অনলাইন ডেস্ক :
চীনের তিব্বতে ইয়ারলুং জাংবো নদে (ভারত-বাংলাদেশে যার পরিচিতি ব্রহ্মপুত্র) বেইজিংয়ের বাঁধ নির্মাণের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, এ বিষয়ে ভারতের মতামত ও উদ্বেগের কথা চীনকে জানানো হয়েছে। অভিন্ন নদীর ক্ষেত্রে ভাটির দেশেরও কিছু অধিকার আছে।
৩জানুয়ারি শুক্রবার চীনের বাঁধ নির্মাণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। রণধীর জয়সোয়াল বলেন, রাজনৈতিক ও বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে সেই অধিকারের কথা বারবার জানানো হয়েছে। সেই অধিকার ও স্বার্থের বিষয়ে ভারতের পর্যবেক্ষণ জারি আছে। সরকার সেইমতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করবে।
জানা গেছে, এই বাঁধ নির্মাণে চীনের খরচ হবে আনুমানিক ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। দেশটির ‘থ্রি গর্জেস’ বাঁধের চেয়ে বড় প্রস্তাবিত এই বাঁধ। এটি নির্মিত হলে তা হবে পৃথিবীর বৃহত্তম বাঁধ। প্রস্তাবিত বাঁধ নিশ্চিতভাবেই দুই ভাটির দেশ ভারত ও বাংলাদেশের নদীপ্রবাহে প্রভাব ফেলবে। দুই দেশই এ বিষয়ে চিন্তিত।
এ নিয়ে জয়সোয়াল বলেন, ওই তল্লাটে চীনের দখলদারি ভারত কখনো মেনে নেয়নি, নেবেও না। তাদের ওই ঘোষণা ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। ওই এলাকা ভারতের ছিল, ভারতেরই থাকবে। কূটনৈতিক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হবে। সূত্র : এনডিটিভি
চলারপথে রিপোর্ট :
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পণ্য আমদানি শুরু হয়েছে।
আজ ১৩ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ছয়টায় একটি ট্রাকে করে বন্দর দিয়ে ৭ মেট্রিক টন জিরা এসেছে ভারত থেকে। এর মাধ্যমে আবারও সচল হলো বন্দরের আমদানি বাণিজ্য।
হাইড্রোল্যান্ড সলিউশন নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান এই জিরা আমদানি করেছে। তবে আজ থেকে সরকারি ছুটি শুরু হওয়ার ঈদের আগে বন্দর থেকে জিরা খালাস না করতে পারার শঙ্কা প্রকাশ করেন প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স শফিকুল ইসলাম আমদানিকৃত জিরার কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ের কাজ করবে।
আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে, প্রতি টন জিরার দাম পড়েছে দুই হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় দুই লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার মতো (প্রতি ডলার ১১৭ টাকা ধরে)।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. ছাগিরুল ইসলাম বলেন, হাইড্রোল্যান্ড সলিউশন আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৭ মেট্রিক টন জিরা আমদানির জন্য এলসি খুলেছে। আজকে সন্ধ্যায় জিরা নিয়ে একটি ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে। প্রথমবারের মত এই স্থলবন্দর দিয়ে দেশে জিরা আমদানি হয়েছে। আমদানি পণ্য থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত হারে শুল্ক এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন মাশুল পাবে।
অনলাইন ডেস্ক :
সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিতব্য এ বছরের নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে আয়োজক নোবেল ফাউন্ডেশন। ওই তিন দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানানোয় ক্ষোভ সঞ্চার হলে এই সিদ্ধান্ত নেয় ফাউন্ডেশন।
এর আগে ২০২২ সালে নোবেল ফাউন্ডেশন নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ও ভোজ সভায় রাশিয়া ও বেলারুশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানায় ফাউন্ডেশন।
যদিও গত বৃহস্পতিবার ফাউন্ডেশন জানিয়েছিল, তারা তাদের পুরোনো রীতি অর্থাৎ সুইডেনে প্রতিনিধিত্বকারী সব দেশকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তে ফিরে যাবে। তবে এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।
আজ শনিবার ফাউন্ডেশন জানায়, নতুন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ রক্ষায় নোবেল পুরস্কার যে বার্তা বহন করে তা তুলে ধরতে।
এক বিবৃতিতে ফাউন্ডেশন জানায়, ‘আমরা গত বছরের ব্যতিক্রমকে সাধারণ চর্চা হিসেবে আবারও গ্রহণ করতে যাচ্ছি। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানকে স্টকহোমে অনুষ্ঠিতব্য নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি না।’
অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতারের একদিন পর এবার দলটির মহাসচিব আসাদ উমরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ ১০ মে বুধবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি)।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার একই স্থান থেকে নাটকীয়ভাবে ইমরান খানকে গ্রেফতার করে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। কাদির খান ট্রাস্ট মামলায় সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।
