চলারপথে ডেস্ক :
দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর পর ফের ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস চালু করা হয়েছে। আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর বনানীতে এ দূতাবাসের উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে সঙ্গে নিয়ে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো এ দূতাবাস উদ্বোধন করেন। এ সময় দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ।
দূতাবাস উদ্বোধনকালে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের মুহূর্ত। এটি কেবল একটি কূটনৈতিক বিষয় নয়, এটি আবেগপূর্ণ মুহূর্ত।
তিনি আরো বলেন, এই দূতাবাসের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ভালো হবে। পুনরায় দূতাবাস চালুর ফলে দুই দেশের সম্পর্কেও উন্নতি হবে।
১৯৭২ সালে আর্জেন্টিনার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে বাংলাদেশ। এরপর ঢাকায় দেশটির দূতাবাস খোলা হলেও ১৯৭৮ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ভারতের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির কূটনৈতিক কার্যক্রম এবং ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে।
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা দূতাবাস খোলা হয়। কিন্তু এর কয়েক বছর পরই জান্তা সরকারের সময় অ্যাম্বাসি বন্ধ হয়ে যায়। তবে বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনার জন্য অনবরত ভালোবাসা দেখিয়ে গিয়েছে। তারা আর্জেন্টিনাকে ভুলে যায়নি। এজন্য আমরা আবারও বাংলাদেশে দূতাবাস চালু করছি।
এর আগে নতুন দূতাবাসের উদ্বোধন এবং বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও গভীর করতে আজ সোমবার সকালে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো ঢাকায় আসেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। এটাই আর্জেন্টিনার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর।
আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠক শেষে নৈশভোজে অংশ নেবেন তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ।
ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে আর থাকছে না। বিচারপতিদের অপসারণ করা যাবে সুপ্রিম কোর্ট জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
আজ ২০ অক্টোবর রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের ফলে দীর্ঘ আট বছর পর নিষ্পত্তি হলো গুরুত্বপূর্ণ এ রিভিউ আপিলের।
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির দিন গত ১৫ আগস্ট আজকের দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ ৬ জন বিচারপতি শুনতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়।
আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ ৯০৮ পৃষ্ঠার এ রিভিউ আবেদনে ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে ৯৪টি যুক্তি দেখিয়ে আপিল বিভাগের রায় বাতিল চাওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। ৮ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হয়। ধারাবাহিকভাবে ১১ দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আপিল শুনানিতে আদালতে মতামত উপস্থাপনকারী ১০ অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে মত দেন।
অপর ৯ অ্যামিকাস কিউরি ড. কামাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম হাসান আরিফ ব্যারিস্টার এম. আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, এ জে মোহাম্মদ আলী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
২০১৬ সালের ১১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।
দেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয়। তবে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আবারও পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। এরপর পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে আর নতুন কোনো সংশোধনী আসেনি। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের সম্ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানবিক পরিবেশে গড়ে তোলা হলে তারাও পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের সম্ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানবিক পরিবেশে গড়ে তোলা হলে তারাও পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে। সমাজের সকলকে সঙ্গে নিয়েই আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর।’
প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে এক বাণীতে একথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও আগামীকাল ১৬তম ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু, ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য, পরিচর্যাকারী, অটিজম বিষয়ক গবেষক, চিকিৎসক, থেরাপিস্ট, সহায়ক উপকরণ উদ্ভাবকসহ সংশিশ্লষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনসমূহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘রূপান্তরের অভিযাত্রায় সবার জন্য নিউরোবান্ধব অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গঠন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া তরুণদের নেতৃত্বে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩ টায় নতুন জাতীয় রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার সন্ধ্যা ৭ টায় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠকেরা এই দল তৈরি করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, সদস্য আকরাম হোসেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ও মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আত্মপ্রকাশের কথা থাকলেও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দলটি আত্মপ্রকাশ করতে পারে। দলটির আয়োজনে নানান কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে দলের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
অনলাইন ডেস্ক :
নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেছেন। জাতীয় সংসদ ভবনের শপথকক্ষে চলতি একাদশ সংসদের স্পিকার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পাঠ করান। এর আগে নিয়মানুযায়ী স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজে নিজেই শপথ গ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শপথগ্রহণ শেষে সংসদ সদস্যরা শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এরপর সচিবের দপ্তরে অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। তারা আজ দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় অংশ নিবেন।
জানা গেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ বসে তাদের নেতা নির্বাচিত করবে। এরপর রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বসে তাদের নেতা নির্বাচিত করে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার স্বীকৃতির জন্য স্পিকারের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানাবে।
নিয়মানুযায়ী, সংসদ নেতা নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর শপথের পর তাঁর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বানের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন স্পিকার। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন আহ্বান করবেন। আগামী ২৮ বা ৩০ জানুয়ারি এই অধিবেশন আহ্বান করা হতে পারে।
অধিবেশনের শুরুতেই নতুন সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন হবে।
ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৮টির বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন।
চলারপথে ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতায় স্বাধীনতা বিরোধী, খুনী ও অগ্নি সন্ত্রাসীরা কখনই যেন ফিরতে না পারে সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে রিজ কার্লটন হোটেলের হলরুমে আমেরিকায় বাংলাদেশী প্রবাসীদের দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘খুনী, স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধীরা যাতে আর কখনই ক্ষমতায় ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করুন। এই বিএনপি-জামাত জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত তথাকথিত আন্দোলনের নামে বহু মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ উজাড় করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, ‘এই চক্র দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে একে আবারো উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে।বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাগুলোকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে দেশে বিদেশে রাষ্ট্র বিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্যে বিএনপি জামাত জোটের কঠোর সমালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামাত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচারে কান না দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। তিনি বলেন, সবাইকে মাথা উঁচু করে ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বে চলতে হবে।
বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরকার অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ প্রতিটি খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা এটা করতে পেরেছি।
দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা অনেক অবদান রেখেছে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান কারণ, সরকার যথাযথ প্রক্রিয়ায় রেম্যিটান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করতে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে বিশ^ব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের পরও সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারনে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, চলমান যুদ্ধের কারণে উন্নতসহ অনেক দেশ সংকটে পড়লেও বহু দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা এখনও ভালো।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন যেন বাংলাদেশ কোন সংকটে না পড়ে।
দেশের দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ এবং অতি দারিদ্রের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে কোন চরম দারিদ্র্য থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাংক অনুসরণ করে সারাদেশে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে বাড়ি দিয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, তাঁরা ইতোমধ্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় ৩৫ লাখ লোককে বাড়ি দিয়েছেন এবং তাদের জীবিকা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, কারণ সরকার প্রতিটি গৃহহীন লোককে বিনামূল্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এ লক্ষে আরো ৬০ হাজার ঘর তৈরি হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান অন্ষ্ঠুান পরিচালনা করেন।