চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নদীপথ। তখন তিতাস ও বুড়ি নদী পানিতে ছিলো টইটম্বুর। বর্ষা মৌসুমে দু’কূল উপচে পানি খালবিল, মাঠঘাট, হাওড় বিলে গিয়ে পড়ত। বারো মাসই এলাকার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ছিল নৌযান। কিন্তু এখন ভরা বর্ষা মৌসুমেও সেই নদীতে পানি থাকে না বললেই চলে। পলি জমে কোথাও কোথাও ভরাট হয়ে গেছে। কোথাও আবার ধান চাষ হচ্ছে। হাট-বাজার ও বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে এক সময়ের প্রমত্তা তিতাস ও বুড়ি নদী এখন মরা খাল আর ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। একসময় দিনরাত তিতাস ও বুড়ি নদীতে উত্তাল ঢেউ আর জাহাজের সাইরেন শোনা গেলেও এখন এর অস্তিত্বই হারিয়ে যেতে বসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সহ নবীনগর উপজেলায় উন্নয়নের নামে ফসলি জমি ও খাল-বিল দখল করে সড়ক, স্থাপনা, বসতবাড়ি, হোটেল ও ফল ব্যবসায়ীরা বর্জ্য ফেলার কারনে তিতাস ও বুড়ি নদী এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী নবীনগর উপজেলায় যোগদান করার পর নবীনগর উপজেলা সহ নবীনগর পৌর প্রশাসকের দ্বায়িত্ব নেয়ার পর তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যোগদানের মাত্র কয়েক মাসেই সামাজিক নানা ইস্যুতে কাজ করছেন তিনি। নবীনগর সদরের তিতাস ও বুড়ি নদীকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে তিনি এলাকার স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে, আবার কখনো একাই তিতাস ও বুড়ি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে যান। নবীনগর সদর বাজারের ঘুরে ঘুরে নদী রক্ষায় জনসচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরন করে বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরছেন জাতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
সম্প্রতি ইউএনও রাজীব চৌধুরী কে দেখা যায়, নবীনগর পৌর সভার উদ্যোগে তিতাস ও বুড়ি নদীর পৌর সদরের শহর রক্ষা বাধে ফেলা ময়লা পরিস্কার করছেন। এবং নদীর পাড়ে জনসচেতনতামূলক ব্যনার টানিয়ে পৌর ডাস্টবিনে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জন্য বিনীতভাবে আহ্বান জানাচ্ছেন।
স্থানীয় সূধি সমাজের নেতৃবৃন্দরা জানান, তিতাস ও বুড়ি নদীর নাব্যতা সংকটে যখন হারিয়ে যেতে বসেছে তখন ইউএনও রাজীব চৌধুরী সদরের শহর রক্ষা বাধের ময়লা আবর্জনা স্তূপ পরিস্কার করে বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন স্থাপন করে সচেতনা মূলক লিফলেট বিতরণ করছেন। তিনি একাই দায়িত্ব নিয়ে নদী রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের উচিত ইউএনও রাজীব চৌধুরীর পাশে দাঁড়ানো।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন,‘নদী বাঁচলে নবীনগর বাঁচবে’ প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে নবীনগর পৌরসভার উদ্যোগে তিতাস নদীকে দূষণমুক্ত করতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিতাস পাড়ের ময়লা প্রতিদিন পৌরসভার ডাম্পিং স্পটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নদী পাড়ে সরবরাহ করা হয়েছে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন। সচেতনতামূলক কার্যক্রম হিসেবে ব্যবসায়ীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেছি। বিভিন্ন জায়গায় তিতাসকে দূষণমুক্ত রাখতে সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো হয়েছে। তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষার কার্যক্রমকে টেকসই করতে নদীর পাড়ে স্থাপন করা হচ্ছে ১৬ টি সিসি ক্যামেরা। তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষায় নবীনগর উপজেলা ও পৌরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে মুক্তি প্রাইভেট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: পারভেজ আহমেদকে হাত-পা বেঁধে ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের মালিক মো: হাবিবুর রহমান খন্দকার ও পরিচালক জসিম উদ্দিন সরকারের এর বিরুদ্ধে। ১৩ অক্টোবর রবিবার দুপুরে হাসাপতালের একটি রুম থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নবীনগর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় হাসপাতালের মালিক মো: হাবিবুর রহমান খন্দকার ও পরিচালক জসিম উদ্দিন সরকারসহ আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন চিকিৎসক পারভেজ আহমেদ।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ডাক্তার পারভেজ আহমেদ দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নির্ধারিত ডিউটি শেষ করে তার রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ওই সময় মুক্তি হাসপাতালের মালিক হাবিবুর রহমান খন্দকার ডাক্তার পারভেজ আহমেদকে ডাকাডাকি করলে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। এসময় বিবাদী জসিম উদ্দিনসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ রুমে জোরপূর্বক ঢুকে ডাক্তার পারভেজ আহমেদকে এলোপাথারি পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে হাত-পা বেধেঁ রাখে। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক জসিম উদ্দিন সরকারকে গ্রেফতার করে আজ ১৪ অক্টোবর সোমবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃত জসিম উদ্দিন সরকার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের রফিক উদ্দিন সরকারের ছেলে।