জিও নিউজ জানিয়েছে, ইসলামাবাদ পুলিশের (সিটিডি শাখা) কর্মকর্তারা আসাদ উমরকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বার রুমের বাইরে থেকে তুলে নিয়ে গেছে।
খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, এদিন পিটিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল (মহাসচিব) ও অন্যান্য নেতারা পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাত করতে অনুমতির জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জমা দিতে গিয়েছিলে। এ সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে ঝটিকা অভিযান শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। নতুন প্রশাসনের নির্দেশে ২৬ জানুয়ারি রোববার থেকে শুরু হয় এ তৎপরতা। প্রথম দিনের অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে ৯৫৬ জনকে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে ২ হাজার ৬৮১ জনকে। সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন গ্রেফতার করা হচ্ছে এক হাজার জন। শিকাগোয় ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে শহরটির অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠনগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এ তথ্য জানিয়েছে। রবিবার শুরু হওয়া এই অভিযানে আইসিইর পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন এফবিআই ও ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ (ডিইএ) বিচার বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। এই অভিযান এক সপ্তাহ ধরে চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের ইশারায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসী তাড়ানোর দায়িত্ব পেয়েছেন টম হোম্যান। তিনি আইসিইর সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক। সিএনএনের সাথে সাক্ষাৎকারে হোম্যান ঝটিকা অভিযান শুরুর দিনকে ‘একটি ভালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, এই অভিযান ‘মোড় বদলে’ দেওয়ার মতো একটি ঘটনা।
ওই সাক্ষাৎকারের সময় ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে ছিলেন টম হোম্যান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে (অবৈধ অভিবাসন) পুরো প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েছেন। শিকাগোর জননিরাপত্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিগুলোর ওপর নজর রাখতে আজ আমরা সরকারের সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে মাঠে নামিয়েছি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আইসিই লিখেছে, রবিবার দেশজুড়ে ৯৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে শিকাগোয় এই ‘বাড়তি অভিযান’ ছাড়াও আটলান্টা, পুয়ের্তো রিকো, কলোরাডো, লস অ্যাঞ্জেলেস, অস্টিন ও টেক্সাস শহরে অভিবাসনসংক্রান্ত কর্মকর্তাদের তৎপরতা লক্ষ করা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, আইসিইর মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতিদিন ৭৫ জনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রতিদিন গড় গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়বে। গত অর্থবছরে আইসিইর অভিযানে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে প্রতিদিনি গ্রেপ্তারের সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়ার তথ্য অস্বীকার করেছেন টম হোম্যান।
অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক : প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে বহু অভিবাসী প্রবেশ করেছিলেন। তাঁদের বড় অংশের ঠিকানা হয়েছিল টেক্সাস। তখন টেক্সাসের গভর্ণর গ্রেগ অ্যাবট এই অভিবাসীদের বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি শাসিত শহরগুলোয় পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে শিকাগোর স্থানীয় একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের নানা তৎপরতার মুখে আতঙ্কে রয়েছেন শহরটির অনেক অধিবাসী। তাঁদের অনেকে স্কুল বা কাজে যাচ্ছেন না। যেমন শহরটির উপকণ্ঠে বসবাস করা দুই বোন ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্কুলে যাচ্ছে না। তাদের মা–বাবাও কাজে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশটির হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত তাঁদের অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান চলছে।
ইউএস কমিটি ফর রিফিউজিস অ্যান্ড ইমিগ্র্যান্টস নামের আরেকটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এনা মারিয়া বেনা বলেন, ‘শিশুরা স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। তারা ভয় পাচ্ছে। তারা মা–বাবার কাছ থেকে এসব বিষয়ে শুনছে।
সম্প্রদায়ের মানুষের কাছ থেকে শুনছে। আমার মনে হয়, যখন শিক্ষার্থীরা ভয়ের কারণে স্কুলে যেতে চায় না, তখন ওই সম্প্রদায়ের মনের অবস্থা কী, তা অনেকটাই বোঝা যায়?’
