হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস গত সোমবার কমিউনিটি অপ-এডে লিখেছেন, তিন বছর আগে আমি আপনার মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার মুহূর্ত থেকে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো নিরাপদ রাস্তা, নিরাপদ পাতাল রেল এবং নিউইয়র্ক পরিবারের জন্য একটি নিরাপদ শহর তৈরি করা। এর অর্থ হলো অস্ত্র সহিংসতার ইস্যুটিকে সামনের দিকে মোকাবেলা করা এবং অপরাধীদের আরো দমন করার আগে তাদের হাত থেকে অবৈধ অস্ত্রগুলো বের করার জন্য কাজ করা।
আমি গর্বিত যে আমাদের প্রশাসন আমাদের রাস্তা থেকে এবং আমাদের কমিউনিটির বাইরে অস্ত্র কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমরা প্রথম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত সপ্তাহে পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছি। এই ২০,হাজার অস্ত্র আর আমাদের প্রতিবেশী, আমাদের পরিবার এবং আমাদের শিশুদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি দেয় না; একজন নিউইয়র্কবাসীকে গুলি বা হত্যা করার সম্ভাবনা কম। এই পরিসংখ্যানটি শুধুমাত্র একটি বড় সংখ্যার চেয়েও বেশি- এটি আমাদের শহরের জন্য একটি বড় মাইলফলক এবং সঠিক দিকের একটি স্পষ্ট পরিবর্তন।
আমরা আগের তিন বছরের সময়ের তুলনায় ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমাদের রাস্তা থেকে আরও ৩ হাজার অস্ত্র তুলে নিয়েছি। আমরা যে ২০ হাজার অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছি, তার মধ্যে ১ হাজার চার শোর বেশি গোস্ট গান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে- যা খুঁজে পাওয়া যায় না এমন আগ্নেয়াস্ত্র। এসব আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা এবং কিনতে পাওয়া খুব সহজ। আমরা আমাদের রাস্তা থেকে বিপজ্জনক অস্ত্রগুলো সরিয়ে ফেলছি এবং আমাদের কমিউনিটিগুলোকে নিরাপদ রাখছি- এবং আমাদের কৌশল কাজ করছে।
পরপর তিন বছর খুন ও গোলাগুলির সংখ্যা দ্বিগুণ সংখ্যায় হ্রাস পেয়েছে: মানুষ খুন প্রায় ২৩ শতাংশ কমেছে এবং গোলাগুলি ৪২ শতাংশেরও বেশি কমেছে। এর মানে হলো আমরা ২৬৮ অতিরিক্ত জীবন বাঁচিয়েছি এবং ১,৫০০ কম গুলির শিকার দেখেছি।
গত বছর ব্রুকলিনের ইতিহাসে সর্বনিম্ন পরিমাণে বন্দুক সহিংসতা দেখা গেছে। অন্যদিকে পুরো শহরজুড়ে ডিসেম্বরে সামগ্রিক অপরাধ ১৫ শতাংশ কমেছে। বন্দুক সহিংসতা নির্মূলে আমাদের অবিচল মনোনিবেশের কারণে, নিউইয়র্ক সিটি আমেরিকার সবচেয়ে নিরাপদ বড় শহর হিসেবে অবিরত রয়েছে।
আমরা নতুন বছর শুরু করার সাথে সাথে আমাদের অগ্রাধিকার একই থাকে: বন্দুক সহিংসতা মোকাবেলা করা এবং আমাদের শহর থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র অপসারণের মাধ্যমে নিউইয়র্কবাসীদের নিরাপদ রাখা। এনওয়াইপিডি অফিসাররা ইতিমধ্যেই ২০২৫ সালের প্রথম কয়েক সপ্তাহে ৩৫০ টিরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছেন। তবে আরও এগিয়ে যেতে আমরা করতে পারি এবং আমরা করব।
গত কয়েক মাসে, আমরা এলোমেলো সহিংসতা দেখেছি যা অনেক নিউইয়র্কবাসীকে নাড়া দিয়েছে। আমরা সকলেই জানি যে নিরাপত্তা কেবল পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি কিছু – মানুষ অবশ্যই নিরাপদ থাকবে এবং তাদের অবশ্যই নিরাপদ বোধ করতে হবে। সেই পরিচিত নীল ইউনিফর্মের উপস্থিতির চেয়ে উপলব্ধিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য আর কিছুই ভাল কাজ করে না। তাই, নিউইয়র্কবাসীকে সুরক্ষিত রাখতে আমরা রাতভর প্রতিটি সাবওয়েতে দুইজন অফিসারসহ টহলের জন্য শত শত অতিরিক্ত পুলিশ অফিসারকে নিযুক্ত করছি।
