অনলাইন ডেস্ক :
সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর কোনো মানে হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ওদের (ভারত) কথায় চিন্তা করার দরকার নেই, দেশের মানুষের কথা ভাবুন। ওবায়দুল কাদের গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস পর কীভাবে দেশ থেকে পালায় সেটা নাকি উপদেষ্টারা জানেন না, তাহলে জানে কে?
আজ ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে চালক দলের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সংস্কারের নামে নির্বাচনের পেছানোর কোনও মানে হয় না। সামনে রোজা আসছে, তাই আওয়ামী লীগের কোনও লোকজন যাতে সিন্ডিকেট না করতে পারে সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখুন। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নষ্ট করতে আবারও ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন ঝামেলা সৃষ্টি করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। দেশে অন্য ধর্মের মানুষ ভালো আছে। হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে- এসব বলে কোনো লাভ নেই।
জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, ভারত সমান্তরালের নামে আমাদের দেশের সম্পদ লুট করে নিয়ে যাবেন, আমার দেশের গণতন্ত্রকেও হত্যা করবেন। এই দেশের বিরোধীদলকে জোর করে নির্বাচনে আনবেন। তার বিরোধিতা বিএনপি অবশ্যই করবে। ২০১৪ সালে হাসপাতালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের করুন অবস্থা আমরা দেখেছি। ১৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানে ওসমানী কেন আসল না এমন প্রশ্নে রেখে বিএনপির সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, তাকে কি আসলে আসতে দেওয়া হয়নি? হেলিকপ্টারে আসলে কী খারাপ ছিল? নাকি পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করার পর আধুনিক সব অস্ত্র ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আপনার সহযোগিতা করেছেন তাই আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু পাকিস্তানের ৫০০ টাকার নোটগুলো আপনারা নিয়ে গেছেন। তখন ইন্ডিয়ার এক টাকার পাকিস্তানের এক টাকা কত ছিল? এ সময় ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়ে জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, আপনারা (ভারত) দয়া করে সোজা হয়ে যান। বিজয় দিবস নিয়ে মমতা কী বলল, মোদি কী বললো তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। বিএনপি তিন সংগঠন আগরতলার উদ্দেশে লংমার্চ করেছে। ভারতের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়াই যথেষ্ট। বাংলাদেশের মানুষ অনেক সচেতন। গরিব হতে পারে কিন্তু মনটা বড়। ভারতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরামে কফি খাচ্ছেন, পার্কে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এ শীর্ষ নেতা। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাকে বাংলাদেশে আসতেই হবে, বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। একদিনের জন্য হলেও আয়না ঘরে যেতে হবে। আপনি যদি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জেলখানায় পাঠাতে পারেন তাহলে আপনাকেও কাশিমপুর কারাগারে যেতে হবে। জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসীম উদ্দিন কবিরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আমীর হোসেন আমু, চালক দলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকার প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, আমাদের সমস্ত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে। কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়নি। রিজার্ভ নিয়েও দেশে কোনো সংকট নেই। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রিববার দুপুরে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা সর্বত্রই বিরাজমান। এটা দূরীকরণে বর্তমান মন্ত্রীসভা কাজ করবে। দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করে কীভাবে দ্রুত কাজগুলো করা যায় তা নিয়ে কাজ করবো। আর সুন্দর ও ভালো কাজ করতে গিয়ে হয়তো বিলম্বিত হয়। প্রকল্পে সমন্বয়ের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে কাজে দীর্ঘসূত্রিতা হয় উল্লেখ করে রাজশাহীর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সমন্বয় সাধনে তিনি কাজ করছেন বলে জানান। আরডিএ থেকে অনুমোদন না নিয়ে কেউ আবাসন গড়ে তুললে সেটা বে-আইনি কাজ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। সুতরাং, জেলা প্রশাসক এটা দেখুক। এরআগে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সভাপতিত্বে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপূর্তমন্ত্রী।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস। ১৭৫৭ সালের এই দিনে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে প্রহসনমূলক যুদ্ধ হয়েছিল পলাশীর আমবাগানে। সেদিন ইংরেজদের সঙ্গে তরুণ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। বেদনাবহ সেই স্মৃতিকে স্মরণ করে প্রতি বছর এ অঞ্চলের মানুষ দিনটিকে পালন করে আসছে ‘পলাশী ট্র্যাজেডি’ দিবস হিসেবে।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ষোলো শতকের শেষের দিকে ওলন্দাজ, পর্তুগিজ ও ইংরেজদের প্রাচ্যে ব্যাপক বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। একপর্যায়ে ইংরেজরা হয়ে যায় অগ্রগামী। বাংলার সুবেদার-দেওয়ানরাও ইংরেজদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে।
