নারীদের অজু-গোসল নামাজ-রোজার গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা

ধর্ম, 11 February 2025, 330 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইবাদত, পর্দা, পবিত্রতা, সাজ-সজ্জা ইত্যাদি বিষয়ে কিছু ভিন্নতা রয়েছে নারীদের। শরিয়তের বিধি-বিধান পালনের ক্ষেত্রে আলাদা এসব মাসয়ালা জানা নারীদের জন্য জরুরি। নিচে এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসায়েল তুলে ধরা হলো।

banner

অজু-গোসলে নারীদের যেসব মাসয়ালা জানা জরুরি
* শিশুকে দুধ পান করানোর কারণে অজু ভঙ্গ হবে না। তবে নামাজ অবস্থায় কোনো শিশু দুধ পান করে নিলে নামাজ ভেঙে যাবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/৬২৫)

* দুগ্ধপায়ী ছোট বাচ্চা মুখ ভরে বমি করলে তা বড় মানুষের মতোই নাপাক এবং তা কাপড়ে পড়লে ধৌত করতে হবে। মুখ ভরে বমি না করলে তা নাপাক হবে না। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/১৩৭)

* অজু-গোসলের সময় মহিলাদের নাক-ফুলের ছিদ্রে পানি পৌঁছানো জরুরি। (আল মুহিতুল বুরহানি: ১/৮০)

* ফরজ গোসলে মহিলাদের চুল খোলা থাকলে পুরো চুল ধোয়া ফরজ। আর বাঁধা থাকলে পুরো চুল ধোয়া ফরজ নয়। কেবল চুলের গোঁড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। (শরহু মুশকিলিল আসার, হা. : ৩৮৫৪)

* ফরজ গোসলে মহিলাদের লজ্জাস্থানের বহিরাংশে পানি পৌঁছালে ফরজ আদায় হয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ অংশে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়। আর রোজা অবস্থায় মহিলাদের ভেতরাংশে যেন পানি না পৌঁছে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, কেননা ভেতরে যাওয়ার দ্বারা রোজা ভেঙে যাবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/১৫২)

* গর্ভাবস্থায় সন্তান হওয়ার আগে শেষের দিনগুলোতে মাঝেমধ্যে ঘুমের মধ্যে পানি বের হয়ে মহিলাদের শরীর ও কাপড় নষ্ট হয়ে যায়, এতে মহিলার ওপর গোসল ফরজ হবে না, তবে অজু ভেঙে যাবে এবং নির্গত পানি থেকে শরীর ও কাপড় পবিত্র করে নামাজ পড়তে হবে। কেননা সেগুলো নাপাক। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/১৫৯, ইমদাদুল ফতোয়া: ১/১০৭)

* যেসব নারী ধাতুরোগে আক্রান্ত, তাদের অজু নষ্ট হওয়ার ভয়ে যদি কেউ টিস্যু বা তুলা ধাতু আসার রাস্তায় এমনভাবে রাখে, যাতে ধাতু বাইরে আসতে না পারে, তাহলে এমতাবস্থায় সব ইবাদত আদায় করতে কোনো অসুবিধা হবে না। বরং এটিই রোগীর জন্য উত্তম পন্থা। হ্যাঁ, তুলা বা টিস্যু পেপারের বহিরাংশ যদি ভিজে যায়, তাহলে অজু নষ্ট হয়ে যাবে। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১০)

* মহিলাদের ‘হায়েজ’ তথা মাসিক রক্তস্রাবের ওপর শরয়ি বিধানের ক্ষেত্রে সর্বনিম্নে তিন দিন আর ঊর্ধ্বে ১০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লিখিত দুই সংখ্যার প্রথমটির কম হলে কিংবা দ্বিতীয়টির বেশি হলে তখন তা ‘ইস্তিহাজা’ বা রোগ হিসেবে ধর্তব্য হয়। আর দুই স্রাবের মাঝখানে ১৫ দিন পবিত্র থাকা আবশ্যক। কারো যদি স্রাবের নির্দিষ্ট অভ্যাস থাকে, আর সে কোনো মাসে অভ্যাসের বিপরীত ১০ দিনের পরও রক্ত দেখতে পায়, তাহলে অভ্যাসের ভেতরে আসা রক্তগুলোকে হায়েজ ধরতে হবে এবং অতিরিক্তগুলোকে ইস্তিহাজা। অনুরূপ কারো যদি এক হায়েজ শেষ হওয়ার পর ১৫ দিনের আগেই আবার রক্ত দেখা দেয়, আর এভাবে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে, তাহলে তার এই অনিয়ম চালু হওয়ার আগের হায়েজের অভ্যাস হিসাব করে ঠিক তার ১৫ দিন পরেই দ্বিতীয় হায়েজের সময় শুরু হবে, মাঝে আসা রক্তগুলোকে ইস্তিহাজা ধরতে হবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/২৮৯)

