অনলাইন ডেস্ক :
বিয়ের কয়েকদিন পরেই মামলা ঠুকে দেন ব্যবসায়ী স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। পরে আপস-মীমাংসায় পেয়ে যান ৭৫ লাখ রুপি। এরপর বিয়ে করেন এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে। সেখানে ছাড়াছাড়ি করে হাতিয়ে নেন ১০ লাখ টাকা। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। কিছুদিন পর আরেক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে ৩৬ লাখ রুপি মূল্যের নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান। সম্প্রতি সীমা ওরফে নিক্কি নামে ওই নারীকে গ্রেফতার করেছে ভারতের জয়পুর পুলিশ। তাকে বলা হচ্ছে ‘লুটকারী কনে’।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হচ্ছে, সম্প্রতি জয়পুরের এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে আসে তার অভিনব প্রতারণা বিষয়টি।
পুলিশের তদন্ত বলছে, সীমা নামের ওই নারী বৈবাহিক ওয়েবসাইটগুলোতে স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে কিংবা স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেছে এমন ধনী পুরুষদের নিশানা করতেন। এরপর বিয়ে করে কিছুদিন পরই তিনি মামলা করে দিতেন।
আর শেষে বড় অঙ্কের অর্থ নিয়ে মীমাংসা করে নিতেন। এভাবে তিনি সোয়া কোটি রুপির বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে জানতে পেরেছে জয়পুর পুলিশ।
জানা গেছে, উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা সীমার এই প্রতারণার প্রথম শিকার হন আগ্রার এক ব্যবসায়ী। ২০১৩ সালে বিয়ের পর তার থেকে আত্মসাৎ করেন ৭৫ লাখ রুপি। ২০১৭ সালে গুরুগ্রামের এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে বিয়ে করে হাতিয়ে নেন ১০ লাখ টাকা।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে জয়পুরের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন। সেখান থেকে তিনি ৩৬ লাখ রুপি মূল্যের স্বর্ণ ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যান। এরপরে সেই ব্যবসায়ী মামলা করলে পুলিশ সীমাকে গ্রেপ্তার করে।
চলারপথে ডেস্ক :
সৌদি আরবে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন।
আজ ২৮ মার্চ মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ তথ্য জানান তিনি।
হতাহত বাংলাদেশিদের মধ্যে অধিকাংশই চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৮ জনের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। তবে এ তালিকার ৮ জনই মৃত নয়। মন্ত্রণালয় বলছে, এটি নিখোঁজ বা মৃতের তালিকা।
এ তালিকায় যে ৮টি নাম রয়েছে সেগুলো হলো- শহিদুল ইসলাম (সেনবাগ, নোয়াখালী), মামুন মিয়া (মুরাদনগর, কুমিল্লা), মো. হেলাল (নোয়াখালী), সবুজ হোসাইন (লক্ষীপুর), রাসেল মোল্লা (মুরাদনগর, কুমিল্লা), মো. আসিফ (মহেশখালী, কক্সবাজার), মো. ইমান হোসাইন রনি (টঙ্গি, গাজীপুর) এবং বকু মিয়া (চাঁদপুর)।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, সৌদি আরবে যে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে সেটিতে ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি ছিলেন ৩৫ জন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত বাংলাদেশিদের সৌদি আরবের বাংলাদেশ মিশন দেখভাল করছে বলেও জানান পররাষ্ট্রের মুখপাত্র।
এদিকে সৌদি আরবের আল-এখবারিয়া টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, সোমবার মক্কায় ওমরাহ পালনের জন্য যাওয়ার সময় দক্ষিণাঞ্চলীয় আসির প্রদেশে একটি সেতুর সঙ্গে সংঘর্ষে বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চ্যানেলটি নির্দিষ্ট সমস্যার কথা উল্লেখ না করে জানায় দুর্ঘটনা কবলিত ‘গাড়ির সমস্যা’ হয়েছিল।
অন্যদিকে সৌদির বেসরকারি সংবাদপত্র ওকাজ বলেছে, দুর্ঘটনাটি বাসের ব্রেকের সমস্যার কারণে হয়েছে। এর ফলে বাসটি সেতুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে গিয়ে আগুন ধরে যায়।
আসির প্রদেশের ঘটনাটি ইসলামের পবিত্রতম শহর মক্কা ও মদিনায় নিরাপদে যাওয়ার বিষয়টিকে কার্যত চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে। রমজানে বহু মানুষ ওমরাহ করতে মক্কায় যাচ্ছেন এবং হজের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি, এমন সময়ে এ ঘটনা ঘটল।
এর আগে, ২০১৯ সালের অক্টোবরে মদিনার কাছে এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আড়াই বছর পর ভারতে ফিরে গেছে এক কিশোরী। আজ ৪ ডিসেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
