। তবে এটি সিরিয়ার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে। আমরা এটিকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত। এসময় জনগণকে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার আহ্বানও জানান তিনি।

এদিকে বিদ্রোহী দলের প্রধান জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে।

সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠীগুলো সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে বলছে, ‘আমাদের বাহিনী রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আমরা সেদনায়া কারাগারে অত্যাচারের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। এই কারাগারের সব বন্দীদের মুক্ত করে দিয়েছি।’

Leave a Reply

ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৬৩৯জন নিহত

অনলাইন ডেস্ক : ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত Read more

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

২০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ইসরাইল মুক্তি দিল

আন্তর্জাতিক, 25 January 2025, 298 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে গাজায় চলছে বন্দি বিনিময়। ফিলিস্তিনি ২০০ বন্দির বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হলো ৪ ইসরাইলি সেনাকে। আন্তর্জাতিক সংস্থা রেড ক্রসের মাধ্যমে চার নারী জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তিপ্রাপ্তদের হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

banner

২৫ জানুয়ারি শনিবার এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, ফেরত আসা চার জিম্মি বর্তমানে আইডিএফের বিশেষ বাহিনীর সঙ্গে ইসরাইলে ফিরছেন। সেখানে প্রথমে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। বিবিসি।

এদিকে জিম্মি ওই চারজন এবং তাদের পরিবারের গোপনীয়তাকে সম্মান জানাতে সবার প্রতি অনুরোধ করেছে আইডিএফের এক মুখপাত্র। সেখানে ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনীর কমান্ডার এবং সৈন্যরা ফেরত আসা জিম্মিদের স্বাগত জানায়। তারা এখন ইসরাইলে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাচ্ছেন।

মুক্তি পাওয়া চার নারী সেনা হলেন লিরি আলবাগ (১৯), কারিনা আরিয়েভ (২০), ডেনিয়েলে গিলবোয়া (২০) এবং নামা লেভি (২০)। ইসরাইলের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম কান জানিয়েছে, তাদের ইসরাইলি আইডিএফের একটি বিশেষ সামরিক ইউনিটের যোদ্ধাদের সঙ্গে রেইমের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার কাছে নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটি থেকে ইসরাইলের একটি সামরিক নজরদারি ইউনিটের এই চার নারী সদস্যকে আটক করে নিয়ে যায় হামাস। এর আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ইসরাইলি চার নারী সেনাকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছিল হামাস।

অন্যদিকে ইসরাইলি দুই কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের দুই গ্রুপকে মুক্তি দেওয়া হবে। বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হলে গাজার নেটজারিম করিডোর থেকে সরে যাবে ইসরাইলি বাহিনী। এর ফলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তরে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পথ সুগম হবে। আল জাজিরা জানিয়েছে, উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিরা এরই মধ্যে তাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছে এবং নেটজারিমের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের কয়েক মাসের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর গত সপ্তাহে গাজায় দ্বিতীয়বারের মতো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। পাঁচদিন পর স্থানীয় সময় রোববার বেলা সোয়া ১১টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম দফায় ওইদিন তিন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিপরীতে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেয় ইসরাইল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে আক্রমণ করে।

ইসরাইল সরকারের তথ্য মতে, অতর্কিত হামলায় ওইদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।

কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ওই বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে প্রথম যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। সাতদিনের যুদ্ধবিরতিকালে ১১০ জন বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিপরীতে ইসরাইল ২৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়, যাদের সবাই নারী ও শিশু। প্রায় ১৫ মাস পর গত সপ্তাহে দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী ছয় সপ্তাহের মধ্যে হামাসের হাতে থাকা ৩৩ ইসরাইলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইল তাদের হাতে আটক কয়েকশত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। এই হিসাবে হামাস আগামী পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে আরও ২৬ জন বন্দি মুক্তি দেওয়ার কথা।

বেলুচ বিদ্রোহীদের হামলায় ৯০ পাকিস্তানি সেনা নিহত : বিএলএর দাবি

আন্তর্জাতিক, 17 March 2025, 165 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বেলুচ বিদ্রোহীদের হামলায় রবিবার একটি সামরিক বহরে থাকা মোট ৯০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। তবে, পাকিস্তানের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হামলায় মাত্র পাঁচজন আধাসামরিক সদস্য নিহত হয়েছেন।

banner

বিএলএ জানায়, তারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর একটি বহরকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা চালিয়েছে। রকশান মিলের কাছে, আরসিডি মহাসড়কে, নোশকির এলাকায় এ হামলা চালানো হয়।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী দাবি করেছে, বহরটি আটটি বাস নিয়ে গঠিত ছিল, যার মধ্যে একটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে বিস্ফোরণে।