* কোনো কারণে আগের মাসের অভ্যাস খেয়াল না থাকলে দশের বেশি হলে তার বিধান হচ্ছে, যেহেতু হায়েজের শেষ সীমা ১০ দিন, তাই ১০ দিনের পর নিয়মিত নামাজ-রোজা শুরু করবে। এক্ষেত্রে আগের মাসের পরিমাণ খেয়াল না থাকলে খুব চিন্তাভাবনার পর প্রবল ধারণা অনুযায়ী যত দিনের অভ্যাস খেয়াল হবে, ততদিনই হায়েজ হিসেবে গণ্য হবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ২/২৮৬)

* সন্তান প্রসবের পর জরায়ু থেকে যে রক্ত আসে, তাকে নিফাসের রক্ত বলা হয়। এর সর্বোচ্চ সীমা ৪০ দিন। এর সর্বনিম্ন সীমা নেই, অল্প কিছুক্ষণও হতে পারে। ‘নিফাস’ অবস্থার সব বিধান মাসিক স্রাবের অনুরূপ। নারীরা মাসিক ও প্রসবজনিত বিশেষ দিনগুলোতে নামাজ-রোজা পালন করতে পারবে না। পরে এসব নামাজের কাজাও নেই, তবে রোজা কাজা করে নিতে হবে। ইস্তিহাজা অবস্থায় শরিয়তের বিধিবিধান যথা—নামাজ, রোজা ইত্যাদি পূর্ণরূপে পালন করতে হবে এবং স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক মিলনেও কোনো অসুবিধা নেই। (মাবসুতে সারাখসি: ৩/১৫৪-১৫৫)

* অনুরূপ হায়েজ-নিফাস অবস্থায় সহবাস থেকে বিরত থাকা একান্ত অপরিহার্য। তবে অপারগতাবশত গুনাহ থেকে বাঁচার মানসে হাঁটু থেকে নাভির মধ্যবর্তী অংশ বাদ দিয়ে অন্যান্য অঙ্গ দ্বারা যৌনস্পৃহা নিবারণ করার অবকাশ আছে। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/২৯২)

* তদ্রূপ বিশেষ দিনগুলোতে কোরআন শরিফ পড়া এবং স্পর্শ করা জায়েজ নেই। ওই সময় শিক্ষিকারা শিক্ষার্থীদের কোরআন শিক্ষা না দেওয়াই শরিয়তের প্রকৃত বিধান, তথাপি প্রয়োজনবশত একেক শব্দ ভিন্ন ভিন্ন করে শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে। তবে ওই অবস্থায় তাদের কোরআন পড়া শোনা যাবে। (ফাতহুল কাদির: ১/১৬৮)

* বই-পুস্তক বা দ্বীনি কিতাবাদি, যেখানে কোরআন শরিফের আয়াতও লিখা থাকে, এ অবস্থায় পড়া বা স্পর্শ করা জায়েজ। তবে কোরআনের আয়াত পড়া বা স্পর্শ করা যাবে না। (রদ্দুল মুহতার: ১/১৭৬)

* তদ্রূপ ওই সময়ে দোয়ার অর্থবহ আয়াত বা সুরা দোয়ার নিয়তে পড়া জায়েজ। যেমন দোয়ার নিয়তে আয়াতুল কুরসি বা সুরায়ে নাস ও ফালাক ইত্যাদি পড়া জায়েজ হবে। (ফাতহুল কাদির: ১/১৬৮, রদ্দুল মুহতার: ১/১৭২, আহসানুল ফতোয়া: ২/৭১)