স্থলবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে সিপাহিজলা জেলার সোনামুড়া থানার দমদমা গ্রামের আব্দুল হাসেমের মেয়ে শাহীনা আক্তার (১৫) ২০২২ সালের ২৪ জুন অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশের পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তাকে জেলে যেতে হয়।
প্রায় আড়াই বছর গাজীপুরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকার পর বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে তাকে ভারতে পাঠানো হয়।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, সীমান্তে ঘুরতে ঘুরতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে শাহীনা। তাকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় পাওয়া যায়। পুলিশ তাকে আটক করে আদালতে পাঠায়।
নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালত-৭ এক আদেশে ওই ভারতীয় শিশুকে গাজীপুরের শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের চন্দ্রযানের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ আজ ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ৮টার দিকে চাঁদের বুকে ‘ঘুমিয়ে গেছে’। দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) এ তথ্য জানিয়েছে।
আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের দিকে ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান স্লিপিং মুড থেকে জেগে উঠতে পারে বলে আশা করছে ইসরো। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
গত ২৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করে। এর মধ্য দিয়ে চতুর্থ দেশ হিসেবে চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করার গৌরব অর্জন করে ভারত।
এর আগে ইসরো জানিয়েছিল, কাজ শেষেও ‘বাড়ি’ ফেরা হবে না চন্দ্রযানের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ও রোভার ‘প্রজ্ঞানের’। তারা চাঁদের মাটিতে ১৪ দিনের কাজ হাতে নিয়ে নেমেছে। চাঁদে ১৪ দিন পর সূর্যাস্ত হলে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়বে তারা। নিস্তেজ হয়ে পড়বে ভেতরে থাকা সমস্ত যন্ত্রপাতিও।
বিক্রম ও প্রজ্ঞানের যে সমস্ত যন্ত্রপাতি রয়েছে, যেগুলোর সাহায্যে চাঁদে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে ও সংগ্রহ করেছে তথ্য, সেই সব যন্ত্র চলেছে সৌরশক্তিতে। ফলে চাঁদে যতক্ষণ সূর্য থাকবে ততক্ষণই প্রাণ থাকবে তাদের।
১৪ দিন পর চাঁদে সূর্যাস্ত (চাঁদে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত হতে সময় লাগে পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিন) হলে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে তারা। তবে চাঁদের মাটিতে বিক্রম আর প্রজ্ঞানের নতুন করে প্রাণপ্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা একেবারে নেই বলে উড়িয়েও দেয়নি ইসরো।
বিজ্ঞানী দেবীপ্রসাদ দুয়ারির মতে, ইসরো বিষয়টিকে একেবারে নাকচ করে দেয়নি ঠিকই। তবে বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের বেঁচে থাকা নির্ভর করছে অনেক ‘যদি’ এবং ‘তবে’র ওপর। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ১৪ দিনের ‘সকাল’ কাটানোর পর নামবে ১৪ দিনের অতিশীতল রাতও। এই ১৪ দিন সূর্যরশ্মির একটি কণাও প্রবেশ করবে না চাঁদের ‘দক্ষিণমেরু’তে। তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে মাইনাস ৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত। তাতে চন্দ্রযান-৩-এর যন্ত্রপাতির বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিকৃতি সংবলিত সেলফি বুথ (সেলফি তোলার জায়গা) বানানোর নির্দেশ দিয়েছে সেদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
শুক্রবার কমিশনের পক্ষ থেকে উপাচার্য-অধ্যক্ষদের এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে সেলফি তোলার জায়গা (সেলফি বুথ) বানাতে হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন ছবি থাকবে। বুথে দাঁড়িয়ে মোদির সেসব ছবির সামনে সেলফি তুলতে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা পোস্ট করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তরুণদের মনন গঠন করে তাদের শক্তি ও উদ্দীপনা কাজে লাগানোর একটি অনন্য সুযোগ রয়েছে। আসুন আমরা আপনাদের প্রতিষ্ঠানে একটি সেলফি পয়েন্ট স্থাপন করে দেশের অবিশ্বাস্য অগ্রগতি উদযাপন ও প্রচার করি। সেলফি পয়েন্টের লক্ষ্য হলো, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের অর্জন, বিশেষ করে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ অধীনে নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে যুবকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।’
