মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ
রাসুলুল্লাহ (সা.) সবার আগে জান্নাতের দরজা খুলবেন। আনাস (রা.) বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন নবীদের মধ্যে আমার উম্মতের সংখ্যা হবে সর্বাধিক এবং আমিই প্রথম জান্নাতের দরজা খুলব।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬)।
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি জান্নাতের দরজায় পৌঁছে দরজা খোলার জন্য বলব। তখন দ্বাররক্ষী বলবে, আপনি কে? আমি বলব, মুহাম্মাদ। তখন সে বলবে, আপনার সম্পর্কে আমাকে বলা হয়েছে যে আপনার আগে আমি যেন অন্য কারো জন্য এ দরজা না খুলি।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৭)
জান্নাতের আটটি দরজা হবে। সেগুলো হলো-
এক. বাবুস আস-সালাহ (নামাজের দরজা), যারা আন্তরিকভাবে নিয়মিত নামাজ আদায় করবে, তাদের সম্মানে জান্নাতের এই দরজার নাম করা হয়েছে বাবুস সালাহ বা নামাজের দরজা।
দুই. বাবুল জিহাদ (জিহাদের দরজা), যারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর পথে তার জীবন ও সম্পদ দিয়ে জিহাদ করবে, তাদের সম্মানে জান্নাতের এই দরজার নামকরণ হয়েছে বাবুল জিহাদ বা জিহাদের দরজা।
তিন. বাবুর-রাইয়ান। যারা মহান আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে রোজা রাখবে, তাদের সম্মানে এই দরজার নামকরণ হয়েছে বাবুর রাইয়ান।
চার. বাবুস-সদকা (দানের দরজা), মানুষের প্রয়োজনে যারা তাদের অর্থ-সম্পদ দিয়ে মানুষকে সহযোগিতা করবে, তাদের সম্মানে এই দরজার নামকরণ হয়েছে বাবুস সদকা।
পাঁচ. বাবুল আইমান, কেউ কেউ এই দরজাকে বাবুস শাফাআতও বলেছেন। কিয়ামতের দিন যারা নবীজির সুপারিশে বিনা হিসাবে জান্নাতে স্থান পাবে, তাদের সম্মানে এই দরজার নামকরণ হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস : ৩৬৮)।
ছয়. বাবুল কাজিমিনাল গইজা ওয়াল আফিনা আনিন্নাস (রাগ দমনকারী ও লোকের ভুলকে ক্ষমাকারী ব্যক্তিদের দরজা), যারা লোকদের ভুলকে ক্ষমা করে এবং নিজের রাগকে দমন করে, এই দরজার নামকরণ তাদের সম্মানে। (উমদাতুল কারি : ১৬/২৫৪)।
সাত. বাবুর-রাদ্বিন (সন্তুষ্টদের দরজা), এই দরজাকে কেউ কেউ বাবুল জিকির, বাবুল হজ, বাবুল ইলম ও বাবু লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহও বলা হয়। যারা আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট এবং আল্লাহও যাদের ওপর সন্তুষ্ট, তাদের সম্মানে এ দরজার নামকরণ হয়েছে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৮১)।
আট. বাবুত তাওবা (ক্ষমা প্রার্থনার দরজা), নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তার সম্মানার্থে জান্নাতের এই দরজার নামকরণ হয়েছে। এটি তাওবাকারীদের জন্য সব সময় খোলা থাকে। (জামিউস সগির, হাদিস : ৭৩২০)।
ইসলাম ডেস্ক :
জুমার নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ নামাজ ছেড়ে দিলে হাদিসে ভয়াবহ ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমার নামাজ গুরুত্বের সাথে পড়া উচিত। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, জুমা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস। পবিত্র কোরআনে সূরা আল জুমায় ইরশাদ করা হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
‘মুমিনগণ, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সূরা: আল জুমা, আয়াত: ৯)
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন এই দিনে। এই দিনেই হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-কে জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলে দিনটাকে ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন বলা হয়।