* ওষুধের মাধ্যমে স্রাবের সময় পিছিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞ ডাক্তার যদি বলেন, ‘এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে না’, তাহলে প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা যাবে। (ফতোয়ায়ে রহিমিয়া: ৬/৪০৪)

নারীদের পোশাক ও সাজসজ্জার মাসয়ালা
* পোশাকের মধ্যে শরয়ি নীতিমালা হলো- এমন পোশাক পরবে, যা দ্বারা মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সারা শরীর ঢেকে যায় এবং কাপড় এতটুকু মোটা হওয়া চাই, যাতে ওপর দিয়ে শরীর দেখা না যায়। নারীরা পুরুষের মতো পোশাক পরিধান করা হারাম। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) অভিশাপ করেছেন ওই সব পুরুষের ওপর, যারা মহিলাদের আকৃতি ধারণ করে এবং ওই সব মহিলাদের ওপর, যারা পুরুষের আকৃতি ধারণ করে।’ (বুখারি: ৫৮৮৫)

* ভ্রু প্লাক, দাঁত চিকন করে মাঝে ফাঁকা করা, শরীর খোদাই করে অঙ্কন করা জায়েজ নেই। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) অভিশাপ করেছেন ওই সব মহিলার ওপর, যারা নিজের শরীর খোদাই করে ও করায়, যারা ভ্রুর চুল উঠায় ও উঠিয়ে দেয় এবং দাঁত চিকন করে। কেননা তারা সৌন্দর্যের জন্য আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন করে ফেলে।’ (বুখারি: ৪৮৮৬)

* কোনো মহিলার চেহারায় দাড়ি-মোচ উঠলে তা উপড়ে ফেলা উত্তম। (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৭৩)

* অপ্রয়োজনে মহিলাদের মাথার চুল পুরুষের মতো ছোট করা নাজায়েজ। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩৫৮)

* নারীরা হাতে, পায়ে ও গোটা শরীরে মেহেদি দিতে পারবে, বরং তা মোস্তাহাব। তবে এমন কোনো পলিস ব্যবহার করতে পারবে না, যার কারণে অজু-গোসলের পানি শরীরের চামড়ায় পৌঁছে না। নারীরা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে এমন পোশাক ও বোরকা পরে বের হবে, যা শালীনতা নির্দেশ করে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘পুরুষের সাজসজ্জা হলো সুগন্ধি লাগানো, যা আকর্ষণীয় রঙের হবে না। আর নারীদের সাজসজ্জা হলো রংবেরঙের, তবে তার সুগন্ধি যেন বাইরে না ছড়ায়।’ (তিরমিজি: ২৭৮৭)

নারীদের পর্দার মাসয়ালা
* নারীরা স্বামী, পিতা, দাদা, নানা ও এদের বরাবর ওপরের দিকের পূর্বপুরুষ, নিজের ছেলে, নাতি ও এর বরাবর নিচের দিকের সব পুরুষ, আপন ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই, এসব ভাইয়ের সন্তান, বোনের ছেলে, মামা, চাচা, স্বামীর বাবা, স্বামীর দাদা-নানা ও এদের বরাবর ওপরের পূর্বপুরুষ, স্বামীর আগের ঘরের সন্তান, মেয়ে ও নাতনি জামাই, দাদা-দাদি ও নানা-নানির ভাই এবং দুধ-সম্পর্কীয় এসব স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা জায়েজ। এর বাইরে অন্য পুরুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা জায়েজ নেই। (সুরা নিসা: ২২, ২৩; বুখারি: ২৬৪৫)

* শরিয়তের বিধানমতে, স্বাভাবিক অবস্থায় মহিলারা উল্লিখিত মাহরাম পুরুষের সামনে তার মাথা, মুখমণ্ডল, গলা, পুরো হাত, পায়ের পাতা খুলতে পারবে। অনুরূপ বুক, পায়ের গোছা, বাহু খোলার অনুমতি থাকলেও বিনা প্রয়োজনে না খোলাটাই উত্তম, তবে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা হলে এগুলোও ঢাকা জরুরি। বর্তমান ফিতনার যুগে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৬৭)

* প্রয়োজনে মহিলারা মাহরাম পুরুষের সামনেও বাচ্চাদের দুধ দিতে পারবে, তবে ফিতনার আশঙ্কা হলে তা করবে না। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩২৮)

