ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাকিস্তানের সিরিজ ১-১ সমতায়

খেলাধুলা, 27 January 2025, 415 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মুলতানে ঘূর্ণি পিচ বানিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সোয়া দু’দিনেই নাকাল হলো শান মাসুদের দল। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করলো ক্যারিবীয়রা। ক্যারিবীয়রা ৩৪ বছর দুই মাস পর জয় পেয়েছে পাকিস্তানে। সবশেষ জিতেছিল ১৯৯০ সালের নভেম্বরে। দ্বিতীয় দিন শেষেই হারের শঙ্কায় ছিল পাকিস্তান। স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ১৭৮ রান, হাতে ৬ উইকেট। কিন্তু ব্যাটসম্যানের জন্য বধ্যভূমি হয়ে ওঠা মুলতান পিচে পুরো ১০ উইকেট নিয়েও এই রান প্রায় পাহাড়সম। আজ ২৭ জানুয়ারি সোমবার পাকিস্তানের শেষ দিকের ব্যাটসম্যানেরা সেই পাহাড় টপকাতে পারেনি। ২০ ওভারের মধ্যে ৫৭ রানে বাকি ৬ উইকেট হারিয়ে পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। ২৫৩ রান তাড়া করতে নামা পাকিস্তানকে ১৩৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতেছে ১২০ রানে।

banner

ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালে দিনের প্রথম আট বলের মধ্যেই আউট হয়েছেন দুই অপরাজিত সৌদ শাকিল ও কাশিফ আলী। ১৩ রান করা শাকিল ক্যাচ দিয়েছেন কেভিন সিনক্লেয়ারের বলে, নাইটওয়াচম্যান হিসেবে আগেভাগে নামা কাশিফ জোমেল ওয়ারিক্যানের বলে।

সপ্তম উইকেটে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আগা সালমান কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যে উইকেটে স্পিনাররা ইচ্ছামতো বল ‘নাচাতে’ পারেন, সে উইকেটে ব্যাটসম্যানের প্রতিরোধও আর কতক্ষণ! ৩৯ রানের জুটি ভেঙে দুজনকেই ফিরিয়েছেন ওয়ারিক্যান।

বাঁহাতি এ স্পিনার শেষ ব্যাটসম্যান সাজিদ খানকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন ইনিংসে ৫ উইকেটও। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট আর ব্যাট হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫৪ রান করে ম্যাচসেরাও হয়েছেন ওয়ারিক্যানই। আর দুই ম্যাচ মিলিয়ে ৮৫ রান ও ১৯ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরাও ৩২ বছর বয়সী এই স্পিনার।

ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বশেষ এই সিরিজে বড়সড় একটি রেকর্ডই গড়েছেন স্পিনাররা। দুই টেস্ট মিলিয়ে স্পিনাররা নিয়েছেন মোট ৬৯ উইকেট—যা এক সিরিজে সর্বোচ্চ। পেছনে পড়ে গেছে ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কা–ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ৬৭ উইকেট।

তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে বড় অর্জন মুলতানের দ্বিতীয় টেস্ট জয়ে। এবারের আগে পাকিস্তানে ২২ টেস্ট খেলে মাত্র ৪টিতে জিতেছিল ক্যারিবীয়রা। যার সর্বশেষটি ১৯৯০ সালের ২৫ নভেম্বর ফয়সালাবাদে। কেমার রোচ ছাড়া এই দলের কারও তখন জন্মই হয়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬৩ ও ২৪৪ (ব্রাফেট ৫২, ইমলাখ ৩৫, জাঙ্গু ৩০; সাজিদ ৪/৭৬, নোমান ৪/৮০)।

পাকিস্তান: ১৫৪ ও ৪৪ ওভারে ১৩৩ (বাবর ৩১, রিজওয়ান ২৫, সালমান ১৫; ওয়ারিক্যান ৫/২৭, সিনক্লেয়ার ৩/৬১)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১২০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জোমেল ওয়ারিক্যান।
সিরিজ: দুই টেস্ট সিরিজে পাকিস্তান–ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১–১ সমতা।
ম্যান অব দ্য সিরিজ: জোমেল ওয়ারিক্যান।

Leave a Reply

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্ত:উপজেলা কাবাডি প্রতিযোগিতা উদ্বোধন

খেলাধুলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 30 January 2025, 692 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাহমিনা আক্তার বলেছেন, আমাদের জাতীয় খেলা কাবাডি। কাবাডি খেলাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বেশি বেশি প্রতিযোগিতা করতে হবে।

banner

তিনি বলেন, খেলাধূলা মানুষকে প্রাণবন্ত করে এবং মানসিক বিকাশের সহায়তা করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্রীড়াঙ্গকে সমৃদ্ধি করতে হলে খেলাধূলায় প্রতিযোগি হতে হবে।

আজ ৩০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের পৃষপোষ্টকতায় টেংকেরপাড় লোকনাথ দিঘীর ময়দানে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পর্যায়ে আন্ত: উপজেলা যুব কাবাডি অনুর্ধ্ব-১৮ (বালক বালিকা) কাবাডি প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূইয়া, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আমির আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মহিম চৌধুরী, ক্রীড়াবিদ বাকের মোশাররফ, মোঃ আজিম, আতাউর রহমান ইয়াকুব, মোঃ আজাদ, সাংবাদিক আবুল হাসনা রাফি প্রমুখ। কাবাডি প্রতিযোগিতায় জেলার ৯টি উপজেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাসহ ৭টি বালক এবং ৩ বালিকা দল অংশ গ্রহণ করেন। বালিকাদের মধ্যে সরাইলকে হারিয়ে সদর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং বালকদের মধ্যে সদর উপজেলাকে হারিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। খেলায় ক্রীড়ামোদি দর্শক উপস্থিতি ছিলেন ব্যাপক।

বিসিবি থেকে পদত্যাগ করলেন খালেদ মাহমুদ সুজন

খেলাধুলা, 11 September 2024, 579 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন।

banner

আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার বোর্ডে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন তিনি। বিসিবির একজন পরিচালক সুজনের দায়িত্ব ছাড়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

লম্বা সময় ধরে বিসিবিতে একাধিক কমিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন সুজন। সর্বশেষ তিনি গেম ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সঙ্গে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিসিবি পরিচালকের পদে থাকার সময়ে জাতীয় দলের সাথেও কাজ করেছেন সুজন। বিভিন্ন সময় টিম ডিরেক্টর, অন্তর্বর্তীকালিন কোচ, টিম ম্যানেজারের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের জের ধরে দেশের নানা অঙ্গনে চলছে পরিবর্তনের হাওয়া। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদেও বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এসেছে। সুজনের আগে বিসিবি পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন জালাল ইউনুস, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও নাইমুর রহমান দুর্জয়ের মতো প্রভাবশালী পরিচালকরা।

এদিকে, বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব ছাড়লেও পরিচালক পদে এখনও বহাল আছেন নাজমুল হাসান পাপন। রাজনৈতিকভাবে ব্যাকফুটে চলে যাওয়ায় তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান পাপন। তার পদত্যাগের পর বিসিবির নতুন সভাপতি হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ।

আর্চারিতে স্বর্ণ জিতলেন আলিফ

খেলাধুলা, 20 June 2025, 225 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
এশিয়া কাপ আর্চারিতে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে স্বর্ণ জিতলো বাংলাদেশের আবদুর রহমান আলিফ। আজ ২০ শুক্রবার সিঙ্গাপুরে চলমান এশিয়া কাপ আর্চারির রিকার্ভ পুরুষ এককের ফাইনালে ৬-৪ সেট পয়েন্টে জাপানের মিয়াতা গাকুতোকে হারিয়েছেন আলিফ।

banner

এর আগে বিশ্বকাপ, এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান আর্চারি গ্রাঁ প্রিঁর মতো আসরে অংশ নিলেও কখনও রিকার্ভ এককে পদক জিততে পারেননি তিনি। অবশেষে এশিয়া কাপ আর্চারিতে স্বর্ণ পদক পেয়েছেন বাংলাদেশের এই আর্চার। এই আর্চারের সুবাদে সিঙ্গাপুরে উড়লো লাল সবুজের পতাকা।