এটি তিন বছর আগে আপনাদের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি ছিল এবং আজও রয়েছে। যখন অন্যরা পুলিশকে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিল, আমি তাদের রক্ষা করেছি, কারণ আপনার সুরক্ষার জন্য লড়াই করার জন্যই আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। নিউইয়র্ক সিটিকে আরও নিরাপদ করতে অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা, পাচারের পাইপলাইনগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং গুলিবর্ষণের আগেই গুলি প্রতিরোধ করার মতো বিভিন্ন কাজে এনওয়াইপিডি কঠোর পরিশ্রম করতেই থাকবে।
আমি এই মাসের শুরুর দিকে আমার স্টেট অফ দ্য সিটি ভাষণে বলেছিলাম, আমাদের অবশ্যই নিউইয়র্ক সিটিকে একটি পরিবার গড়ে তোলার জন্য বিশ্বের সেরা জায়গা বানাতে হবে। এটি শুরু হয় আমাদের পরিবারের জন্য নিরাপদ হাঁটার রাস্তা, নিরাপদ ট্রানজিট চালানো এবং খেলার জন্য আরও নিরাপদ পার্ক দিয়ে। আমরা আমাদের রাস্তা থেকে যে বন্দুক জব্দ করি তা আমাদের সেই লক্ষ্যের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। প্রতিদিন আমি আমাদের শহর ও আমাদের দেশে বন্দুক সহিংসতা বন্ধ করতে কাজ চালিয়ে যাব।
অনলাইন ডেস্ক :
চীনের নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল ডিপসিক বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এটি ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি, গুগলের জেমিনি ও ক্লডের মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাড়িয়ে গেছে। ডিপসিকের এই অসাধারণ সাফল্যের পেছনে অন্যতম প্রধান কারিগর ২৯ বছর বয়সী লুও ফুলি।
কে এই লুও ফুলি?
লুও ফুলি চীনের ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (NLP) গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বেইজিং নরমাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর পিকিং ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব কম্পিউটেশনাল লিঙ্গুইস্টিকস থেকে উচ্চতর গবেষণা করেন।
২০১৯ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটেশনাল লিঙ্গুইস্টিক্স কনফারেন্সে আটটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে প্রযুক্তি বিশ্বে নিজের প্রতিভার জানান দেন তিনি। এরপর আলিবাবার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ড্যামো একাডেমিতে যোগ দিয়ে মাল্টিলিঙ্গুয়াল এআই মডেল ভেকো (VECO) তৈরিতে কাজ করেন।
ডিপসিকের সাফল্যে ফুলির ভূমিকা
২০২২ সালে লুও ফুলি ডিপসিকে যোগ দেন এবং ডিপসিক (V-2) মডেলের উন্নয়নে মূল ভূমিকা রাখেন। তার গবেষণা ও নেতৃত্বে ডিপসিকের এআই মডেল বিশ্ববাজারে নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ডিপসিকে কাজ করার সময় ফুলি তার অসাধারণ দক্ষতা দিয়ে শাওমির প্রতিষ্ঠাতা লেই জুনের নজর কাড়েন। লেই জুন তাকে ১০ মিলিয়ন ইউয়ান বার্ষিক বেতনে শাওমিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন, কিন্তু ফুলি সেই প্রস্তাব নাকচ করে ডিপসিকের সঙ্গেই কাজ চালিয়ে যান।
ডিপসিক বনাম প্রতিদ্বন্দ্বী এআই মডেল
চীনের ৪০ বছর বয়সী লিয়াং ওয়েনফেং ২০২৩ সালে ডিপসিক প্রতিষ্ঠা করেন। কম খরচে তৈরি হওয়া এই চীনা এআই চ্যাটবট বর্তমানে উন্নত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (LLM) প্রতিযোগিতায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিপসিক ৩-এর পারফরম্যান্স মেটার লামা ৩.১ ও আলিবাবার কুয়েন ২.৫-এর সমতুল্য। এটি ওপেনএআই-এর GPT-4o ও অ্যানথ্রপিকের Claude 3.5 Sonnet-এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম।