১৭১৯ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদ কুলি খাঁ বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হন। তার মৃত্যুর পর সুজাউদ্দিন খাঁ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসন লাভ করেন। এর ধারাবাহিকতায় আলীবর্দি খাঁর পর ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল সিরাজউদ্দৌলা এই পদে আসীন হন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর।
এ সময় তরুণ নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া মসনদের জন্য লালায়িত ছিলেন সিরাজের পিতামহ আলীবর্দি খাঁর বিশ্বস্ত অনুচর মীর জাফর ও খালা ঘসেটি বেগম। ইংরেজদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ স্থাপন করেন। এরপর নবাবের বিরুদ্ধে নীলনকশা পাকাপোক্ত করেন তারা।
১৭৫৭ সালের ২৩ এপ্রিল কলকাতা পরিষদ নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার পক্ষে প্রস্তাব পাস করে। এই প্রস্তাব কার্যকর করতে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ রাজদরবারের অভিজাত সদস্য উমিচাঁদকে ‘এজেন্ট’ নিযুক্ত করে। একই বছরের ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে সকাল সাড়ে ১০টায় ইংরেজ ও নবাবের বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মীর মদন ও মোহন লালের বীরত্ব সত্ত্বেও প্রধান সেনাপতি মীর জাফরসহ জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীর বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সঙ্গে অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য।
মূলত এই ষড়যন্ত্রের অধ্যায় সৃষ্টির পেছনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল বিশ্বাসঘাতক জগৎ শেঠ, মীরজাফর, মাহতাব চাঁদ, উমিচাঁদ বা আমির চন্দ, মহারাজা স্বরূপচাঁদ, ইয়ার লতিফ, রায়দুর্লভ ও ঘসেটি বেগমের ক্ষমতার লোভ। রাজা রাজবল্লভ, মহারাজ নন্দকুমার, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ও রানী ভবানীর কৌশলী চক্রও এর পেছনে প্রচ্ছন্ন ছিল।
যুদ্ধে পরাজয়ের পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও উপমহাদেশের মানুষ তাকে আজও শ্রদ্ধা জানায়। আর নবাবের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি তাদের।
পলাশী বিপর্যয়ের পর শোষিত বঞ্চিত শ্রেণি একদিনের জন্যও স্বাধীনতা সংগ্রাম বন্ধ রাখেনি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র জন্ম লাভ করে। এরপর ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
অনলাইন ডেস্ক :
‘অগ্নিদুর্ঘটনা, বর্তমান পরিস্থিতির গভীরতা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর করণীয়’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৬ মার্চ বুধবার সকাল ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ (সাবেক মহাপরিচালক), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহম্মেদ খান (সাবেক মহাপরিচালক), অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান (ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলেন্স, ঢাবি), অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট), স্থপতি মো. ইকবাল হাবিব (সহসভাপতি, বাপা), মো. নিয়াজ আলী চিশতি, সভাপতি, ইসাব প্রমুখ।
স্থপতি মো. ইকবাল হাবিব বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে ঢাকাসহ সারা দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে হবে এবং চিহ্নিত ভবনের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করার সাথে সাথে নির্দিষ্ট ভবনের সামনে তা প্রকাশ্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যেন নিয়মিত মোবাইল কোর্ট করতে পারে এ জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা উচিত। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইনগত অসামঞ্জস্য/বিরোধ দ্রুত সমন্বয় করা প্রয়োজন।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহম্মেদ খান বলেন, ‘শহরকেন্দ্রিক স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন নির্মাণসহ ফায়ার সার্ভিসকে দুর্ঘটনার ধরনভেদে স্পেশাল টিম তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া রাজউক, সিটি করপোরেশন বা ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’
অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফায়ার কোড তৈরির পরামর্শ দেন তিনি।
অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে হাইড্রেন্ট লাইন বসানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ফায়ার সার্ভিসের স্থগিত বিধিমালা দ্রুত কার্যকর করতে হবে। ভবনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটিতে ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘রাজউক থেকে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিয়ে যদি অকুপেন্সি পরিবর্তন করে তাহলে তা ফায়ার সার্ভিসকে জানাতে হবে, এমন বিধান তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া বিএনবিসির কিছু ধারা যুগোপযোগী করা উচিত।’ অগ্নিনির্বাপণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে শহরের জলাশয় ও পুকুর সংরক্ষণ করতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দেন।
নিয়াজ উদ্দিন চিশতী বলেন, ‘শুধু অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম কিনে প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করলে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে না। অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম মানসম্মত কি না, তা যাচাই করতে হবে, যেন তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’
গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা বর্তমান পরিস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিসের করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন। গোলটেবিল বৈঠকে কি নোট পেপার প্রেজেন্ট করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানীর বস্তিবাসীদের জন্য উন্নত জীবন ও মানসম্মত আবাসনের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাট। স্বল্প ভাড়ায় এসব ফ্ল্যাটে থাকার সুযোগ পাবেন তারা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