প্রথম দুই সেটে এগিয়ে ছিলেন আলিফ। প্রথম সেটে যেখানে আলিফের স্কোর ছিল ২৮, গাকুতোর স্কোর ছিল ২৭। পরের সেটে আলিফ করেন ২৯ এবং গাকুতো ২৮ পয়েন্ট স্কোর করেন। এরপরই অবশ্য ঘুরে দাঁড়ান জাপানি আর্চার। পরের দুই সেট আবারও জিতে খেলায় সমতা আনেন। তৃতীয় সেটে গাকুতো করেন ২৮। আলিফ করেন ২৭। চতুর্থ সেটেও এগিয়ে যান গাকুতো। স্কোর করেন ২৭। আলিফ ২৬ স্কোর করে পিছিয়ে পড়েন। এরপর পঞ্চম সেটে গড়ায় খেলা। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে শেষ শটে আলিফ করেন ২৯। আর গাকুতো স্কোর করেন ২৬।

এর আগে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এশিয়ান যুব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে রিকার্ভ এককের ফাইনালে চীনা তাইপের আর্চারের কাছে হেরেছিলেন বিকেএসপি থেকে উঠে আসা আর্চার আলিফ। পাবনার ছেলে এবার সিঙ্গাপুরের মাঠে চমক দেখালেন। রোমান সানা ও হাকিম আহমেদ রুবেলের পর তিনি নতুন করে আশা জাগাচ্ছেন।

বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত

খেলাধুলা, 30 June 2024, 731 Views,

স্পোটর্স ডেস্ক :
৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। হাইনরিখ ক্লাসেন এক ওভারেই ম্যাচটাকে নিয়ে আসেন প্রায় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয়। ভারতের করা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দলীয় সর্বোচ্চ ৭ উইকেটে ১৭৬ রানও তখন সহজ লক্ষ্য মনে হচ্ছিল। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা তাদের সেই সহজ কাজটাকেই কঠিন করে তোলেন অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে। ডেথ ওভারে ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ওভারে সমীকরণটা কমিয়ে আনেন ১৬ রানে।

banner

হার্দিক পান্ডিয়ার করা ওই ওভারের প্রথম বলটা ছিল ফুলটস। স্ট্রাইকে থাকা ডেভিড মিলার ঠিকঠাক মেরেছিলেনও। কিন্তু লং অফ বাউন্ডারিতে থাকা সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য রিলে ক্যাচে নিশ্চিত ছক্কাটাই হয়ে যায় আউট। জয় তখন উল্টো ভারতের হাতের মুঠোয়, টি–টোয়েন্টি শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটা আবার মাথায় উঠল বলে। শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া সেই সুযোগ হাতছাড়া হতে দেননি। ওভারের পঞ্চম বলে কাগিসো রাবাদাকে আউট করলেন। শেষ ওভারে মাত্র ৮ রান দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। ৭ রানের জয়ে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। প্রথম শিরোপা ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে।

ডেভিড মিলারের অবিশ্বাস্য চোখজোড়া দেখে মনের কথাগুলো আন্দাজ করা যায় এমন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনে এখন প্রবাদটা বেশ পরিচিত।
দেশটির রেসলার ড্রিসুস ডু প্লেসিস কথাটা জনপ্রিয় করেছেন সম্প্রতি, অবশ্যই নিজেদের যন্ত্রণা বোঝাতে।

কিন্তু সূর্যকুমার যাদব কী ভাবছিলেন? শেষ ওভারে যখন ১৬ রান দরকার, অসহনীয় চাপ তখন ঘিরে থাকার কথা। এর মধ্যে বলটা ধরে ভেতরে রাখলেন সূর্য, নিজে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ফিরে এসে নিলেন ক্যাচটা। আউট হলেন মিলার, নিশ্চিত হলো ভারতের বিশ্বকাপও।

অসহনীয় চাপ, বহুবার কাছে গিয়েও শিরোপা না জিততে পারার আফসোস, এত এত প্রত্যাশার শেষে দুঃখের কান্না; ভারতও কি কম ভুগেছে একটি বিশ্বকাপের জন্য? এক দশক অথবা তারও বেশি সময় আগে বিশ্বকাপ জেতা হয়েছিল তাদের। ২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে ‘ফিনিশেস থিংস অব ইন স্টাইল’ করে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি। এরপর এবার। মাঝে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া নেই আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপাও। ক্রিকেট প্রায় ধর্ম যেখানে, তাদের জন্য কতটা হতাশার, ওই যন্ত্রণাই বা কে জানতে চেয়েছে এতদিন!

