আমরা পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 23 December 2024, 281 Views,

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদায়ী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান

চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেছেন, গত ৪ মাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে ভেঙ্গে পড়া আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। শহরের ট্রাফিকিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছি। এই শহর নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো। স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেছি, কিন্তু সময় পাইনি।

banner

তিনি বলেন, আরো তিন মাস সময় পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দাঙ্গা চিরতরে নির্মূল করতে পারতাম। ২২ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে তাঁকে দেয়া বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজনের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি নিয়াজ মোঃ খান বিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদায়ী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান আরো বলেন, বিগত ১৫ বছরে পুলিশ একটি দলের হয়ে কাজ করেছে। যার জন্য পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের একটা বিদ্বেষ ছিলো। বর্তমান সরকার পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে দাঁড় করাতে কাজ করছে।

তিনি বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যোগদান করেই প্রথমে প্রেসক্লাবে এসেছি। আবার চলে যাবার সময়ও আবার প্রেসক্লাবে এসেছি। আমার সাড়ে ৩ মাস সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য কতটুকু কাজ করেছি তার মূল্যায়ন আপনারা করবেন। তিনি বলেন, পুলিশের অনেক ভুল-ত্রুটি ছিলো। বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশে ৪৪জন পুলিশকে মারা হয়েছে। এতে করে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছিলো। আমরা পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি। তিনি বলেন, পুলিশের সংস্কার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ও থানার সকল গাড়ি, আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। একটা ধ্বংসস্তুপের উপর আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছিলাম। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি বলতে কিছুই ছিলোনা। এমন পরিস্থিতিতে কাজ করতে কষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সংকট রয়েছে, গাড়ির সংকট রয়েছে। এই সমস্যা একদিনে নিরসন করা সম্ভব নয়। তারপরও বর্তমানে পুলিশ ভালো কাজ করছে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কাজ করতে পেরে ভালো লেগেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকতা খুবই সমৃদ্ধ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকরা পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য কাজ করতে পেরেছি এটাই আমার সান্তনার জায়গা। পুলিশ সুপার বলেন, ৫ আগস্টের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রাফিকিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছিলো। আমরা আস্তে আস্তে ট্রাফিকিং ব্যবস্থা আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল সফলে সংবাদ সম্মেলন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 30 May 2024, 599 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ১ জুন শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন। এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরসহ নয় উপজেলায় পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ৫২০ জন শিশুকে ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ছয় থেকে ১১ মাস বয়সি শিশুর সংখ্যা ৫৮ হাজার ৩০০ এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সি শিশুর সংখ্যা চার লাখ ৮৩ হাজার ২২০।

banner

আজ ৩০ মে বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন এই কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যখাতে দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। কোভিডের টিকাদানে বাংলাদেশ সফলতা অর্জন করেছে।

সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন আরো বলেন, ভিটামিন “এ”প্লাস ক্যাপসুল শিশুদের রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। শিশুদের দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। সকল ধরনের মৃত্যুর হার ২৪ শতাংশ হ্রাস করে। তিনি একটি সুস্থ শিশু ও সুস্থ জাতি গঠনে ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে গণমাধ্যম কর্মীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ডাঃ মাহমুদুল হাসান।

বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 13 February 2024, 693 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় জামে মসজিদ রোডস্থ চেম্বার ভবনের তৃতীয় তলায় ফরিদ উদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

banner

উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি ও এফবিসিসিআই-এর পরিচালক আলহাজ্ব আজিজুল হক।

সভায় ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চেম্বারের সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক, ২০২৩ সালের অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন করেন চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর, ২০২৪ সালের বাজেট উপস্থাপন করেন চেম্বারের সহ-সভাপতি হাজী মোঃ বাবুল মিয়া ও বিগত সভার কার্যবিবরণী পেশ করেন চেম্বারের সচিব মোঃ আজিম উদ্দিন।

সভায় বিগত অর্থ বছরের কার্যবিবরণী, বার্ষিক প্রতিবেদন, অডিট রিপোর্ট, প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থিত সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সভায় অন্যান্যবারের ন্যায় ২০২৪ সালের অডিট রহমান কাসেম এন্ড কোম্পানীকে করার অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভায় চেম্বারের জানা অজানা যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

সভায় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রেজা, চেম্বারের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র পাল, রেডক্রিসেন্ট ইউনিট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ভিপি জায়েদুল হক, জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম, চেম্বারের পরিচালক মোঃ শাহজাহান মিয়া, মোঃ কামাল মিয়া, মোঃ আজিজুর রহমান শামীম, সুব্রত পাল, জাবেদুল ইসলাম সোহাগ, আলহাজ্ব মোঃ শাহ আলম, তানভীর আহমেদ, মোঃ আল মামুন, মোঃ বাবুল মিয়া, মোঃ রেজুয়ানুল হক (মনি), মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ নুরুজ্জামান ভূঁইয়া, মোঃ জুয়েল খান, আবুল খায়ের, আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ ও মোঃ আব্দুল মালেকসহ চেম্বারের বিপুল সংখ্যক সাধারণ সদস্যবৃন্দ।