বিএলএ আরো জানায়, তারা পরিকল্পিতভাবে বহরের সব সেনাকে হত্যা করেছে, যার ফলে শত্রুপক্ষের মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০ জনে।

পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর এএফপিকে বলেন, “বহরটি সাতটি বাস নিয়ে তাফতান সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। নোশকির কাছে এক বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি বাসের একটির সঙ্গে ধাক্কা খায়, যার ফলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।”

বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি হামলাটির নিন্দা জানিয়েছেন।

এর আগে ১২ মার্চ মঙ্গলবার মাশকাফ টানেলের কাছে, কোয়েটা থেকে ১৫৭ কিলোমিটার দূরে, এক নজিরবিহীন জিম্মি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) সদস্যরা জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালিয়ে ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রীকে জিম্মি করে।

সেনাবাহিনী আরো জানায়, নিহত বিদ্রোহীদের মধ্যে কয়েকজন আত্মঘাতী হামলাকারী ছিল, যাদের স্নাইপার দিয়ে হত্যা করা হয়, যখন তারা জিম্মিদের মধ্যে বসে ছিল। সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া

ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 29 April 2023, 2429 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
১ মে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

banner

প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ২৮ এপ্রিল স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে ওয়াশিংটন ডিসির ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান।

ওয়াশিংটন ডিসিতে ৭ দিনের সফর শেষ করে তিনি যুক্তরাজ্য ও কমনওয়েলথ রাজ্যের রাজা ও রানী হিসাবে তৃতীয় চার্লস এবং তার স্ত্রী ক্যামিলার রাজ্যাভিষেকে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৪ মে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ চার্টার্ড ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি১৪০৩) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

কাল ফের ভোট, এরদোয়ানকে কেনো চান তুরস্কের বেশিরভাগ মানুষ?

আন্তর্জাতিক, 27 May 2023, 1269 Views,

অনলাইন ডেস্ক :

banner

গত ১৪ মে তুরস্কের আলোচিত নির্বাচনে কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৫০% এর বেশি ভোট পাননি। তাই আগামীকাল রবিবার আবারও অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। তুরস্কের ইতিহাসে তো বটে বিশ্বের চোখ থাকবে কালকের নির্বাচনের দিকে। তবে প্রথম দফার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় এগিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তবে কালকের নির্বাচনে ৫০% পেতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই। যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন।

এদিকে তুরস্ককে দীর্ঘ সময় ধরে শাসন করছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এরপরও দেশটির বেশিরভাগ মানুষ তাকে ভালোবাসেন। প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে তারা তাকে ভোট দেন। কিন্তু, তারা কেন এমনটা করেন। কারণ, দু’দশক সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার পর এবং এক ডজনেরও বেশি নির্বাচনের পর এরদোয়ান জানেন কীভাবে সবকিছু সামাল দিতে হয়। ইস্তাম্বুলে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের এক সম্মেলনে তাকে কাছে পেয়েও মানুষের যেন আশ মিটছিল না।

এরদোয়ান মূলত তার প্রজাবৎসল নীতি, নৈতিকতা, কঠোর ব্যক্তিত্ব ও ধর্মীয় মতবাদের মাধ্যমে তুরস্কের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তার ইশারা মতো ট্যাক্সি ড্রাইভাররা উল্লাস করছিলেন, হাততালি দিচ্ছিলেন – এবং তার নির্দেশ মতোই তারা বিরোধীদের প্রতি দুয়ো দিচ্ছিলেন। তবে বিরোধীরাও কম যান না। তারাও চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছেন। কাল কি হবে সেটা শুধুমাত্র ভোটাররাই বলতে পারেন।

সম্মেলনের স্থানটি ছিল বসফরাসের উপকূলে ইস্তাম্বুলের একটি কনভেনশন সেন্টার, যেটি নির্মিত হয়েছিল এরদোয়ান ওই শহরের মেয়র থাকাকালীন সময়ে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট যখন তার ভাষণ শেষ করেন, সমাবেশের উত্তেজনা তখন তুঙ্গে: “এক জাতি, এক পতাকা, এক মাতৃভূমি, এক দেশ।” ততক্ষণে অনেক বয়স্ক ড্রাইভার উত্তেজনায় উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলছিলেন ওপরের দিকে, কিংবা হাত তুলে প্রেসিডেন্টকে স্যালুট করছিলেন।