শনিবার রাতে বার্বাডোজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে ভারত। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের বেশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম আট বলের পাঁচটিতেই বাউন্ডারি পায় ভারত। মার্কো ইয়ানসেনের করা প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান বিরাট কোহলি, আসে ১৫ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে খরুচে প্রথম ওভার করেন ইয়ানসেন।

পরের ওভারে স্পিনার কেশভ মাহারাজকে নিয়ে আসেন প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তাকে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান রোহিত। এক বল ডট দেওয়ার পরেরটিতেই উইকেট এনে দেন মাহারাজ। তাকে সুইপ করতে গেলে বল কিছুটা শূন্যে ভেসে ছিল, স্কয়ার লেগে নিচু হওয়া ক্যাচ দারুণভাবে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৫ বলে ৯ রান করে ফিরতে হয় রোহিতকে।

মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান ঋষভ পান্তও। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের আগায় লেগে বল উপরে উঠে যায়, সহজ ক্যাচ নেন কুইন্টন ডি কক। ২ বলে শূন্য রান করে আউট হন পান্ত। ভালো শুরুর পর হুট করেই খেই হারায় ভারত।

তাদের বিপদ আরও বাড়ে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে সূর্যকুমার যাদব আউট হলে। কাগিসো রাবাদার বলে ফাইন লেগে তার ক্যাচ নেন ক্লাসেন। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরত যান সূর্য। এরপর পাঁচে অক্ষর প্যাটেলকে পাঠায় ভারত। তাদের এই কৌশল কাজে লাগে ভালোভাবেই।

বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানেন অক্ষর। সুযোগ পেলেই ছক্কা হাঁকিয়ে রানের চাকাও সচল রাখেন। কোহলির সঙ্গে তার জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ রান। কিন্তু নিজের হাফ সেঞ্চুরি ছুতে পারেননি তিনি। অক্ষরের অলসতা ও কুইন্টন ডি ককের চতুরতায় কোহলির সঙ্গে তার জুটি ভাঙে।

রাবাদার বলে ফ্লিক করতে যান কোহলি। কিন্তু ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি, বল থাকে উইকেটরক্ষকের কাছাকাছি। এর মধ্যে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর, কিন্তু কোহলি ফিরিয়ে দেন তাকে। ফেরার জন্য যথেষ্ট সময় পেলেও দ্রুততা ছিল না অক্ষরের। উইকেটরক্ষকের জায়গা থেকে সরাসরি থ্রোতে নন স্ট্রাইক প্রান্তে স্টাম্প ভাঙেন ডি কক। ৩১ বলে ১টি চার ও চারটি ছক্কায় ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান অক্ষর।

তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। এই টুর্নামেন্টে প্রথমবার এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আগের সাত ইনিংসে স্রেফ ৭৫ রান করেছিলেন, দুবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। ফাইনালে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোহলি।

ফিফটি পাওয়ার পর কিছুটা চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ১১ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মার্কো ইয়ানসেনের আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পরেরটি একটু স্লো করেন তিনি, এবার পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন রাবাদার হাতে।

কোহলির সঙ্গে পরে পঞ্চাশ পেরোনো জুটি হয়েছিল দুবেরও। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন দুবে। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষ বলে জাদেজাও আউট হন। তবে ততক্ষণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান করে ফেলেছে ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩ রান টপকে তারা করে ১৭৬ রান।

রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই স্বস্তি উবে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের হয়ে কাজটি যার করার কথা ছিল, করেছেন তিনিই। দুর্দান্ত এক ডেলেভারিতে রেজা হেনরিকসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৫ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন রেজা।

দ্বিতীয় উইকেটের জন্যও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ভারতকে। আর্শদ্বীপের করা পরের ওভারে মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন ডি কক, তার সঙ্গী হন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস। পাওয়ার প্লের শুরুতে চাপে পড়া দলকে ছয় ওভারে ৪২ রান এনে দেন তারা।