সভা পরিচালনা করেন পরিচালক আলহাজ্ব মমিনুল আলম বাবু।

জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে গেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 22 June 2024, 536 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালু থাকা বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা হঠাৎ করে বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গত ৩ জুন থেকে চিকিৎসকরা বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে একদিকে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় রোগীরা, অন্যদিকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

banner

জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ জুন থেকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করেন হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রয়াত ডাঃ মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নির্ধারিত ফির মাধ্যমে অসহায় রোগীদের সেবাদান শুরু করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রোগীদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকেও অনেক রোগী এই হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতেন।

বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় মেডিকেল কর্মকর্তার সরকারি ফি ২০০ টাকা, জুনিয়ার কনসালটেন্ট ও আবাসিক সার্জনের ফি ৩০০ টাকা এবং সিনিয়র কনসালটেন্টের ফি ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করায় সাধারণ রোগীরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত ৩ জুন থেকে এই স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা এখন অনেক অসন্তুষ্ট। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় জেলার দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের হিসাব শাখা সূত্রে জানা গেছে, বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবায় বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চালু থাকা প্যাথলজি বিভাগের বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে সরকারি কোষাগারে অনেক টাকা জমা দিতে পেরেছেন। গত বছরের জুন মাসে শুধু পরীক্ষা-নীরিক্ষা থেকে প্রাপ্ত ২১ হাজার ৫৩৫ টাকা, জুলাই মাসে ৮৬ হাজার ৭০ টাকা, আগস্ট মাসে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৬০ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫ টাকা, অক্টোবর মাসে ১ লাখ ৪ হাজার ৯৩০ টাকা, নভেম্বর মাসে ১ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকা ও ডিসেম্বর মাসে ৯০ হাজার ৮১৫ টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দেন।
আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৯১ হাজার ৩৫৫ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮৬ হাজার ৯৩০ টাকা, মার্চ মাসে ৬৪ হাজার ৭৮০ টাকা এবং এপ্রিল মাসে ৫৪ হাজার ৩৫০ টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বিকেল তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালুর প্রথম মাসে গত বছরের জুন মাসে চিকিৎসকরা ২৫১ জন রোগী, দ্বিতীয় মাস জুলাই মাসে ১ হাজার ২২৬ জন, আগস্ট মাসে ১ হাজার ৪৫৭ জন, সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৫২৩ জন, অক্টোবর মাসে ১ হাজার ২১১ জন, নভেম্বর মাসে ১ হাজার ১৪০ জন ও ডিসেম্বর মাসে ৮৯২ জন রোগী দেখেছেন চিকিৎসকরা। চলতি বছরের গত জানুয়ারি মাসে ৯০৫ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১ হাজার ১১৮ জন, মার্চ মাসে ৬৩১ জন ও এপ্রিল মাসে ৮৫৭ জন রোগী দেখেন চিকিৎসকরা।

জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা ১১ হাজার ৩৬০ জন রোগী দেখেছেন, যেখান থেকে আয় হয়েছে ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ টাকা।

গত বছরের জুন মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আট মাস এসব রোগী দেখার টাকা থেকে নিজেদের প্রাপ্ত সম্মানী ভাগাভাগি করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিভাগের এক সভায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা থেকে প্রাপ্ত টাকা চিকিৎসকদের না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকেই হাসপাতালে বিকেলে রোগী দেখায় আগ্রহ হারাতে শুরু করেন চিকিৎসকরা।

চলতি বছরের ৩ জুন থেকে কোনো রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা বন্ধ করেন চিকিৎসকরা। তবে প্যাথলজি বিভাগ চালু রয়েছে।

হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন জানান, বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতালে রোগী দেখার চেয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখায় স্বাচ্ছন্দবোধ করেন চিকিৎসকরা। কারণ এতে চিকিৎসকদের আয়-রোজগার বেশি হয়। হাসপাতালের এক সভায় চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক জানান, বাংলাদেশে যেসব সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে, সেখানকার কোনো হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের সম্মানি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা সম্মানি উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৩ জুন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। তাঁর যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালে যথাসময়ে চিকিৎসকের উপস্থিত হওয়াসহ সকল বিভাগেই স্বাস্থ্যসেবার বিরাট পরিবর্তন হয়েছিল। পাশাপাশি তার সময়ে হাসপাতাল থেকে সরকারি কোষাগারে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব জমা হয়েছে। তার একান্ত প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে একমাত্র হাসপাতাল হিসেবে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সকালের পর দুপুর দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্যাথলজি বিভাগ চালু হয়। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের সকল হাসপাতালের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবার বিবেচনায় প্রথম হয়েছিল জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কর্মস্থলেই অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। চলতি বছরের ৩ জুন থেকে হাসপাতালের বৈকালিক সেবা বন্ধ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটু প্রশাসনিক জটিলতা চলছে। বৈকালিক সেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। তাই বৈকালিক সেবার বিষয়ে আলোচনা চলছে। আগে বৈকালিক সেবার সবগুলো বিভাগ খোলা থাকত। কিন্তু এখন বিষয়টি রিশিডিউলিং করা হচ্ছে। এখন প্রতিটা বিভাগ হয়তো চালু থাকবেনা । কাস্টমাইজড করা করে কিছু বিভাগ কমিয়ে আবার চালু করা হবে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে বৈকালিক সেবা চালু হবে।

এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রতন কুমার ঢালী বলেন, কিছু জটিলতার কারণে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ আছে। আমরা সীমিত পরিসরে সেবাটা আবার চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

একমাস ধরে নেই শিশুদের ইপিআই টিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 26 February 2023, 1338 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জন্মের পর শিশুদের ধাপে ধাপে দেওয়া সম্প্রসারিত টিকা দান কার্যক্রমের (ইপিআই) টিকা গত এক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোথাও নেই। ফলে কেন্দ্র এসেও সন্তানদের নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন মায়েরা। একাধিকবার এসেও টিকা না পাওয়ায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

banner

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইপিআই কর্মসূচিতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধযোগ্য বিভিন্ন ধাপে টিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছে যক্ষ্মা, পোলিও, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা। সময়সূচি অনুযায়ী টিকা না নিলে শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে না।

শিশু জন্মের পর প্রথম বিসিজি টিকা দিতে হয়। বয়স ছয় সপ্তাহ হলে আইপিভি টিকার প্রথম ডোজ ও ১৪ সপ্তাহে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়। একই সময় পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপিটি, হেপাটাইটিস-বি, হিব), ওপিভি এবং পিসিভি টিকার প্রথম ডোজ দিতে হয়। কমপক্ষে চার সপ্তাহর ব্যবধানে এ সব টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ দিতে হয়। শিশুর ২৭০ দিন পূর্ণ হলেই এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকার প্রথম ডোজ এবং ১৫ মাস হলেই দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়।

কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত একমাস ধরে বিসিজি টিকা ছাড়া শিশুদের কোনো টিকা মজুত নেই। ফলে শিশুদের সময় অনুযায়ী টিকাগুলো দেওয়া যাচ্ছে না।

গত শনিবার জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়ে দেখা যায়, ইপিআই টিকা কেন্দ্রে স্টাফরা অলস সময় পার করছেন। মাঝে মধ্যে বিসিজি টিকা দিতে নবজাতকদের নিয়ে মায়েরা আসছেন। তাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ধাপে টিকাগুলো দিতে আসা শিশুদের অভিভাবকদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

টিকার জন্য সন্তানকে কেন্দ্রে নিয়ে আসেন আসমা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার বাচ্চার তৃতীয় ধাপের টিকা দেওয়ার সময় ছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি। সেদিন আসার পর জানানো হয়েছিল টিকা নেই। কয়েকদিন পর আসবে। আজকে আসার পর টিকা কেন্দ্র থেকে একই কথা বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

নাজনীন বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমার সন্তানের প্রথম টিকা দিয়েছিলাম ২৮দিনের মাথায়। আজকে ছিল দ্বিতীয় ডোজের তারিখ। কিন্তু টিকা না থাকায় পরে আসতে বলেছে।’

এ বিষয়ে জেলার ইপিআই সুপারিন্টেনডেন্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একবছরে ৯১ হাজার শিশুকে টিকা দিয়ে থাকি। জেলার ৯৮টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২৪টি কেন্দ্রে মাসে একবার করে টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন টিকা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রতি তিন মাস পর পর টিকা পাঠানো হয়। এতদিন ঢাকাতেই টিকা ছিল না। আমরা কিছুদিনের মধ্যে টিকা পেয়ে যাবো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, টিকার জন্য আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। যেন দ্রুত টিকা আসে, চেষ্টা করে যাচ্ছি।

দেশকে সঠিক পথে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 8 September 2023, 1727 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পথ হারানো বাংলাদেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

banner

আজ ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চত্বরে শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। যেসব রাজাকার, আলবদররা মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, মা-বোনদের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে তারাই আবার বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছে। পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পরেও তারা ক্ষমতায় এসে দাপটের সঙ্গে দেশকে লুণ্ঠন করেছে। তারা ইতিহাস বিকৃত করে, বঙ্গবন্ধুর সঠিক জায়গা দিতে চায়নি।

তিনি বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও এই দেশকে সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন। এই পথ ধরেই তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।

অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম মাহমুদুর রহমান।

পরে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জেলার ছয় উপজেলায় ৩৩০ জন এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে এক লাখ ১২ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।