মালেক ইবনে শিহাব থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবনে সাব্বাক থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কোনো এক জুমার দিনে বললেন, ‘হে মুসলিম সম্প্রদায়! আল্লাহ তায়ালা এই দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।’ আরবি শব্দ জুমুআ- এর অর্থ একত্র হওয়া। শুক্রবারকে বলা হয় ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন।
শুক্রবারের দিন যোহরের নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজ ও ইমামের খুতবাকে যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। সপ্তাহের এদিনে জুমার খতিব উম্মতের যাবতীয় প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে নির্দেশনা ও সমাধানমূলক উপদেশ দেবেন তার খুতবায়।
যে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করে, সে একটি উট আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব লাভ করে। যে দুই নম্বরে প্রবেশ করে, সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। যে তিন নম্বরে প্রবেশ করে, সে একটি দুম্বা দান করার সওয়াব পায়। যে চার নম্বরে প্রবেশ করে, সে একটি মুরগি দান করার সওয়াব লাভ করে। আর যে পাঁচ নম্বরে প্রবেশ করে, সে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। (মুসনাদে শাফী : ৬২, জামে লি ইবনে ওহাব : ২২৯, মুসনাদে হুমাইদি : ৯৬৩)।
হজরত সালমান (রা.) হতে একটি হাদিস বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুন্দর করে গোসল করবে, অতঃপর তেল ব্যবহার করবে এবং সুগন্ধি নেবে, তার পর মসজিদে গমন করবে, দুই মুসল্লির মাঝে জোর করে জায়গা নেবে না, সে নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম যখন খুতবা দেবেন, চুপ করে মনোযোগসহকারে তার খুতবা শুনবে। দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (মুসনাদে আবু দাউদ : ৪৭৯)।
জুমার নামাজ প্রত্যেক বালেগ পুরুষের জন্যই ওয়াজিব। হাদিসে এসেছে, হজরত হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, প্রত্যেক (প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ) মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব- অপরিহার্য কর্তব্য। (সুনানে নাসায়ী)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি অবহেলা অলসতা করে পর পর তিন জুমা নামাজ ছেড়ে দিল, মহান আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। (আবু দাউদ)।
আরেক হাদিসে রসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো ওজর এবং অনিষ্টের ভয় ছাড়া জুমার নামাজে অংশ গ্রহণ করে না, মুনাফিকের এমন দপ্তরে তার নাম লিপিবদ্ধ করা হয়, যা কখনো মোছা বা রদবদল করা হয় না।
কারোর জুমার নামাজ এক রাকআত ছুটে গেলে বাকি আর এক রাকআত ইমামের সালাম ফেরানোর পর উঠে পড়ে নিলে তার জুমা হয়ে যাবে। অনুরূপ কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকুর আগে থেকে পেলেও ওই রাকআত এবং তার সঙ্গে আর এক রাকআত পড়লে তারও জুমার নামাজ হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকূ শেষ হওয়ার পর জামাআতে শামিল হয়, তাহলে সে জুমার নামাজ পাবে না। এই অবস্থায় তাকে যোহরের ৪ রাকআত আদায়ের নিয়তে জামাআতে শামিল হয়ে ইমামের সালাম ফিরার পর ৪ রাকআত ফরজ পড়তে হবে। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, সৌদি উলামা-কমিটি ১/৪১৮, ৪২১)।
আর কেউ যদি জুমার নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমা শেষ হয়ে গেছে তবে তাকে যোহরের নামাজ পড়তে হবে। কারণ জামাআত ছাড়া জুমার নামাজ হয় না।
হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার এক রাকআত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকআত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকূ না পায়, সে যেন জোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।’ (ইবনে আবী শাইবা, ত্বাবারানী, বায়হাকী, আলবানী : ৬২১)।