শুধু তাই নয়, ডিপসিকের আর-১ মডেল ওপেনএআই-এর মিনি মডেলকেও ছাড়িয়ে গেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান Artificial Analysis জানায়, গুগল, মেটা ও অ্যানথ্রপিকের তৈরি মডেলগুলোর তুলনায় ডিপসিকের এআই প্রযুক্তি আরও উন্নত।
যুক্তরাষ্ট্রেও চমক দেখাচ্ছে ডিপসিক
মাত্র এক সপ্তাহে ডিপসিক যুক্তরাষ্ট্রে চ্যাটজিপিটিকে পেছনে ফেলে অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের শীর্ষস্থান দখল করেছে। এর ফলে এনভিডিয়া, মাইক্রোসফট ও মেটার মতো মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য কমতে শুরু করেছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজা উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতালে ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে ১৩ জন। অঞ্চলটির শাসনগোষ্ঠী হামাস সরকার আজ ১০ নভেম্বর শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সরকারি বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় গাজা শহরের আল-শিফা কম্পাউন্ডে এদিন ইসরাইলি হামলায় ১৩ জন নিহত এবং ডজন খানেক আহত হয়েছে। তবে এ পরিসংখ্যান তাৎক্ষণিকভাবে স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেছেন, ইসরাইলি ট্যাংকগুলো আল-শিফা হাসপাতালে আক্রমণ চালায়। তবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
৩২ বছর বয়সী আবু মোহাম্মদ ১৫ জন আত্মীয়সহ হাসপাতালটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গাজা শহরের উত্তর-পূর্ব অংশে তার আশপাশের এলাকায় বোমা হামলার শিকার তিনি।
আবু বলেন, কোনো নিরাপদ জায়গা অবশিষ্ট নেই। সেনাবাহিনী আল-শিফায় আঘাত হানে। আমি জানি না কি করা উচিত। হাসপাতালে গুলি চলছে…আমরা বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ট্যাংকগুলো গাজা শহরের আরো কিছু হাসপাতাল ঘেরাও করেছিল। কয়েক সপ্তাহ ধরে কয়েক হাজার লোককে অঞ্চলটির দক্ষিণে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে ইসরাইল।
এএফপিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, ভোরবেলা শহরের ওপর দিয়ে আগুনের গোলা ও ধোঁয়া উঠছে। শুক্রবারের প্রথম দিকে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইসরাইল বৃহস্পতিবার হাসপাতালের কাছে ভারী লড়াইয়ের খবর দিয়ে বলেছে, তারা কয়েক ডজন যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে, যা হামাসের লড়াইয়ের ক্ষমতার চাবিকাঠি।
এদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী বারবার হামাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হামলার সমন্বয় সাধনে হাসপাতাল, বিশেষ করে আল-শিফা ব্যবহার করে হামাস। পাশাপাশি এটি হামাস কমান্ডারদের আস্তানা হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগও করেছে তারা। হামাস কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে হামলা চালালে এক হাজার ৪০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়। সেই সঙ্গে তারা প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এরপর ইসরাইল যুদ্ধ ঘোষণা করে। হামাসকে ধ্বংস করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইসরাইল বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক এবং তাদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৫ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও প্রায় চার হাজার।
এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে হাসপাতাল, মসজিদ ও গির্জাসহ হাজারও ভবন। ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গাজা উপত্যকায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ১৪ হাজার ১২৮ এ পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি জানায়, “নিহতদের মধ্যে ৫ হাজার ৮৪০ জনেরও বেশি শিশু এবং ৩ হাজার ৯২০ জন নারী রয়েছে।“
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন ৩৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং এখন পর্যন্ত ছয় হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে হাসপাতাল, মসজিদ ও গির্জাসহ হাজারও ভবন।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
তবে কাতারের মধ্যস্থতায় হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। দেশটির মন্ত্রিসভা চার দিনের বেশি সময়ের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। আজই ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আল জাজিরা।
অনলাইন ডেস্ক :
সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও ১৬ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২৯ মার্চ বুধবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
নিহত ১৮ বাংলাদেশি হলেন-
১। রুকু মিয়া, পিতা: কালা মিয়া, থানা/উপজেলা: কসবা, জেলা: ব্রাহ্মণবাড়িয়া;
২। মো. ইমাম হোসাইন রনি, পিতা: মো. আব্দুল লতিফ, থানা/উপজেলা: টঙ্গী, জেলা: গাজীপুর;
৩। খাইরুল ইসলাম;
৪। মো. রাসেল মোল্লা;
৫। মো. নজরুল ইসলাম, পিতা: কাউসার মিয়া, থানা: কোতয়ালী, জেলা: যশোর;
৬। রুহুল আমিন;
৭। সবুজ হোসাইন, পিতা:মো. হারুন, উপজেলা: রায়পুর, জেলা: লক্ষ্মীপুর;
৮। মো. হেলাল উদ্দিন, নোয়াখালী;
৯। মোহাম্মদ আসিফ, উপজেলা: মহেশখালী, জেলা: কক্সবাজার;
১০। শাফাতুল ইসলাম, উপজেলা: মহেশখালী, জেলা: কক্সবাজার;
১১। শাহিদুল ইসলাম, পিতা: মো. শরিয়ত উল্লাহ, উপজেলা: সেনবাগ, জেলা: নোয়াখালী;
১২। তুষার মজুমদার;
১৩। মামুন মিয়া, পিতা: আব্দুল আউয়াল, উপজেলা: মুরাদনগর, জেলা: কুমিল্লা;
১৪। মিরাজ হোসাইন;
১৫। গিয়াস, পিতা: হামিদ, উপজেলা: দেবিদ্বার, জেলা: কুমিল্লা;
১৬। মো. হোসাইন, পিতা: কাদের হোসাইন, উপজেলা: রামু, জেলা: কক্সবাজার;
১৭। সাকিব, পিতা: আব্দুল আউয়াল;
১৮। রানা মিয়া।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বুধবার রাতে জানিয়েছেন, সৌদি আরবে যেই বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে, তাতে ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন ৩৪ জন। বাস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও ১৬ বাংলাদেশি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সূত্র জানায়, সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আসির প্রদেশে ওমরাহ যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন। গত ২৭ মার্চ ওমরাহ যাত্রী বহনকারী বাসটি একটি সেতুর ওপরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। একপর্যায়ে বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আসির প্রদেশ ও আভা শহরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী ওই সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারানোয় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতরা ওমরাহ পালন করতে মক্কা যাচ্ছিলেন।
