অনলাইন ডেস্ক :
মালয়েশিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চতুর্থ ম্যাচে নেপালকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। ৫২ রানে গুটিয়ে যাওয়া নেপালকে ৪০ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই সহজে পরাজিত করেছ বাংলাদেশের মেয়েরা। আজ ১৮ জানুয়ারি শনিবার মালয়েশিয়ার ইউকেএম ক্রিকেট ওভালে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশি স্পিনারদের ঘূর্ণিতে ১৮.২ ওভার শেষে ৫২ রানে গুটিয়ে যায় নেপাল। জবাবে ৪০ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশের মেয়েরা।
৫৩ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলায় কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে ২১ রানের জুটি গড়ে স্বস্তি এনে দেন সাদিয়া ইসলাম ও অধিনায়ক সুমাইয়া আক্তার। তবে কেউই অবশ্য শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি। ২৪ বলে ১ চারে সর্বোচ্চ ১৬ রান করেন সাদিয়া ইসলাম। ২৪ বলে ১২ রানে আউট হন সুমাইয়া।
এরপর আফিয়া আশিমা ইরাকে (৯) সাথে নিয়ে বাকিটা পথ পাড়ি দেন জান্নাতুল মাওয়া। দারুণ বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৫ রান করায় ম্যাচসেরার পুরস্কার পান তিনি। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি স্পিনারদের ঘূর্ণিতে একের পর এক উইকেট হারায় নেপালের মেয়েরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৯ রান আসে ওপেনার সানা প্রবীণের ব্যাট থেকে। এছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন কেবল সীমানা কেসি (১০)। শেষ পর্যন্ত নেপালের ইনিংস থামে ৫২ রানে।
বাংলাদেশের পক্ষে দু’টি উইকেট লাভ করেন জান্নাতুল মাওয়া। একটি করে উইকেট লাভ করেন নিশি, ফাহমিদা ছোঁয়া ও আনিসা আক্তার সোবা। এছাড়া রান আউটের শিকার হয় নেপালের ৫ ব্যাটার।
অনলাইন ডেস্ক :
পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
আজ ৩ মে শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৮ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল।
১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ রান তুলতেই লিটনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। এরপর ধীর গতির ব্যাট করেন নাজমুল শান্ত। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৪ বলে ২১ রান করেন। এরপর তানজিদ তামিম ও তাওহীদ হৃদয় ঝড়ো ব্যাটিং করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত তানজিদ তামিম ৪৭ বলে ৬৭ রান করেন ও তাওহীদ হৃদয় ১৮ বলে করেন ৩৩ রান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মাহেদী নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই সরাসরি বোল্ড করে ফেরান জিম্বাবুয়ের ওপেনার ক্রেইগ আরভিনকে (০)। এরপর শরিফুল ইসলাম এক ওভারে তিন বাউন্ডারি সহ হজম করেন ১৩ রান। কিন্তু তাসকিন আহমেদ এসে রানের চাকায় লাগাম টানেন। যার ফল তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রথমবার বল হাতে নিয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সাইফউদ্দিন।
ওভারের শেষ বলে তিনি জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত ব্যাটার জয়লর্ড গাম্বিকে (১৪) বিদায় করেন। উইকেট পতনের মিছিল এরপর চলতেই থাকে। ষষ্ঠ ওভারে ফের বল হাতে নেন মাহেদী। এবার প্রথম বলেই রান আউটের শিকার হন একপ্রান্ত আগলে রাখা ব্রায়ান বেনেট (১৬)।
পরের বলে এসেই ডাক মারেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। মাহেদীর লেন্থ বলে প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রাজা। ১ উইকেটে ৩৬ রান করা জিম্বাবুয়ে আর কোনো রান যোগ করার আগেই হারায় আরও ৩ উইকেট।
এখানেই শেষ নয়। তাসকিন পরের ওভারে তুলে নেন জোড়া উইকেট। ওভারের প্রথম দুই বলেই তিনি বিদায় করেন শন উইলিয়ামস ও রায়ান বার্লকে। দু’জনেই বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর অষ্টম ওভারে লুক জঙওয়ে (২) বিদায় নেন সাইফউদ্দিনের বলে।
৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে সঙ্গে নিয়ে ক্লিভে মাদানদে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন। শুরুতে তারা ধীরস্থিরভাবেই খেলছিলেন। কিন্তু শেষদিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তারা।
শরিফুলের করা ১৭তম ওভারে ১১ ও রিশাদ হোসেনের করা পরের ওভারে ১৬ রান নেন মাসাকাদজা ও মাদানদে। এরপর ১৮তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকেও ছক্কা হাঁকান মাসাকাদজা। এক বল পরই অবশ্য তার সঙ্গী মাদানদেকে বোল্ড করেন তাসকিন।
তার ইয়র্কার মাদানদের দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। অষ্টম উইকেটে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড ৬৫ বলে ৭৫ রানের জুটি ভেঙে যায় এতে। ৬ চারে ৩৯ বলে ৪৩ রান করে আউট হন মাদানদে। তার বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের রান হয়নি খুব একটা। শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন মাসাকাদজা।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন। সমান ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান সাইফউদ্দিনও।
জিম্বাবুয়ের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। ব্যাট হাতে অনেকদিন ধরেই অধারাবাহিক ওপেনার লিটন দাস শুরুটা করেন বাজেভাবে। ব্লেসিং মুজারাবানির করা দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড তিনি। গুড লেংথে ফেলা বলটি লিটনের ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে স্টাম্প ভেঙে দেয়। এতে ৩ বলে মাত্র ১ রানেই থামল সর্বশেষ ১৯ ইনিংস আগে ফিফটির দেখা পাওয়া লিটন। যা বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের জন্যও বড় চিন্তার কারণ!
শান্ত ভালো খেলতে থাকলেও কাটা পড়েছেন দলের ৫৭ রানের মাথায়। ২৪ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তবে তানজিদকে থামানোই যাচ্ছিল না। দারুণ ছন্দে থাকা এই ওপেনার দৃষ্টিনন্দন সব শটে হাঁকাচ্ছিলেন একের পর এক বাউন্ডারি। দুর্দান্ত দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অভিষেকেই হাঁকিয়েছেন ফিফটি।
চারে নেমে দারুণ কিছু শট খেলেছেন তাওহিদ হৃদয়ও। শেষ দিকে তানজিদ-হৃদয়ের ব্যাটে চড়েই এগিয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। দুজনে মিলে হতে দেননি কোনো বিপদ। হেসেখেলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ২৮ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা। তানজিদ অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে। অন্যদিকে হৃদয় ১৮ বলে ৩৩ রান করে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তানজিদ-হৃদয়। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন লুক জঙ্গুয়ে এবং ব্লেসিং মুজারাবানি।
অনলাইন ডেস্ক :
বিগ ব্যাশের ফাইনালে মিচেল ওয়েনের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে সিডনি থান্ডার্সকে উড়িয়ে দিয়েছে হোবার্ট হারিকেন্স। ৩৯ বলের রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরিতে হোবার্ট হারিকেন্সকে প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশের চ্যাম্পিয়ন বানালেন ২৩ বছর বয়সী তরুণ হার্ড হিটার ব্যাটার। আজ ২৭ জানুয়ারি সোমবার হোবার্টে ফাইনাল ম্যাচে সিডনি থান্ডার্সকে হোবার্ট ৭ উইকেটে হারিয়েছে। শুরুতে ব্যাট করে জেসন সাঙ্ঘা ও ডেভিড ওয়ার্নরের ব্যাটে ১৮২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় সিডনি। জবাবে নেমে ৩৫ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় হোবার্ট।
ফাইনাল ম্যাচে হোবার্টের জয়ের নায়ক মিচেল ওয়েন। ১১ ছক্কা ও ৬ চারে ৪২ বলে ১০৮ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটার। ফাইনালে সেঞ্চুরি করে নাম লিখিয়েছেন রেকর্ডবুকেও। ৩৯ বলে তার করা সেঞ্চুরিটি বিগব্যাশের ইতিহাসে যৌথভাবে দ্রুততম। ২০১৪ বিগ ব্যাশে তৃতীয় আসরে ৩৯ বলে তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছিলেন ক্রেইগ সিমন্স।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন ওয়েন। তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে প্রথম ৩ ওভারে হোবার্টের রান হয় ৬২। ১৬ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন ওয়েন। বিগ ব্যাশের ফাইনালে এটিই সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড।