এসব সেলফি পয়েন্ট স্থাপনের জন্য ইউজিসি বেশ কয়েকটি নির্দিষ্ট ডিজাইন বা নকশাও প্রস্তাব করেছে। তবে সবগুলো নকশাতেই বেশ কিছু সাধারণ বিষয় রয়েছে। যেমন : শিক্ষার আন্তর্জাতিকীকরণ, বৈচিত্র্যের ঐক্য, স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন, ভারতীয় জ্ঞানব্যবস্থা, বহুভাষাবাদ ও উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনে ভারতের উত্থান ইত্যাদি।
সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ, দ্য স্ট্রিট টাইমস
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’এর সাথে ফোনালাপ করেছেন। এর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে, চীন ঘোষণা করে যে তারা সোমবার ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংকে ওয়াশিংটনে পাঠাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম “ট্রুথ সোশ্যাল” ‘এ এই ফোনালাপকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের জন্য “খুব ভালো” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে তাঁরা বাণিজ্যিক ভারসাম্য, ফেন্টানিল, টিকটক ও “আরও অনেক বিষয়ে” আলোচনা করেন। ভয়েস অফ আমেরিকার এক প্রতিবেদনে জানানো হয় এ তথ্য।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই পোস্টে লেখেন,“এটি আমার আশা যে আমরা একত্রে বহু সমস্যার সমাধান করতে পারবো এবং তা অবিলম্বে শুরু হবে। এই পৃথিবীকে আরও শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করার জন্য প্রেসিডেন্ট শি এবং আমি সাধ্যমত সবকিছু করবো”।
আরও পড়ুন
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ট্রাম্প ও বাইডেনকে নিয়ে নেতানিয়াহু যা বললেন
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানায় ফোনালাপের সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর নির্বাচনী বিজয়ের জন্য শি শুভেচ্ছা জানান এবং আগামি চার বছর যুক্তরাষ্ট্র চীন সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে তাঁর এবং নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের গভীর প্রত্যাশা রয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক সিসিটিভিতে প্রকাশিত শি’র বক্তব্যে বলা হয়,“আমরা উভয়ই আমাদের মধ্যে আলাপকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছি, আমরা উভয়ই আশা করছি আমেরিকার প্রেসিডেন্টের এই নতুন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের সূচনা হবে শুভ এবং আমরা উভয়ই চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই যাতে নতুন করে এই সূচনা পর্ব থেকে আমরা আরও অগ্রগতি সাধন করতে পারি।”
শি বলেন যদিও বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে তবু প্রধান বিষয়টি হচ্ছে, “পরস্পরের মূল স্বার্থ ও প্রধান উদ্বেগগুলির প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সমস্যার যথার্থ সমাধান খুঁজে বের করা”।
শি তাইওয়ানের বিষয়টি “যত্নসহকারে” দেখার জন্য ট্রাম্পের প্রতি জোর আবেদন জানান। বেইজিং দাবি করে যে গণতান্ত্রিক তাইওয়ান হচ্ছে তাদের এলাকার অংশ এবং ওই দ্বীপটিকে চীনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনবোধে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছে।
চীনের বিবরণ অনুযায়ী, শি ও ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সংঘাত আর প্রধান সব আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
১৭ জানুয়ারি শুক্রবার দিনে আরো আগের দিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে অভিষেক অনুষ্ঠানে শি ‘র প্রতিনিধিত্ব করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং।
আরও পড়ুন
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদন ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার
তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রেসিডেন্ট শি ও অন্যান্য বিদেশি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর এক মাসেরও বেশি সময় পরে এ ঘোষণাটি আসলো। এটি অভূতপূর্ব একটি পদক্ষেপ যা আগের ঐতিহ্য থেকে ভিন্ন কারণ অতীতে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হানকে পাঠিয়ে বেইজিং নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি তাদের “বন্ধুত্বের মনোভাব” প্রদর্শন করছে।