মাথায় স্কার্ফ আর রক্ষণশীল পোশাক পরে আয়েশে ওজদোয়ান ওই সমাবেশে গিয়েছিলেন তার ট্যাক্সি ড্রাইভার স্বামীর সঙ্গে।

এরদোয়ানের সমর্থকরা বলছেন, তার কারণে তাদের জীবন উন্নত হয়েছে
তার নেতার ভাষণের প্রতিটি শব্দ যাতে তিনি শুনতে পান সে জন্য বেশ আগেই মিটিংয়ে হাজির হয়েছিলেন। সিটের পাশে ছিল একটি ক্র্যাচ। তার হাঁটতে কষ্ট হয়, কিন্তু তারপরও তিনি ওই সমাবেশে না গিয়ে থাকতে পারেননি।

“এরদোয়ান আমার কাছে সবকিছু,” বিস্তৃত হাসি দিয়ে বলছিলেন তিনি। “আমরা আগে হাসপাতালে যেতে পারতাম না, কিন্তু এখন আমরা সহজেই সেবা পাই। আমাদের এখন পরিবহন ব্যবস্থা আছে। তিনি রাস্তাঘাট উন্নত করেছেন। মসজিদ নির্মাণ করেছেন। দ্রুত গতির ট্রেন আর পাতাল রেল দিয়ে তিনি দেশকে উন্নত করেছেন।”

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ভাষণে জাতীয়তাবাদী বক্তব্য ছিল ওই সমাবেশের অনেকের কাছেই বেশ আকর্ষণীয়। এদেরই একজন হলেন ৫৮-বছর বয়সী কাদির কাভলিওলু, যিনি গত ৪০ বছর ধরে মিনিবাস চালাচ্ছেন। “যেহেতু আমরা আমাদের মাতৃভূমি ও জাতিকে ভালবাসি, তাই আমরা দৃঢ়ভাবেই প্রেসিডেন্টের পেছনে রয়েছি।”

“আলু-পেঁয়াজের দাম বাড়ুক কিংবা কমুক,” তিনি বলছেন, “প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা তার সঙ্গে আছি। আমার প্রিয় প্রেসিডেন্টই আমাদের আশা-ভরসা।”

তুর্কি প্রেসিডেন্টের ওপর তার সমর্থকদরে অনেক আশা-ভরসা
এ মাসের শুরুতে তুর্কি ভোটাররা যখন নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়েছিলেন, সে সময় তারা তাদের মানিব্যাগের অবস্থার কথা বিবেচনা করে ভোট দেননি। তুরস্কে খাবারের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। ৪৩% মুদ্রাস্ফীতির কারণে অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে অসহনীয়। তবে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটকেও অনেকে দায়ী করছেন ওই মুদ্রাস্ফীতির জন্য।

এই অবস্থার পরও প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ৪৯.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।

এই ঘটনায় বিশ্লেষকরা বেকুব বনে গেছেন, এবং গুরুত্বপূর্ণ এক শিক্ষা লাভ করেছেন : ‘জনমত জরিপের ফলাফল থেকে সাবধান।’

বিভক্ত এক দেশ

এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধীদলীয় নেতা কামাল কুলুচদারোলু নির্বাচনে পেয়েছেন মোট ৪৪.৯ শতাংশ ভোট।

সুতরাং, বিভক্ত এই দেশে ভোটাররাও ছিলেন বিভক্ত – বিরোধী দু’পক্ষের মধ্যে ব্যবধান ছিল মাত্র ৪ শতাংশ ভোটের।

একজন উগ্র-জাতীয়তাবাদী প্রার্থী সিনান ওগান ওই নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে ৫.২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন, যে কারণে নির্বাচনটি এই রোববার (২৮শে মে) দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে যেতে বাধ্য হয়। ওগান এরপর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতি তার সমর্থন জানান।

তাহলে প্রশ্ন হলো, তুরস্কের অর্থনীতিতে এক বড় সঙ্কট থাকার পরও কেন বেশিরভাগ ভোটার এরদোয়ানকেই বেছে নিলেন?

এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কুলুচদারুলু (মাঝে) এবং তার জোট সঙ্গীরা
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশজুড়ে বিপর্যয়কর জোড়া ভূমিকম্প, যাতে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, এরপরও ভোটাররা কেন তাকে প্রত্যাখ্যান করলেন না?