* অতি প্রয়োজনে অনন্যোপায় হলে মাহরাম ছাড়া পরপুরুষের সামনে—যেমন ডাক্তারের সামনে চেহারা ও অন্যান্য অঙ্গ প্রয়োজন অনুপাতে খোলা জায়েজ। (আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩৭০)

* এমন বৃদ্ধ নারী, যাদের প্রতি সাধারণত কামদৃষ্টি যায় না, তারা পরপুরুষের সামনে চেহারা খুলতে পারবেন। পুরুষদের জন্য তাদের দেখা বৈধ। (মাবসুতে সারাখসি: ১০/১৫৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম নারীদের তাদের আলাদা মাসয়ালাগুলো জানার ও মেনে চলার তাওফিক দান করুন। নারী-পুরুষ সবাইকে ইসলামি শরিয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

বেগানা নারীর সঙ্গে নির্জনতা ও সফরের বিধান

ধর্ম, 18 February 2025, 255 Views,

উম্মে আহমাদ ফারজানা:
সমাজের পর্দাহীনতার সয়লাবের একটি উপমা হলো গায়র মাহরাম তথা বেগানা নারী-পুরুষ নির্জনে একত্র হওয়া। ইসলাম একে হারাম ঘোষণা করেছে। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যাদের স্বামী উপস্থিত নেই, সেসব নারীর কাছে তোমরা যেয়ো না। কেননা তোমাদের সবার মধ্যেই শয়তান (প্রবাহিত) রক্তের শিরায় বিচরণ করে। আমরা বললাম, আপনার মধ্যেও কি? তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমার মধ্যেও। কিন্তু আমাকে আল্লাহ তাআলা সাহায্য করেছেন, তাই আমি নিরাপদ।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১১৭২)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন কখনো কোনো নারীর সঙ্গে নির্জনে সাক্ষাৎ না করে, যতক্ষণ না ওই মেয়ের কোনো মাহরাম তার সঙ্গে থাকে। কারণ সে সময় তৃতীয় জন থাকে শয়তান। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৬৫)। বর্তমানে নারী-পুরুষের নির্জনতাকে অনেকে পাপই মনে করে না। দেবর-ভাবী, শালী-দুলাভাই, ড্রাইভার-মহিলা গৃহকর্তা, ডাক্তার-নার্স, অফিসের বস-মহিলা পিএ, শিক্ষক-ছাত্রী, পীর, মহিলা মুরিদ ইত্যাদি বেগানা নারী-পুরুষ প্রতিনিয়ত নির্জনে একত্র হয়ে কাজ করছে। ইসলামের দৃষ্টিতে তা হারাম। বেগানা নারী সঙ্গে নিয়ে সফর: ইসলাম নারীর মর্যাদা ও সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। তাই যেখানে তাদের সম্মান বা সুরক্ষা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেখানে বিশেষ বিধান দিয়ে সম্মান ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই বিবেচনায় ইসলামের বিধান হলো, মাহরাম ছাড়া একাকী সফর করা নারীদের জন্য বৈধ নয়। যাদের সঙ্গে চিরতরের জন্য বিবাহ অবৈধ, তাদের মাহরাম বা এগানা বলা হয়। এ ছাড়া অন্যদের গায়র মাহরাম বা বেগানা বলা হয়। সাধারণ সফর ও হজের সফর সব ক্ষেত্রে একই বিধান: মাহরাম ছাড়া নারীর সফর বৈধ নয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে নারী আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, তার পক্ষে কোনো মাহরাম পুরুষকে সঙ্গে না নিয়ে এক দিন ও এক রাত্রির পথ সফর করা জায়েজ নয়।’ (বুখারি, হাদিস : ১০৮৮)। কোনো কোনো হাদিসে এক দিন এক রাতের পরিবর্তে তিন দিন তিন রাতের কথা এসেছে। আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো নারীর সঙ্গে কোনো মাহরাম পুরুষ না থাকলে সে যেন তিন দিনের সফর না করে।’ (বুখারি : ১০৮৭)। আসলে এখানে দিন-রাত মুখ্য নয়, ইসলামের দৃষ্টিতে মাহরাম ছাড়া নারীর যেকোনো সফর বৈধ নয়। এখানে মূল কথা হলো, যদি ৪৮ মাইল (৭৮ কিলোমিটার) বা তার বেশি দূরত্বে সফর হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত পুরুষদের থেকে নিজের কোনো মাহরাম আত্মীয় বা স্বামী সঙ্গে না থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নারীর জন্য সফর করা জায়েজ নেই। এটি হজের সফর হোক বা উচ্চশিক্ষার জন্য সফর হোক। তার মানে এই নয় যে নারীরা ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। প্রয়োজন হলে অবশ্যই ঘরের বাইরে যাবে। আয়েশা (রা.) বলেন, এক রাতে উম্মাহাতুল মুমিনিন সাওদা বিনতে জামআ (রা.) কোনো কারণে বাইরে গেলেন। উমর (রা.) তাঁকে দেখে চিনে ফেললেন। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! হে সাওদা! তুমি নিজেকে আমাদের কাছ থেকে লুকাতে পারনি।
এতে তিনি নবী (সা.)-এর কাছে ফিরে গেলেন এবং উক্ত ঘটনা তাঁর কাছে বলেন। তিনি তখন আমার ঘরে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন এবং তাঁর হাতে গোশতওয়ালা একখানা হাড় ছিল। এমন সময় তাঁর কাছে ওহি অবতীর্ণ হলো। ওহি শেষ হলে নবী (সা.) বলেন, আল্লাহ প্রয়োজনে তোমাদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ৫২৩৭)। যাই হোক, সফরকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইসলাম সফরে নারীর সঙ্গে মাহরাম থাকা অপরিহার্য করে দিয়েছে। যেন সফরে মাহরাম পুরুষ নারীকে দুশ্চরিত্র লোকদের থেকে নিরাপদ রাখতে পারে এবং নারীর প্রয়োজনে তাকে সহযোগিতা করতে পারে।
মাহরাম ছাড়া নারীর একাকী সফর বৈধ না হওয়ার কারণ হলো সফরে স্বামী ও মাহরাম নারীর যতটুকু সম্মান ও সুরক্ষা করতে পারে, অন্য কেউ তা রক্ষা করতে পারে না। আর আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল (সা.) যে বিধান দিয়েছেন, মুসলমানরা তা মানতে বাধ্য। এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তা আছে কী নেই, বদনাম হবে কী হবে না, তা বিবেচ্য নয়। আর হ্যাঁ, ইসলামের বিধান শুধু আত্মসমর্পণকারী মুসলিম নর-নারীর জন্য।