যখন মনে হচ্ছিল স্টাবস-ডি কক জুটি জমে গেছে নবম ওভারে গিয়ে তখনই দুজনের জুটি ভাঙে। অক্ষরকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান স্টাবস। ২১ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি, ভাঙে ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি। তার আউট হওয়ার পর হতাশায় নিজের ব্যাটে ঘুষি মারেন ডি কক।

কিন্তু তার পরের সঙ্গীকে নিয়েও দারুণভাবেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। ভারতের ভয়ও বাড়তে থাকে। স্পিনের বিপক্ষে ভয়ঙ্কর ক্লাসেন নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে শুরু করেন। কিন্তু এর আগেই সাজঘরে ফেরেন ডি কক। আর্শদ্বীপ সিংয়ের শর্ট বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে কুলদ্বীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দেন ডি কক। ওই বলের আগেই তাকে নেওয়া হয়েছিল পেছনে।

এরপর উইকেটে এসে ক্লাসেনের সঙ্গী হন ডেভিড মিলার। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসকে নতুন প্রাণ দেন তিনি। এমনকি ম্যাচটাও নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। শুরুটা হয় কুলদ্বীপের করা ১৪তম ওভারে। শেষ দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান মিলার।

পরের ওভারে আসা অক্ষরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন ক্লাসেন। এরপর ওই ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান। এই ওভারের আগে ৬ ওভারে দরকার ছিল ৫৪ রানের। অক্ষরের ওভারের পর সেটি হয়ে যায় ৩০ বলে ৩০ রান।

কিন্তু এই জায়গা থেকেও ম্যাচ আরও একবার মোড় নেয় উল্টোপথে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে প্রাণ ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। তার করা ১৭তম ওভার শুরুর আগে কিছুটা সময় ব্যয় করে ভারত। মোমেন্টাম বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেন, সেটি তারা পারেনও। পান্ডিয়ার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্লাসেন। ২৭ বলে ২ চার ও ৫টি ছক্কায় ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।

ক্লাসেনের বিদায়ের পর অনুমিতভাবেই কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচ। ১৮তম ওভারে এসে দুই রান দিয়ে ইয়ানসেনের উইকেট তুলে নেন বুমরাহ। পরের ওভারে ৪ রান দেন আর্শদ্বীপ। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ আসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে।

তাদের জন্য তখনও সবচেয়ে বড় ভরসা মিলার। ৩০ বলে ৩০ থেকে ৬ বলে ১৬ রানের সমীকরণে চলে আসা ম্যাচেও তাদের একমাত্র আশা। কিন্তু প্রথম বলেই সেটি শেষ হয়ে যায়। হার্দিকের ফুলটস এগিয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন মিলার। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে তখনই ওই অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন সূর্যকুমার।

এরপর বাকি পাঁচ বলে কেবল ৯ রানই করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আরও একবার ‘এত কাছে তবুও কত দূরে’র গল্প লেখা হয়েছে তাদের সঙ্গে। ভারতের বহু বহু অপেক্ষার ইতি ঘটেছে এক জয়ে। হয়তো সরেছে শত কোটির চাপিয়ে দেওয়া ভীষণ এক চাপও, শিরোপা না জেতার; দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ভারতও বলতে পারে ‘আমরা যা জানি, তারা তো জানে না’!

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮
ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী

হোপ তাণ্ডবে দাপুটে জয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

খেলাধুলা, 22 June 2024, 714 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
পাঁজরের চোটে ব্র্যান্ডন কিং ছিটকে না গেলে এই ম্যাচে হয়তো খেলাই হতো না শাই হোপের। সেই হোপ ঘরের মাঠ বার্বাডোজে সুযোগের সদ্ব্যবহার কী দারুণভাবেই না করলেন! ওপেনিংয়ে নেমে একাই মারলেন ৮ ছক্কা। ৩ ছক্কা মেরে তাতে যোগ দিলেন নিকোলাস পুরান।

banner

এবারের বিশ্বকাপে দারুণ ক্রিকেট খেলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গ্রুপপর্বের চার ম্যাচের চারটিতেই জয় পেয়েছে তারা। সুপার এইটের প্রথম ম্যাচেও দারুণ ক্রিকেট খেলেছিল দলটি। যদিও শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে জয় পাওয়া হয়নি তাদের। সেমির রেসে টিকে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জিততেই হতো তাদের। সেই কাজটিই এবার করে ফেলেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রকে ১২৮ রানে থামিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচে জয় তুলেছে ৫৫ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে। তাতে সেমির রেসে রান রেটেও অনেকটা এগিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই স্বাগতিকের লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন ছক্কা-বৃষ্টিতেই উড়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র। কেনসিংটন ওভালে আজ টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ১২৮ রানে অলআউট হয় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ বল হাতে রেখেই লক্ষ্য টপকে গেল।