অণলাইন ডেস্ক :
এক দশক পর ভারতের লোকসভায় ফিরেছে বিরোধী দলনেতার পদ। বাজেট অধিবেশনে আজ ২৯ জুলাই সোমবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরকারকে এক হাত নিলেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। পৌনে এক ঘণ্টা বক্তব্যে বিজেপি-শাসিত সরকারকে তুলোধুনো করেছেন রাহুল।
রাহুল বলেন, ‘হাজার হাজার বছর আগে কুরুক্ষেত্রে ছয় জন মিলে অভিমন্যুকে চক্রব্যূহে ফাঁসিয়ে হত্যা করেছিলেন। আমিও একটু পড়াশোনা করে দেখেছি, চক্রব্যূহকে পদ্মব্যূহও বলা হয়। পদ্মের মতো সামরিক গঠনের জন্য।”
এর পরই কেন্দ্রকে বিঁধে লোকসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে এক নতুন চক্রব্যূহ তৈরি হয়েছে। তাও আবার পদ্ম ফুলের আকারে। যার প্রতীক প্রধানমন্ত্রী বুকে পরে থাকেন। অভিমন্যুর সঙ্গে যা করা হয়েছিল, যেভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছিল চক্রব্যূহে, সেটাই দেশের সঙ্গে, দেশের যুব সমাজ, কৃষক, নারী এবং ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে করা হচ্ছে।’ রাহুলের যুক্তি, মহাভারতের চক্রব্যূহের রাশ ছিল ছয় জনের হাতে- দ্রোণাচার্য, কর্ণ, কৃপাচার্য, কৃতবর্মা, অশ্বত্থামা ও শকুনি। বর্তমান সময়ের যে চক্রব্যূহের কথা রাহুল বলছেন, সেখানেও ছয় জনের হাতে রাশ রয়েছে বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। রাহুলের মতে সেই ছয় জন হলেন- নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, মোহন ভাগবত, অজিত ডোভাল, আম্বানি ও আদানি।
লোকসভায় রাহুল এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আপত্তি জানান স্পিকার ওম বিড়লা। বিজেপি শিবির থেকেও হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। স্পিকার রাহুলকে জানান, যারা লোকসভার সদস্য নন, তাদের নাম ব্যবহার করা যাবে না। সাংবিধানিক পদে থেকে রাহুল যাতে সংসদীয় রীতি-রেওয়াজ মেনে চলেন, সেই বার্তা দেন স্পিকার। এর পর অবশ্য আম্বানী, আদানি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের নাম প্রত্যাহার করে নেন। তবে বাকি তিনটি নামের ক্ষেত্রে নিজের বক্তব্যে অবিচল থাকেন রাহুল।
লোকসভার বিরোধী দলনেতার মতে, বর্তমান কালের এই চক্রব্যূহের নেপথ্য তিনটি শক্তি কাজ করছে। রাহুলের কথায় প্রথম শক্তি হল, ‘পুঁজির উপর একচেটিয়া অধিকারের ভাবনা, যেখানে গোটা দেশের সম্পত্তির উপর দু’জনের অধিকার থাকে।’ সরাসরি কারও নাম না করলেও রাহুলের খোঁচা যে দুই শিল্পগোষ্ঠীর দিকেই ছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া রাহুলের যুক্তিতে, দ্বিতীয় শক্তি হল সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরের মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং তৃতীয় শক্তি হল রাজনৈতিক নেতারা। এই তিন শক্তিই চক্রব্যূহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বলে আক্রমণ শানান লোকসভার বিরোধী দলনেতা।
এই ‘চক্রব্যূহের’ কারণে দেশবাসীর কী সমস্যা হয়েছে, সে কথাও তুলে ধরেন রাহুল। রাহুলের দাবি, যাঁরা ছোট ছোট ব্যবসা করেন, তাদের উপর এই চক্রব্যূহের প্রথম কোপ পড়েছে। নোট বাতিল থেকে শুরু করে পণ্য ও পরিষেবা কর এবং ‘কর-সন্ত্রাস’-এর কথা উঠে আসে রাহুলের সোমবারের বক্তৃতায়। তিনি বলেন, “দেশে যারা ছোট ছোট ব্যবসা করেন, রাতে তাদের কাছে আয়কর দফতর, পণ্য ও পরিষেবা কর দফতর থেকে ফোন যায়। তারা কর-সন্ত্রাসের শিকার হন। এই কর-সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য বাজেটে কোনও উল্লেখ নেই।”