চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের অবহেলায় আশা নামে ৩ মাসের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আশা উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের কনিকাড়া গ্রামের আশ্রাফ মিয়ার মেয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত দুইদিন ধরে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছিল শিশু আশা। পরে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় শিশুটিকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে তার পরিবার। জরুরি বিভাগে কোনো চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসক ছিল না। পরে দ্বিতীয় তলা থেকে জানানো হয় চিকিৎসকের কোয়ার্টারে নিয়ে যেতে। চিকিৎসক সেখানে রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।
পরে ৫ মিনিট অপেক্ষার পর পরিবারের লোকজনের অনুরোধে রোগীকে দেখে পুনরায় দ্রুত নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে অক্সিজেন দেওয়ার পরামর্শ দেন। তখন জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সামিহা সুলতানা শিশুটিকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। প্রায় ১ ঘণ্টা শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটাছুটি করেও কোনো সেবা পাননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শিশু আশার মৃত্যু হয়েছে বলে তার পরিবার দাবি করে।
মৃত শিশুর মামা আমজাদ হোসেন বলেন, বাচ্চাটি সুস্থ ছিল। হাসপাতালে নিয়ে প্রথমে জরুরি বিভাগে যায়। সেখানে ডাক্তার না থাকায় দ্বিতীয় তলায় যেতে বলে। দ্বিতীয় তলায় গেলে নিচ তলায় পাঠায়। নিচতলা থেকে পুকুর পাড় কোয়ার্টারে পাঠায়। প্রায় ১ ঘণ্টা পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুটি মারা গেছে।
উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, দ্বিতীয় তলায় যাওয়ার কথা আমি বলিনি, হয়তো আমার আশপাশে থাকা অন্য কেউ বলে থাকতে পারে। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক সামিহা সুলতানা।
তিনি জানান, ৩টা ৪৫মিনিটে বাচ্চাটিকে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি যখন বাচ্চাটিকে দেখি তখন হার্ট সাউন্ড পাইনি। চোখের আলোর কোনো রিঅ্যাকশন পাইনি। শ্বাস নিচ্ছিল না। তখন কনফার্ম হওয়ার জন্য ইসিজি পরীক্ষা করতে বলি। ইসিজি পরিক্ষায় শিশুটি বেঁচে আছে, এমন কিছু দেখিনি। তারপর শিশুটি মৃত বলে ঘোষণা করি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশালয় সাহা জানান, শিশুটির পরিবার নবীনগর থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাকে অবগত করেন। পরে উভয়পক্ষের কথা শুনে বুঝতে পারি রোগীর পরিবার জরুরি বিভাগের চিকিৎসককে বুঝিয়ে বলতে পারেনি। তারা শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখাতে চেয়েছিল। কিছুক্ষণ পরে ডা. সামিহার কাছে গেলে পরীক্ষা করে শিশুটি মৃত ঘোষণা করেন। তদন্ত করে অবহেলায় যদি শিশুটির মৃত্যু হয়, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সম্মেলন কক্ষে উৎসবমুখর পরিবেশে এসএসসি ১৯৯৫ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টায় আনন্দ র্যালি ও প্রিয় বন্ধুদের সাথে মিলিত হতে পেরে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন তারা। এ যেন এক অভূতপূর্ব প্রাণের মিলনমেলা। বেলা ১২ টায় পরিচিতি পর্ব, মধ্যাহ্নভোজ, র্যাফেল ড্র, কুইজ প্রতিযোগীতা, আলোচনাসভা, অকালে চলে যাওয়া কয়েকজন মরহুম বন্ধুর স্মৃতিচারণ করে এক মিনিট নিরবতা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ধানমন্ডি বিসিএসআইআর স্কুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক জাফর উল্লাহর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোস্তাক আহাম্মদ, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. অবিদ মিয়া, সীমান্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নূরুল হক শাহীন, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দীন মনির, অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, ওই ব্যাচের শিক্ষার্থী অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন আক্তার, ফারুক আহমেদ, নিজাম উদ্দিন জুয়েল, ড. শাহজাদ হোসাইন, জাকির হোসেন, ডাক্তার মাধব চন্দ্র দাস , মনির হোসেন, আল মামুন, খাদিজা আক্তার সাথী, মমতাজ মাহবুব প্রমুখ।
ওই ব্যাচের ৬৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ১৯৯৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী যুবদল সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, অনেক দিন পর আমরা স্কুলের বন্ধু-বান্ধবীরা একসাথে মিলিত হয়েছি। জীবনে বাস্তবতা ও সময়ের প্রয়োজনে আমরা প্রত্যেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি। সবার সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ খুব একটা হয় না। আশা করি আগামীতেও আমরা এই পুনর্মিলনীর ধারা অব্যহত রাখেবো। পেট্রো বাংলার ম্যানেজার মো. ফখর উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন পর সবাই একত্রিত হয়েছি। স্কুল জীবনকে ঘিরে বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে বেশ ভালো লাগেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জোরপূূর্বকভাবে ‘পদত্যাগ’ করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকার প্রভাবশালীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এ ঘটনায় অধ্যক্ষকে স্বপদে পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা এলাকায় বিক্ষোভ করে আন্দোলনে নেমেছে।