এ জয়ে সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে রইল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর টানা দুই হারে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল।

হোপ ৩৯ বলে ৮২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তাঁর ক্যারিয়ার সেরা। তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বার্বাডোজের আরেক সন্তান রোস্টন চেজ। এই অফ স্পিন অলরাউন্ডার করেছেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহকে বড় হতে দেননি।

সেন্ট লুসিয়ায় গত বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮০ রান করেও বাজেভাবে হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জন বাটলারের দল রান তাড়া করে ৮ উইকেট আর ১৫ বল বাকি রেখে। ওই হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেটেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আজ তাই আগের ম্যাচের ক্ষতিই যেন পুষিয়ে দিতে নেমেছিল ক্যারিবীয়রা। হোপ-পুরানের ব্যাটিং–তাণ্ডব সেটা পুষিয়ে তো দিয়েছেই; সঙ্গে সুপার এইটের গ্রুপ ২-এ নেট রানরেটেও সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। এই গ্রুপে টানা দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সমান ২ পয়েন্ট করে হলেও নেট রানরেটে ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে দুইয়ে উঠে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

রান তাড়ায় আজ জনসন চার্লসকে নিয়ে পাওয়ারপ্লেতে ৫৮ রান এনে দেন হোপ। সপ্তম ওভারের শেষ বলে চার্লস ব্যক্তিগত ১৫ রানে আউট হলেও এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের ওপর দিয়ে ‘মহাপ্রলয়’ বইয়ে দিয়েছেন হোপ ও পুরান। ৮ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ১ উইকেট ৭৫। জয়ের জন্য দরকার ৭২ বলে ৪৯। হোপ-পুরান এখান থেকে বাকি কাজ সেরেছেন মাত্র ১৭ বলেই।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা যুক্তরাষ্ট্র শুরুতে স্টিফেন টেলরকে হারালেও আন্দ্রিস গুস ও নীতীশ কুমারের দারুণ ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতে তোলে ৪৮ রান। কিন্তু সপ্তম ওভারে এ জুটি ভাঙতেই মার্কিনদের ইনিংসে মড়ক লাগে। সব ব্যাটসম্যান যেন আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন। শেষ পর্যন্ত ১২৮ রান করতে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে থামানোর জন্য তা মোটেও যথেষ্ট ছিল না।

ছক্কা মারা ক্যারিবিয়ানদের নেশা—তা সবার জানা। এ ম্যাচ সেটাই নতুন করে মনে করিয়ে দিল। চারের (৭টি) চেয়ে তাদের ছক্কার (১১টি) সংখ্যাই বেশি।

এই গ্রুপ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা টানা দুই ম্যাচ জিতে অনেকটাই সেমি নিশ্চিত করে ফেলেছে। কাজেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এখন সেমির জন্য লড়তে হবে ইংল্যান্ডের সঙ্গে। যেখানে নিজেদের শেষ ম্যাচে সেমি নিশ্চিত করতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়তে হবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। অন্যদিকে ইংল্যান্ড তাদের শেষ ম্যাচটি খেলবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। যেখানে দু’দলই জয় পেলে তখন হিসেবে আসবে নেট রান রেট। তবে আপাতত দারুণ জয়ে নেট রান রেটে ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

যুক্তরাষ্ট্র: ১৯.৫ ওভারে ১২৮ অলআউট

(গুস ২৯, নীতীশ ২০, মিলিন্দ ১৯, শালকভিক ১৮; চেজ ৩/১৯, রাসেল ৩/৩১, জোসেফ ২/৩১, মোতি ১/১৪)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১০.৫ ওভারে ১৩০/১

(হোপ ৮২*, পুরান ২৭*, চার্লস ১৫; হারমিত ১/১৮)

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রোস্টন চেজ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।