অনলাইন ডেস্ক :
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী ও তার স্বামী সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুর বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিং আইনে দুদক ঢাকা ও পাবনা কার্যালয়ে মামলা দুইটি দায়ের করা হয়েছে।
দুদক ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ আলম সেখ বাদী হয়ে আজ ২৩ ডিসেম্বর সোমবার পাবনা জেলা কার্যালয়ে এবং দুদক ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ বাদী হয়ে রবিবার ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে পৃথক মামলা দুইটি দায়ের করেন।
বাদী শাহ আলম সেখ এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের করবর্ষে শামীম তালুকদার লাবু’র আয়কর নথি ও অন্যান্য রেকর্ড পর্যালোচনা করে স্থাবর ও অস্থাবর বৈধ সম্পদের হিসাবের চেয়ে ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা বেশি সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যার বৈধ কোনো ও গ্রহণযোগ্য উৎস তিনি প্রদর্শন করেননি। এ ছাড়াও লাবু’র নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১২টি এবং তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লাম টান্সপোর্টের ২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
এসব কর্মকাণ্ডে লাবু’র স্ত্রী সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী তাকে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা মোতাবেক এই দুইজনকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলার বাদী আসিফ আল মাহমুদ এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের করবর্ষে জান্নাত আরা হেনরীর আয়কর নথি ও অন্যান্য রেকর্ড পর্যালোচনা করে স্থাবর ও অস্থাবর বৈধ সম্পদের হিসাবে চেয়ে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকা বেশি সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যার কোনো বৈধ উৎস ও গ্রহণযোগ্য তথ্য প্রদর্শন করতে পারেননি তিনি। এ ছাড়াও নিজের ৩৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ড এবং তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাম এন্টারপ্রাইজের ৯টি এবং তার ৩টি কোম্পানির অ্যাকাউন্ডের মাধ্যমে ২০০২ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৭ টাকা এবং ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এ কারণে হেনরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০১ এর ২৭ (১) ও ১৯৪৭ এর ৫ (২) এবং মানিলন্ডারিং আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা মোতাবেক মামলা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবু সরকার পতনের পর গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ নেতাকর্মী হত্যাসহ আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস বা এইচএমপি ভাইরাস ঠেকাতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, শীতকালীন রোগ থেকে রক্ষায় মাস্ক ব্যবহারসহ সাতটি পরামর্শ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বৃহস্পতিবার দেশে এইচএমপি শনাক্ত হওয়ার পর সংক্রমণ ঠেকাতে ১২ জানুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ১৪ বছরের কম বয়সি শিশু এবং ৬৫ বছর বা এর বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এ রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। এর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন, হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
এইচএমপি ভাইরাস অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের রোগের মত ফ্লু এর মত উপসর্গ সৃষ্টি করে,যা সাধারণত দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায় বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর। তবে, আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই জানিয়ে অধিদপ্তর বলেছে, সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
এছাড়া অন্যান্য সতর্কতার মধ্যে রয়েছে, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকা, হাঁচি বা কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা, ঘন ঘন সাবান ও পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া (অন্তত ২০ সেকেন্ড) ইত্যাদি।
এইচএমপি ভাইরাস প্রতিরোধে দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা, দেশের সব বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সব বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা
অনলাইন ডেস্ক :
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত এক সহকারী শিক্ষককে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিবাহ করার নির্দেশনামূলক পাক্কা নোটিশ জারি করেছেন প্রধান শিক্ষক। আর এমন নোটিশকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় চলছে। আর ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ে না করলে চাকরিচ্যুত করার কথাও বলা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর এনটিআরসির বাছাই তালিকার মেধানুক্রমে ওই বিদ্যালয়ে হিন্দুধর্ম বিষয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন গোপালপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা রনি প্রতাপ পাল। যোগদানের পরই তিনি এমপিওভুক্ত হন। গত ২৬ জুলাই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপকে এক জরুরি নোটিশ করেন।