হাসপাতালের ম্যানেজার ঝরনা ঘোষ জানান, একজন রোগী এলে আমি রিসিট কেটে ডাক্তার সাহেবকে গিয়ে বলি, স্যার একজন রোগী এসেছে, তখন ডাক্তার সাহেব উত্তেজিত হয়ে আমাকে জানান, আমার এখন কোন ডিউটি নেই, আমি যেতে পারবো না, তোমার মালিককে জানিয়ে দাও, পরে হাসপাতালের মালিক হাবিব স্যার এসেও ডাক্তার সাহেবকে অনুরোধ করেন রোগী দেখার জন্য। কিন্তু ডাক্তার সাহেব কারও কোন কথাই মানতে নারাজ। এনিয়ে ডাক্তার সাহেব ও হাবিব স্যার তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে তাদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় হাবিব স্যারও আহত হয়েছেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, আমাকে একজন ফোন করে জানান মুক্তি প্রাইভেট হাসপাতালে মারামারি হয়েছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে হাসপাতালে যায়। হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরিচালক জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করলেও হাসপাতালের মালিক হাবিবুর রহমান পালিয়ে যাই। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে তিতাস নদীর পাড় থেকে অবৈধ ভাবে মাটি উত্তোলনের দায়ে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে উপজেলার বগডহর তিতাস নদীর পাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করেন নবীনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান।
জরিমানাপ্রাপ্ত মানিক মিয়া উপজেলার চিত্রি এলাকার খুরশিদ মিয়ার ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান জানান, কিছু প্রভাবশালী ভূমিখেকু চক্র নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সরকারি ও মালিকানাধীন কৃষি জমি ও নদীর পাড় থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করছিলেন। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুরে উপজেলার বগডহর তিতাস নদীর পাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানিক মিয়া নামে একজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী মানিক মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরো জানান, ভবিষ্যতে সে আর অবৈধ ভাবে মাটি কাটবে না বলে মুচলেকা আদায় করা হয়। জনস্বার্থে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের নবীনগর নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফয়জুর রহমান বাদলকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক সাঈদ।
আজ ২৪ ডিসেম্বর রবিবার বিকেলে সলিমগঞ্জ বাজারে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সময় তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন।
নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে সাঈদ বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। এবার নৌকার বিজয় নিশ্চিত করা ও নৌকার ভোটারদের বিভক্ত না করে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফয়জুর রহমান বাদলকে সমর্থন দিতেই নির্বাচন থেকে সরে এসেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১২৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নবীনগর শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অডিটোরিয়ামে গভর্ণিংবডির সভাপতি, সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর নাতনি খিলখিল কাজী।
সহকারী শিক্ষক মো. কামরুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় ও অধ্যক্ষ মো. মোস্তাক আহাম্মদ এর স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সায়েমূল হুদা, আশুগঞ্জ একেএম ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মো. দুলাল মিয়া প্রমুখ।
এ সময় গভর্ণিং বডি সদস্যবৃন্দ, ছাত্র ও শিক্ষক, অভিভাবক, প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কবির নাতনি বলেন, তিনি আমাদের জাতীয় কবি, তবে সর্বস্তরের মানুষের কাছে আমরা এখনো তাকে পৌঁছে দিতে পারিনি। বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী নজরুল ছেলেবেলায় পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন ‘দুখু মিয়া’ নামে। পিতৃহীন কবি একে একে হারিয়েছেন কাছের স্বজনদের। আর্থিক অসচ্ছলতা তার জীবনকে কঠিন করে তুলেছিল। সব বাধা অতিক্রম করে একসময় তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। সাম্য ও মানবতার চেতনায় সমৃদ্ধ ছিল তার লেখনী। কবিতায় বিদ্রোহী সুরের জন্য হয়ে ওঠেন ‘বিদ্রোহী কবি’।
এছাড়াও উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের ভিটিবিষারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডা. সায়েমুল হুদার সভাপতিত্বে কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনাসভায় অতিথিগণ অংশগ্রহণ করেন।