banner

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়

ধর্ম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 31 March 2025, 217 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়েছে।

banner

৩১ মার্চ সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের কাজীপাড়াস্থ জেলা ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এতে ইমামতি করেন জেলা জামে মসজিদের খতিব হযরত মাওলানা সিবগাহতুল্লাহ নূর।

নামাজে কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, জেলা জামায়াতের আমির মোবারক হোসেন আকন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন।

খুতবা পাঠ শেষে দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়াও শহরের ট্যাংকের পর জামে মসজিদ, শেরপুর জামে মসজিদ, কাউতলী নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামের আউটার স্টেডিয়াম, ভাদুঘর ফাঁটা পুকুর ঈদগাহ ময়দান, ভাদুঘর শাহী মসজিদ প্রাঙ্গণ, পূর্বমেড্ডা বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ, শরীফপুর ঈদগাহ মাঠ, মধ্যপাড়া ভাওয়াল দিঘীরপাড় মসজিদসহ জেলার ৭৮০টি ঈদগাহ ও ৫১০টি মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

বিনামূল্যে দুই হাজার কুরআন বিতরণ

ধর্ম, সারাদেশ, 27 January 2025, 672 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীর মাঝে বিনামূল্যে দুই হাজার কুরআন বিতরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়াহ সোসাইটি। আজ ২৭ জানুয়ারি সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মঞ্চে কুরআন বিতরণ করা হয়।

banner

সংগঠনের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাংগীর আলম।

আলোচক হিসেবে ছিলেন লন্ডন আল কুরআন অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান হাফেজ ড. মুনির উদ্দিন আহমদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম।