বেইজিং’এ শিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ড স্ট্র্যাটেজির সিনিয়র ফেলো ঝোও বো ভয়েস অফ আমেরিকাকে ফোনে বলেন, “চীনের এমন কোন প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্য নেই যে অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টকেই যোগ দিতে হবে। ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে ভাইস প্রেসিডেন্টকে পাঠানো সব চেয়ে ভাল একটা বিকল্প এবং এতে নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি বেইজিং’এর বন্ধুত্বের মনোভাবই ব্যক্ত হয়েছে।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আমন্ত্রণে যদিও বেইজিং ইতিবাচক ভাবে সাড়া দেয়ার চেষ্টা করছে, অন্যান্য বিশেষজ্ঞ বলছেন হানের উপস্থিতি হবে প্রধানত আনুষ্ঠানিক।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের বাকেল ইউনিভার্সিটির চীনা পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ঝিকুন ঝু বলেন, “হানের ওয়াশিংটন সফর থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু বেরিয়ে আসবে তেমনটি আমি আশা করছি না।”
আরও পড়ুন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকে মাস্ক, বেজোস ও জাকারবার্গ উপস্থিত থাকবেন
ঝু বলেন অভিষেক অনুষ্ঠানে হানের উপস্থিতি আনুষ্ঠানিক হলেও বেইজিং’এর এই পদক্ষেপ ট্রাম্পের এই দ্বিতীয় আমলের প্রশাসনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের “একটি ভাল ভিত্তি রচনা” হতে পারে।
তিনি টেলিফোনে ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “আশা করি, একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হবে এবং সামনের সপ্তাহগুলিতে, মাসগুলিতে তা টিকে থাকবে যখন দু পক্ষই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনায় বসবে এবং সম্ভবত একটা চুক্তি স্বাক্ষর করা হতে পারে”।
হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন চীনের জন্য অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। চীন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে।
তাঁর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিয়ানে ট্রাম্প চীনে উৎপাদিত পণ্যের উপর ৬০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সংকল্প ব্যক্ত করেছিলেন। ঝু বলেন উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের সম্ভাবনায় ট্রাম্পের এই দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের বিষয়ে বেইজিং সতর্ক বোধ করছে।
তিনি বলেন, “আমরা জানিনা ট্রাম্প কি খেলা খেলবেন, কাজেই আমি মনে করি চীনের প্রতি তাঁর কি নীতি হবে সেটা দেখার জন্য চীন অপেক্ষা করবে”।
চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করার হুমকি সত্ত্বেও, ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন দু’টি দেশের সম্পর্ক ভাল হতে পারে এবং তিনি তাঁর প্রতিনিধিদের মাধ্যমে চীনের নেতাদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলছেন।
৬ জানুয়ারি টক শো’ এর একজন রক্ষনশীল উপস্থাপক হিউ হিউইটকে এক সাক্ষাত্কারে বলেন, “আর আমার মনে হচ্ছে আমরা সম্ভবত ভালো ভাবেই চলবো, আমার ভবিষ্যদ্বাণী”। তিনি আরো বলেন যে সম্পর্কটা হওয়া উচিত, “দেয়া-নেয়ার”।
তা ছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু রাজনীতিককে নিয়োগ দিচ্ছেন যারা চীনের প্রতি তাদের যুদ্ধংদেহী মনোভাবের জন্য পরিচিত, তাদের মধ্যে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে সেনেটার মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মাইক ওয়াল্টজ।
বুধবার সিনেটে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিতকরণের শুনানীতে রুবিও চীনকে, “এ জাতির সামনে সব চাইতে শক্তিসম্পন্ন ও বিপদজনক নিকটতম প্রতিপক্ষ” বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, “তাদের কাছে এমন উপাদান আছে যা কখনই সোভিয়েট ইউনিয়নের কাছে ছিল না। তারা প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে আমাদের প্রতিপক্ষও প্রতিদ্বন্দ্বি, অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী , বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বি”।
তবে শুনানির সময়ে চীন সম্পর্কে রুবিওর বাহ্যত এই কঠোর বক্তব্য সত্ত্বেও, ঝু বলেন, এটা এখনও বলার সময় আসেনি যে নতুন প্রশাসনের সময়ে এই ভাষা সত্যিকারের নীতিতে পরিণত হবে কীনা।
তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ট্রাম্প নিয়োগকৃত কোন কোন ব্যক্তি চীন সম্পর্কে যুদ্ধংদেহী মনোভাব পোষণ করলেও যেহেতু তারা ট্রাম্পের জন্য কাজ করছেন, তারা ট্রাম্পের নীতি লংঘন করবেন না।”
ঝু বলেন যেহেতু এটা পরিস্কার নয় ট্রাম্প চীনের প্রতি কি ভাবে তাঁর নীতি গঠন করবেন, ওয়াশিংটন ও বেইজিং “সতর্কতার সঙ্গেই এগিয়ে যাবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম আমলে দু’পক্ষেরই মারাত্মক অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সুতরাং মনে হচ্ছে এবার তারা নতুন করে শুরু করবে”।