এদিকে শিকাগোতে ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে শহরটির অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠনগুলো। আদালতে দাখিল করা নথিপত্রে বলা হয়েছে, শিকাগোয় অভিবাসীদের জন্য ছাড় থাকার কারণে শহরটি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযানের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এটা সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে যে বাক্স্বাধীনতার অধিকার দেওয়া হয়েছে, সেটি খর্ব করে। একই সঙ্গে চতুর্থ সংশোধনীতে অযৌক্তিক তল্লাশি ও আটকের বিরুদ্ধে যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে, তা লঙ্ঘন করে।
দেশজুড়ে অভিযানÑধরপাকড় : জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরের উপকণ্ঠ থেকে ওয়াল্টার ভালাদারেস নামের ৫৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছেন আইসিইর সদস্যরা। তিনি হন্ডুরাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তবে তাঁর বৈধ কোনো নথিপত্র নেই। সিএনএনকে ওয়াল্টারের পরিবারের সদস্যরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওয়াল্টারের ভাই এডউইন ভালদারেস বলেন, ওয়াল্টার নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। আটলান্টার উপকণ্ঠে লিলবার্ন এলাকায় চার সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। ওয়াল্টারের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ নেই। একবার শুধু লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সে ঘটনায় জরিমানাও পরিশোধ করেছিলেন তিনি।
আটলান্টার উপকণ্ঠে টাকার এলাকা থেকে নথিপত্রহীন আরেক অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তিনি একটি গির্জায় ছিলেন। ওই গির্জার যাজক লুইস ওরতিজ সিএনএনকে বলেন, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা চলাকালে তিনি দেখতে পান গির্জার কয়েকজন সদস্য ওই ব্যক্তিকে বাইরে বের করে নিয়ে যাচ্ছেন। বাইরে যাওয়ার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করেন আইসিই সদস্যরা।
রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশটির হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত তাঁদের অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান চলছে। এই দ্বীপপুঞ্জের হনুলুলু শহরের অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করেছেন ডিইএ ও আইসিই সদস্যরা। ডিইএ জানিয়েছে, রোববার সকালে কলোরাডোয় মাদক চোরাচালানিদের এবং ভেনেজুয়েলার অপরাধী চক্রগুলো লক্ষ্য করে চালানো অভিযানে প্রায় ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।
টার্গেটে স্টুডেন্ট ভিসাধারীরা : অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতারের পরই নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার অভিযানে স্টুডেন্ট ভিসায় আগতরাও টার্গেট হয়েছেন। ৩ বাংলাদেশি ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে স্টুডেন্ট ভিসার শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে। তারা ভার্সিটিতে না গিয়ে নিয়মিত কাজ করছিলেন।
এদিকে পিএইচডি কোর্স করতে ঢাকা থেকে জেএফকে অবতরণকারী আরেক স্টুডেন্টকে জেএফকে থেকেই ফেরৎ পাঠানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইমিগ্রেশন বিভাগের অফিসার জিজ্ঞাসাবাদের সময় এই স্টুডেন্টের কাছে থেকে সদুত্তর না পাওয়ায় তার ভিসা বাতিল করে ফিরতি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেয়া হয়।
আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক (সরকার বিষয়ক) এবং আমেরিকা সুপ্রিম কোর্টের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। ডেমক্র্যাটিক পার্টির লিডার এটর্নী মঈন চৌধুরী আরো জানান, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসেবে ভিসা গ্রহণের সময় উল্লেখিত তথ্যের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন জেএফকে এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস অফিসার। সঠিক জবাব পাননি। অপরদিকে, স্টুডেন্ট ভিসা লংঘন করে নিয়মিতভাবে কাজ করার তথ্য উদঘাটিত হয় সংশ্লিষ্টদের সেলফোন ট্র্যাকিংয়ে। ভার্সিটি অথবা কলেজের পরিবর্তে ভিন্ন একটি স্থানে প্রতিদিনই দীর্ঘ সময় অবস্থানের তথ্য খতিয়ে দেখার সময় উদঘাটিত হয় ভিসা বাতিলের অপকর্ম।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ভিসায় আগত অনেক এশিয়ানই বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, সুপার মার্কেট কিংবা ট্র্যাভেল এজেন্সি অথবা চিকিৎসকের প্রাইভেট ক্লিনিকে রিসিপশনিষ্টের কাজ করছেন। কেউ কেউ অনলাইনে ক্লাস করছেন। অবৈধ অভিবাসীদের ধর-পাকড়ের অভিযানে এহেন অপকর্মে লিপ্ত ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট’রাও ধরা পড়ছেন বলে নিউজার্সি, ভার্জিনিয়া, পেনসিলভেনিয়া, ম্যাসাচুসেট্্স, জর্জিয়া, ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, মিশিগান, আরিজোনা থেকে জানা গেছে।