এদিকে এ ঘটনার পর আজ ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্বিগ্ন প্রধান শিক্ষকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাথে দেখা করে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছেন।
এ বিষয়ে নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউছার বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার এ ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলার সকল শিক্ষকদের নিয়ে মানববন্ধন করে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, উপজেলার কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজে রবিবার আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী লোক অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান, আমরা কেন আসছি আপনি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন? জবাবে অধ্যক্ষ ‘না’ বলার পরই তারা উচ্চস্বরে চেঁচিয়ে তাকে এক্ষুণি পদত্যাগ করতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।
অধ্যক্ষ তখন বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও আগত ব্যক্তিরা তাকে সেই সময়টুকু দিতে চাননি। এক পর্যায়ে লোকজনের প্রচন্ড চাপে পড়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদাউসুর রহমান একটি সাদা কাগজে ‘পদত্যাগ’ করে কলেজ থেকে চলে যান।
গভর্ণিং বডির সভাপতি বরাবর লেখা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ওই পদত্যাগপত্রে অবশ্য কোনো ধরণের কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিদ্যালয়ের সামনে স্লোগান দিতে থাকে। গত সোমবারও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পুনর্বহালের দাবিতে এলাকায় দিনভর বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভের সঙ্গে বলে, সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের প্রিন্সিপাল স্যারকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা স্যারকে স্বপদে বহাল দেখতে চাই। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে ফেরদাউসুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বহিরাগত তখন আমাকে পদত্যাগের জন্য ধমকাচ্ছিলেন। তাদের সাথে কোন শিক্ষার্থী ছিলো না। এদের মারমুখী আচরণে আমি এক পর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্র লিখে দেই। নয়তো আমাকে ওরা তখনই প্রাণে মেরে ফেলতো। বিষয়টি পরে ইউএনও মহোদয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে পদত্যাগে বাধ্য করানো নেতৃত্ব দেয়া জাহাঙ্গীর আলম খানের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তবে ওইদিন পদত্যাগে বাধ্য করানো লোকদের মধ্যে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ একজন দুর্নীতিবাজ। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। তার এক যুগের আমলের রেজাল্ট দেখলেই সেটি বুঝা যাবে। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে তার পদত্যাগ চাইছিলেন।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে এই পদত্যাগ করানো হয়েছে বলে শুনেছি। তবে সরকারি পরিপত্র জারির পর জোরপূর্বকভাবে এ ধরণের পদত্যাগ গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে মুক্তি প্রাইভেট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: পারভেজ আহমেদকে হাত-পা বেঁধে ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের মালিক মো: হাবিবুর রহমান খন্দকার ও পরিচালক জসিম উদ্দিন সরকারের এর বিরুদ্ধে। ১৩ অক্টোবর রবিবার দুপুরে হাসাপতালের একটি রুম থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নবীনগর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় হাসপাতালের মালিক মো: হাবিবুর রহমান খন্দকার ও পরিচালক জসিম উদ্দিন সরকারসহ আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন চিকিৎসক পারভেজ আহমেদ।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ডাক্তার পারভেজ আহমেদ দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নির্ধারিত ডিউটি শেষ করে তার রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ওই সময় মুক্তি হাসপাতালের মালিক হাবিবুর রহমান খন্দকার ডাক্তার পারভেজ আহমেদকে ডাকাডাকি করলে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। এসময় বিবাদী জসিম উদ্দিনসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ রুমে জোরপূর্বক ঢুকে ডাক্তার পারভেজ আহমেদকে এলোপাথারি পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে হাত-পা বেধেঁ রাখে। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক জসিম উদ্দিন সরকারকে গ্রেফতার করে আজ ১৪ অক্টোবর সোমবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃত জসিম উদ্দিন সরকার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের রফিক উদ্দিন সরকারের ছেলে।