কোনো ইমাম সাহেব যদি বিনা ওজুতে জুমার নামাজ পড়িয়ে নামাজের শেষে মনে হয়, তাহলে মুক্তাদির নামাজ সহিহ হয়ে যাবে। আর ইমাম ওই নামাজ কাজা করতে ৪ রাকআত জোহর পড়বেন। (আল-মুন্তাকা মিন ফাতাওয়াল ফাওয়া : ৩/৬৮)।
জুমার খুতবা অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। জুমার খুতবা হলো ওয়াজিব। খুতবা চলাকালীন কোনো প্রকার কথা বলা যাবে না। এমনকি কাউকে কথা বলতে দেখে ‘চুপ কর’ এ কথাও বলা যাবে না। কারণ, হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধ এসেছে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইমামের খুতবা দেওয়া অবস্থায় তুমি যদি তোমার সাথীকে বল, তুমি চুপ কর, তাহলে তুমি অনর্থক কথা বললে’।
ইমাম আহমদ তার বর্ণনায় হাদিসে আরো বর্ধিত করেন, অর্থাৎ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোনো অনর্থক কর্ম করল, তার জন্য ওই জুমায় আর কিছু রইল না।
ইসলাম ডেস্ক :
জুমার দিনের মর্যাদা ও গুরুত্ব ইসলামে অপরিসীম। এই দিনকে আল্লাহ তাআলা সপ্তাহের অন্য সব দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে জুমার দিনের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা)
হাদিসে রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ ১০৯৮)
হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও ভালোভাবে গোসল করবে, ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে মসজিদে হেঁটে আসবে, ইমামের কাছাকাছি বসবে, খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং কোনো অনর্থক কাজ করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছর নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ ৩৪৫)
তবে ফজিলতের পাশাপাশি জুমার নামাজ আদায় না করলে রয়েছে কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি। রসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে পরপর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর এঁটে দেন।’ (বুখারি ১০৫২; তিরমিজি ৫০২, মুসলিম ১৯৯৯)
একটি হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করল।’ (মুসলিম)
তবে কিছু শ্রেণির লোক জুমার নামাজে উপস্থিত না হলে তারা দোষী নয়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘চার শ্রেণির লোক ব্যতীত জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ: ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ)
নামাজ প্রসঙ্গে হজরত উমর (রা.) বলতেন, ‘নামাজ ত্যাগকারী নির্ঘাত কাফের।’ (বায়হাকি ১৫৫৯, ৬২৯১)। হজরত আলি (রা.) বলেন, ‘যে নামাজ পড়ে না, সে কাফের।’ (বায়হাকি ৬২৯১)
কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন দলিল থেকে বোঝা যায়, ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করা বড় কুফরি এবং ইসলাম নষ্টকারী কাজ। তাই জুমা ও প্রতিদিনের ফরজ নামাজ যথাসময়ে আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অপরিহার্য।
মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান :
মি’রাজ আরবি শব্দ। আভিধানিক অর্থ হল উর্ধবালোকেগমন বা আহরণ। নবুওয়তের একাদশ মতান্তর দ্বাদশ বছরে রজব মাসের ২৬ তারিখে দিবাগত রাতে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা:) এর পবিত্র শ’বে মি’রাজ সংঘটিত হয়।
পবিত্র মি’রাজ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আলকোরআনে এরশাদ করেন,’ সুবহানাল্লাজি আসরা বি আবদিহী লাইলাম মিনাল মাসজিদিল হারামে ইলাল মাসজিদিল আকসা’।