আজ ২৮ জুন শুক্রবার মহাখালীর টিএন্ডটি কলোনির মাঠে কড়াইল বস্তিবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিতিদের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সকল মানুষের মানসম্মত আবাসনের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে বস্তিবাসীদের উন্নত জীবন ও মানসম্মত আবাসনের লক্ষ্যে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্মিলিত ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। স্বল্প ভাড়ায় এসব ফ্ল্যাটে তারা বসবাসের সুযোগ পাবেন।
রাজধানীর মিরপুরে ইতোমধ্যে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত ৫৩৩টি ভাড়া ভিত্তিক ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেখানকার বস্তিবাসীরা স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে সেখানে বসবাস করছেন।
টঙ্গীর দত্তপাড়া এবং মহাখালীর কড়াইল বস্তিতেও একই ধরনের ফ্ল্যাট নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
মন্ত্রী বলেন, বস্তিতে বসবাসকারীরা যথাযথ ভাড়া পরিশোধ করে থাকেন। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা বাবদ তাদের যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হয়।
অথচ বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ তারা পায় না। পর্যাপ্ত অর্থ খরচের পরও তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করে। এসব ফ্ল্যাট নির্মিত হলে স্বল্প ভাড়ায় তারা আধুনিক জীবন যাপনের সুযোগ পাবেন। অবস্থানরত কোনো বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ না করে তাদেরকে বিদ্যমান স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
এসব ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।
সবার সহযোগিতা পেলে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
ঢাকা-১৭ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা-১১ আসামের মাননীয় সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবিরুল ইসলাম, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সিদ্দিকুর রহমান সরকার, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং কড়াইল বস্তিতে বসবাসরত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
হাওর এলাকায় বিনাচাষে মাসকলাই উৎপাদন বিষয়ে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখলা হাওরে মাঠ দিবসের আয়োজন করে কিশোরগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) এর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. দেবাশীষ সরকার। গাজীপুর বারির চীফ সাইন্টিফিক অফিসার (সিএসও) ড. মো. মাজহারুল আনোয়ার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) অতিরিক্ত উপ পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আহমেদ উল্লাহ, গাজীপুর বারির উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. অপূর্ব কুমার চাকী ও ড. তাসলিমা জাহান।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন কিশোরগঞ্জ বারি সরেজমিন গবেষণা বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন। মাঠ দিবসে স্থানীয় ৮০ জন কৃষক অংশগ্রহণ করেন।
কিশোরগঞ্জ বারি সরেজমিন গবেষণা বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন জানান, আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল ইফাদের অর্থায়নে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের সমন্বয়ে কনসর্টিয়াম ফর স্কেলিং আপ ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার ইন সাউথ এশিয়া (C-SUCSeS) প্রকল্পের মাধ্যমে এ বছরই প্রথম কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখলা হাওরে দশ একর জমিতে এ জাত আবাদ করা হয়। স্থানীয় কৃষক মো. কুতুব উদ্দিন ও আবুল হাসেম মুন্সির নেতৃত্বে ২৫ জন কৃষকের মাঠে গত বছরের ৩০ অক্টোবর এ জাতটি আবাদ করা হয়।
বারির মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. দেবাশীষ সরকার জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৯৬ সালে বারি মাস-৩ নামে মাসকলাইয়ের একটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করে। স্থানীয় জাতের চেয়ে এই বীজের আকার বড় হয়। জীবনকাল ৮০-৮৫ দিন। এতে আমিষের পরিমান ২১-২৪ শতাংশ। ফলন হেক্টর প্রতি ১৫০০-১৬০০ কেজি। এ জাত হলদে মোজাইক রোগ প্রতিরোধী । এ জাতের শুটিতে ঘন শুং আছে। হাওর এলাকার যে সমস্ত জমি থেকে অক্টোবরের শেষে পানি নেমে যায়, সে সকল জমিতে এটি চাষ করলে সহজেই বোরো ধান আবাদ করা যায়। ছিটিয়ে বপন করলে হেক্টর প্রতি ৩৫-৪০ কেজি বীজ লাগে। বিঘা প্রতি ইউরিয়া সার লাগে ৫-৬ কেজি, টিএসপি ১০-১৩ কেজি, এমওপি ৫-৬ কেজি, জিপসাম ৭-৮ কেজি, বোরন ১-১.৫ কেজি। সকল সার জমিতে বীজ বপনের আগে প্রয়োগ করতে হয়।
বালিখলা হাওরে বিনাচাষে নতুন এ জাতের মাসকলাইরে জমি পরিদর্শন করে মহাপরিচালক বলেন, এ জাতটি কৃষকদের মাঝে বিপুল উৎসাহের সৃষ্টি করেছে। এর ফলনও আশানুরূপ হয়েছে।
কৃষক কুতুব উদ্দিন জানান, নতুন মাসকলাইয়ের জাতটি সম্পূর্ণ বিনাচাষে আবাদ করা হয়েছে। এর আগে কৃষি গবেষণা বিভাগ কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ এবং বিনামূল্যে বীজ দিয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ফসলের কর্তন শুরু হবে। ফলন ভালো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, এটি দেখে স্থানীয় আরও অনেক কৃষক এই মাসকলাই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।