লিখিত নোটিশে বলা হয়, আপনি গত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর এই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (হিন্দুধর্ম) পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর অবগত হলাম আপনি অবিবাহিত। পরবর্তী সময়ে আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিবাহ করার জন্য। কিন্তু যোগদানের কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও আপনি বিবাহ করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকরা অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কর্মদিবসের মধ্যে বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে পাক্কা নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এদিকে নোটিশ পাওয়ার দুদিন পর শিক্ষক রনি প্রতাপ প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। লিখিত জবাবে তিনি জানান, আমার অভিভাবকেরা আমার বিয়ের চেষ্টা করছেন; কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্রপাত্রী বাছাইয়ে গাত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। তাছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্ত্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করেন না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার অভিভাবকরা বিয়ে করাবেন বলে জানিয়েছেন।
রনি প্রতাপ অভিযোগ করেন, এমন জবাব প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের পছন্দ হয়নি। তিনি স্কুলের সব স্টাফকে ডেকে নিয়ে সবার সামনে সাফ বলে দিয়েছেন নির্দিষ্ট কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে না করলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে।
এদিকে হয়রানির ভয়ে শিক্ষক রনি প্রতাপ গত ৩০ জুলাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগে বলা হয়, আমি অবিবাহিত থাকলেও কোনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থী কখনো কারো কাছে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি। কিন্তু বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলামের দস্তখত জাল করে চেকের মাধ্যমে স্কুলের বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চলমান সরকারি তদন্তে যাতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সাক্ষী না দেই সেজন্য আমাকে বিয়ের নামে চাপাচাপি ও হয়রানি করা হচ্ছে।
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানান, রনি প্রতাপ ভালো শিক্ষক। তাকে নিয়ে কেউ কখনো কোনো প্রশ্ন তোলেনি। অথচ দুটি সরকারি তদন্তে মিথ্যা সাক্ষী দিতে না চাওয়ায় প্রধান শিক্ষক তাকে এমন লজ্জাজনক নোটিশ দিয়ে হয়রানি করছেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, রনি প্রতাপের স্বভাব চরিত্র নিয়ে স্কুল সংশ্লিষ্ট কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে সহশিক্ষা চলমান রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানে কোনো অবিবাহিত টিচার থাকলে নানা অসুবিধা হতেই পারে। নানা অনৈতিক কিছু ঘটতেও পারে। এজন্য তাকে দ্রুত বিয়ে করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আর স্কুলের সাবেক সভাপতির (বর্তমান সভাপতি থাকা সত্ত্বেও) স্বাক্ষর করা দুটি চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে কিছু টাকা উত্তোলন করাটা নিয়মসিদ্ধ হয়নি বলে জানান তিনি। তবে চলমান সরকারি তদন্তের সঙ্গে রনি প্রতাপের নোটিশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানা জানান, ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক। এভাবে নোটিশ করার এখতিয়ার কোনো প্রধান শিক্ষকের নেই। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চলমান। এমন নোটিশ হয়তো তারই অংশ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ছেলেদের আসার অপেক্ষায় রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মহাসড়কের পাশে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন সত্তরোর্ধ্ব প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত এক বৃদ্ধ।
মহাসড়কের ওপর দিনরাত হাজারও গাড়ি যাতায়াত করছে। অনেক গাড়ি স্টেশনে থামার পর যাত্রী নামছে। যাত্রীসহ সব পথচারীর মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে দুই চোখের পানি ঝরাচ্ছেন। চোখের পানি শুকিয়ে গেলেও আসছে না তার সন্তানরা।
তার পরও আশা ছাড়েননি এই রোগাক্রান্ত বৃদ্ধ। কেউ জানতে চাইলে বলছেন, আমার ছেলেরা এসে আমাকে নিয়ে যাবে। আমাকে এখানে বসে থাকতে বলেছে, তারা আসবে…।
গত ৬ অক্টোবর ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বড়গোবিন্দপুর স্টেশন এলাকায় বসে আছেন সাদা চুল-দাঁড়ির এই বৃদ্ধ। পাশে এক ভাঙা হুইলচেয়ার। বেশ কয়েক দিন অযত্ন-অবহেলায় পাগলের মতো দেখা যাচ্ছে তাকে। প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বাম হাত ও পা তেমন নাড়াচাড়া করতে না পেরে একই স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন এই বৃদ্ধ। দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও খোঁজ নিতে আসেননি তার সন্তানরা। স্থানীয়দের মধ্যে অধিকাংশই এক নজর দেখে বাড়তি ঝামেলা মনে করে এড়িয়ে যান। আবার কারও মন কাঁদলেও আইনি ঝামেলার ভয়ে দূরে থাকেন।
তবে সবার থেকে এক ব্যতিক্রম নারী দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নের বাসিন্দা রাইহানা ইসলাম রুনা। তিনি জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমার বাবা মারা গেছেন। গত ৮ অক্টোবর সকালে আমি মহাসড়কের গোবিন্দপুর স্টেশনে নেমে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় উঠব, তখন দেখি এই বৃদ্ধ লোকটিকে ঘিরে রেখেছেন অনেক মানুষ। ওনাকে দেখার পর আমার বাবার কথা মনে পড়ে আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। ওই বৃদ্ধ লোকটির সঙ্গে কথা বলার পর জানতে পারি ৫ অক্টোবর রাতে ওনার ছেলেরা নাকি হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার কথা বলে হুইলচেয়ারে বসিয়ে এখানে ফেলে যান।