পাওয়ারপ্লের পরও চলতে থাকে ওয়েনের ঝোড়ো ব্যাটিং। ৭ ওভারে ১০৯ রান করে স্বাগতিক দল। ওয়েন এক পাশে ঝড়ো ব্যাটিং করলেও অন্য পাশে সেলেব জোয়েল খেলেছেন তার স্বাভাবিক ক্রিকেট। তবে খুব বেশি রান করতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। ১১ বলে ১৩ রান করে অষ্টম ওভারে আউট হন তানভীর সাঙ্ঘার বলে। একই ওভারে আউট হন নিখিল চৌধুরীও।
ওয়েনের বিধ্বংসী ব্যাটিং চলমান থাকায় তেমন চাপ বাড়াতে পারেনি সিডনি। ১০ ওভারে হোবার্টের স্কোরকে ১৩৮ রানে নিয়ে যান তিনি। ১০৮ রান করে এরপর ওয়েন আউট হলেও লড়াইয়ে ফেরার কোনো উপায় ছিল না সিডনির। ম্যাথু ওয়েড ৩২ এবং বেন ম্যাকডরমেট ১৮ রানে অপরাজিত থেকে শিরোপা নিশ্চিত করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টিতেও জয় পেয়েছে টাইগাররা। এতে ৩-০ তে এগিয়ে থেকে সিরিজ জিতল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
আজ ৭ মে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তোলে টাইগাররা। জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান তোলে জিম্বাবুয়ে।
ব্যাট করতে নেমে তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাসের জুটিতে প্রথম ৩ ওভারে ২২ রান আসে বাংলাদেশের। কিন্তু চতুর্থ ওভারে গিয়ে লিটন দাস রীতিমতো পাগলামি শুরু করেন। ব্লেসিং মুজারাবানির দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে স্কুপ করতে গিয়েও সেটি ঠিকঠাক করতে পারেননি। টানা তৃতীয় বলে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন লিটন। ১৫ বল খেলে ২ চারে কেবল ১২ রান করেন তিনি।
পরের ওভারে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৪ বলে ৬ রান করে আউট হয়ে যান। এরপর উইকেটে এসে তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৪২ রান। দু’জনের ২৬ বলে ৩১ রানের জুটিতে আশা খুঁজে পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই জুটি ভেঙে যায় ফারাজ আকরামের বলে। মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ২২ বলে ২১ রান করে ফেরেন তানজিদ।
এই জুটি ভেঙে যাওয়ার পর হৃদয়ের সঙ্গী হয়ে দলকে টেনে নেন জাকের আলী অনিক। শুরুতে কিছুটা ধীরগতিতে খেললেও আস্তে আস্তে হাত খোলেন জাকের ও হৃদয়। ৩৪ বলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পান তাওহীদ হৃদয়। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্লেসিং মুজারাবানিকে স্কুপ করে চার হাঁকান হৃদয়। কিন্তু পরের বলেই তার ইয়র্কারে হয়ে যান বোল্ড। ৩৮ বলে ৫৭ রান করেন হৃদয়।
হৃদয়ের এক বল পর মুজারাবানির আরেক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে যান জাকের আলি অনিকও। ৩৪ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। শেষ ওভারে ১৬ রান নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও রিশাদ হোসেন। রিয়াদ ৯ ও রিশাদ ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন মুজারাবানি। একটি করে উইকেট পান ফারাজ আকরাম ও সিকান্দার রাজা।
রান তাড়ায় নেমে পাওয়ার প্লের ভেতরে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৬ রানের মাথায় মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন তুলে নেন ওপেনার জয়লর্ড গাম্বিকে (৯)। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেটের দেখা পান তানজিম হাসান সাকিব। নিজেই ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ব্রায়ান বেনেটকে (৫)।
পরের ওভারে ক্রেইগ আরভিনকে (৭) বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (১) গ্লাভসবন্দী হন উইকেটরক্ষক জাকের আলীর কাছে।
একপ্রান্তে উইকেট যাওয়ার মিছিলে আরেক প্রান্ত আগলে ছিলেন তাদিওয়ানাসে মারুমি। ২৬ বলে ৩১ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আগের ম্যাচের অভিষিক্ত জনাথন ক্যাম্পবেল এ ম্যাচেও ঝড়ো শুরু করেন। ১০ বলে ২১ রান করেন তিনি। টানা তৃতীয় বলে তানভীর ইসলামকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে বাউন্ডারির কাছে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