“আমি মনে করি তিনি একজন চূড়ান্ত ‘টেফলন রাজনীতিবিদ’ [কোন অভিযোগ যার গায়ে বসতে পারে না],” বলছেন অধ্যাপক সোলি ওজেল, যিনি ইস্তাম্বুলের কাদির হ্যাস ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক।

“তার যে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা রয়েছে, এটা আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। তার শরীর থেকে ক্ষমতার আভা বের হয়। এটা এমন এক জিনিস যা কুলুচদারোলুর নেই।”

কিন্তু প্রথম রাউন্ডের হতাশাজনক ফলাফল দেখে তিনি নিজে এখন ডান দিকে মোচড় দিয়েছেন। তিনি এখন অনেক বেশি কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী। এটা দেখে একজন তুর্কি সাংবাদিক মন্তব্য করেছে, “এটা হচ্ছে পতনের রাস্তায় দৌড়।”

ক্ষমতাসীন একে পার্টির একটি জনসভা
তুরস্কের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যিনিই হোন না কেন, এই নির্বাচনে আসলে বিজয়ী হয়েছে জাতীয়তাবাদ।

ভোটাররা এযাবতকালের সবচেয়ে জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল এক সংসদকে নির্বাচিত করেছে, যেখানে এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন একে (জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) পার্টি জোটের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।

তুরস্কের কিছু তরুণ ভোটার মনে করছেন, ফলাফল নির্ধারিত হয়ে গেছে। রঙধনু রঙের এক পতাকার নীচে একটি লাল সোফায় বসে ২১-বছর বয়সী জেইনেপ এবং ২৩-বছর বয়সী মের্ট গরম গরম তুর্কি চা পরিবেশন করছিলেন এবং নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দুশ্চিন্তা করছিলেন।

তারা দু’জনেই বোগাজিচি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছেন। এটি একটি সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার রয়েছে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস। জেইনেপ এবং মের্ট-এর পরিচয় হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এলজিবিটিকিউ ক্লাবে – যেটি এখন বন্ধ হয়ে গেছে। ২০১৫ থেকে ওই ক্যাম্পাসে সমকামীদের শোভাযাত্রা করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তুরস্কের সমকামী সম্প্রদায়কে টার্গেট করে বক্তব্য দিয়েছেন। ইজমির শহরে এক বিশাল সমাবেশে তিনি বলেছেন, “এই জাতি থেকে কোনো এলজিবিটি মানুষ বের হবে না।”

“আমাদের পারিবারিক কাঠামোকে আমরা কলঙ্কিত করি না। এখানে সন্তানরা মানুষের মতো সোজা হয়ে দাঁড়ায় – আমাদের পরিবারগুলো এমনই।”

কাঁধ পর্যন্ত কালো চুল এবং কানে দুল পরা মের্টের মনে হচ্ছে, তুরস্কের এলজিবিটি সম্প্রদায় এখন ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

“এরদোয়ান নিজে, প্রতিটি বক্তৃতায়, প্রতিটি অনুষ্ঠানে, আমাদের লক্ষ্যবস্তু হিসাবে তুলে ধরছেন,” বলছিলেন তিনি, “দিনের পর দিন রাষ্ট্র আমাদের শত্রু বানাচ্ছে।“

নতুন এক তুর্কি শতাব্দী

রোববার তুর্কি ভোটাররা তাদের দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট দিতে যাবেন, যেটি হবে তুরস্কের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তুরস্ক একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পার হয়েছে প্রায় ১০০ বছর।

রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান আবার নির্বাচিত হলে একটি নতুন “তুর্কি শতকের” প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তার সমর্থকরা বলছেন, তিনি আরও উন্নয়ন, আরও শক্তিশালী এক তুরস্ক উপহার দেবেন। সূত্র : বিবিসি

গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বুঝিয়ে দিতে পেরে আনন্দিত : আদানি

আন্তর্জাতিক, 15 July 2023, 1220 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরো সক্ষমতায় উৎপাদন বুঝিয়ে দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।

banner

আজ ১৫ জুলাই শনিবার তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে টুইট বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আদানি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরো সক্ষমতায় উৎপাদন বুঝিয়ে দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। ভারত ও বাংলাদেশের সাহসী সেই দলকে আমি স্যালুট জানাই যারা করোনা মহামারির মধ্যেও কাজ শুরু করে মাত্র সাড়ে তিন বছরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে নিয়ে এসেছেন।

জানা গেছে, স্বল্প সময়ের জন্য ঢাকা সফর করে ফিরে গেছেন ভারতের আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় আদানি গ্রুপের নির্মিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসেন তিনি।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে নিজস্ব উড়োজাহাজে করে ঢাকায় নামেন গৌতম আদানি। বেলা ১১টার দিকে তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর দুপুর সোয়া ১টার দিকে আবার নিজস্ব উড়োজাহাজে করে ঢাকা ছাড়েন তিনি।