হাসপাতালের ম্যানেজার ঝরনা ঘোষ জানান, একজন রোগী এলে আমি রিসিট কেটে ডাক্তার সাহেবকে গিয়ে বলি, স্যার একজন রোগী এসেছে, তখন ডাক্তার সাহেব উত্তেজিত হয়ে আমাকে জানান, আমার এখন কোন ডিউটি নেই, আমি যেতে পারবো না, তোমার মালিককে জানিয়ে দাও, পরে হাসপাতালের মালিক হাবিব স্যার এসেও ডাক্তার সাহেবকে অনুরোধ করেন রোগী দেখার জন্য। কিন্তু ডাক্তার সাহেব কারও কোন কথাই মানতে নারাজ। এনিয়ে ডাক্তার সাহেব ও হাবিব স্যার তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে তাদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় হাবিব স্যারও আহত হয়েছেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, আমাকে একজন ফোন করে জানান মুক্তি প্রাইভেট হাসপাতালে মারামারি হয়েছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে হাসপাতালে যায়। হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরিচালক জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করলেও হাসপাতালের মালিক হাবিবুর রহমান পালিয়ে যাই। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে বসতঘর থেকে দুই শিশু সন্তানসহ এক পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার ॥ এলাকায় শোকের ছায়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় বসতঘর থেকে দুই শিশু সন্তানসহ এক পরিবারের চারজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ২৮ জুলাই রোববার বেলা ১১টার দিকে নবীনগর পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া চারজন হলেন- সোহাগ মিয়া (৩৫), তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল ইসলাম (২৫), তাঁদের দুই শিশুসন্তান চার বছর বয়সী ফারিয়া আক্তার ও দুই বছর বয়সী ফাহিমা আক্তার। এদিকে একসঙ্গে পরিবারের চারজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ ঘরে চারজনের লাশ পাওয়া নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তাঁদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। সোহাগ মিয়া বিজয়পাড়ার আমির মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোহাগ মিয়া নবীনগরের নিউমার্কেটে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে পৌর এলাকার বিজয়পাড়ায় বসবাস করতেন। মারা যাওয়া জান্নাতুল ইসলামের মা মনো বেগম সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে স্বাভাবিকভাবে সবাই ঘুমাতে যান। রোববার সকালে তাঁর মেয়ে, জামাতা ও নাতনিরা ঘুম থেকে না ওঠায় সন্দেহ হয় তাদের। তিনি ঘরের দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করতে থালেও ঘরের ভেতর থেকে কারও সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না।
একপর্যায়ে পথচারী উজ্জ্বল মিয়ার সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ভেতরে মেয়ে, দুই নাতনি ও জামাতার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বসতঘরে একই পরিবারের চারজনের লাশ ঝুলছে, এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
ময়নাতদন্তের জন্য তাঁদের লাশ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। সিরাজুল ইসলাম বলেন, সোহাগ কাপড়ের ব্যবসা করতেন। স্ত্রী, দুই সন্তানসহ তিনি এককভাবে নিজের পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাঁদের সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এক পরিবারের চার সদস্য ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে একটি পুকুরে ভেসে উঠেছে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া দুটি পা।
আজ ১১ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে উপজেলার বিটঘর গ্রামের উত্তর পাড়া থেকে পা দুটি উদ্ধার করে দমকল বাহিনীর সদস্যরা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকালে পুকুরে পা দুটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ দমকল বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পা দুটি উদ্ধার করে। দুটি পা অর্ধগলিত। দমকল বাহিনীর সদস্যরা দেখছে দেহের বাকি অংশ এ পুকুরে পাওয়া যায় কিনা।
তিনি আরো জানান, সম্প্রতি সদর উপজেলায় লাগেজে মাথা ও দুই পা ছাড়া এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই পা দুটি ওই মরদেহের কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পা দুটি ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হচ্ছে।
এর আগে, গত ৩১ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সেন্দ গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে লাগেজ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই লাগেজে ছিল মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন থাকা একটি মরদেহ। ওই মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।