ক্যাম্পবেলের বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের হয়ে শেষ লড়াই করেন ফারাজ আকরাম। বাংলাদেশের মনে ভয়ও ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শেষ ছয় ওভারে ৭৫ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। সেখান থেকে শেষ ওভারে ২১ রানের সমীকরণে নিয়ে আসেন তারা। যদিও শেষ ওভারের প্রথম বলেই ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ইয়র্কারে বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। পরে টানা দুই বলে বাউন্ডারি হজম করার পর স্লোয়ার বাউন্সারে ডট দেন তিনি। এরপর সিঙ্গেলস নিয়ে আকরামকে স্ট্রাইক দেন মুজারাবানি। শেষ বলে দুই রানের বেশি নিতে পারেননি তিনি। ১৯ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন আকরাম।
অনলাইন ডেস্ক :
ডাকেটের ইতিহাস গড়া ব্যাটিংয়ে রেকর্ড রান তুলল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার সামনে ৩৫২ রানের বিশাল লক্ষ্য। শুরুতেই তাদের ব্যাটিং লাইনে আঘাত করে সহজ জয়ের আশাও হয়তো করেছিল ইংলিশরা। কিন্তু সময় গড়াতেই ধীরে ধীরে ম্যাচ হাত ফসকে বেরিয়ে যেতে থাকে। তাদের ওপর চড়াও হন জশ ইংলিস। তাতে প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান করেও হারতে হলো ইংল্যান্ডকে। ১৫ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের রেকর্ড গড়া জয় পেল অস্ট্রেলিয়া। ৩৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ট্র্যাভিস হেড (৬) ও স্টিভ স্মিথের (৫) উইকেট তুলে নেয় ইংল্যান্ড। অজি শিবিরে শুরুতেই আঘাত হানেন জোফরা আর্চার ও মার্ক উড। তবে ম্যাথু শর্ট ও মার্নাস লাবুশেনের জুটি স্বস্তিতে ফেরায় অজিদের। দুইজনে মিলে গড়েন ৯৫ রানের জুটি। লাবুশেন ৪৫ বলে ৪৭ রান করে আদিল রশিদের বলে আউট হন। হাফ সেঞ্চুরি করা শর্টও তাকে অনুসরণ করে মাঠ ছাড়েন। ৬৬ বলে ৯ চার ও ১ ছয়ে ৬৩ রান করে লিভিংস্টোনের শিকার হন এই ওপেনার।
দলীয় ১৩৬ রানে চার উইকেট পড়লে কিছুক্ষণের জন্য ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ১১৬ বলে ১৪৬ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে পথে ফেরান অ্যালেক্স ক্যারি ও ইংলিস। ৩৮তম ওভারে রশিদের বলে আর্চারের হাত ফসকে জীবন পেয়ে ক্যারি দুটি রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান।
ব্রাইডন কার্স ১৪৬ রানের এই জুটি ভাঙলে ইংল্যান্ড ভেবেছিল তারা ম্যাচে ফিরেছে। কিন্তু ক্যারি ৬৩ বলে ৬৯ রানে পেসার ব্রাইডন কার্সকে উইকেট দিলেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ইংলিস। ৪৫তম ওভারের তৃতীয় বলে আর্চারকে ছক্কা মেরে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন ইংলিস। অন্য প্রান্ত থেকে সময় সুযোগ বুঝে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের ব্যবধান কমাতে থাকেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও।
৪৭তম ওভারে লিভিংস্টোন ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ নিলেও আর্চারের বল কোমরের ওপরে থাকায় নো বল হয়। ফ্রি হিট থেকে ছক্কা মারেন এই অজি ব্যাটার। ৪৭.৩ ওভারে ছক্কা মেরে দলকে জয়ের বন্দরে নেন ইংলিস। ৮৬ বলে ৮ চার ও ৬ ছয়ে ১২০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ৩৬ বলে ৭৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩২ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। তার ১৫ বলের ক্যামিওতে ছিল চারটি চার ও দুটি ছয়।
রেকর্ড রান করেন ডাকেট
এর আগে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। বেন ডারশুইসের আঘাতে সাজঘরে ফেরেন ফিল সল্ট (১০) ও জেমি স্মিথ (১৫)। ৪৩ রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা দ্রুত সামলে নেয় ইংলিশরা।
তৃতীয় উইকেটে ১৫৮ রানের জুটি গড়েন জো রুট ও ডাকেট। ৭৮ বলে চার চারে ৬৮ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন রুট। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকলেও ডাকেটের ব্যাটে শক্ত ভিত গড়ে ইংল্যান্ড। ৯৫ বলে ১১ চার ও ১ ছয়ে শতক হাঁকান এই ওপেনার।