এদিকে, আইসের (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) উদ্ধৃতি দিয়ে ফক্স নিউজের এক বুলেটিন বলা হয়েছে, সোমবার টেক্সাসের বিভিন্ন স্থান থেকে ৮৪ জনসহ সারা আমেরিকা থেকে এক হাজার অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম ৭ দিনে গ্রেফতারস হলো ৩৩ অবৈধ অভিবাসী। এরা সকলেই নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল এবং সামাজিক শান্তি বিনষ্টের হুমকি বলেই অবৈধদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিটে হেকসেথ জানান, সোমবার আরো ৪ শতাধিক সৈনিক টেক্সাসের সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে। এরফলে আগের সপ্তাহের তুলনায় বেআইনীভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারির সংখ্যা ৯০% কমেছে বলেও দাবি করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
আইসের গ্রেফতার-অভিযানে সন্ত্রস্ত গোটা কম্যুনিটি। জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ওজোনপার্ক, ব্রুকলীনের বাংলাদেশী অধ্যুষিত পরিভ্রমণকারে সোমবার অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট, সুপারমার্কেট, গ্রোসারি স্টোরে গ্রহকের মত বিক্রেতার সংখ্যাও একেবারেই নগন্য মনে হয়েছে। একধরনের ভীতি তৈরী হয়েছে ইমিগ্র্যান্ট কম্যুনিটিতে। টাইমস স্কোয়ার, ডাউন টাউন, মিডটাউন, আপটাউনের ব্যবসা-বাণিজ্যেও স্থবিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জানা গেছে, নিউইয়র্কে নূন্যতম মজুরি হচ্ছে ঘন্টায় ১৭ ডলারের মত। অবৈধদের দিয়ে সে সব কাজ করিয়ে ঘন্টায় ৫/৬ ডলার করে দিতে পারায় ব্যবসায় মুনাফা বেশী বলে ব্যবসায়ীরা জানান। যদিও করোনা মহামারির পর অন্যসকল পন্যের মত খাদ্য-বস্ত্র-বিনোদনের সকল পন্যের দামও দ্বিগুণ করা হয়েছে। অর্থাৎ অবৈধদের দিয়ে ব্যবসা চালাতে না পারলে লাভের অংক অনেক কমবে বলে ব্যবসায়ীরা ট্রাম্পের ওপর নাখোশ।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারের পরই নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার জন্যে সেনাবাহিনীর বিমান ব্যবহার করছে ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে ডিটেনশন সেন্টারের ৪১ হাজার বেডই পূরণ হয়ে আছে আগে থেতেই। এজন্য গ্রেফতারের পরই অবৈধ অভিবাসীদেরকে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার এই কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। আরো উল্লেখ্য, ১৭ লাখের অধিক অভিবাসীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারের আদেশ জারি রয়েছে অনেক আগে থেকেই। এর সাথে যোগ হয়েছে গত চার বছর বাইডেন-কমলার আমলে বেআইনীভাবে সীমানা অতিক্রমকারিরা। এ সংখ্যা ২০ লাখের বেশী বলে বিভিন্নভাবে জানা গেছে। এদের সকলকে গ্রেফতার এবং দ্রুত বহিষ্কার করা সম্ভব না হলে বিপুল অর্থ লাগবে থাকা-খাওয়া বাবদ। সে ইস্যুতেও দুশ্চিন্তায় রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেদিকে লক্ষ্য রেখে যারা সীমানা অতিক্রমের পর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করবেন-তাদেরকেও সরাসরি মেক্সিকো-তে পাঠিয়ে দেয়া হবে আবেদনের চ’ড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত। সবকিছু মিলিয়ে সারা আমেরিকায় অভিবাসী-সমাজে টেনশন আর অস্থিরতা বিরাজ করছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতীয় বিমান বাহিনীর মিগ ২১ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় দুই জন নারীসহ ৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা মারা গেছে। তবে বিমান থেকে পাইলট বের হয়ে আসতে পেরেছেন।
আজ ৮ মে সোমবার ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের হনুমানগড় জেলায় এই ঘটনা ঘটে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে পাইলট একটি প্যারাসুট ব্যবহার করে সময়মতো বিমান থেকে লাফ দিয়েছিলেন। আর এ কারণে তিনি নিরাপদ আছেন বলে জানা গেছে।
ভারতীয় বিমান বাহিনী বলেছে, দুর্ঘটনায় পাইলট সামান্য আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় দেশটির বিমান বাহিনী বলেছে, আইএএফের একটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান আজ সকালে নিয়মিত প্রশিক্ষণের সময় সুরতগড়ের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে। পাইলট নিরাপদে বের হয়ে যেতে পেরেছেন, তবে সামান্য আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, পাইলট নিরাপদে আছেন এবং উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। সুরতগড় থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর এই যুদ্ধবিমানটি উড্ডয়ন করেছিল। একপর্যায়ে হনুমানগড়ের ডাবলি এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসারাম বোস বলেছেন, অন্তত দুইজন বেসামরিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আরও তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। কয়েকদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার ধ্রুব হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছিল। তাতে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বিধ্বস্ত হলো বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান।
এর আগে গতবছর জুলাই মাসে রাজস্থানের বারমেড়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর আরেকটি মিগ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল। ওই ঘটনায় দুই পাইলটের মৃত্যু হয়েছিল।