তাকে সেবা দিতে আমি চান্দিনা থানা পুলিশের কাছে, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করি। কিন্তু আমার কথা কেউ কানে নেয় না। এক সপ্তাহ যাবৎ বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো কূলকিনারা করতে না পেরে অবশেষে সাংবাদিকদের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানাই।
গতকাল শনিবার বিকালে মহাসড়কের গোবিন্দপুর স্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের ঠিক পাশেই বসে আছেন এই বৃদ্ধ। হুইলচেয়ার থেকে পড়ে চোট পেয়েছেন কপালের পাশে ও পায়ে। মলমূত্র ত্যাগ করে নিজেই ধুলো দিয়ে চাপা দিলেও দুর্গন্ধে একাকার। অসুস্থতার পাশাপাশি অনাহারে মুখ দিয়ে ঠিকমতো কথা আসছে না তার।
অস্পষ্ট কথায় তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ, আমাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাতে গাড়ি থেকে নামিয়ে এখানে রেখে যায় আমার ছেলে হারুনসহ আরও দুজন।
তিনি জানান, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ভবানী জীবনপুরের নয়নপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। বড় ছেলে হারুন, মেঝ ছেলে মঈন, ছোট ছেলে জসিম উদ্দিন সবাই চাকরি করে।
চান্দিনা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দীন খান জানান, এ ঘটনায় আমাকে কেউ অবহিত করেনি। যেহেতু এখন জেনেছি নিশ্চয়ই ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ নেব।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাপস শীল জানান, আমি এখনই (শনিবার রাত সাড়ে ৯টা) গিয়ে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেব।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বীনি শিক্ষার প্রসারে জামিয়া (আলীয়া) মাদরাসার শিক্ষকদের সঙ্গে সরকার আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন, নৈতিকতা ও সত্যিকারের দ্বীনি শিক্ষা যেনও আমরা মানুষের মধ্যে দেই। বাংলাদেশে অনেক সমস্যা, অনেক বৈষম্য ও চ্যালেঞ্জ। এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সত্যিকারের দ্বীনি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
মাদরাসার উন্নয়নে সরকার বড় বড় প্রকল্প নিচ্ছে, বিল্ডিং হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে দেশের সর্ববৃহৎ ফাযিল/কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সত্যিকারের দ্বীনি শিক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আমাদের যারা আলেম-ওলামা আছেন তাদের প্রতি সব সময় অনুরোধ করেন গবেষণা করতে।
গবেষণার করে আমাদের দ্বীনি ব্যবস্থায় এজমা, কিয়াস করে, বাহাস করে আমরা যাতে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই লক্ষে কাজ করবে সরকার। এই লক্ষ্যে সরকার জামিয়া (আলিয়া) মাদরাসার শিক্ষকদের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।’
এখনো আমরা অনেক বেশি অর্থডক্স এবং অপ্রচলিত বা কনভেনশনাল জায়গায় আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশ আমাদের ধর্মতত্ত্ব, ইসলামি দ্বীনি জ্ঞান অনেক বেশি এগিয়ে নিয়েছেন। সেটা মানুষের অধিকার হোক, জাকাত বা ট্যাক্স কীভাবে দেবে সে বিষয়ে হোক, এই বিষয়গুলিতে আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
জ্ঞানী লোকরা নানান ধরনের গবেষণা, লব্ধ ফতোয়া দিয়েছেন। এই গবেষণার জন্য ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষদের অধিক মনোযোগী হতে হবে। যারা সমাজে খতিব হবেন বা ইমামতি করবেন, তারা সমাজের নেতা। শুধু ধর্মীয় নেতা নন, সমাজেরও নেতা।
তারা সেই সমাজে প্রভাব বিস্তার করেন। তাদের মাধ্যমে আমরা নানান বিষয় সাধারণ জনগণকে শেখাতে পারি। সেটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, দক্ষতানির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা বা নিষ্ঠাবান হওয়ার কথা বলি। একটি সময় ছিল মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা দেওয়া হত। কিন্তু আমরা সে পথে হাঁটতে পারিনি। বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, ইমাম সবাই যেন সম্মিলিত উদ্যোগে একসঙ্গে কাজ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
অনলাইন ডেস্ক :
আজ জাতীয় চা দিবস। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প, রপ্তানিমুখী চা শিল্প’। দিবসটি উদযাপনে বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠান এবং মেলা আয়োজন করা হয়েছে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
চা দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে চা শিল্পের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে দেশের চা শিল্প এখন টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। গত দুই দশকে উত্তরাঞ্চলে সমতল ভূমিতে চা আবাদে বিপ্লব ঘটে গেছে।
চা দিবস উদযাপনের বিস্তারিত তুলে ধরতে ব্রিফিং করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর আগমনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। চায়ের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে চা শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮টি ক্যাটেগরিতে বিভিন্ন চা কোম্পানি ও ব্যক্তির হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, দেশে বর্তমানে ১৬৮টি বৃহৎ চা বাগান এবং প্রায় ৮ হাজার ক্ষুদ্র চা বাগান রয়েছে। চা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী সব উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও সরকারের নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের চা শিল্প টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আরো উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ প্রমুখ।