প্রধান আলোচক হাফেজ ড. মুনির উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মাত্র সাত ভাগ মানুষ কুরআন বুঝে। বাকী কিছু মানুষ কুরআন পড়ে কিন্তু বুঝে না। তবে অধিকাংশ মানুষের কাছে কুরআনই পৌঁছায়নি। অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা কুরআন পড়ায় এবং শিখায়। কিন্তু কুরআন মানুষের কাছে পৌঁছে দিবে এমন মানুষ বা প্রতিষ্ঠান নেই। আল কুরআন একাডেমির মাধ্যমে সেই কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্বের ২৫টি দেশের প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষের কাছে কুরআন বিতরণ করেছি। সকল মানুষের কাছে কুরআন পৌঁছে দিতে চাই।’

প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, কুরআন মানুষের হেদায়াতের জন্য নাজিল হয়েছে। কুরআন মানুষকে সত্য পথ দেখাবে। সকল অন্যায় খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখবে। কুরআন নাজিল হয়েছে বুঝার জন্য। আমাদের মুসলমান মুত্তাকী হওয়ার জন্য কুরআন বুঝা অপরিহার্য। কুরআন বুঝা ছাড়া মুত্তাকী হওয়া যাবে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ নামে একটি বিভাগ আছে। আমি আশা করি এই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কুরআন শিক্ষা দিবে। কুরআনই একমাত্র কিতাব যেটা মানুষ না বুঝেও পড়ে। এটা কুরআনের প্রতি ভালোবাসা। তোমরা সবাই কুরআন বুঝে পড়বে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করবে।

বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল রোজা শুরু

জাতীয়, ধর্ম, 1 March 2025, 296 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের আকাশে আজ ১ মার্চ শনিবার রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল ২ মার্চ রবিবার রোজা শুরু হবে।

banner

১ মার্চ শনিবার সন্ধ্যায় রমজানের চাঁদ দেখা কমিটি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। কমিটি জানায়, চাঁদ দেখা যাওয়ায় শনিবার ২৯ তম দিনে শেষ হচ্ছে শাবান মাস। আর আগামীকাল রবিবার শুরু হবে রমজান মাস। ফলে আজ দিবাগত রাতে সাহরি খেয়ে রবিবার থেকে রোজা রাখবেন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

রমজান মাসের চাঁদ দেখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ১ মার্চ শনিবার বাদ মাগরিব জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

এদিকে, গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সৌদি আরবে হিজরি ১৪৪৬ সনের রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়। ফলে আজ ১ মার্চ শনিবার দেশটিতে পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে রোজা।

আমাদের বুকের ভেতরে বাস করে ফিলিস্তিন

জাতীয়, ধর্ম, 12 April 2025, 206 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের মানুষের বুকে একেকটা ফিলিস্তিন বাস করে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামিক স্কলার ও আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারী। আজ ১২ এপ্রিল শনিবার বিকেলে ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদে রাজধানীর ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসমাবেশে এ কথা বলেন আজহারী।

banner

কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়েছেন- জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ অনেকে।

মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, জনতার এই মহাসমুদ্রে উপস্থিত হয়ে আমরা বুঝতে পেরেছি, আজকের এই জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল-আকসার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভৌগলিকভাবে আমরা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে হতে পারি, কিন্তু আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের একেক জনের হৃদয়ে, বুকের ভেতরে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন। আজহারী আরও বলেন, আমাদের হৃদয়ে বাস করছে একেকটা গাজা, আমাদের হৃদয়ে বাস করছে একেকটা আল-কুদস।

বক্তব্যের সময় জনসমুদ্রে স্লোগান তুলেছেন মিজানুর রহমান আজহারী। গাজায় মুসলিম ভাইয়েরা কেন শহীদ হচ্ছে, এ ব্যাপারে জাতিসংঘের কাছে জবাব চেয়েছেন তিনি। ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, আমার ভাই শহীদ কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘আল কুদুস, আল কুদুস, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’— এসব স্লোগানে মুখরিত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আজ সকাল থেকেই সারাদেশ থেকে স্রোতের মতো জনতার মিছিল আসতে থাকে। এতে করে জনসমুদ্রে পরিণত হয় ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে এই জমায়েতের ডাক দেয় ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’।