ডেথ ওভারে সেভাবে রান তুলতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষ ১০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান যোগ করে তারা। ১৩৪ বলে ১৫০ রান করেন ডাকেট। তাকে ফেরান মার্নাস লাবুশেন। ১৪৩ বল খেলে ১৭ চার ও ৩ ছয়ে ১৬৫ রান করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অভিষেক রাঙান ডাকেট। তৃতীয় সেঞ্চুরির ইনিংসকে ক্যারিয়ার সেরা বানিয়েছেন ডাকেট, আগের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিল ১০৭ রান। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এটা সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসও।
শেষ দিকে ১০ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে দলীয় স্কোর সাড়ে তিনশ পার করেন আর্চার। তার সঙ্গে ১ রানে অপরাজিত ছিলেন আদিল রশিদ। সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন ডারশুইস। দুইটি করে উইকেট নেন জাম্পা ও লাবুশেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
“অলিম্পিক খেলায় জয় লাভই বড় কথা নয়, অংশ গ্রহণই বড় কথা” এই স্মরণীয় বাক্যকে সামনে রেখে গতকাল বুধবার দিনব্যাপী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রথম নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬২তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ নিজস্ব মাঠে আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মোঃ বদিউজ্জামান ভূঞার সভাপতিত্বে ও স্বাগত বক্তব্যে আয়োজিত ক্রীড়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহমুদা আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ইকবাল হোসাইন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জুলফিকার হোসেন, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন, গভর্ণমেন্ট মডেল গার্লস হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল লতিফ, সাবেরার সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুজ্জামান, সাংবাদিক আবুল হাসনাত অপু, সাংবাদিক মোঃ নুরুল আরাফাত মুগ্নি, সাবেক সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু হোরায়রাহ। ছাত্রীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে প্রধান অতিথি মাহমুদা আক্তার জাতীয় পতাকা এবং বিশেষ অতিথি ইকবাল হোসাইন ক্রীড়া পতাকা উত্তোলন করেন। ক্রীড়াবিদ, যুব রেড ক্রিসেন্ট, গার্লস গাইড, হলদে পাখি ও গার্ল ইন স্কাউট সদস্যাদের বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ-মাঠ পরিভ্রমণের পর প্রধান অতিথি শান্তির প্রতিক পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে ক্রীড়াবিদগণ শপথ গ্রহণ ও অলিম্পিক মশাল নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করে। কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারীরা মনোজ্ঞ শরীর চর্চা এবং নৃত্য পরিবেশন করে সবাইকে মাতিয়ে রাখে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহমুদা আক্তার ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, খেলাধুলা শরীর ও মনকে উজ্জীবিত করে। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বে পরিচিতি ঘটে। তিনি আরও বলেন, খেলার পাশাপাশি পড়ালেখাও মেধার বিকাশ ঘটিয়ে যথাযথভাবে তোমাদের নিজেদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পর্যাপ্ত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে দেশের পিছিয়ে পড়া নারীদেরকেও সরকার প্রশাসনসহ সর্বক্ষেত্রে নিজ যোগ্যতাবলে এগিয়ে যেতে হবে এবং সুন্দর দেশ গড়নে ভূমিকা রাখতে হবে।
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আহবায়ক ও সিনিয়র শিক্ষক মোঃ গিয়াস উদ্দিনের সার্বিক পরিচালনায় মোট ৩৬টি আইটেমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শাখার ২১ শত প্রতিযোগী অংশ নেন। বিগত ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী শিক্ষায় ধারাবাহিক অবদান রেখে চলেছে। অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।