অর্থাৎ পবিত্র সেই মহান স্রষ্টা যিনি নিজ প্রিয় বান্দাহকে বোরাকে আরোহণ করিয়ে কাবা ঘর থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত নৈশ ভ্রমণ করিয়েছিলেন।
এই মি’রাজ সম্পর্কে আল্লাহর মূল উদ্দেশ্য ছিল তার প্রিয় বান্দাহকে সৃষ্টিজগৎ আরশে মুয়াল্লাহর কিছু নিদর্শন দেখানো।
এবং তার সান্নিধ্য লাভ করানো।
এমন এক সময় রাসুল (সা:)কে মি’রাজ করানো হয়েছিল যখন মক্কা জুড়ে ইসলামের নবজাগরণ কে স্তব্দ করার জন্য পুরোপুরি ষড়যন্ত্র চলছিল।
মক্কার কাফের সম্প্রদায় রাসুল(সা:)এর সংস্পর্শে এসে দলেদলে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে ছিল ঠিক তখনি কাফেরদের সরদারগণ চিন্তা করতে লাগলেন যে এভাবে চলতে থাকলে মক্কার সকল মানুষ তাদের বাপদাদার পৌত্তলিক ধর্ম মক্কার জমিন থেকে চিরবিদায় নিতে বাধ্য হবে।তাই তারা ইসলামের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করে।
সকল ষড়যন্ত্রে ব্যার্থ হয়ে মুসলমানদের সাথে বয়কট করা ছাড়া আর কোন পথ না দেখে সম্মিলিতভাবে তারা মুসলমানদেরকে শিয়াবে আবু তালিব( আবু তালিবের সত্যাধিকারী পাহাড়ের পাদদেশে)আবদ্ধ করে ফেলে।
মুসলমানদের সাথে মক্কার সকল গোত্র সর্বপ্রকার যোগাযোগ, লেনদেন, বিয়ে শাদী এমনকি দেখাসাক্ষাৎ ও বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ আড়াই বা তিন বৎসর মুসলমানরা তথায় বন্দি অবস্থায় দিনযাপন করেছিলেন।
কাফেরদের এই দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে মুসলমানরা একমাত্র ইসলাম ও মোহাম্মদ (সা:)এর খাতিরে এমন কোন কষ্ট নেই যা তারা সহ্য করেনি। খাদ্যাভাবে মুসলমানদের বৃক্ষলতা খেতে হত।এসব নিঃশেষ হয়ে গেলে মুসলমানরা তৃন খড় পর্যন্ত খেতে হয়ে ছিল।
চারদিক থেকে যখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবরোধ চলছিল তখনি রাসুল(সা:)এর পিতৃব্য আবুতালিব ইন্তেকাল করেন।বয়কট পরিসমাপ্তির কাছাকাছি সময়ে হুজুর(সা:)এর সকল বিপদআপদের সাথী এবং সাহায্যকারী উম্মাহাতুল মুমিনীন হজরত খাদিজা(রা:)ও ইহজগৎ ত্যাগ করেন।
হুজুর(সা:)এর অতি আপনজন এই দুই ব্যক্তির ইন্তেকালে হুজুর(সা:)মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন তখন ই রাসুল(সা:)কে আল্লাহতায়ালা শান্তনা দেওয়ার জন্য আল্লাহতায়ালা রাসুল(সা:)কে তার সান্নিধ্য লাভ করিয়েছেন।
রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে মহানবী (সা:)এশার নামাজ সম্পন্ন করে চাচাতো বোন উম্মেহানীর ঘরে নিদ্রায় নিমগ্ন ছিলেন।এমন সময় জিব্রাইল(আ:)উপস্থিত হয়ে প্রিয় নবী (সা:)কে বললেন,হে আল্লাহর নবী, আপনি জাগ্রত হোন।আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার জন্য দ্রুতগামী বাহন ‘বোরাক ‘নিয়ে এসেছি।পূর্ববর্তী সকল নবী
রাসুলগণ ও সকল ফেরেশতাগণ আপনাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
মোহাম্মদ (সা:)জাগ্রত হয়ে প্রথমে অজু করত:দুরাকাত নফল নামাজ আদায়করে আল্লাহর নির্দেশক্রমে পবিত্র বোরাকে আরোহণ করে প্রথমে বায়তুল মুকাদ্দাস এসে পূর্ববর্তী সকল নবীগনের উপস্থিতিতে দু রাকাত নামাজের ইমামতি করেন।
পুনরায় বোরাকে আরোহণ করে উর্ধবলোকে গমন করেন।প্রথম আকাশে হজরত আদম(আ:) বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সা:)কে অভ্যর্থনা জানান। তারপর দ্বিতীয় আকাশে ঈসা(আ:)ও ইয়াহিয়া (আ:),তৃতীয় আকাশে ইউসুফ (আ:),চতুর্থ আকাশে ইদ্রিস (আ:),পঞ্চম আকাশে হারুন(আ:),ষষ্ঠ আকাশে মুসা(আ:) এবং সপ্তম আকাশে হজরত ইব্রাহীম (আ:)এর সাথে সাক্ষাৎ লাভ করেন।
তারপর বায়তুল মামুর নামক স্থানে ফেরেশতাদের নিয়ে পুনরায় দু রাকাত নামাজ আদায় করেন।এখানে এসে বোরাক থেমে যায়,এবং জিব্রাইল(আ:) বললেন,হে আল্লাহর রাসুল, এ পর্যন্ত ই আমার সীমানা। এরপর এক কদম অগ্রসর হওয়ার শক্তি আমার নেই।
এখান থেকে রফরফ নামক আরেকটি কুদরতি বাহন রাসুল (সা:)কে আল্লাহতায়ালার আরশে মুয়াল্লাহয় নিয়ে যান।সেথায় আল্লাহতায়ালার সাথে সালাম বিনিময়ের পর কথোপকথন হয়।
আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সেখানে প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত ও পরবর্তীতে পাচ ওয়াক্ত নামাজ উম্মতের জন্য হাদিয়া স্বরুপ দেওয়া হয়।তারপর হুজুর(সা:) জান্নাত জাহান্নাম অবলোকন করেন।
আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে অসংখ্য নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন।কিন্তু অসংখ্য নবী রাসুলের মধ্যে কেবলমাত্র আমাদের প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সা:)ই সকল মাখলুকাতের মধ্যে স্ব-শরীরে মহান আল্লাহতায়ালার দিদার লাভে সক্ষম হয়েছেন।
পবিত্র শ’বে মি’রাজ আশ্চর্য ও অলৌকিক ঘটনা অবশ্য ই। শ’বে মি’রাজ রাতটি সকল উম্মতে মোহাম্মদীর নিকট অত্যন্ত মহিমান্বিত ও ফযিলতপুর্ন। এরাতে প্রত্যেক মুসলমানদের নফল নামাজ আদায় করা,পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা, দান খয়রাত করা,অধিক পরিমানে তাসবিহ তাহলিল, যিকির আযকার করার পাশাপাশি তাওবা ইস্তেগফার ও কান্নাকাটি করে ইসলাম বহির্ভূত কাজে লিপ্ত না হয়ে ফযিলতপুর্ন এই রাতকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে অতিবাহিত করা ই বাঞ্ছনীয়।
লেখক
মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
পরিচালক
ফখরে বাঙ্গাল ইসলামিয়া মাদরাসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৭ জুন শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা। বাঙালি সমাজে কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত মুসলমানদের এই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর করে আসছে।
ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। ঈদুল আযহার সাথে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। গতকাল শুক্রবার মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করবে। স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী ৬ জুন শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজীরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করবেন।
ঈদুল আযহা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইসলামে বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবেহ সম্পন্ন করেন তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।
ইসলামে কোরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে সুরা কাউসারে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।’ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঈদুল আযহার দিন কোরবানির চেয়ে আর কোনো কাজ আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় নয়।’ গরু, মহিষ, উট, ভেড়া, ছাগল, দুম্বাসহ যে কোনো হালাল পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যায়।
শনিবার সকালে মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনি-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
জাওয়াদ তাহের :
ইসলামের ইতিহাসে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা এই দিনগুলোর গুরুত্ব বোঝাতে কোরআনে এর নামে শপথ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘শপথ ফজর কালের। এবং ১০ রাতের।’ (সুরা : ফজর, আয়াত : ১-২)
মুফাসসিরদের মতে, এখানে ফজর বলতে বিশেষভাবে জিলহজের ১০ তারিখের ফজর বোঝানো হয়েছে। আর যে ১০ রাতের শপথ করা হয়েছে, তা হলো জিলহজের প্রথম ১০ রাত।
১০ দিনের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ :
হজ ও কোরবানি, আরাফাহ দিবস—এসব মিলিয়ে এই দিনগুলোর রয়েছে বিশেষ ফজিলত। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিনসমূহের সৎকাজ আল্লাহ তাআলার নিকট জিলহজ মাসের এই ১০ দিনের সৎকাজ অপেক্ষা বেশি প্রিয়।
সাহাবারা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদ করাও কি (এত প্রিয়) নয়? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদও তার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তবে জানমাল নিয়ে যদি কোনো লোক আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদে বের হয় এবং এ দুটির কোনোটিই নিয়ে যদি সে আর ফিরে আসতে না পারে তার কথা (অর্থাৎ সেই শহীদের মর্যাদা) ভিন্ন। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৫৭)
আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, জিলহজের এই ১০ দিনের বৈশিষ্ট্যের কারণ হলো, এ সময় শরিয়তের মৌলিক কিছু ইবাদতের সম্মিলন ঘটে। শরিয়তের প্রধান ইবাদত হলো নামাজ, রোজা, সদকা ও হজ।
এ ধরনের সমাবেশ বছরের অন্য সময় পাওয়া যায় না।
(ফাতহুল বারি, আসকালানি : ২/৪৬০)
১০ দিনের বিশেষ কিছু আমল :
সামর্থ্যবানদের জন্য হজ ও কোরবানি ছাড়া এই মাসে আছে বিশেষ কিছু আমল, যার মাধ্যমে সে রাঙিয়ে নিতে পারে নিজের জীবন। যারা হজ আদায় করবে তারা নির্ধারিত স্থান থেকে হজের বিধানাবলি পূরণ করবে। এ ছাড়া অন্যরা এসব আমল বেশি বেশি করবে।
বেশি পরিমাণে তাকবির বলা :
এই ১০ দিনে বেশি পরিমাণে আল্লাহর জিকিরে নিজেকে ব্যতিব্যস্ত রাখা; বিশেষ করে তাকবির বলা।
আমাদের মাঝে এই আমলটি প্রায় ছুটে গেছে। তাই এই দিনগুলোতে তাকবিরের প্রতি গুরুত্বারোপ করা চাই। ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.)-এর আমল ছিল, এই ১০ দিন তাকবির বলতে বলতে বাজারের দিকে যেতেন এবং তাঁদের তাকবিরের সঙ্গে অন্যরাও তাকবির বলত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯৬৯)
ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলার নিকট জিলহজের প্রথম দশকের আমলের চেয়ে বেশি প্রিয় আর কোনো আমল নেই। সুতরাং তোমরা এ সময় অধিক পরিমাণে তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এবং তাহমিদ (আলহামদু লিল্লাহ) পাঠ করো। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৭৫৮)
রোজা রাখা :
এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমাল হচ্ছে, জিলহজের প্রথম ৯ দিন আল্লাহর জন্য রোজা রাখা। আহমদ ইবনে ইয়াহইয়া (রহ.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর কোনো স্ত্রী থেকে বর্ণিত যে রাসুল (সা.) জিলহজ মাসের ৯ দিন, আশুরার দিন এবং প্রতি মাসের তিন দিন রোজা পালন করতেন। মাসের প্রথম সোমবার এবং দুই বৃহস্পতিবার। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৪১৭)
আরাফাহর দিনের রোজার বিশেষ ফজিলত আলাদাভাবে এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি আল্লাহ তাআলার নিকট আরাফাতের দিনের রোজা সম্পর্কে আশা করি যে তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৪৯)
নখ-চুল না কাটা :
এই ১০ দিনের আরেকটি আমল হচ্ছে জিলহজের চাঁঁদ ওঠার পর নখ, চুল এবং শরীরের অবাঞ্ছিত লোম ইত্যাদি কর্তন না করা; বরং কোরবানি দেওয়ার পর এগুলো পরিষ্কার করবে। এই আমল সবার জন্য প্রযোজ্য, চাই সে কোরবানি করুক বা না করুক। ঈসা ইবনে হিলাল আস-সাদাফি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, একবার রাসুলুল্লাহ এক ব্যক্তিকে বললেন, ইয়াওমুল আজহাকে ঈদের দিন করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এই উম্মতের জন্য এ দিনকে ঈদে পরিণত করেছেন। তাই তুমি তোমার চুল ও নখ কাটবে, তোমার গোঁফ ছোট করবে এবং তোমার নাভির নিচের পশম মুড়ে ফেলবে। আল্লাহর নিকট এটাই তোমার পূর্ণ কোরবান। (তাহাবি শরিফ, হাদিস : ৬১৭২)
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।